শমশেরনগর বাজার ময়লার স্তূপে বন্ধ নালার মুখ
Published: 3rd, May 2025 GMT
কমলগঞ্জ উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ হাট শমশেরনগর কাঁচাবাজারের ময়লা-আবর্জনা ফেলে চা বাগানের ঝিলের পানিপ্রবাহের নালার মুখ বন্ধ হয়ে গেছে। ময়লা পানি উপচে পড়ছে রাস্তার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে এসব ময়লা পানি মাড়িয়ে চলাচল করছেন শিক্ষার্থী, মসজিদের মুসল্লি ও সাধারণ মানুষ। নালার ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কারের দায়িত্ব ইজারাদারের হলেও নতুন ও পুরোনো ইজারাদারের ঠেলাঠেলিতে জনদুর্ভোগ ব্যাপক আকার ধারণ করেছে।
কমলগঞ্জ উপজেলার সবচেয়ে বড় হাট হচ্ছে শমশেরনগর বাজার। এখানে প্রতিদিন ভোর থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত বেচাকেনা চলে। কমলগঞ্জ, কুলাউড়া ও রাজনগর উপজেলার কমপক্ষে ২৫টি ইউনিয়নের মানুষজন এ বাজারে নিত্য আসা-যাওয়া করেন। ফলে এখানকার কাঁচাবাজার ব্যস্ত থাকে। শমশেরনগর কাঁচাবাজারের সব ময়লা ফেলা হয় শমশেরনগর-কমলগঞ্জ সড়কের আইডিয়াল কিন্ডারগার্টেন ও হাজী মো.
হাজী মো. উস্তওয়ার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরে আলম সিদ্দিক বলেন, স্কুলে এখন এসএসসি পরীক্ষা চলছে। নালার মুখ বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা রাস্তার ময়লা পানি মাড়িয়ে কেন্দ্রে আসছে। আইডিয়াল কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষক আইনুন নিশাত বলেন, গত বছরও ভরা বর্ষায় এ নালার মুখ বন্ধ থাকায় স্বাভাবিক পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে ঝিলের পানি তাদের স্কুলে ও আশপাশের বাসাবাড়িতে উঠেছিল। পরে এলাকাবাসী মিলে নালার মুখ পরিষ্কার করলে স্বাভাবিক পানিপ্রবাহ নিশ্চিত হয়।
শমশেরনগরের ইউপি সদস্য ইয়াকুব আলী বলেন, বাজারের ময়লা-আবর্জনা ও ঝিলের পানিপ্রবাহের কারণে নালার মুখ বন্ধ হয়। চা বাগানের বিভিন্ন টিলার বৃষ্টির পানি নেমে এ নালা দিয়ে প্রবাহিত হয়। এখন নালার মুখ না খুলে দিলে ঝিলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে চা প্লান্টেশন এলাকায় পানি প্রবেশ করবে। এক সপ্তাহে দুই বার চা বাগান থেকে এ নালার মুখ পরিষ্কার করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। দেয়ালের বাইরের অংশের অবৈধ স্থাপনার কারণে আবর্জনা পরিষ্কার করতে পারেনি তারা।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ময়ল র স ত প ন ল র ম খ বন ধ শমশ রনগর প ন প রব হ কমলগঞ জ পর ষ ক র র ময়ল
এছাড়াও পড়ুন:
অস্ত্রসহ সুন্দরবনের দুই ‘জলদস্যু’ আটক
সাতক্ষীরার শ্যামনগরে নজির গাজী (৪৯) ও দিদারুল ইসলাম (৩৮) নামে দুই ’জলদস্যুকে’ আটক করেছে পুলিশ। সোমবার রাত সাড়ে ৯টা ও ১১টার দিকে উপজেলার উপকুলবর্তী যতীন্দ্রনগর ও মীরগাং এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়। এসময় আটক দুই জলদস্যুর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তাদের ব্যবহৃত নৌকা থেকে একটি একনলা বন্দুক উদ্ধার করে পুলিশ। মঙ্গলবার সকালে বিষয়টি সমকালকে নিশ্চিত করে শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. হুমায়ুন কবির মোল্যা।
