‘চিরঋণী থাকব’, লিভারপুল ছাড়ার ঘোষণায় আর্নল্ড
Published: 5th, May 2025 GMT
লিভারপুল ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন ট্রেন্ট অ্যালেক্সজান্ডার আর্নল্ড। ২০ বছর পর ক্লাবটির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তিনি বলেন, ‘এটা জীবনের সবচেয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত। লিভারপুলের কাছে আমি চিরঋণী থাকব।’
অ্যালেক্সজান্ডার আর্নল্ড ফ্রি এজেন্টে লিভারপুল ছাড়ছেন। একাধিক সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে, রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দেবেন তিনি। জুনের ক্লাব বিশ্বকাপেই লস ব্লাঙ্কোসদের জার্সিতে দেখা যেতে পারে তাকে। প্রিমিয়ার লিগে লিভারপুলের এখনো তিন ম্যাচ বাকি থাকায় নতুন চুক্তির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিতে পারছে না কোন পক্ষ।
আর্নল্ড লিভারপুলের একাডেমিতে বড় হয়েছেন। ২০১৬ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে তার অল রেডসদের জার্সিতে অভিষেক হয়। সব মিলিয়ে লিভারপুলের জার্সিতে ২৫৭ ম্যাচ খেলা ২৬ বছর বয়সীয় আর্নল্ড ক্লাব ছাড়ার ঘোষণায় বলেন, ‘২০ বছর লিভারপুলে খেলার পর ঘোষণা করতে হচ্ছে যে, এটাই আমার অ্যানফিল্ডে শেষ মৌসুম। জীবনে এখন পর্যন্ত নেওয়া সবচেয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত এটাই। এই ক্লাব ২০ বছর ধরে আমার সবকিছু ছিল, আমার পৃথিবী ছিল। একাডেমি থেকে এখন পর্যন্ত যে ভালোবাসা ও সমর্থন এখান থেকে পেয়েছি তা সারাজীবন সঙ্গী হয়ে থাকবে। এই ক্লাবের কাছে আমি চিরঋণী।
আমার ক্লাব ছাড়ার সিদ্ধান্ত পরিচিত বলয় থেকে বেরিয়ে পেশাদার ও ব্যক্তিগত জীবনে নতুন চ্যালেঞ্জ নেওয়ার জন্য। প্রতিটা মুহূর্ত আমি এই ক্লাবের জন্য নিজেকে উজাড় করে খেলেছি। কোচ, সতীর্থ, স্টাফ ও সমর্থনদের হৃদয়ের অন্তস্তল থেকে ধন্যবাদ দিতে চাই। স্বপ্নের মতো ২০টা বছর এখানে পার করতে পারায় আমি অবশ্যই ভাগ্যবান। এই ভালোবাসা আমি কখনই অগ্রাহ্য করবো না। এই ক্লাবের সকলের সঙ্গে এতোটা বছর কাটাতে পারা সত্যিই ভাগ্যের ব্যাপার। এই ভালোবাসা কখনো মরবে না।’
২৫ মে লিভারপুল লিগের শেষ ম্যাচ খেলবে। ক্লাব বিশ্বকাপের জন্য ১ থেকে ১০ জুন পর্যন্ত দলবদলের ছোট্ট একটা দরজা খোলা হবে। আর্নল্ড ওই সময়ে রিয়াল মাদ্রিদের সঙ্গে চুক্তির আনুষ্ঠানিকতা সারতে পারেন। এরপর চুক্তির ঘোষণা দেওয়া হতে পারে। লিভারপুলের সঙ্গে আর্নল্ডের জুন পর্যন্ত চুক্তি আছে। সমঝোতা করে এক মাস আগে ওই চুক্তি বাতিল করে রিয়ালে আসতে পারেন তিনি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ফ টবল দলবদল এই ক ল ব
এছাড়াও পড়ুন:
হেলিকপ্টারে বউ-সন্তান নিয়ে ফিরলেন রকেট
