জনকণ্ঠের ঘটনায় এক নেতার কাছে ব্যাখ্যা চাইল এনসিপি
Published: 6th, May 2025 GMT
দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকার কার্যালয়ে গত রোববার এক ‘অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায়’ সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগে দলের যুগ্ম সদস্যসচিব জয়নাল আবেদীন শিশিরের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। গতকাল সোমবার দলের শৃঙ্খলা কমিটির পক্ষ থেকে ওই নেতার কাছে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়।
জয়নাল আবেদীন গত ১৬ মার্চ থেকে জনকণ্ঠ পত্রিকার প্ল্যানিং অ্যাডভাইজার (পরিকল্পনা উপদেষ্টা) পদে কর্মরত আছেন। আর ২৮ ফেব্রুয়ারি এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা হন তিনি।
এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব ও শৃঙ্খলা কমিটির প্রধান আবদুল্লাহ আল আমিন স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, ‘আপনার অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে গত ৪ মে দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকার কার্যালয়ে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা আমাদের গোচরে এসেছে। ওই ঘটনায় আপনার সংশ্লিষ্টতা এনসিপির কাছে দৃশ্যমান হয়েছে। ওই ঘটনার ব্যাপারে আপনার ব্যক্তিগত অবস্থান, সংশ্লিষ্টতা ও সেই সঙ্গে এনসিপির পরিচয় ব্যবহারের বিষয়ে আপনার বক্তব্য আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে শৃঙ্খলা কমিটির কাছে পেশ করার জন্য অনুরোধ করা হলো।’
এই চিঠির বিষয়ে জানতে চাইলে এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব প্রথম আলোকে বলেন, এটা তাঁর (জয়নাল) প্রতি একটা সতর্কবার্তা। তিনি যে ব্যাখ্যা দেবেন, সে অনুযায়ী দল তাঁর বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে।
এনসিপি গত রোববারের যে ঘটনাকে ‘অনাকাঙ্ক্ষিত’ বলছে, সেই ঘটনার বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পত্রিকাটির স্টাফ রিপোর্টার গোলাম মোস্তফা, মফস্সল ইনচার্জ শামসুল আনাম, বিশেষ প্রতিনিধি তপন কুমার বিশ্বাস, দীন ইসলাম পাঠান রুমেল খান ও শংকর কুমার দে—এই পাঁচ সাংবাদিককে কেন্দ্র করে শুক্রবার রাতে রাজধানীর ইস্কাটনে পত্রিকাটির কার্যালয়ে উত্তেজনা তৈরি হয়।
পত্রিকাটির একাধিক সাংবাদিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, কয়েক মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে রোববার জনকণ্ঠ কার্যালয়ে আন্দোলন শুরু করেন একদল সাংবাদিক। একপর্যায়ে বাইরে থেকে একদল লোক কার্যালয়ে ঢুকলে ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয়। সেখানে সাংবাদিকদের মারধর করা হয়। এ ঘটনায় তাঁরা এনসিপির কিছু কর্মীকে দায়ী করেন।
তবে এনসিপির নেতা ও জনকণ্ঠ-এর প্ল্যানিং অ্যাডভাইজার জয়নাল আবেদীন ঘটনার আলাদা ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, জনকণ্ঠ-এর সাংবাদিকদের মধ্যে কয়েকজন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বিপক্ষে ছিলেন। আন্দোলনকারীদের ওপর তাঁরা হামলায় অংশ নিয়েছিলেন, তার ফুটেজ আছে। এ রকম পাঁচজনকে পত্রিকাটির মালিকপক্ষ ও সম্পাদক অপসারণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এ কারণে তাঁরা আমাদেরসহ মালিকপক্ষকে জনকণ্ঠ ভবনে অবরুদ্ধ করেন। পরে আমরা হাতিরঝিল থানায় ফোন করি। পুলিশ এসে আমাদের উদ্ধার করে।’
যে পাঁচ সাংবাদিককে কেন্দ্র করে রোববারের ঘটনা, তাঁদের প্রত্যেকেই ‘আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসর’ বলে দাবি করেন জয়নাল আবেদীন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জনকণ্ঠ-এর একজন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক প্রথম আলোকে বলেন, বকেয়া বেতনের দাবিতে কয়েক দিন ধরেই আন্দোলন চলছিল। আন্দোলনের জন্য একটি কমিটিও করা হয়েছে। এর মধ্যেই ৩ মে পাঁচ সাংবাদিককে চাকরিচ্যুত করা হয়। ওই পাঁচজনকে ফোনে বিষয়টি জানালেও চাকরিচ্যুতির চিঠিতে পাওনার বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। এ অবস্থায় ৪ মে সবাই জনকণ্ঠ কার্যালয়ের সামনের সিঁড়িতে বসে প্রতিবাদ জানান। দাবি ছিল, হয় টাকা দিতে হবে, নয়তো চাকরিচ্যুতির চিঠি প্রত্যাহার করতে হবে। একপর্যায়ে বাইরে থেকে আসা ব্যক্তিরা তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে গিয়ে সাংবাদিক ও কর্মচারীদের মারধর করেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এনস প র কম ট র আপন র ঘটন য়
