পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে ফতুল্লা থানা যুবদলের সহ সাধারণ সম্পাদক সৈকত হাসান ইকবালের উদ্যোগে অসহায় দুস্থদের মাঝে ঈদ উপহার সামগ্রী তুলে দিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদল আহ্বায়ক সাদেকুর রহমান সাদেক। 

বৃহস্পতিবার (২৭শে মার্চ) সকালে ফতুল্লা কাশীপুর খিলমার্কেট এলাকায় ৬০নং গোয়ালবন্দ স্কুল প্রাঙ্গণে প্রতি বছরের ন্যায় ফতুল্লা থানা যুবদলের আয়োজনে ৪শ দুস্থ অসহায় ও দুঃখী নারী, পুরুষ পরিবারের মাঝে ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণ করা হয়।

এসময় ফতুল্লা থানা যুবদলের সহ সাধারণ সম্পাদক মোঃ সৈকত হাসান ইকবাল'র সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জেলা যুবদল আহ্বায়ক সাদেকুর রহমান সাদেক ও প্রধান বক্তা ফতুল্লা থানা বিএনপি সহ সভাপতি মোঃ কবির প্রধান।

জেলা যুবদল আহ্বায়ক সাদেকুর রহমান সাদেক বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশ পালনে আমরা ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণ করেছি। আপনারা কোন অন্যায় কাজের সাথে জড়াবেন না। যেকাজে সমাজের মানুষ কষ্ট পায় সেধরণের কোন কাজ করবেন না। 

সভাপতির বক্তব্যে ফতুল্লা থানা যুবদলের সহ সাধারণ সম্পাদক মোঃ সৈকত হাসান ইকবাল বলেন, প্রতি বছরের ন্যায় এবারও তারেক রহমান এর নির্দেশ পালনে সফল ভাবে ৪শত অসহায় দুস্থদের মাঝে ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণ করেছি।

দেশ নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ তার সুস্থতায় দেশবাসীর কাছে দোয়া চাচ্ছি। ফতুল্লা থানা যুবদল একটি মডেল যুবদল হবে এবং আমার নেতা সাদেকুর রহমান সাদেক থানা যুবদলকে মডেল যুবদলে পরিণত করবে এবং সুন্দর ভালো একটি কমিটি দিবে।

তিনি আরও বলেন, বিগত ১৫ বছর স্বৈরশাসক এর আমলে বিএনপির নেতৃবৃন্দেরকে মানুষের মাঝে যেতে দেওয়া হয় নাই। আমি রাতের অন্ধকারে ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণ করেছি। চুপচাপ করে বিতরণ করতে হয়েছে। আপনারা জানেন সাদেকের বিরুদ্ধে ৩৬টি মামলা হয়েছে।

এছাড়া  বাংলাদেশে বিএনপির নেতৃবৃন্দদের মধ্যে প্রথম মামলার ১নম্বর আসামী আমি। ২নং আসামী সাদেক, ৩নং আসামী এটি এম কামাল। বিএনপির কার্যালয় থেকে আমাাকে প্রথম গ্রেফতার করা হয়।

সেই মামলায় নারায়ণগঞ্জের সদর থানার ওসি আক্তারের নেতৃত্বে হাত-পা বেধে সিলিং ফ্যানের আংটার সাথে ঝুলিয়ে পিটানোর হয়েছে এবং সেই মারধরের পিটানোর শব্দ শামীম ওসমান ও এম সাইফুল্লাহ বাদল চেয়ারম্যানকে ফোনে মাধ্যমে শুনিয়েছেন ওসি আক্তার।

যতবার অচেতন হই বার বার ডাক্তার এনেছে এক পর্যায় আমাকে নাই করে ফেলতে চেয়েছিল ওসি আক্তার। সেই নির্যাতনের কথা এখনও মনে পড়ে। এতো নির্যাতনের পরও বিএনপির কোন নেতৃবৃন্দর নাম প্রকাশ করি নাই। এখনও দলকে ভালোবেসে আছি, থাকব। 