গত ১৭ বছর ধরে মালয়েশিয়ায় থাকেন রাকিবুল ইসলাম রকেট। সেখানে তিনি বিয়ে করেন কম্বোডিয়ান এক তরুণীকে। সেই থেকে বাবা-মায়ের একটি স্বপ্ন, ছেলে একদিন হেলিকপ্টারে চড়ে প্রবাসী স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে ফিরবে গ্রামে। সেই দৃশ্য দেখবে সাত গ্রামের মানুষ। অবশেষে বাবা-মায়ের সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দিলেন রাকিবুল ইসলাম রকেট।
সোমবার (৫ মে) সকাল সোয়া ১০টার দিকে রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়নের পালশা গ্রামে হেলিকপ্টারযোগে স্ত্রী, কন্যা সন্তান, শাশুড়ি ও শ্যালককে নিয়ে পৌঁছান রকেট। হেলিকপ্টার অবতরণের খবরে ওই এলাকার পালশা উচ্চবিদ্যালয় মাঠ ও রকেটের বাড়ির সামনে জড়ো হন হাজারো মানুষ। প্রবাসী বউকে একনজর দেখতে এবং হেলিকপ্টার দেখার উৎসাহে বিভিন্ন এলাকার মানুষ ছুটে আসেন সেখানে।
রকেট পালশা গ্রামের বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত কৃষক আব্দুর রশিদ প্রামাণিকের ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, ঢাকা থেকে যাত্রা করে হেলিকপ্টারটি পালশা উচ্চবিদ্যালয় মাঠে অবতরণ করে। হেলিকপ্টার থেকে নামার পর রকেট ও তার পরিবারকে ফুলের মালা দিয়ে স্বাগত জানান স্বজন ও প্রতিবেশীরা। এলাকায় আনন্দ-উল্লাস ছড়িয়ে পড়ে।
রকেটের বড় ভাই রাসেল রানা বলেন, “রকেট মালয়েশিয়ায় কাজ করেন। সেখানেই তার সঙ্গে পরিচয় হয় কম্বোডিয়ান তরুণীর। পরে তাকে বিয়ে করেন রকেট। তাদের ঘরে কন্যাসন্তান রয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, “বিয়ের পর থেকেই বাবা-মায়ের ইচ্ছা ছিল, রকেট যেন হেলিকপ্টারে করে বউ-সন্তান নিয়ে গ্রামে ফেরে। সেই ইচ্ছা পূরণ করতেই এই আয়োজন।”
প্রতিবেশী মেরাজুল ইসলাম বলেন, “১৭ বছর আগে রকেট মালয়েশিয়ায় যান। শুনেছি, সেখানে এখন শ্রমিক হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি ছোটখাটো ব্যবসাও করেন তিনি। সেই ছেলে আজ হেলিকপ্টারে করে বিদেশি বউ ও সন্তান নিয়ে ফিরে এসেছে। এটা আমাদের সবার জন্য আনন্দের।”
রকেটের মা রাফিয়া বেগম বলেন, “আমার ছেলে ১৭ বছর পর বাড়িতে ফিরেছে। তাই ইচ্ছা ছিল, ও যেন হেলিকপ্টারে বউ-সন্তান নিয়ে আসে। আজ সেই ইচ্ছা পূরণ হয়েছে। খবর ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই আশপাশের গ্রাম থেকে হাজার হাজার মানুষ বাড়ি ও বিদ্যালয় মাঠে ভিড় করেছে।”
রাকিবুল ইসলাম রকেট বলেন, “বাবা–মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতে পেরে আমার খুব ভালো লাগছে। দীর্ঘদিন পর নিজ গ্রামে এসে আত্মীয়-স্বজন আর প্রতিবেশীদের ভালোবাসা পাচ্ছি, এটা সত্যিই আনন্দের।”
ঢাকা/কেয়া/মাসুদ