এছাড়াও পড়ুন:
সঞ্জয়ের শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে কাঁদলেন কারিশমা, প্রশ্ন তুললেন তসলিমা
বলিউডের তুমুল জনপ্রিয় নায়িকা কারিশমা কাপুরকে বিয়ে করে শিল্পপতি সঞ্জয় কাপুর আলোচনায় আসতে চেয়েছিলেন। হয়েছিলোও তাই। সঞ্জয় কাপুর মরে গিয়েও অনেক বেশি আলোচনায় ছিলেন কারিশমাকে কেন্দ্র করেই। এদিকে সঞ্জয়ের শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে কারিশমার উপস্থিতি, তার কান্না নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন।
তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন, ‘‘কারিশমা কাপুর কেঁদে বুক ভাসালেন সঞ্জয় কাপুর মারা যাওয়ার পর। সঞ্জয় কাপুরের অন্তেষ্টিক্রিয়ায় সাদা পোশাক পরে গেলেন, সেখানেও কেঁদে বুক ভাসালেন। আগ বাড়িয়ে সৎকারের সবই করলেন তিনি, আর কেঁদে বুক ভাসালেন। কার জন্য কাঁদলেন, যে লোকটা তাকে পেটাতো, অপমান করতো, অ্যাবিউজ করতো! লোকটা বিবাহিত ছিল, তারপরও কারিশমাকে বিয়ে করেছিল। প্রথম স্ত্রী নন্দিতাকে ডিভোর্স দিয়েছিল অবশ্য। কিন্তু নন্দিতার সঙ্গে সুযোগ পেলেই শুতে যেত। বিয়ের পর থেকেই কারিশমাকে নির্যাতন করতো সঞ্জয়। তাকে পেটাতো, অপমান করতো, অ্যাবিউজ করতো! কারিশমা জানিয়েছেন হানিমুনের দিন সঞ্জয় নিলামে উঠিয়েছিল কারিশমাকে। তার এক বন্ধু কিনে নিয়েছিল কারিশমাকে। এমন জঘন্য নারীবিদ্বেষী একটা লোক, যে নিজের স্ত্রীকেও ভোগের বস্তু ছাড়া আর কিছু মনে করে না, তার জন্য কারিশমাকে কাঁদতে হয় কেন? কারিশ্মার সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে যাওয়ার পরই সঞ্জয় আরেকটি বিয়ে করেছে। আরেক মহিলার স্বামীর জন্য কারিশমাকে এত আকুল হয়ে কাঁদতে হয় কেন?’’
তসলিমা নাসরিন আরও লিখেছেন, ‘‘লোকে বলছে, আহা কারিশমা কত ভালো, কত ভালবাসতেন তার স্বামীকে! স্বামী তাকে পেটাতো, অপমান করতো, অ্যাবিউজ করতো, নিলামে ওঠাতো, বেচে দিত, তারপরও কারিশমা কত ভালবাসতেন তাকে! কারিশমার বুক ভেসে যাওয়া কান্না দেখে সবাই মুগ্ধ। তার ত্যাগ দেখে সবাই তৃপ্ত। কত লক্ষ্মী মেয়ে কারিশমা! কত নরম মেয়ে কারিশমা! কত দুর্বল মেয়ে কারিশমা! কত পতিব্রতা মেয়ে কারিশমা! কত প্রাক্তনপতিব্রতা মেয়ে কারিশমা! কেউ কি কারিশমা বলেছে, তোকে যে এত নির্যাতন করেছে, তার জন্য কান্না কেন, চোখের জল মুছে ফেল? না, কেউ বলেনি।’’
আরো পড়ুন:
মৃত্যুর সময় কাউকে পাশে পাননি পাকিস্তানী অভিনেত্রী আয়েশা খান
শুভ বিয়ের প্রস্তাব দিলে কী করবেন মন্দিরা, জানালেন নায়িকা
তসলিমা নাসরিন তার পোস্টে স্পষ্ট করেছেন, কেন তিনি কারিশমার এভাবে কান্না করার বিষয়টি ভালোভাবে নিতে পারছেন না।
তসলিমা নাসরীন তার দীর্ঘ পোস্টের শেষের দিকে আরও লিখেছেন, ‘‘আমি বলছি না, মেয়েদের নিষ্ঠুর হতে হবে, অনুদার হতে হবে। না তা নয়, মেয়েরা উদার হোক, মানবিক হোক, সৎ হোক, সহমর্মী হোক, সহানুভূতিশীল হোক, কিন্তু যেন অযোগ্য লোকদের জন্য, যেন নারী-নির্যাতকদের জন্য মায়া মমতা, প্রেম ভালবাসা, সহানুভূতি সহমর্মিতা ইত্যাদি বর্ষিত না হয়।’’
উল্লেখ্য, ১২ জুন যুক্তরাজ্যে হৃদ্যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে এই শিল্পপতির মৃত্যু হয়। তার বয়স হয়েছিল ৫৩ বছর। ভারতে তার মরদেহ নিয়ে আসার পর শেষকৃত্যে উপস্থিত ছিলেন কারিশমা। সেখানে তিনি আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। নায়িকার সঙ্গে ২০১৬ সালে বিচ্ছেদ হয় সঞ্জয়ের। তবে দুই ছেলে–মেয়ের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল তার। কারিশমার দুই সন্তানের জন্য ১৪ কোটি টাকার বন্ড কিনে দিয়েছিলেন সঞ্জয়। কারিশমার সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ নিয়ে বিস্তর কাদা ছোড়াছুড়ি হলেও বিচ্ছেদের পর দুইজনের সৌজন্য সম্পর্ক বজায় ছিল বলে স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে।
ঢাকা/লিপি