আমাজনে কুমিরে ভরা জলাভূমিতে ৩৬ ঘণ্টা কাটিয়েছিলেন তাঁরা
Published: 5th, May 2025 GMT
আমাজন জঙ্গলের ভেতর কুমিরে ভরা এক জলাভূমি। এর মধ্যেই জরুরি অবতরণে বাধ্য হয় একটি ছোট উড়োজাহাজ। পাইলটসহ পাঁচ আরোহী প্রাণে বেঁচে গেলেও পড়ে যান আরেক বিপদে। চারপাশে কুমির ঘিরে রেখেছে, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন, সাহায্যের কোনো চিহ্ন নেই। সেই বিভীষিকাময় পরিবেশে তাঁরা কাটিয়েছেন ৩৬ ঘণ্টা। শেষমেশ তাঁরা জীবিত উদ্ধার হন।
সম্প্রতি বলিভিয়ার আমাজন অঞ্চলে ঘটেছে এমন ঘটনা। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
গত বৃহস্পতিবার দুপুরে বলিভিয়ার বেনি বিভাগের রাডার থেকে হঠাৎ করেই অদৃশ্য হয়ে যায় উড়োজাহাজটি। এর পরপরই এটির সন্ধানে অভিযান শুরু হয়। তবে হদিস মিলছিল না। পরদিন শুক্রবার বলিভিয়ার আমাজন অঞ্চলের স্থানীয় জেলেরা এর খোঁজ পান।
বেনি বিভাগের জরুরি অভিযান পরিচালনা কেন্দ্রের পরিচালক উইলসন আভিলা বলেছেন, তিন নারী, এক শিশু এবং ২৯ বছর বয়সী পাইলট উদ্ধার হয়েছেন। তাঁরা শারীরিকভাবে বেশ ভালো অবস্থায় আছেন।
স্থানীয় গণমাধ্যমকে পাইলট বলেন, উড়োজাহাজটি উত্তরাঞ্চলীয় বলিভিয়ার বাউরেস শহর থেকে ত্রিনিদাদ শহরের দিকে যাচ্ছিল। ইঞ্জিনে ত্রুটি দেখা দেওয়ায় উড়োজাহাজটিকে ইতানোমাস নদীর কাছে জরুরি অবতরণের প্রয়োজন হয়।
আন্দ্রেস ভেলার্দে নামের ওই পাইলট আরও বলেন, হঠাৎ করেই উড়োজাহাজটি উড়তে পারছিল না। তিনি একটি জলাভূমিতে উড়োজাহাজটি অবতরণ করাতে বাধ্য হন। পাইলটসহ পাঁচ আরোহী উড়োজাহাজটির ছাদের ওপর দাঁড়িয়ে ছিলেন। কুমিরেরা চারপাশ ঘিরে ফেলেছিল। কোনো কোনো কুমির তিন মিটারেরও কম দূরত্বে চলে এসেছিল।
পাইলটের ধারণা, বিমানের ট্যাংক থেকে চুইয়ে পড়া পেট্রলের গন্ধই হয়তো ওই শিকারি প্রাণীদের দূরে রেখেছিল। তাঁরা পানিতে একটি অ্যানাকোন্ডা সাপও দেখতে পেয়েছিলেন। এমন আতঙ্কজনক পরিস্থিতির মধ্যেই তাঁরা উদ্ধার হওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন।
ভেলার্দে বলেন, ‘কুমিরদের জন্য আমরা পানি পান করতে পারিনি, কোথাও যেতেও পারিনি।’ যাত্রীদের একজনের সঙ্গে ময়দাজাতীয় খাবার কাসাভা ফ্লাওয়ার ছিল। তা দিয়েই তাঁরা ক্ষুধা মিটিয়েছেন।
জেলেরা উড়োজাহাজটির খোঁজ পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে একটি হেলিকপ্টার পাঠায় কর্তৃপক্ষ। ওই পাঁচজনকে জীবিত উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
বেনি অঞ্চলের স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক রুবেন টোরেস রয়টার্সকে বলেন, উড়োজাহাজটি নিখোঁজ হওয়ার পর নানা জল্পনা ও তত্ত্ব ছড়িয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত সব সংস্থা একসঙ্গে কাজ করে জীবিত ব্যক্তিদের উদ্ধার করতে পেরেছে। এটাতেই তিনি খুশি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প ইলট