কাশীপুর ৪নং ওয়ার্ড যুবদল সাধারণ সম্পাদক মোঃ বরকত উল্লাহ্'র সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ফতুল্লা থানা যুবদল আহ্বায়ক হাজী মাসুদুর রহমান, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মোঃ ইসমাইল খান, ফতুল্লা থানা বিএনপির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক মোঃ সাগর সিদ্দিকী, এনায়েত নগর ইউনিয়ন যুবদল সাবেক আহ্বায়ক আনিসুর রহমান আনিস, ফতুল্লা থানা যুবদল নেতা সাজ্জাতুল ইসলাম সাদেক। এছাড়া ফতুল্লা ইউনিয়ন যুবদল নেতা আলী আহমেদ, সাবেক ছাত্রদল নেতা পিয়াল হাসান, এনায়েত নগর ইউনিয়ন যুবদল নেতা আব্দুস সালাম, সাহিদ, কাশিপুর ইউনিয়ন যুবদলের আতাউর রহমান শামীম, কাশীপুর ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক ৬নং ওয়ার্ড সাংগঠনিক সম্পাদক তানভির আহমেদ সোহাগ, কাশিপুর ইউনিয়ন যুবদল নেতা মোহাম্মদ লিমন, জামাল দিদার, বাবু, আলামিন ও মিন্টু চাচা, শাকিল, সম্পদ প্রমুখ।
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: য বদল ন র য়ণগঞ জ ত র ক রহম ন ঈদ স দ ক র রহম ন স দ ক ত র ক রহম ন য বদল র স য বদল ন ত ব এনপ র ন য বদল ইকব ল

এছাড়াও পড়ুন:

হিন্দু ব্রাহ্মণ হয়েও কেন ইমাম হোসাইনকে ভালোবাসেন তারা

ভারতে এমন একটি গোষ্ঠী রয়েছে যারা হিন্দু ধর্মের অনুসারী হয়েও মুসলিম ধর্মের অনেক বিষয় মেনে চলেন। কখনও কখনও জুমার নামাজও আদায় করেন। পূর্বপুরুষদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে এই রেওয়াজ মেনে চলে ওই গোষ্ঠীর মানুষেরা। ওই গোষ্ঠীর নাম হুসাইনি ব্রাহ্মণ। এই গোষ্ঠীর বর্তমানের প্রজন্মের অনেকের মধ্যেই কৃষ্ণ প্রেম যেমন আছে, তেমনি ইমাম হোসাইনের প্রতিও প্রেম রয়েছে। হিন্দু ধর্মের হয়েও মুসলিম ধর্মের প্রতি ভালোবাসা থেকে রোজার মাসে কয়েকটি রোজাও পালন করে থাকেন হোসাইনি হিন্দু ব্রাহ্মণরা।

হুসাইনি ব্রাহ্মণরা ইসলাম ও হিন্দু ধর্মের মধ্যে এক বিরল সেতুবন্ধ রচনার কারণেই ভারতের সমাজজীবনে একটি অসাধারণ জায়গা অধিকার করে আছেন। এই গোষ্ঠীর মানুষ সংখ্যায় কম হতে পারেন, কিন্তু স্বকীয়তায় ও ধর্মীয় সম্প্রীতিতে এক উজ্জ্বল জনগোষ্ঠী! পাকিস্তানের সিন্ধ প্রদেশ, ভারতের পাঞ্জাব, মহারাষ্ট্র, রাজস্থান, কাশ্মীর, দিল্লি ও লখনৌর নানা প্রান্তে এখনো বেশ কয়েক হাজার হুসাইনি ব্রাহ্মণ ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসবাস করেন। কোনো কোনো গবেষক জানাচ্ছেন, আরব উপদ্বীপেও বেশ কিছু হুসাইনি ব্রাহ্মণ আছেন।ভারতে হুসাইনি ব্রাহ্মণরা তাদের জীবনচর্যায় হিন্দু ও মুসলিম – দুই ধর্মেরই কিছু কিছু রীতি রেওয়াজ, ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান ও উৎসব পালন করে থাকেন। সেই ধারাবাহিকতায় এ বছরের আশুরা পালনে মহররমের তাজিয়াতেও যোগ দেবেন তাদের অনেকেই।

