বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে অভিনেত্রীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে বলিউড অভিনেতা ও উপস্থাপক এজাজ খানের বিরুদ্ধে। একই অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলাও করেছেন ওই অভিনেত্রী।

৩০ বছর বয়সী ওই অভিনেত্রী জানান, পরিচিত হওয়ার পর এজাজ তাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেন এবং পরবর্তীতে এবাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। কিন্তু বিয়ের কথা তুলতেই এজাজ পিছিয়ে যান। গত ২৫ মার্চ এজাজ খান তার বাসায় যান। সেই সময় তিনি একা ছিলেন। এই সুযোগে তাকে জোর করে ধর্ষণ করেন এজাজ।

সম্প্রতি বিতর্কিত শো ‘হাউস অ্যারেস্ট’ ঘিরে যখন বিতর্ক তুঙ্গে, ঠিক তখনই এই নতুন অভিযোগ ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বলিউড অঙ্গনে।

পুলিশ জানায়, ওই নারীকে অভিনয়ের সুযোগ করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে এজাজ খান বিভিন্ন স্থানে একাধিকবার তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। এটনায় অভিনেত্রী মুম্বাইয়ের চারকোপ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। ভারতের দণ্ডবিধির ৬৪, ৬৪ (২)(এম), ৬৯ এবং ৭৪ ধারায় এজাজ খানের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে।

এর আগে ২০২১ সালে মাদকের মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে তিনি দুই বছর কারাবন্দি ছিলেন। ২০২৩ সালে জামিনে মুক্তি পেলেও বিতর্ক থেকে রেহাই মেলেনি তার।

সম্প্রতি উল্লু অ্যাপে প্রচারিত তার সঞ্চালিত রিয়েলিটি শো ‘হাউস অ্যারেস্ট’ ঘিরেও ব্যাপক সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, এই শো-তে যৌনতায় ভরপুর কনটেন্ট উপস্থাপন করা হচ্ছে, যেখানে প্রতিযোগী জুটিদের নানা ধরনের ‘সেক্স পজিশন’ প্রদর্শন করতে বলা হয়। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় ওঠে। এমনকি শিব সেনা ও বজরং দলের পক্ষ থেকেও এজাজের বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।

অবশ্য অভিযোগের প্রেক্ষিতে এজাজ খান এখনো পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেননি। সূত্র: হিন্দুস্থান টাইমস।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

সাইনবোর্ড থেকে কাঁচপুর, মহাসড়কে উল্টো পথে অটো রিক্সার দাপট, ঘটছে দুর্ঘটনা

মহাসড়কে তিন চাকার অটোরিকশা চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা থাকলেও নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড থেকে সোনারগাঁয়ের কাঁচপুর এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের উভয় পাশে উল্টো পথে দাপটের সহিত চলছে ব্যাটারি চালিত রিকশা, অটোরিকশা বা  ইজিবাইক।

এতে একদিকে সড়কে যানবাহন চলাচলে বিশৃংখলার সৃষ্টি হচ্ছে অন্যদিকে বাড়ছে দুর্ঘটনা। হাইওয়ে পুলিশের নাকের ডগায় প্রকাশ্যে এই গাড়িগুলো চলাচল করছে। গত ছয় মাসে মহাসড়কে অটোরিকশা দূর্ঘটনায় অর্ধ্বশতাধিক হতাহতের ঘটনা ঘটলেও টনক নড়ছেনা হাইওয়ে পুলিশের।

সবশেষ গত ৭ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায়  ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কাঁচপুর ব্রিজের ঢালে উল্টো পথে আসা ব্যাটারি চালিত অটো রিকশার সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষে মা-ছেলে সহ তিনজন নিহত হয়েছে।

নিহতরা হলেন- গাইবান্ধার সুনামগঞ্জ থানার আশরাফুল আলমের স্ত্রী কাকলি (৩৫), ছেলে আরিয়ান আহম্মেদ রাফি (৫) ও রংপুরের পীরগাছা থানার আব্দুল ওহাবের ছেলে অটোরিকশা চালক আনিসুর রহমান (২৩)।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানিয়েছিল, মহাসড়কের ঢাকাগামী লেনে দ্রুতগতিতে হিমালয় পরিবহনের একটি বাস আসছিল। একই সময় উল্টো পথে সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগাংরোড থেকে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা যাচ্ছিল। এ সময় মুখোমুখি সংঘর্ষে অটোরিকশা দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই অটোরিকশা চালকসহ অটোরিকশায় থাকা মা- ছেলের মৃত্যু হয়।

