চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার মইজ্জারটেক-ব্রিজঘাট সড়ক প্রায় তিন ঘণ্টা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন গোল্ডেন সন লিমিটেড নামে একটি কারখানার শ্রমিকেরা। বকেয়া বেতন পরিশোধ করার দাবিতে আজ রোববার সকাল ৬টা থেকে সকাল পৌনে ৯টা পর্যন্ত শ্রমিকদের এই অবরোধ কর্মসূচি চলে। পরে সেনাবাহিনীর একটি দল এসে শ্রমিকদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়।

গোল্ডেন সন লিমিটেড নামের কারখানাটি অবস্থিত উপজেলার চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের খোয়াজনগর গ্রামে সৈন্যারটেক এলাকায়। এর বিভিন্ন ইউনিটে ইলেকট্রনিক ফ্যান, খেলনা, পারফিউমসহ নানা ধরনের পণ্য উৎপাদন করা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভোরে দুই মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে কারখানার ফটকের সামনে সড়ক অবরোধ শুরু করেন শ্রমিকেরা। অবরোধের কারণে সড়কের দুই পাশে প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিভিন্ন ধরনের যানবাহন আটকে পড়ে।

বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা জানান, গত মার্চ ও এপ্রিলের বেতন শোধ করেনি কারখানা কর্তৃপক্ষ। এর বাইরে কিছু শ্রমিক রয়েছেন, যাঁরা বেশ কয়েক মাস ধরে বেতন পাননি। ফলে বাসাভাড়াসহ বিভিন্ন ব্যয় নির্বাহ করতে বিপাকে পড়তে হচ্ছে তাঁদের।

শ্রমিকদের অভিযোগের বিষয়ে জানতে কারখানার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ( সিইও) আমিনুল ইসলাম এবং মানবসম্পদ ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো.

রুম্মান ইমামকে ফোন করা হয়। তাঁরা দুজনই কল রিসিভ করেননি। তাই তাঁদের বক্তব্যও জানা সম্ভব হয়নি।

জানতে চাইলে কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ শরীফ বলেন, কারখানার মালিকপক্ষের সঙ্গে শ্রমিকদের আলোচনা হয়েছে। শিগগিরই দুই মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধ করা হবে, এমন আশ্বাসে শ্রমিকেরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অবর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

বর্ষায় পাহাড়ে ঘুরতে যাওয়ার আগে যা জানতেই হবে

পাহাড়ের পথে পথে অ্যাডভেঞ্চার। বর্ষায় পাহাড় মানেই রোমাঞ্চের রাজ্য। তারুণ্যের উদ্দীপনায় পাহাড়চূড়া কিংবা ঝিরিপথ জয়ের আনন্দটা অসাধারণ। তবে পাহাড়ি পথে নিরাপদে চলতে হলে নিজেকেও ভালোবাসা চাই। আপনার প্রাণের স্পন্দনেই তো ভ্রমণের নেশা। সেই নেশাকে সার্থক করে তুলতে শরীর আর মনের প্রস্তুতিটাও হতে হবে ঠিকঠাক। নইলে ভ্রমণের আনন্দ মাটি হতে পারে নিমেষেই। এ সম্পর্কে বলছিলেন ধানমন্ডির পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মেডিসিন কনসালট্যান্ট ডা. সাইফ হোসেন খান

শরীরটা হোক ফিট

পাহাড়ি পথে চলা খুব সহজ নয়। তাই পাহাড়ে অ্যাডভেঞ্চারের পরিকল্পনা করলে অন্তত দুই-তিন সপ্তাহ আগে থেকেই অনেকটা পথ হাঁটার অভ্যাস করা উচিত। সমতলে নিয়মিত হাঁটার এই চর্চা পাহাড়ি পথে আপনার পাথেয় হবে। দুর্গম এলাকায় যাওয়ার পরিকল্পনা করলে অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের কাছে জেনে নিন সেখানে যাওয়ার ঝক্কি আদতে কতটা। মনে রাখবেন, সবার দেহ সব রকমের চ্যালেঞ্জ সইতে সক্ষম না-ও হতে পারে। এ নিয়ে লজ্জার কিছু নেই। আপনি যতটা ধকল সইতে পারবেন, তার চেয়ে কঠিন কোনো পরিকল্পনা করবেন না। ‘সহজ ট্যুর’-এ অভ্যস্ত হয়ে উঠলে পরবর্তী সময়ে তুমুল অ্যাডভেঞ্চারের সুযোগ পাবেন।

