ফতুল্লায় অগিকান্ডে প্রতিবন্ধি যুবকের মৃত্যু
Published: 27th, March 2025 GMT
ফতুল্লায় কুপির আগুনে ছাপড়া ঘর পুড়ে প্রতিবন্ধি যুবকের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় ফতুল্লার নন্দলালপুর এলাকায় ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রেললাইনের পাশে বস্তিতে এঘটনা ঘটে। নিহত সুরুজ( ২০) ওই বস্তির মৃত. ফিরোজ মিয়া ও সাহিদা বেগমের ছেলে।
ফতুল্লা মডেল থানার এসআই শহিদুল ইসলাম জানান, সুরুজ শারিরীক প্রতিবন্ধি হাটতে পারেনা। তার বাবা নেই মা ভিক্ষা করে সংসার চালায়। রাতে ঘরের মধ্যে কেরোসিন তেলের কুপি জ্বালিয়ে সুরুজকে রেখে তার মা শাহিদা বেগম বাহিরে যায়। এরমধ্যে কুপি থেকে বস্তির ছাপড়া ঘরে আগুন ধরে যায়।
তখন মুহুর্তের মধ্যে পাশের আরো দুটি ঘরেও আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এসময় আশপাশের লোকজন ও ফায়ার সার্ভিস আসার আগেই ঘরসহ পুড়ে ছাই হয়ে যায় সুরুজ।
এবিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার ওসি শরিফুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি দুঃখজনক। নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী লাশ ময়না তদন্ত ছাড়া দাফনের জন্য অনুরোধ জানিয়েছে। বিষয়টি উধ্বর্তন অফিসারদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
.
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
‘আমি আল্লাহর কাছে বিচার দিলাম’
খুলনায় আদালত চত্বরের প্রধান ফটকের সামনের সড়কে শীর্ষ সন্ত্রাসী হাসিব হাওলাদার ও ফজলে রাব্বি রাজন হত্যার ঘটনায় মামলা করেনি পরিবার। এর ফলে পুলিশ বাদী হয়ে বুধবার বিকেলে খুলনা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছে।
এদিকে, হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে আটক রিপন শেখ জড়িত নয় বলে দাবি করেছে তার পরিবার এবং হত্যাকাণ্ডের শিকার হাসিব হাওলাদারের ছোট ভাই সুমন হাওলাদার।
খুলনা সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল হাই জানান, জোড়া হত্যার ঘটনায় দুই পরিবারের কেউ মামলা না করায় খুলনা থানার এস আই আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলার তদন্ত করবেন এস আই মো. মিয়ারব হোসেন।
তিনি আরো জানান, অজ্ঞাতনামা ১৫/১৬ জন আসামী পূর্ব শত্রুতার জের ধরে পরিকল্পিতভাবে গুলি করে ও চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয় দুজনকে। ভিকটিমদের বাবা-মা ও স্বজনরা এই বিষয়ে কোনো অভিযোগ করেনি। তবে বিষয়টি ধর্তব্য অপরাধ হওয়ায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ আলোচনা করে অজ্ঞাতনামা ১৫/১৬ জন আসামীর বিরুদ্ধে এজাহার দায়ের করতে দেরী হয়েছে।
পুলিশ জানায়, রবিবার (৩০ নভেম্বর) দুপুরে খুলনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের প্রধান গেটের সামনের সড়কে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করা হয় হাসিব হাওলাদার ও ফজলে রাব্বি রাজনকে। তারা খুলনার শীর্ষ সন্ত্রাসী পলাশ বাহিনীর সদস্য। এই জোড়া হত্যার সঙ্গে আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী রনি চৌধুরী বাবু ওরফে গ্রেনেড বাবুর সম্পৃক্ততা রয়েছে। ঘটনার পরপর চারটি কারণ সামনে রেখে পুলিশ তদন্ত করছে। দুই পরিবার নিরাপত্তাজনিত কারণে মামলা দায়ের করেনি বলে জানিয়েছে।
রাজনের বাবা মো. এজাজ শেখ জানান, তিনি তার ছেলে হত্যার বিচার আল্লাহর আদালতে দিয়েছেন।
তিনি বলেন, “বিচারতো আদালতে হয়ে থাকে। কিন্তু আদালতে হাজিরা দিতে এসে লাশ হয়ে বাড়ি ফিরলে কার কাছে বিচার চাইব? চারপাশে প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বাসা ও অফিস রয়েছে। এমন একটি জায়গায় নিরাপত্তার চিত্র যদি এমন হয় তাহলে মানুষ কোথায় যাবে?”
এজাজ শেখ বলেন, আমি কোনো মামলা করব না। মামলা করে কি হবে? আমার একটা মাত্র ছেলে তাকে তো ওরা মেরে ফেলেছে। এখন মামলা করলে কী আমার ছেলেকে ফিরে পাব? আমার বা আমার পরিবারের নিরাপত্তা কে দেবে? আমি আল্লাহর কাছে বিচার দিলাম। তিনিই উত্তম বিচার করনেওয়ালা। বন্ধুর উপকার করতে গিয়ে আমার ছেলে মিথ্যা মামলায় ফেঁসেছে। জেলে থাকা অবস্থায় আমার ছেলের বিরুদ্ধে হত্যা ও অস্ত্র মামলাসহ ছয়টি মামলা দেয়া হয়েছে। সেই মামলায় হাজিরা দিতে গিয়ে আজ আমার ছেলে সন্ত্রাসীদের গুলিকে নিহত হয়েছে।”
এদিকে, হত্যার সাথে জড়িত সন্দেহে ৫৪ ধারায় আটক রিপন শেখের স্ত্রী আঁখি বুধবার দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন হাসিবের ছোট ভাই সুমন হাওলাদোর।
তিনি বলেন, “আমরা মামলা দেব না। হাসিবের দুই শিশু কন্যাসহ পরিবারের নিরাপত্তার কারণেই আমরা মামলার দিকে যাচ্ছি না। তাছাড়া হত্যার সাথে জড়িত সন্দেহে রিপনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সে আমার ঘনিষ্ট বন্ধু ও প্রতিবেশী। তাকে হয়রানি করার জন্য গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আঁখি বলেন, “রিপন শেখ ঘটনার দিন ফকিরহাটের ফলতিতা পাইকারী মাছের বাজারে মাছ কিনতে গিয়েছিল। দুপুর সাড়ে ১২টায় খুলনার আদালতের সামনে যখন হত্যাকান্ড সংগঠিত হয় তখন সে ওই বাজারে ছিল, যার ভিডিও ফুটেজও দেখানো হয়। এছাড়া রিপন ‘ইহুদি’ বাহিনীর সদস্য ছিল না। ২০০৩ সালে ‘ইহুদি’ বাহিনী বিলুপ্ত হয়, তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১১ বছর। সে কোনো অপরাধের সঙ্গে জড়িত নয়, তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা বা জিডি নেই। ”
ঢাকা/নুরুজ্জামান/শাহেদ