এদিকে মহাসড়কে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার জন্য ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাকে দায়ী করছেন পথচারীরা। অনেকেই বলছেন পুলিশের রহস্যজনক উদাসিনতা ও জনসচেতনার অভাবে মহাসড়কে অটোরিকশার দৌরাত্ব্য বেড়েছে। 

সোমবার (৫ মে) সকাল থেকে বেলা দুইটা পর্যন্ত দেখা যায়, সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড, সানাড়পাড়, মৌচাক, চিটাগাং রোড শিমরাইল মোড় ও কাঁচপুর সেতুর উভয়পাশে ঘুরে দেখা যায়, মহাসড়ক জুড়ে অসংখ্য ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, সিএনজিসহ অযান্ত্রিক যানবাহন চলাচল করছে। বেশির ভাগই আবার চলছে উল্টো পথে।

অটো চালকরা ঝুঁকিপুর্ণভাবে যাত্রীদের পরিবহন করছে এতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকলেও নারী-পুরুষ-শিশু যাত্রীরা নিরুপায়। 

ঢাকা থেকে কুমিল্লাগামী একটি বাসের চালক জয়নাল বলেন, সরকার ও উচ্চ আদালত মহাসড়কে এসব যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করলেও এই এলাকায় কোনো প্রশাসন আছে বলে মনে হয় না। এসব ব্যাটারি চালিত অটো রিক্সার কারণে আমাদের ধীরগতিতে চলতে হয়। 

মহাসড়কে বেশিরভাগ দুর্ঘটনার জন্য এই অটোরিকশাকে দায়ী করে হানিফ পরিবহনের চালক লিটন বলেন, মহাসড়কে বড় বড় যানবাহন চলাচল করে কিন্তু এই অটোরিকশা হঠাৎ হঠাৎ বড় যানবাহনের সামনে এসে পড়লে দুর্ঘটনার সৃষ্টি হয়। 

গার্মেন্ট শ্রমিক রেদোয়ান বলেন, আমি একদিন কাজ থেকে বের হয়ে রাস্তার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ করে পেছন থেকে একটি অটোরিকশা আমার গায়ের উপরে উঠে যায় যার ফলে আমার হাত ভেঙে যায় এবং আমি প্রায় তিন মাস চিকিৎসা দিন ছিলাম। 

সানাড়পাড় এলাকার বাসিন্দা জুনায়েদ বলেন, মহাসড়কে ছোট ছোট এসব যানবাহনের কারণে আমরা সব সময় সড়ক দুর্ঘটনার আতঙ্কে থাকি। থানা ও হাইওয়ে পুলিশের সঙ্গে সখ্য করেই গুরুত্বপূর্ণ এ মহাসড়কে এগুলো চলাচল করছে।

রমজান মিয়া নামের একজন অটোরিকশাচালক বলেন, মাঝে মধ্যে পুলিশ আমাদের বাধা দেয়। কিছু কিছু রিকশা ডাম্পিং করে। পরে পুলিশকে ম্যানেজ করে আবার রিকশা চালাই।

সচেতন নাগরিকরা বলছেন, মহাসড়কে উল্টো পথে ব্যাটারি চালিত অটো রিকসার চলাচল বন্ধ না করলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে যে কোনো সময়। এতে প্রাণহানী ঘটনার আশংকা রয়েছে। বিষয়টি গুরুত্বের সহিত সংশ্লিষ্টদের ভেবে দেখা উচিৎ।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শিমরাইল হাইওয়ে পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ টিআই নাইম বলেন, কোনো অনিয়মের সঙ্গে হাইওয়ে পুলিশ জড়িত নেই। প্রতিদিনই এসব অযান্ত্রিক যানবাহনের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হচ্ছে। ১০/১৫ টি আটক করে জরিমানা ও রেকারিং করা হচ্ছে। 

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে মহাসড়কে এদের চলাচল অনেক কমে আসছে। আশা করি মহাসড়কে অটোরিকশা চলাচল দ্রুত বন্ধ হয়ে যাবে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