গবেষক ও ইতিহাসবিদের মতে,  ‘‘হুসাইনি ব্রাহ্মণরা হলেন প্রাচীন ভারত ও ইসলামী বিশ্বের মধ্যে সম্পর্কের এক 'অতুলনীয় নিদর্শন'। স্বৈরাচারী ইয়াজিদ যখন ইমাম হোসাইনকে কারবালার প্রান্তরে সপরিবারে মেরে ফেলার চক্রান্ত করলেন, তখন তিনি বিশ্ব মানবতার উদ্দেশে আহ্বান জানিয়েছিলেন ‘হাল মিন নাসিরিন ইয়ানসুরনা!’ – যার অর্থ কেউ কি কোথাও আছে, যারা আমাদের সাহায্য করতে পারে? সেই ডাকে সাড়া দিলেন সুদূর ভারতের (হিন্দুস্তান) রাজা সমুদ্রগুপ্ত।’’

আরো পড়ুন:

আরবের অনেক দেশ ভারতের অন্তর্ভূক্ত ছিল, তারপর…

ইউরোপীয় গুপ্তচর যেভাবে মক্কায় ঢুকেছিলেন

এ ব্যাপারে গবেষক ও ইতিহাসবিদরাই বা কী বলছেন? আর আজ এত বছর বাদেও হুসেইনি ব্রাহ্মণরা কীভাবে ধরে রেখেছেন তাদের অতি গর্বের একটি ইসলামী পরম্পরা?

ইউফ্রেটিস (ফোরাত) নদীর পানি আটকে দিয়ে ইয়াজিদের সেনারা ততক্ষণে ইমাম হোসাইন ও তার সঙ্গীদের মৃত্যুর পথ তৈরি করে ফেলেছেন। এদিকে রাজা সমুদ্রগুপ্ত তার বীর সৈন্যদের একটি দলকে কারবালায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিলেন, যার নেতৃত্বে ছিলেন বীর যোদ্ধা রিহাব সিধ দত – যিনি পাঞ্জাবের একজন মোহিয়াল ব্রাহ্মণ। কিন্তু দত ও তার সাহসী সেনারা যখন কারবালায় পৌঁছলেন, ততক্ষণে ইমাম হোসাইন শহীদ হয়েছেন। এই ক্ষোভে-দু:খে ভারত থেকে যাওয়া ওই সৈন্যরা স্থির করলেন নিজেদের তরবারি দিয়েই তারা নিজেদের শিরশ্ছেদ করবেন। কিন্তু ইমামের আরব অনুরাগীরা তাদের বোঝালেন, এভাবে জীবন নষ্ট না করে তারা বরং জনাব-ই-মুখতারের বাহিনীতে যোগদান করুন এবং ইমামের মৃত্যুর প্রতিশোধ নেওয়ার লড়াইতে সামিল হোন।’’

ইয়াজিদের বিরুদ্ধে মরণপণ যুদ্ধ করে প্রাণোৎসর্গ করেছিলেনরিহাব দত ও তার বাহিনীর অনেকেই। যা ভারতীয়দের কাছে কারবালার লোকগাঁতার বেদনাদায়ক অংশ হয়ে গিয়েছিলো। পরে বাহিনীর যারা বেঁচে যান, তাদের কেউ কেউ সেখানেই রয়ে যান – কেউ আবার মাতৃভূমি ভারতে ফিরে আসেন।

কারবালার যে অংশটিতে এই বীর ব্রাহ্মণরা বসতি করেছিলেন সেটি পরিচিত ছিল 'আদ-দায়ার-উল-হিন্দিয়া' নামে।

সূত্র: বিবিসি

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