ডাব পাড়ায় রাবির পাঁচ শিক্ষার্থীকে শোকজ
Published: 7th, May 2025 GMT
হলের শতাধিক ডাব পেড়ে নেওয়ার অভিযোগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরে বাংলা ফজলুল হক হলের পাঁচ আবাসিক শিক্ষার্থীকে শোকজ করা হয়েছে। ডাব পাড়ার ঘটনাকে হলের ‘শৃঙ্খলা পরিপন্থি’ কাজ উল্লেখ করে জড়িত শিক্ষার্থীদের ‘আবাসিকতা কেন বাতিল করা হবে না’ তা জানতে চেয়েছেন হল প্রাধ্যক্ষ। বৃহস্পতিবারের মধ্যে ওই শিক্ষার্থীদের লিখিত জবাব দিতে বলা হয়েছে।
হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মুহাম্মদ শরীফুল ইসলাম এক বিজ্ঞপ্তিতে রোববার এসব তথ্য জানান।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শেরে বাংলা ফজলুল হক হলের আওতাধীন ফলবান গাছগুলো পরিচর্যা ও তদারকির জন্য বর্তমান হল প্রশাসনের উদ্যোগে আবাসিক ছাত্র, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সমন্বয়ে একটি তদারকি কমিটি কার্যকর আছে। গাছগুলো পরিচর্যায় বিগত কয়েক মাসে মোটা অঙ্কের অর্থ ব্যয় হয়েছে। অথচ গত ১৩ এপ্রিল দিবাগত রাত দেড়টা থেকে আড়াইটার মধ্যে হলের পূর্ব ব্লকের কয়েকজন আবাসিক ছাত্র কিছুসংখ্যক বহিরাগত নিয়ে হলের কয়েকটি নারিকেল গাছ থেকে প্রায় শতাধিক ডাব পেড়ে নিয়েছে। এটি যেকোনো বিচারে আবাসিক শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশিত আচরণের পরিপন্থি ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ফলবান গাছগুলোর ফল-ফলাদি হলের সব আবাসিক শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং হলে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অধিকার।
এতে আরও বলা হয়, হলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে ওই পাঁচ শিক্ষার্থী এই অনাকাঙ্ক্ষিত কাজে জড়িত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। হল প্রশাসনের গত ২৭ এপ্রিলে অনুষ্ঠিত সভার ৩ নম্বর সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে বহিরাগতদের নিয়ে গভীর রাতে হলের নারিকেল গাছের ডাব পেড়ে অন্যের অধিকার হরণের মতো গর্হিত কাজ করায় কেন তাদের বিরুদ্ধে হলের শৃঙ্খলা পরিপন্থি কাজে সম্পৃক্ততার জন্য আবাসিকতা বাতিল করা হবে না, তা বৃহস্পতিবারের মধ্যে অফিস চলাকালীন সময়ের মধ্যে তাদের প্রাধ্যক্ষের কাছে লিখিতভাবে জানাতে বলা হচ্ছে।
অভিযুক্ত এক শিক্ষার্থী বলেন, মজা করে বন্ধুরা মিলে মাত্র একটি গাছ থেকে অল্প কিছু ডাব পেরেছিলাম। কিন্তু প্রাধ্যক্ষ স্যার যেভাবে শতাধিক ডাব পাড়ার অভিযোগ করেছে, তা ভিত্তিহীন। আমাদের কাছে সেদিন রাতের ছবি ও ভিডিও আছে। যেহেতু রাতের বেলায় আমরা এ কাজ করেছি, সেজন্য দোষ স্বীকার করে প্রাধ্যক্ষ স্যারের কাছে বারবার ক্ষমা চেয়েছি। কিন্তু তিনি আমাদের ক্ষমা না করে হল থেকে নামিয়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। এ ঘটনার পর থেকে আমি মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত হয়ে আছি।
এ বিষয়ে শেরে বাংলা ফজলুল হক হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মুহাম্মদ শরীফুল ইসলাম বলেন, আমি দায়িত্বে আসার পর থেকে হলের গাছগুলোর পরিচর্যার জন্য হল প্রশাসন থেকে মোটা অঙ্কের টাকা ব্যয় করা হয়। কিন্তু হঠাৎ এক দিন আমরা লক্ষ্য করি হলের নারিকেল গাছগুলোতে ডাব নেই। হলের ফল-ফলাদি ছাত্র-শিক্ষক-কর্মচারী সবার অধিকার। বিগত সময়েও এসব ফল চুরির ঘটনা হলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে। পুনরায় যাতে আর কেউ এমন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে, এজন্য তাদের বিরুদ্ধে এমন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: হল প র
এছাড়াও পড়ুন:
মানববন্ধনে যাওয়া দোকান কর্মচারীকে পিটুনি
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে আলোচিত শান্ত সরকার হত্যা মামলায় আসামিপক্ষের বিরুদ্ধে এক দোকান কর্মচারীকে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার বিকেলে উপজেলার দাউদপুর ইউনিয়নের হিরনাল এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। এ সময় আসামিরা হত্যা মামলাটি তুলে নিতে বাদী সালাউদ্দিন সরকারকে হুমকি দেয়।
গতকাল রোববার এ বিষয়ে রূপগঞ্জ থানায় অভিযোগ দিয়েছেন সালাউদ্দিন সরকার। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর ভাতিজা শান্ত সরকারকে গত ১১ এপ্রিল বিকেলে দাউদপুরের জিন্দা এলাকায় হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তিনি ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি আসাদ ফকির (৪০), তাঁর ভাই নাঈম ফকির (৩৭), রানা ফকির (৩৫), রোকনউদ্দিনসহ (৪০) ১৭ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতপরিচয় সাত-আটজনের বিরুদ্ধে রূপগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন।
হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে গত ২২ এপ্রিল এলাকাবাসীর উদ্যোগে মানববন্ধন করা হয়। এতে অংশ নেন সালাউদ্দিন সরকারের দোকানের কর্মচারী আনোয়ার হোসেন। এতে আসামিপক্ষের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, শনিবার বিকেলে আনোয়ার হোসেন দোকান থেকে বাড়িতে ফিরছিলেন। হিরনাল মাজারের সামনে পৌঁছালে তাঁর ওপর হামলা হয়। এতে শান্ত হত্যা মামলার আসামি নাঈম ফকির, রানা ফকির, ফরহাদ, অনিক ফকিরসহ তাদের সহযোগীরা ছিলেন। তারা আনোয়ারের কাছ থেকে দোকানের পণ্য কেনার নগদ ৬৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। মারধরের শিকার হয়ে তিনি চিৎকার করলে সালাউদ্দিন সরকারসহ আশপাশের লোকজন আসেন। এ সময় হামলাকারীরা মামলা তুলে নিতে তাঁকে হুমকি দেয়। পরে আনোয়ারকে উদ্ধার করে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
দাউদপুর ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি আসাদ ফকিরের ভাষ্য, ‘একটি সাইনবোর্ড লাগানোকে কেন্দ্র করে তর্কাতর্কি হয়েছিল। তখন আমার ছোট ভাই নাঈম ও তাঁর লোকজন আনোয়ারকে মারধর করেছে।’ তিনি আনোয়ারের চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন বলেও দাবি করেন।
রূপগঞ্জ থানার ওসি তরিকুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় তারা লিখিত একটি অভিযোগ পেয়েছেন। তদন্তের পর আইনগত ব্যবস্থা নেবেন।