শেখ হেলাল ও শেখ তন্ময়ের বিরুদ্ধে ২০ কোটি টাকা চাঁদা নেওয়ার অভিযোগে মামলা
Published: 6th, May 2025 GMT
বাগেরহাট-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দীন, তাঁর ছেলে বাগেরহাট–২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শেখ তন্ময়সহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে ২০০ কোটি টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে মামলা হয়েছে। ৬ বছর আগে ভয়ভীতি দেখিয়ে ২ দফায় ২০ কোটি টাকা চাঁদা নিয়েছেন বলেও মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
গতকাল সোমবার বাগেরহাট সদর মডেল থানায় মামলাটি করেন স্থানীয় নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেট নামের একটি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল মান্নান তালুকদার। মামলার পর গতকালই পুলিশ মো.
মামলার বাদী মান্নান তালুকদার দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা অর্থ পাচারের মামলার আসামি। ওই মামলায় দীর্ঘ সময় কারাভোগের পর সম্প্রতি উচ্চ আদালত থেকে জামিনে বের হয়েছেন। ২০১৯ সালের ৩০ মে বাগেরহাট সদর মডেল থানায় দুদকের খুলনা জেলা সমন্বিত কার্যালয়ের তৎকালীন সহকারী পরিচালক (এডি) মো. শাওন মিয়া বাদী হয়ে মামলাটি করেছিলেন। ওই মামলায় নিউ বসুন্ধরা রিয়েল স্টেট লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আবদুল মান্নান তালুকদার ও তাঁর প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান আনিসুর রহমানের বিরুদ্ধে ১১০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ আনা হয়।
আরও পড়ুনবাগেরহাটে হেলাল-তন্ময়, সাবেক পুলিশ সুপারসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫চাঁদাবাজির মামলার এজাহারের বরাত দিয়ে বাগেরহাট সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহামুদ-উল-হাসান আজ মঙ্গলবার বিকেলে বলেন, ২০১৮ সালের ১৫ নভেম্বর রাতে বাগেরহাটের আওয়ামী লীগ দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দীন, তাঁর ছেলে শেখ সারহান নাসের তন্ময়, তাঁদের দুই ব্যক্তিগত সহকারী ফিরোজ, শাহীনসহ পাঁচজন নিউ বসুন্ধরা রিয়েল স্টেট লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল মান্নান তালুকদারের শহরের সরুই কার্যালয়ে গিয়ে ২০০ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদার টাকা না দিলে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া, মিথ্যা মামলায় জড়ানোসহ জানে মেরে ফেলার হুমকি দেন আসামিরা। আবদুল মান্নান তালুকদার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রক্ষার্থে তাৎক্ষণিক গ্রাহকের রক্ষিত টাকা থেকে ৭ কোটি ৩০ লাখ টাকা দিয়ে দিলে তাঁরা বাকি টাকা দ্রুত দিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে চলে যান। এরপর ২০১৯ সালের ৩ জানুয়ারি আসামিরা আবার আবদুল মান্নানের অফিসে এসে বাকি টাকা পরিশোধের জন্য হুমকি দিলে তিনি তাঁদের ১২ কোটি ৭০ লাখ টাকা চাঁদা দেন।
দুই দফায় আসামিরা ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আবদুল মান্নান তালুকদারের কাছ থেকে মোট ২০ কোটি টাকা আদায় করেছেন বলে অভিযোগে বলা হয়েছে। আসামিরা ফ্যাসিবাদী সরকারের প্রভাবশালী ব্যক্তি হওয়ায় আগে তিনি থানা বা আদালতে মামলা করার সাহস পাননি। এখন পরিবেশ তৈরি হওয়ায় মামলাটি করেছেন।
ওসি মাহামুদ-উল-হাসান বলেন, পুলিশ বাদীর লিখিত অভিযোগ হাতে পেয়ে ৩৮৬ ও ৩৮৭ পেনাল কোড অনুযায়ী মামলাটি গ্রহণ করেছে। এই মামলার এজাহারভুক্ত ৩ নম্বর আসামি শহীদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের ধরতে পুলিশ তৎপর রয়েছে।
আরও পড়ুনশেখ তন্ময় ও শেখ সালাহউদ্দিনসহ ৪ জনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা২৪ এপ্রিল ২০২৫উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সাবেক মন্ত্রীসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
সাবেক এলজিআরডি মন্ত্রী তাজুল ইসলামসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। মঙ্গলবার দুপুরে কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক ফারহানা সুলতানা এই পরোয়ানা জারি করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট কাইমুল হক রিংকু।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ৩ আগস্ট রাতে লাকসাম পৌরসভার নশরতপুর এলাকার বাইপাস মার্কেটের সামনে রাস্তার ওপর ও ১৮ আগস্ট রাতে বসতবাড়িতে হামলা ভাঙচুর চালানো হয়। এসব ঘটনায় সাবেক মন্ত্রী তাজুল ইসলামসহ ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় ৯০ জনকে আসামি করে আদালতে মামলা করেন লাকসাম পৌর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মনির আহমেদ। পরে লাকসাম থানা পুলিশ তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দেয়। ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় মঙ্গলবার দুপুরে আদালতের বিচারক ফারহানা সুলতানা সাবেক এলজিআরডি মন্ত্রী তাজুল ইসলামসহ ১৫ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
মামলার বাদী মনির আহমেদ জানান, যখন হামলা হয় তখন মন্ত্রী এলাকায় ছিলেন না। তাই তার বিরুদ্ধে হুকুমের আসামি করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়া অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন– এলজিআরডি মন্ত্রীর শ্যালক ও লাকসাম উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মহব্বত আলী, লাকসাম পৌরসভার সাবেক মেয়র অধ্যাপক আবুল খায়ের, কাউন্সিলর মোহাম্মদ উল্লাহ, বিপুলাসার ইউপি চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ, গোবিন্দপুর ইউপি চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন শামীম, কান্দিরপাড় ইউপি চেয়ারম্যান ওমর ফারুক, কাউন্সিলর খলিলুর রহমান, মনোহরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও মন্ত্রীর ভাতিজা আমিরুল ইসলাম, তাজুলের উন্নয়ন সমন্বয়কারী কামাল হোসেন, জাহাঙ্গীর আলম, আজকরা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম, রুহুল আমিন, আবদুল কাদের শাহীন ও কাওছার আহমেদ।