নোয়াখালীর সদর উপজেলায় নিখোঁজের দুই দিন পর শৌচাগারের সেপটিক ট্যাংক থেকে স্কুলছাত্র আব্দুল হামিদ রায়হানের (১৫) লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে পুলিশ ও নিহতের স্বজনেরা হত্যাকাণ্ডের কারণ জানাতে পারেনি।

বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলার দাদপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ হুগলি গ্রামের নাপিত বাড়ির সেফটিক ট্যাংক থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়। গত মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) রাত ৮টার দিকে বাড়ি থেকে মসজিদে যাওয়ার পথে রায়হান নিখোঁজ হয়।

নিহত রায়হান একই গ্রামের হাজী বাড়ির মো.

আলমগীরের ছেলে। সে স্থানীয় খলিফারহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র ছিল। গ্রেপ্তার মারুফ (২৫) একই বাড়ির মো. সেলিমের ছেলে।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার রাতে ঘর থেকে মসজিদে যাওয়ার পথে রায়হান নিখোঁজ হয়। এরপরের দিন একই বাড়ির তার দূর সম্পর্কের চাচা মারুফকে আটক করে পুলিশে হস্তান্তর করে নিহতের স্বজনেরা। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি রায়হানকে হত্যা করে লাশ সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দেওয়া হয়েছে বলে জানান। পরে তার ভাষ্যমতে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। রায়হানকে হত্যার পরে মুঠোফোনে নিহতের পরিবারের কাছে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন মারুফ।

নিহতের বড় ভাই হারুনুর রশিদ বলেন, ‘‘মারুফের সঙ্গে আমাদের বিরোধ নেই। তিনি কেন আমার ভাইকে হত্যা করেছেন বিষয়টি আমরা জানি না।’’

সুধারাম মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. শেখ কামাল জানান, রায়হান বাড়ি থেকে নামাজ পড়তে যাওয়ার পথে মারুফ ডাব পাড়ার কথা বলে তাকে নাপিত বাড়ির বাগানে নিয়ে যায়। এক পর্যায়ে সেখানে আরো ৩-৪ জন যুবক রায়হানকে ছুরিকাঘাত ও মারধর করে হত্যা করে এবং লাশ ওই বাড়ির সেফটিক ট্যাংকে ফেলে দেয়।

তিনি আরো জানান, পুলিশ অপর আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযানে রয়েছে। বিষয়টি জানাজানি হলে তারা গা ঢাকা দেয়। রায়হানের মরদেহ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রাখা আছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়া গেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।

এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্ততি চলছে বলেও জানান তিনি। 

ঢাকা/সুজন/বকুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

গবিতে ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনরত শিক্ষার্থীকে মারধর, থানায় অভিযোগ

সাভারের আশুলিয়ায় অবস্থিত গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে ধর্ষণে জড়িতদের ‘সন্ত্রাসী’ তকমা দেওয়ায় এবং ধর্ষণকাণ্ডে অবহেলার অভিযোগে শিক্ষকের পদত্যাগ চাওয়াকে কেন্দ্র করে নাসিম (২৫) নামে এক শিক্ষার্থীকে দুই দফা মারধরের ঘটনায় থানায় অভিযোগ করা হয়েছে।

বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় আশুলিয়া থানায় চারজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৪-৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী। গত ৭ ডিসেম্বর দুই দফায় মারধরের শিকার হন তিনি। 

আরো পড়ুন:

নোয়াখালীতে গণপিটুনিতে যুবক নিহত, পরিবারের দাবি, পরিকল্পিত হত্যা

ধামরাইয়ে মোবাইল চুরির অভিযোগে কিশোরকে গাছে বেঁধে মারধর 

অভিযুক্তরা হলেন- গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী মো. রাজিব (২৩), ব্যবসা প্রশাসন বিভাগের তামিম ইকবাল (২৪), সমাজ বিজ্ঞান ও সমাজকর্ম বিভাগের মো. আবির (২৩) ও সোহাগসহ (২৩) অজ্ঞাত ৪-৫ জন। তারা আশুলিয়ার নলাম মির্জানগর এলাকার বাসিন্দা।

ভুক্তভোগী নাসিম (২৫) গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী ও গাজীপুর মহানগরের কাশিমপুরের বাসিন্দা। 

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন। এই ঘটনায় নাসিমসহ অন্য শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করেন। এরই জেরে বিবাদীরা নাসিমের সঙ্গে বিরোধ সৃষ্টি করে হুমকি দিয়ে আসছিলেন। গত ৭ ডিসেম্বর সকাল ১০টার দিকে প্রশাসনিক ভবনের সামনে ১ নম্বর থেকে ৪ নম্বর অভিযুক্ত নাসিমের ওপর হামলা করে। তারা তাকে মারধর করে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় নিলাফুলা জখম করে।

আশপাশে থাকা অন্য শিক্ষার্থীরা তাকে উদ্ধার করে গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়। সেখানে থাকা ৫ নম্বর অভিযুক্তসহ অজ্ঞাত ৪-৫ জন নাসিমকে টানাহেঁচড়া করে আবারো মারধর করে। এ সময় তার পা ইট দিয়ে থেতলে দিয়ে নিলাফুলা জখম করে এবং তুলে নেওয়ার চেষ্টা করে। আশপাশের লোকজন এসে নাসিমকে উদ্ধার করে। পরে তিনি সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন।

হামলার ওই ঘটনার একটি ভিডিও ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যা দিয়ে করা এক মন্তব্যের বিষয়ে রাজিব হোসেন নামে এক যুবক নাসিমকে বিভিন্ন প্রশ্ন করছেন। কথা বলার এক পর্যায়ে নাসিমকে মারধর শুরু করেন তিনি। এসময় তার সঙ্গে সেখানে উপস্থিত অন্যান্যরাও নাসিমকে মারধর শুরু করে।

মারধরের ঘটনার পর ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী নাসিম বলেন, “ধর্ষণের ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর ভুক্তভোগীর অভিযোগ দেওয়া সত্ত্বেও প্রক্টরিয়াল বডির সভাপতিসহ যে সব শিক্ষক বিষয়টিকে আমলে নেননি, তাদের পদত্যাগ দাবি করে গত কয়েকদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন চলছিল। যার সঙ্গে আমরাও যুক্ত ছিলাম। সেদিনও আমাদের কর্মসূচি ছিল। সেখানে গিয়েই আমি হামলার শিকার হই। আমি এই ঘটনায় বিচার চাই।” 

আশুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রুবেল হাওলাদার বলেন, “আমরা অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।”

ঢাকা/সাব্বির/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