যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে দ্বিতীয় দিনের মতো অনুষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় মেলা। নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের ডাইভার্সিটি প্লাজায় ও সানাই পার্টি সেন্টারে আয়োজিত এ মেলায় অভিবাসী বাংলাদেশিদের উপচে পড়া ভিড় ছিল। একই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে প্রবাসী আয় পাঠানোয় অবদান রাখায় ৯টি প্রতিষ্ঠান ও ৭ ব্যক্তিকে পুরস্কৃত করা হয়েছে।

গত শুক্রবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্কের লা গুয়ার্ডিয়া এয়ারপোর্ট ম্যারিয়ট হোটেলে প্রবাসী আয় মেলা উদ্বোধন করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রে চতুর্থবারের মতো এ মেলা আয়োজন করা হয়েছে। আজ রোববারও (২০ এপ্রিল) নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের সানাই পার্টি হলে এ মেলা চলে।

বাংলাদেশে প্রবাসী আয় পাঠানোয় ভূমিকা রাখায় এবং যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ কমিউনিটিতে সেরা পরিষেবা দেওয়ায় বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত করা হয়। এদের মধ্যে বাংলাদেশে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স পাঠানোয় প্রথম পুরস্কার পেয়েছে সোনালী ব্যাংক। আর জনতা ব্যাংক দ্বিতীয় ও ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ তৃতীয় পুরস্কার পেয়েছে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে অক্টোবর ২০২৪ থেকে মার্চ ২০২৫ সময়ের তথ্য-উপাত্ত বিবেচনা করা হয়েছে।

ব্যাংক–বহির্ভূত প্রতিষ্ঠানের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স পাঠানোয় প্রথম পুরস্কার পেয়েছে মাস্টারকার্ড। এ ছাড়া মানিগ্রাম দ্বিতীয় ও রিয়া ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস তৃতীয় পুরস্কার পেয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি কমিউনিটিতে সেরা পরিষেবা (বেস্ট সার্ভিস) দেওয়ার জন্য সোনালী এক্সচেঞ্জ, বিএ এক্সপ্রেস ও স্ট্যান্ডার্ড এক্সপ্রেসকে পুরস্কার দেওয়া হয়। তাদের পাশাপাশি পুরস্কার পেয়েছেন রিয়া মানি ট্রান্সফারের কার্লোস, আকাশ ও মিন্টো সাহা। আরও পুরস্কার পেয়েছেন—ট্রান্সফার সলিউসনসের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রতীক খোয়ালা, জ্যেষ্ঠ ভাইস প্রেসিডেন্ট মালিক ধানী ও ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্ক কোরিটোরি এবং ট্রেজারির জ্যেষ্ঠ ভাইস প্রেসিডেন্ট ইন্দ্রনীল গাঙুলি।

প্রবাসী আয় মেলার দ্বিতীয় দিনে বেলা ১১টায় নিউইয়র্কে অবস্থিত বাংলাদেশ কনস্যুলেটে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। একই স্থানে বিকেলে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে প্রবাসী আয়সংশ্লিষ্ট কোম্পানির প্রধান নির্বাহীদের মধ্যে গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো.

হাবিবুর রহমান।

বৈঠকে প্যানেল আলোচক ছিলেন সোনালী এক্সচেঞ্জের সিইও মোহাম্মদ মহসিন কবির, বিএ এক্সপ্রেস ইউএসএের সিইও মো. আতাউর রহমান, প্লাসিড এক্সপ্রেসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কামাল ইউ আহমেদ, স্ট্যান্ডার্ড এক্সপ্রেসের প্রেসিডেন্ট ও সিইও মোহাম্মদ মালেক, মার্কেন্টাইল এক্সচেঞ্জ হাউসের (ইউকে) চেয়ারম্যান এম আমানুল্লাহ, সানম্যান গ্লোবাল এক্সপ্রেস করপোরেশনের সিইও মাসুদ রানা।

প্রবাসী আয় মেলায় ঢাকা ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, ইসলামী ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক ও এনসিএল ব্যাংকের স্টল রয়েছে। প্রতিদিনই এসব স্টলে প্রবাসী বাঙালিদের বেশ ভিড় দেখা গেছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রস ক র প ন উইয়র ক আয় ম ল অন ষ ঠ প রব স

এছাড়াও পড়ুন:

নিউইয়র্কসহ যুক্তরাষ্ট্রের ২১ অঙ্গরাজ্যে খাদ্যসহায়তা বন্ধের হুমকি ট্রাম্প প্রশাসনের