সুস্থতা ও নিরাপত্তার অনুষঙ্গ

পিচ্ছিল পাহাড়ি পথে চলার উপযোগী জুতা চাই অবশ্যই। এ ব্যাপারে কোনো আপস করবেন না। অতিরিক্ত আঁটসাঁট বা অতিরিক্ত ঢিলেঢালা পোশাক—কোনোটিই অ্যাডভেঞ্চারের উপযোগী নয়। যেখানে যাচ্ছেন, সেখানে লাইফ জ্যাকেট প্রয়োজন হলে অবশ্যই সঙ্গে নেবেন। রাতে যেখানে থাকবেন, সেখানে মশারির ব্যবস্থা আছে কি না, নিশ্চিত হয়ে নিন। প্রয়োজনমাফিক মসকিউটো রিপেল্যান্ট ব্যবহার করুন। বর্ষায় পাহাড়ে জোঁকের উপদ্রব বেশি। মোজার ভেতর পায়জামা বা প্যান্ট গুঁজে নিতে পারলে জোঁকে ধরার ঝুঁকি কম থাকে। তবে ঝিরিপথে এই পদ্ধতি অবলম্বন করা সম্ভব না-ও হতে পারে। তাই জোঁকে ধরার ঝুঁকি থেকেই যায়। জোঁকে ধরলে তা সরানোর জন্য কাজে লাগাতে পারেন শক্ত কাগজ।

আরও পড়ুনভ্রমণে সুস্থ থাকতে এই বিষয়গুলো খেয়াল রাখুন০৫ নভেম্বর ২০২২জোঁক ধরলে কী করবেন

অধিকাংশ ক্ষেত্রেই জোঁক রক্ত খেয়ে নিজে থেকে খসে যায়। জোঁক ছাড়ানোর জন্য লবণ ছিটিয়ে দেওয়ার প্রচলন আছে। তবে পদ্ধতিটি ভুল। জোঁক ছাড়ানোর জন্য লবণ দিলে জোঁক মারা যায় আর তার দেহ থেকে কিছু জলীয় অংশ মানুষের দেহের ওই ক্ষত দিয়ে প্রবেশ করে। ফলে বাড়ে সংক্রমণের ঝুঁকি। তাই জোঁক ছাড়াতে হবে জীবিত অবস্থায়। যেখানে জোঁক ধরেছে, সেই অংশের ত্বক টেনে ধরে রাখতে হবে। এই অবস্থায় জোঁকের মাথার দুপাশ থেকে কাগজের সাহায্যে ধরে জোঁকটিকে টেনে সরিয়ে দূরে ফেলে দিতে হবে। তুলনামূলক চিকন অংশটাই জোঁকের মাথার দিক।

মনের প্রস্তুতিই বেশি জরুরি

পাহাড় ভ্রমণে মন হবে ফুরফুরে। সেই ভ্রমণ নিয়ে রোমাঞ্চকর গল্প হবে, অ্যাডভেঞ্চারের ছবি-ভিডিও আপলোড হবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে, আনন্দের রেশ থাকবে বহুদিন। তবে তার জন্য আপনাকে এবং আপনার দলের সদস্যদের থাকতে হবে নিরাপদ। ভ্রমণের আগেই নিজের কাছে প্রতিজ্ঞা করুন, কোনো পরিস্থিতিতেই ভ্রমণবিষয়ক কোনো নির্দেশনা অমান্য করবেন না। মনে রাখুন এসব বিষয়—

এমন বহু দুর্গম এলাকা আছে, যেখানে যাওয়া নিষেধ। রোমাঞ্চের নেশায় সেসব জায়গায় যাওয়া যাবে না। ঝরনার উৎস খুঁজতে উৎসাহী হয়ে পিচ্ছিল পাহাড় বেয়ে ওঠার চেষ্টা করবেন না।

সাঁতার জানলেও পানিতে না নামাই ভালো।

ঝরনায় ভিজতে গেলেও স্রোতের নিচে সরাসরি মাথা বা ঘাড় না রাখাই ভালো। কখনো কখনো ওপর থেকে শক্ত নুড়ি পড়ে আহত হওয়ার ভয় থাকে।

পাহাড়ি কোনো পথে একা চলবেন না।

দুর্গম পথে নিজের দলের সঙ্গে অবশ্যই গাইড নেবেন।

ছবি বা ভিডিও ধারণের সময়ও নিরাপত্তার দিকে খেয়াল রাখুন।

আবহাওয়া খারাপ থাকলে, পাহাড়ি ঢল নামলে ভ্রমণ পরিকল্পনা বদলাতে হতে পারে, সেই মানসিক প্রস্তুতিও রাখুন।

আরও পড়ুনজলপ্রপাত দেখতে গিয়ে দুর্ঘটনা এড়াতে যে ১০টি কথা মনে রাখতেই হবে০৬ জুলাই ২০২৩

সম্পর্কিত নিবন্ধ