এছাড়াও পড়ুন:
কক্সবাজারে উড়োজাহাজ লক্ষ্য করে ফুটবল ছোড়ার বিষয়ে যা জানা গেল
কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত থেকে উড়োজাহাজ লক্ষ্য করে এক তরুণের বল ছুড়ে মারার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। আজ শনিবার সকাল থেকে ফেসবুকসহ নানা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ে। আশপাশের ছবি দেখে ধারণা করা হচ্ছে, কক্সবাজারের সুগন্ধা সমুদ্রসৈকতের উত্তর পাশে সিগাল পয়েন্টে ভিডিওটি ধারণ করা হয়েছে।
১৪ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, সমুদ্রসৈকত থেকে ফুটবলটি পা দিয়ে উড়োজাহাজের দিকে ছুড়ে মারেন ওই তরুণ। ভিডিও দেখে মনে হচ্ছিল, বলটি উড়োজাহাজের অবস্থান থেকে আরও ওপরে ওঠার পর নিচে পড়ে গেছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই ভিডিও নিয়ে অনেকে নানা ধরনের মন্তব্য করেছেন। সাইফান হক নামের একজন লেখেন, ‘কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে ফুটবল খেলা নিষিদ্ধ করা উচিত। এটা ঘুরতে যাওয়ার জায়গা, খেলার মাঠ নয়। ছোট বাচ্চাদের নিয়ে যাঁরা সৈকতে ঘুরতে যান, তাঁরা ফুটবল খেলা নিয়ে সমস্যার সম্মুখীন হন।’ রেজাউল করিম নামের আরেকজন লেখেন, ‘কাজটা ভালো হলো না। ফুটবলটা মারার কারণে বিমানটা দুর্ঘটনার কবলে পড়তে পারত।’
বিনয় রিসোর্ট নামের একটি আইডি থেকে লেখা হয়, ‘কক্সবাজার বিমানবন্দর সমুদ্রের একদম কাছাকাছি। সমুদ্রসৈকত থেকে খুব নিচু দিয়ে বিমানকে উড়তে দেখা যায়। আসলে অবতরণের শেষ পর্যায়ে বিমান ২০০ থেকে ৫০০ ফুট উচ্চতায় থাকতে পারে। আর বল সর্বোচ্চ ৫০ ফুট ওপরে তোলা যায়।’ কামরুল হাসান নামের আরেকজন লেখেন, ‘বল যতটুকু উচ্চতায় উঠেছে, বিমান তার চেয়ে কয়েক শ গুণ বেশি উচ্চতা দিয়ে যায়। পাবলিকের কমেন্ট দেখে মনে হয়, এরা জীবনে কক্সবাজার আসেনি।’
জানতে চাইলে কক্সবাজার বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক গোলাম মোর্তজা প্রথম আলোকে বলেন, বিমানবন্দর দিয়ে উড্ডয়নের সময় উড়োজাহাজ সাধারণত সমুদ্রসৈকতের ১ হাজার ৪০০ মিটার ওপর দিয়ে যায়। আবার অবতরণের সময় এক হাজার মিটার পর্যন্ত উঁচুতে থাকে। সে ক্ষেত্রে বালুচর থেকে ছুড়ে মারা ফুটবল বিমান পর্যন্ত আসার সুযোগ নেই। তবে বিমান চলাচলের ক্ষেত্রে সমুদ্রসৈকত এলাকায় ড্রোন ওড়ানো, আকাশে আতশবাজি নিক্ষেপসহ নানা কার্যক্রম নিষিদ্ধ। উড়ন্ত বিমান লক্ষ্য করে ফুটবল ছুড়ে মারাসহ কোনো কিছু নিক্ষেপ করার বিষয়ে মানুষকে সতর্ক থাকা উচিত।