নাটোরের গুরুদাসপুরে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে সংঘবদ্ধ ‘ডাকাত’ দলের ৬ সদস্যকে আটক করেছে সেনাবাহিনী। এ সময় তাদের কাছ থেকে খেলনা পিস্তল ও দেশীয় অস্ত্র জব্দ হয়।
শুক্রবার (২০ জুন) দিবাগত রাত সোয়া ১২টার দিকে গুরুদাসপুর উপজেলার বিয়াঘাট এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়।
আটককৃতরা হলেন- গুরুদাসুপর উপজেলার সিরাজুল হকের ছেলে মো.
আরো পড়ুন:
পঞ্চগড়ে সেনা অভিযানে জাল ডলারসহ আটক ৬
পুলিশের ব্রিফিং
নগদের কোটি টাকা লুটের ঘটনায় সাবেক সেনা ও পুলিশ সদস্য জড়িত
নাটোর সেনাবাহিনীর ক্যাম্প সূত্রে জানা যায়, নিয়মিত টহল ও তল্লাশির অংশ হিসেবে বিয়াঘাট এলাকায় একটি চেকপোস্ট স্থাপন করা হয়। রাত সোয়া ১২টার দিকে চেকপোস্টে কর্তব্যরত সেনা সদস্যরা চার সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে আটক করে তল্লাশি চালান। তল্লাশির এক পর্যায়ে তাদের কাছ থেকে একটি খেলনা পিস্তল এবং কয়েকটি ধারালো অস্ত্র জব্দ হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করেন, তারা একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের সদস্য এবং দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ডাকাতি করছিলেন। পরবর্তীতে সেনাবাহিনী অভিযান চালিয়ে আরো দুইজনকে আটক করে।
সূত্র জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে ডাকাত দলের সদস্যরা স্বীকার করে- তারা অস্ত্রের মুখে ৮টি অটোরিকশা, ১২টি মোটরসাইকেল, ৯টি কোরবানির গরু ডাকাতি ও চাঁদা না দেওয়ায় ৬টি পুকুরে বিষ প্রয়োগ করেছে। তারা সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে চাঁদাবাজি করতো বলে স্বীকার করেছে। ডাকাত দলের ৬ জনকে গুরুদাসপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
নাটোরের পুলিশ সুপার আমজাদ হোসাইন বলেন, “সেনাবাহিনী ৬ জনকে গুরুদাসপুর থানায় হস্তান্তর করেছেন। আমরা প্রাথমিক জেনেছি, তারা ছিনতাইকারী। এ বিষয়ে পুলিশ তদন্ত চলছে। তদন্তে জানা যাবে তারা ডাকাত না ছিনতাইকারী। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
ঢাকা/আরিফুল/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আটক সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
২৬ বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়া রাফিয়ার ক্লাস করা হলো না
এই তো সেদিন, বিভাগের ব্যাচের মেসেঞ্জার গ্রুপে সবার সামনে সগৌরবে নিজের পরিচয় দিলেন। সবাই মিলে ১৭ আগস্ট ক্লাস করবেন ভেবে কত আনন্দ ছিল তার মনে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ক্লাস, নতুন বন্ধু, নতুন পরিবেশ সবকিছুর জন্যই মুখিয়ে ছিল মেয়েটি। কিন্তু সব প্রস্তুতি, অপেক্ষা আর স্বপ্ন থমকে দাঁড়াল একটি দুঃসংবাদের ভারে।
তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া মেধাবী শিক্ষার্থী রাফিয়া সুলতানা কুইন। বুধবার (৬ আগস্ট) রাতের অ্যাজমা রোগে আক্রান্ত হয়ে চিরতরে তার পথচলা থেমে যায়।
রাফিয়া সুলতানা কুইন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (আইবিএ) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের নবীন শিক্ষার্থী ছিলেন। তার বাবা আব্দুল খালেক আহমেদ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ভোলাহাট উপজেলার ফতেপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে কর্মরত।
জানা গেছে, কয়েকদিন আগে শ্বাসকষ্ট ও জ্বর নিয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন কুইন। অবস্থার অবনতি হলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। কিছু সময়ের জন্য অজ্ঞান হয়ে পড়লে চিকিৎসকরা তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করেন। পরে বুধবার রাত ৯টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
রাফিয়া কুইন ভোলাহাট সরকারি মহিলা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। অসাধারণ ফলাফল এবং মেধার ভিত্তিতে তিনি দেশের ২৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৯টি ইউনিটে ভর্তির সুযোগ পান।
রাফিয়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘এ’ ইউনিটে ৪৫২তম, ‘বি’ ইউনিটে ৪৭তম এবং ‘সি’ ইউনিটে ৪৩তম হয়ে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখেন। এছাড়া জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬৬তম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৮৩৯তম, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বি’ ইউনিটে ২২০তম এবং ‘ডি’ ইউনিটে ২৫৬তম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬২৯তম, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪০তম, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬৮তম হয়ে উত্তীর্ণ হন।
এছাড়া গুচ্ছভুক্ত ১৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৫৮তম স্থান অধিকার করে এই মেধাবী শিক্ষার্থী। সবশেষে নিজের পছন্দের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন রাফিয়া। তবে ক্লাস শুরুর আগেই চিরবিদায় নিতে হলো তাকে।
ভোলাহাটে বাসা ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো. রেজাউল করিম ফেসবুকে লিখেছেন, “একটা মৃত্যুর সংবাদ শুনে আমি ট্রমার মধ্যে চলে গেছি। এটা থেকে কিছুতেই বের হতে পারছি না। আহ্ জীবনের পথ কত ছোট, মৃত্যু কত নিকটে! রাফিয়া সুলতানা কুইন এ বছর ২০২৪-২৫ সেশনে রাবির আইবিএ’তে ভর্তি হয়েছিল। অ্যাজমায় আক্রান্ত হয়ে গতকাল (৫ আগস্ট) থেকে আইসিইউতে ভর্তি ছিল। আর আজ (৬ আগস্ট) আনুমানিক ৯টার সময় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়েছে।”
তিনি আরো লিখেছেন, “জীবন কত নিষ্ঠুর, ফুল ফোটার আগেই ঝড়িয়ে দেয়। কত স্বপ্ন, কত উদ্দীপনা নিয়ে ক্যাম্পাস আসার কথা ছিল তার। অথচ আজ সে আর নেই। কোথাও নেই। তার স্বপ্নে নেই, বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণে নেই, বাস্তবেও আর নেই।”
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী