সংবাদমাধ্যমের জবাবদিহি থাকার পাশাপাশি সাংবাদিকদের প্রশ্ন করার সুযোগ থাকার কথা বলেছেন তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। তিনি বলেন, ‘সাংসদদের প্রশ্ন করা যাবে, বিচার বিভাগের কর্মকর্তাদের প্রশ্ন করা যাবে, গোয়েন্দা সংস্থাকে প্রশ্ন করা যাবে, কিন্তু সাংবাদিকদের প্রশ্ন করা যাবে না। আমি চাই না, এই জিনিসটা থাকুক।’

আজ রোববার রাজধানীর ধানমন্ডিতে মাইডাস সেন্টারে ‘ব্রেভ নিউ বাংলাদেশ: রিফর্ম রোডম্যাপ ফর প্রেস ফ্রিডম’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাহফুজ আলম এ কথা বলেন। বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে যৌথভাবে এই সেমিনার আয়োজন করে ইউনেসকো ঢাকা অফিস, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এবং সুইডেন দূতাবাস।

মাহফুজ আলম বলেন, ‘সংবাদমাধ্যমের যারা নীতিনির্ধারক আছেন, যেখান থেকে তাদের নিউজ বা মতামত তৈরি হয়, সেটাকে অবশ্যই প্রশ্ন করার সুযোগ থাকা উচিত।
বিটিভি, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) ও বাংলাদেশ বেতারকে একত্র করে একটি সম্প্রচার প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করার পক্ষে থাকার কথা জানিয়ে তথ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘তিনটি প্রতিষ্ঠানকে এক করার পক্ষে আমি। তবে স্বায়ত্তশাসনের বিষয়ে আরও আলোচনা হতে পারে।’

সাংবাদিকতা সুরক্ষা আইন তাৎক্ষণিকভাবে করা সম্ভব মন্তব্য করে মাহফুজ আলম বলেন, ‘গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনে “ওয়ান হাউজ ওয়ান মিডিয়া” যে নীতির কথা বলা হয়েছে, তা দীর্ঘ প্রক্রিয়া। সাংবাদিকতা সুরক্ষা আইনের কিছু কিছু ধারা নিয়ে কমিশনের সঙ্গে বসা দরকার, নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে পাঠানো দরকার কোনো লুপ হোল আছে কিনা জানার জন্য। এটুকুর জন্য আমরা অপেক্ষায় আছি। এরপর আমরা এটি কেবিনেটে তুলব। আইন আকারে যেন আসে, চেষ্টা করব।’

‘ব্রেভ নিউ বাংলাদেশ: রিফর্ম রোডম্যাপ ফর প্রেস ফ্রিডম’ শীর্ষক এক সেমিনারে বক্তা ও অতিথিরা। রোববার রাজধানীর ধানমন্ডিতে মাইডাস সেন্টারে.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

বিচার বিভাগ স্বাধীন না হলে স্থায়ী হবে না কোনো সংস্কার: প্রধান বিচারপতি

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা একটি অপরিহার্য বিষয়। যদি বিচার বিভাগ স্বাধীন না হয়, তাহলে কোনো খাতের সংস্কার কার্যক্রমই স্থায়িত্ব পাবে না। বিচার বিভাগে সংস্কারের ওপর ভিত্তি করে আরও বৃহত্তর সংস্কারের কাঠামো নির্মিত হতে পারে।

রোববার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) আইন অনুষদের মিলনায়তনে সপ্তম এ কে খান মেমোরিয়াল ল লেকচারে ‘রিমেইনিং দ্য ফিউচার অব জাস্টিস’ শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি। আইন অনুষদ এবং এ কে খান ফাউন্ডেশন যৌথভাবে এ সেমিনারের আয়োজন করে।

মূল বক্তা সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেন, ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে সংবিধান ও গণতন্ত্রের মধ্যে সুষম ভারসাম্য বজায় রাখা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ, যা অ্যারিস্টটলের ‘আইনের শাসন, ব্যক্তির শাসন নয়’ এই আদর্শ দ্বারা পরিচালিত হতে হবে।

প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) ক্রমবিকাশ বিচার প্রক্রিয়ায় এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে, যার মাধ্যমে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা সম্ভব। বিচার ব্যবস্থার ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে এই প্রযুক্তিনির্ভর নতুন বাস্তবতার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার সক্ষমতার ওপর। প্রযুক্তিগত এই পরিবর্তনগুলোকে কেবল বাধা হিসেবে দেখলে চলবে না, সেগুলোকে উদ্ভাবনের অনুঘটক হিসেবেও বিবেচনা করা প্রয়োজন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক এম জাফর উল্লাহ তালুকদার। অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইয়াহিয়া আখতার, প্রো-ভিসি অধ্যাপক শামীম উদ্দিন খান, অধ্যাপক মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন, এ কে খান ফাউন্ডেশনের ট্রাস্টি সচিব সালাহউদ্দিন কাসেম খান এবং ট্রাস্টি এ এম জিয়াউদ্দিন খান।


 

সম্পর্কিত নিবন্ধ