লক্ষ্মীপুর পৌরসভার মধ্য বাঞ্ছানগর এলাকায় অবৈধভাবে একটি তিনতলা ভবনসহ ৪ কোটি টাকার সম্পত্তি দখল করার অভিযোগ স্থানীয় বিএনপি নেতাসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সদর থানায় বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন ভবনের মালিক মাইন উদ্দিন। মামলা দায়েরের আগে গত বুধবার গভীর রাতে ওই ভবনে অভিযান চালিয়ে ভেতরে অস্থান করা ৪১ জনকে আটক করেছে যৌথ বাহিনী। পরে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয় তাঁদের।

লক্ষ্মীপুর থানা–পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মামলায় পৌর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক লোকমান হোসেন, ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেনসহ চারজনের নাম উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া ৪৮ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন বিএনপি নেতা। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে মামলার প্রধান আসামি ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন থাকলেও বিএনপি নেতা লোকমান হোসেনকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। আজ দুপুরে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের লক্ষ্মীপুর আদালতে হাজির করা হয়।

বাড়ির মালিক মাইন উদ্দিনের অভিযোগ, শহরের লক্ষ্মীপুর-রায়পুর সড়কের পাশে তাঁর তিনতলা ভবনের কাগজপত্র জমা দিয়ে ৯ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিলেন তিনি। তবে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ায় জমিসহ বাড়িটি বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন তিনি। অভিযুক্ত ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেনের কাছে বাড়ি ও বাড়ির জায়গা বিক্রির বিষয়ে আলাপ হয় তাঁর। এটির মূল্য নির্ধারণ করেন সাড়ে চার কোটি টাকা। ব্যবসায়ী আনোয়ার ২৮ লাখ টাকা দিয়ে একটি নন–জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে বাড়িটি কেনার জন্য বায়না চুক্তি করেন। তবে রেজিস্ট্রি না করেই তিনি লোকজন এনে বাড়িটি দখলে নেন। এরপর বাড়িটির সামনে একটি সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেন তিনি। ভবনের সামনে ১০টি ট্রাক ও ডাম্প ট্রাক রেখে দখল করেন তিনি। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী গভীর রাতে ওই বাড়িতে অভিযান চালায়।

জমির মালিক মাঈন উদ্দিন বলেন, ‘ব্যবসায়ী আনোয়ার অবৈধভাবে ভাড়াটে ক্যাডারদের এনে আনোয়ার আমার সম্পত্তি দখল করেছেন। আমার ভবনে সেন্ট মার্টিন রেস্টুরেন্টের সাইনবোর্ড ছিল, তিনি তা সরিয়ে নিজের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দিয়েছে।’

গ্রেপ্তারের আগে অভিযুক্ত আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘৯ মাস আগে ২৮ লাখ টাকা দিয়ে জমি কেনার জন্য মাঈন উদ্দিনের সঙ্গে নন–জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে বায়না করেছি। চুক্তি অনুযায়ী তিনি আমাকে ভবনসহ জমি বুঝিয়ে দেওয়ার কথা ছিল। প্রায় ৪ কোটি টাকা আমার ব্যাংকে পড়ে আছে। চুক্তির ভিত্তিতেই আমি ভবনসহ জমি দখল করেছি।’

লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মোন্নাফ বলেন, ভবন দখলের ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে আনোয়ারসহ ৪১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। জড়িত অন্যদের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবস য় ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

ক্লাব–বিসিবি দ্বন্দ্বে সমাধান কি বিকল্প টুর্নামেন্ট

‘খেলা এবার মাঠে গড়াতেই হবে’—দৃঢ় কণ্ঠে কাল কথাটা বললেন বিসিবির পরিচালক ও সিসিডিএমের ভাইস চেয়ারম্যান ফায়াজুর রহমান। বর্তমান পরিচালনা পর্ষদকে ‘অবৈধ’ আখ্যা দিয়ে লিগ না খেলার ঘোষণা দেওয়া ঢাকার বিদ্রোহী ৪৫টি ক্লাবের সঙ্গে কয়েক দফায় সমঝোতার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে বিসিবি, তবে এবার আর ব্যর্থতা চান না ফায়াজুর।

তৃতীয় বিভাগ দিয়েই প্রতিবছর ঘরোয়া ক্রিকেটের মৌসুম শুরু হয়। কিন্তু বিদ্রোহী ৪৫টি ক্লাবের মধ্যে তৃতীয় বিভাগের ক্লাবই ১৪টি, প্রথম বিভাগের ক্লাব ৮টি। প্রথম বিভাগের বেশির ভাগ ক্লাব (২০টির মধ্যে ১২টি) লিগ আয়োজনের পক্ষে থাকায় এবার আগে প্রথম বিভাগ ক্রিকেট আয়োজনের চেষ্টা করছে বিসিবি। কিন্তু সেটাও পারছে কই!

বিদ্রোহী ক্লাবগুলো লিগ বয়কটের সিদ্ধান্তে অনঢ় থাকায় দুবার তারিখ ঘোষণা করেও খেলা শুরু করা যায়নি। তৃতীয়বারের মতো লিগ শুরুর তারিখ ঠিক হয়েছে আগামীকাল।

তবে ৪৫ ক্লাবের অবস্থান এখনো আগের জায়গাতেই। প্রথম বিভাগের ২০টি ক্লাবের মধ্যে দলবদলে অংশ না নেওয়া ৮ ক্লাবের লিগে খেলার সম্ভাবনা নেই। প্রথম বিভাগের বিদ্রোহী ৮ ক্লাবের নেতৃত্বে থাকা সংগঠক ও আম্বার স্পোর্টিং ক্লাবের কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান কাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা বিসিবির প্রধান নির্বাহীকে দেওয়া চিঠিতে আগেই জানিয়ে দিয়েছি যে এই অবৈধ বোর্ডের অধীন খেলব না। এখনো সেই সিদ্ধান্তে অনড় আছি। আমাদের (৮ ক্লাব) লিগে অংশ নেওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।’

পরশু আনুষ্ঠানিকভাবে সূচি ঘোষণা করা হলেও লিগ যে শেষ পর্যন্ত আয়োজন সম্ভব না–ও হতে পারে, এই বাস্তবতা বুঝতে পারছে বিসিবিও। বিদ্রোহী ক্লাবগুলোর মতের বিরুদ্ধে গিয়ে লিগ আয়োজন করতে গেলে আসতে পারে আইনি বাধা। সূত্র জানিয়েছে, শেষ পর্যন্ত লিগ আয়োজন করতে না পারলে বা খেলা শুরু করেও লিগ বন্ধ করে দিতে হলে বিসিবি এগুবে ‘প্ল্যান-বি’ নিয়ে।

বিসিবি নির্বাচন নিয়ে ঢাকার ক্লাবগুলোর সংবাদ সম্মেলন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