এর আগে সোমবার রাত আটটার দিকে সুন্দরবন থেকে লোকালয়ে উঠে আসার সময় স্থানীয়দের ধাওয়ার মুখে অপর কয়েক সহযোগিসহ এসব জলদস্যুরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। আটকরা হলেন- শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের কদমতলা গ্রামের নওশাদ গাজী এবং আশাশুনি উপজেলার চাকলা গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে দিদারুল ইসলাম।
আবু হামজা, সিদ্দিক হোসেন ও আকবর আলীসহ স্থানীয়রা জানায়, রাত সাড়ে আটটার দিকে অপরিচিত পাঁচ/সাত জন ব্যক্তি সুন্দরবন তীরবর্তী যতীন্দ্রনগর বাজারে যায়। এসময় নির্দিষ্ট গন্তব্যে যাওয়ার জন্য তারা মাইক্রো বা ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলের জন্য কথা বলছিলেন। একপর্যায়ে সন্দেহের বশবর্তী হয়ে নাম-পরিচয়সহ সুন্দরবন এলাকায় আসার কারণ জানতে চাইলে তারা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এসময় যতীন্দ্রনগর বাজারে উপস্থিত লোকজন ধাওয়া করে দিদারুলকে ধরে পুলিশকে খবর দেয়। পরবর্তীতে শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ হুমায়ুন কবির ঘটনাস্থলে পৌঁছে নজীরকে আটকের পাশাপাশি তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওই চক্রের ব্যবহৃত মাছ শিকারের নৌকার মধ্যে থেকে একটি একনলা বন্দুক ও একটি দা উদ্ধার করে।
এদিকে স্থানীয়রা জানিয়েছে, জোনাব বাহিনী এখন সুন্দরবনে খুব বেশি তৎপর না। বরং নজীর, তার ভাই নবাব ও ছেলে আব্দুর রহিম এবং মুন্সিগঞ্জ আটিরউপর এলাকার আছাদুলসহ কয়েকজনকে নিয়ে জোনাবের নামে সুন্দরবনে দস্যুতায় লিপ্ত। সোমবার রাতে নজীর আলীকে আটকের পরপরই তার ছেলে আব্দুর রহিম ও ভাই নবাব ঘটনাস্থল থেকে সটকে পড়েন।
আটক নজীর আলীর ভাষ্য, তিনি সুন্দরবনের ত্রাস কুখ্যাত জোনাব বাহিনীর সদ্যদের উপরে তুলে দেওয়া এবং সুন্দরবনে নামিয়ে দেয়ার কাজ করেন। সোমবার ১০ হাজার টাকার চুক্তিতে জোনাব বাহিনীর দুই সদস্যকে যতীন্দ্রনগর বাজার পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্বে ছিলেন। বনবিভাগের অনুমতি নিয়ে সুন্দরবনে যেয়ে মাছ শিকারের পাশাপাশি তারা পরিচিত জলদস্যুদের উপরে নিচে উঠানামার কাজ করেন বলেও দাবি তার। উপরে উঠে যাওয়া দুই জলদস্যু উদ্ধারকৃত অস্ত্রটি তার নৌকার মধ্যে রেখে যায় বলেও তিনি দাবি করেন।
দিদারুল জানান, তিনি নজীর আলীর শ্রমিক হিসেবে সুন্দরবনে যাওয়া জেলেদের জিম্মি করারসহ মুক্তিপণ আদায়ের কাজ করেন। লোকারয়ে পৌঁছে দেওয়া দুই জলদস্যুকে সুন্দরবনের পুটেরদুনে এলাকা থেকে নিয়ে আসার কথাও নিশ্চিত করেন তিনি। তবে তার কাছে মোবাইলের পাওয়ার ব্যাঙ্কসহ নানান সরঞ্জামাদির বিষয়ে জানতে চাইলে নিরুত্তর থাকেন।
এদিকে অস্ত্র উদ্ধারসহ দু’জনকে আটকের বিষয়ে শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. হুমায়ুন কবির মোল্যা জানান, নজীরের দেওয়া তথ্যে নৌকায় থাকা ককসিটের নিচে বিশেষ কায়দায় লুকানো অবস্থায় একটি একনলা বন্দুক উদ্ধার হয়েছে। আটকের পর উভয়কে শ্যামনগর থানায় নেওয়া হয়েছে। তারা মাছ শিকারির ছদ্মবেশে সুন্দরবনে প্রবেশ করতেন বলে প্রাথমিক তথ্য মিলেছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বাহিনীর নাম-পরিচয়সহ বিস্তারিত তথ্য জানানো হবে।