যুক্তরাষ্ট্রে যেসব অঙ্গরাজ্য ফেডারেল খাদ্যসহায়তা কর্মসূচির সুবিধাভোগীদের তথ্য-উপাত্ত ফেডারেল সরকারের কাছে হস্তান্তরের নির্দেশ মানতে চাইছে না, তাদের তহবিল বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। গতকাল মঙ্গলবার ট্রাম্প প্রশাসনের কৃষিমন্ত্রী ব্রুক রোলিন্স এমন হুমকি দিয়েছেন। তথ্য-উপাত্ত না দিতে ইতিমধ্যে ডেমোক্র্যাট সমর্থিত অঙ্গরাজ্যগুলো আইনি লড়াই চালাচ্ছে।

গতকাল মঙ্গলবার মার্কিন মন্ত্রিপরিষদ বছরের শেষ বৈঠকটি করেছে। বৈঠক চলাকালে রোলিন্স মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের বিরুদ্ধে ২১টি অঙ্গরাজ্য এবং ডিস্ট্রিক্ট অব কলাম্বিয়া কর্তৃপক্ষের দায়ের করা মামলার বিষয়ে কথা বলেন।

যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি দপ্তর (ইউএসডিএ) অঙ্গরাজ্যগুলোর কাছ থেকে সাপ্লিমেন্টাল নিউট্রিশন অ্যাসিসট্যান্স প্রোগ্রামের (এসএনএপি) সুবিধাভোগীদের পরিচয়সংক্রান্ত তথ্য চাওয়া নিয়ে এ মামলার সূত্রপাত হয়েছে। এসএনএপি কর্মসূচিকে ‘ফুড স্ট্যাম্পস’ বলেও ডাকা হয়ে থাকে। এ কর্মসূচির আওতায় নিম্ন আয়ের পরিবারগুলো সাশ্রয়ী মূল্যে খাদ্যসামগ্রী কিনতে পারে।

২০২৪ অর্থবছর নাগাদ এই কর্মসূচির ওপর নির্ভরশীল মানুষের সংখ্যা ছিল প্রায় ৪ কোটি ১৭ লাখ, যা মোট মার্কিন বাসিন্দাদের প্রায় ১২ শতাংশ।

ইউএসডিএর নির্দেশ মানতে গেলে অঙ্গরাজ্যগুলোকে সামাজিক নিরাপত্তা নম্বর, জন্মতারিখ ও বাড়ির ঠিকানার মতো তথ্যগুলো ফেডারেল কর্তৃপক্ষের কাছে সরবরাহ করতে হবে। সমালোচকদের আশঙ্কা, এভাবে তথ্য হস্তান্তর করা হলে তাতে ব্যক্তিগত গোপনীয়তার লঙ্ঘন হতে পারে।

তবে গতকাল মন্ত্রিসভার বৈঠকে রোলিন্স বলেন, সম্ভাব্য জালিয়াতি চিহ্নিত করা এবং মার্কিন করদাতাদের সুরক্ষার জন্য এই তথ্য প্রয়োজন।

রোলিন্স বলেন, ‘আমরা প্রথমবারের মতো সব অঙ্গরাজ্যকে তাদের তথ্য-উপাত্ত ফেডারেল সরকারের কাছে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছি। আমরা চাইছি তাদের সঙ্গে কাজ করার মধ্য দিয়ে ইউএসডিএ যেন এসব জালিয়াতি নির্মূল করতে পারে এবং নিশ্চিত হতে পারে যে তারা সত্যিই ফুড স্ট্যাম্পের যোগ্য।’

রোলিন্স আরও বলেন, ‘রিপাবলিকান ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ২৯টি অঙ্গরাজ্য তথ্য দিতে রাজি হয়েছে, যা প্রত্যাশিতই ছিল। এই জালিয়াতি সম্পর্কিত সব তথ্য-উপাত্তও মূলত এখান থেকেই পাওয়া যায়। কিন্তু ক্যালিফোর্নিয়া, নিউইয়র্ক ও মিনেসোটার মতো ২১টি অঙ্গরাজ্য, যেগুলো ডেমোক্রেটিক ঘাঁটি বলে পরিচিত, তারা এখনো না বলে যাচ্ছে।’

এর ফলে ওই ডেমোক্র্যাট-সমর্থিত অঙ্গরাজ্যগুলো আর তাদের এসএনএপি সুবিধাভোগীদের জন্য নির্ধারিত ফেডারেল সহায়তা পাবেন না বলে উল্লেখ করেন রোলিন্স।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘সুতরাং আগামী সপ্তাহ থেকে আমরা শুরু করে দেব এবং ওই সব অঙ্গরাজ্য আমাদের নির্দেশ না মানা পর্যন্ত আমরা ফেডারেল তহবিল পাঠানো বন্ধ রাখব।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুরতা বন্ধে নিউইয়র্ক ফ্যাশন উইক যে সিদ্ধান্ত নিল
  • নিউইয়র্কসহ যুক্তরাষ্ট্রের ২১ অঙ্গরাজ্যে খাদ্যসহায়তা বন্ধের হুমকি ট্রাম্প প্রশাসনের