সবুজ সমারোহে সজ্জিত প্রকৃতিকন্যা বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা পরিবার থেকে দূরে থাকায় জীবনটা কখনও কখনও নিঃসঙ্গ আর নিরস মনে হতে শুরু করে। সপ্তাহজুড়ে সারাদিন ক্লাস প্র্যাক্টিক্যাল করে সবাই যেন ক্লান্ত! তবে এই বাকৃবিরই কিছু মনোমুগ্ধকর রীতিনীতি যেন সে জীবনে মায়াবী রং মিশিয়ে দিতে প্রস্তুত। প্রতিটি ফ্যাকাল্টিতেই ক্লাস করার সুবিধার্থে কয়েকটি প্র্যাকটিক্যাল গ্রুপে ভাগ করা হয়। তেমনি কৃষি অনুষদের সেকশন ‘সি’-তে রয়েছে ৩টি গ্রুপ- ৭, ৮ এবং ৯। প্রতিবছরই প্র্যাকটিক্যাল গ্রুপ ৭ থেকে নবাগত শিক্ষার্থীদের নিয়ে আয়োজন করা হয় এক গ্রুপ মিটআপ। গত বছর ৬১ ব্যাচের পক্ষ থেকে এমনই এক উষ্ণ স্বাগতম পেয়েছিল বর্তমান ৬২ ব্যাচ, যার কথা ভুলবার নয়। তখন ৬১ ব্যাচের গ্রুপ রিপ্রেজেন্টেটিভ সৌরভ ভাই বলেছিলেন, ‘আমরা যেমন তোমাদের জন্য আয়োজন করেছি সামনের বছর তোমরাও করবে। আয়োজনে কোনো কমতি করবে না।’ সিনিয়রদের সঙ্গে করা সেই অঙ্গীকার আর নিজেদের ভালোবাসা ও দায়িত্ববোধ থেকে ৬২ ব্যাচ এই বছর ১৯ এপ্রিল আয়োজন করে ৬৩ ব্যাচের সঙ্গে গ্রুপ মিটআপ। এটি একটি একবেলার আয়োজন হলেও এর পেছনে অবদান ছিল অনেকের। একবেলার ওই আয়োজনই আল্পনা এঁকে রেখেছে সাদা পায়রার মতো শুভ্র স্মৃতির।
মিটআপ শুরুর আগেই ৬২ ব্যাচের গ্রুপ ৭-এর রিপ্রেজেন্টেটিভ সবাইকে অবহিত করেন। এরপর আয়োজনের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠেন আবদুল্লাহ আল মুকিত। এবার শুরু হলো দায়িত্ব বণ্টনের পালা। মুকিত নিজে কাগজ এনে সবার কাছ থেকে জুনিয়রদের জন্য উপদেশ ও শুভেচ্ছাবার্তা লেখার ব্যবস্থা করে। সমন্বিত প্রচেষ্টায় সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়। অবশেষে এলো সেই কাঙ্ক্ষিত দিন ১৯ এপ্রিল। সকাল সাড়ে ৮টার মধ্যেই ৬২ ব্যাচের সবাই পৌঁছে যায় টিএসসি লেকভিউ ভেন্যুতে। শুরু হয় বেলুন ফোলানো, ফটোফ্রেম টানানো ও খেলাধুলার প্রস্তুতি। জুনিয়ররাও সকাল ১০টার কিছু আগেই পৌঁছায়। জুনিয়ররা সবাই অবাক কণ্ঠে বলে ওঠে, ‘আমাদের জন্য এতকিছু?’ গ্রুপ ৬২’র উষ্ণ অভ্যর্থনায় জড়তা কেটে সাবলীল হতে থাকে সিনিয়র-জুনিয়রের সম্পর্ক। এক এক করে সবাই বসে টিএসসির ছাতার নিচে। শুরু হয় পরিচিতি পর্ব। পরিচয় পর্বে বোঝা যায় পৃথিবী আসলেই অনেক ছোট। কাকতালীয়ভাবে একেকজনের এলাকা, কলেজ আরও কতভাবে যে মিল পাওয়া যায়! আর গড়ে উঠতে থাকে সিনিয়র-জুনিয়র বন্ধন।
পরিচিতি শেষে জুনিয়রদের গোলাপ, চকলেট এবং একটি উপদেশবাণী দিয়ে বরণ করে নেয় সিনিয়ররা। এরপর শুরু হয় ৬৩ ব্যাচদের নিয়ে খেলাধুলার আয়োজন।
খেলা শেষে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। এরপর শুরু হয় আলোচনা ও আড্ডা। জুনিয়রদের একাডেমিক প্রশ্নের উত্তর দেয় সিনিয়ররা। ভাইভা সংক্রান্ত বিষয়, পড়াশোনার পদ্ধতি, হলে বা ক্যাম্পাসে সমস্যা হলে কী করতে হবে সব নিয়েই খোলামেলা কথা হয়।
৬২ ব্যাচের মুকিত বলেন, অনেক কষ্ট করে আয়োজনটা করেছি, আলহামদুলিল্লাহ সব কিছু ঠিকঠাক ছিল। ’৬৩ ব্যাচের তানভীর বলেন, ক্যাম্পাসে এসে সিনিয়ররা এত সুন্দর করে স্বাগত জানাবে, এটা ভাবতেও পারিনি। আমরা কৃতজ্ঞ আপনাদের প্রতি। তানভীরের এই কথায় যেন
এক বছর আগের নিজেকেই দেখতে পায় ৬২ ব্যাচ। ঠিক যেভাবে ৬১ ব্যাচ এক বছর আগে বলেছিল, ঠিক সেভাবেই ৬২ ব্যাচের সিনিয়ররা বলে, ‘পরের বছর যখন তোমাদের জুনিয়র
আসবে তোমরাও এভাবে একটা মিটআপ
করবে, কেমন?’ v
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ৬২ ব য চ র ন য়রদ র ম টআপ
এছাড়াও পড়ুন:
ব্যাটসম্যানের পকেটে থেকে পড়ল মোবাইল, এমন কিছু আগে দেখেছে কি ক্রিকেট
ওল্ড ট্রাফোর্ডে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপে ল্যাঙ্কাশায়ার ও গ্লস্টারশায়ারের দ্বিতীয় দিনের খেলা চলছিল গতকাল। মার্কাস হ্যারিসের অপরাজিত সেঞ্চুরিতে টস জিতে ব্যাট করতে নামা ল্যাঙ্কাশায়ার প্রথম দিন শেষ করে ৫ উইকেটে ৩৪২ রান তুলে। তবে দ্বিতীয় দিনের শুরুতে ব্যক্তিগত ১৬৭ রানে ফিরে যান হ্যারিস।
এরপর অষ্টম উইকেট পতনের পর টেলএন্ডার হিসেবে ব্যাট করতে নামেন টম বেইলি। মুখোমুখি হওয়া প্রথম বলটি ডট দেন বেইলি। এরপর দ্বিতীয় বল লেগ সাইডে পাঠিয়ে দুই রানের জন্য দৌড় শুরু করেন এই ব্যাটসম্যান। এ সময় ধারাভাষ্যকাররা লক্ষ করেন যে প্রথম রান নেওয়ার সময় বেইলির পকেট থেকে কিছু একটা পড়েছে।
রিপ্লেতে দেখা যায়, বেইলির পকেট থেকে আয়তাকার কিছু একটা পড়েছে। পরে দেখা গেছে এটা আসলে একটা মোবাইল ফোন। এমন ঘটনার সাক্ষী হয়ে এক ধারাভাষ্যকার বললেন, ‘না, এমন কিছু আমি এর আগে দেখিনি।’
আরও পড়ুন১ ওভারে ৩৩, ১৪ বলে ৫৩—আইপিএলে চার-ছক্কার বন্যায় রেকর্ডের পর রেকর্ড০৩ মে ২০২৫সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও বেইলির পকেট থেকে মোবাইল ফোন পড়ার দৃশ্য বেশ ভাইরাল হয়েছে। অনেক এই ঘটনায় বেশ মজাও পেয়েছেন। আবার কেউ কেউ মোবাইল পকেটে নিয়ে খেলতে নামা সম্পর্কিত আইনের খোঁজও করেছেন। জানতে চেয়েছেন, মোবাইল রাখার কারণে বেইলির কোনো শাস্তি হবে কি না।
কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপের ৪১.৫ নম্বর ধারা বলছে, ‘খেলার মাঠে খেলোয়াড়দের জন্য নির্ধারিত বৈধ প্রযুক্তি ছাড়া অন্য কোনো ধরনের ইলেকট্রনিক যোগাযোগ ডিভাইস ও সরঞ্জাম ব্যবহার করা যাবে না, যা মাঠের খেলোয়াড়দের সঙ্গে মাঠের বাইরে থাকা কোনো ব্যক্তির মধ্যে খেলার নির্ধারিত বা পুনর্নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করতে সক্ষম।’
এখন বেইলি এই ধারার লঙ্ঘন করেছেন কিনা, তা ‘ব্যবহার’ শব্দের ব্যাপকতার ওপর নির্ভর করে—কেউ চাইলে এমন যুক্তি দিতে পারে যে ডিভাইসটি তাঁর কাছে থাকা অবস্থায়ও তিনি মোবাইল ফোনটি ‘ব্যবহার’ করছিলেন না। যা–ই হোক না কেন, ডিভাইসটি মাঠ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।
আরও পড়ুনএবার আইপিএলে সবচেয়ে বেশি রান ও সবচেয়ে বেশি উইকেট কার৪ ঘণ্টা আগেমাঠে মোবাইল ফোন নিয়ে আসার ঘটনা অবশ্য এবারই প্রথম নয়। কিংবদন্তি আম্পায়ার ডিকি বার্ড বলেছিলেন, একবার অ্যালান ল্যাম্ব দুর্ঘটনাবশত ফোন নিয়ে মাঠে এসেছিলেন। পরে অবশ্য সেটি বার্ডের হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলেন, যদি কেউ ফোন করেন তবে তিনি যেন রিসিভ করে কথা বলেন।