‘পদ পেতে’ এইচএসসি পাস ছাত্রদল নেতা ভর্তি হলেন একাদশ শ্রেণিতে
Published: 7th, May 2025 GMT
২০১৭ সালে এইচএসসি পাস করেন। এরপর ভর্তি হন স্নাতকে (সম্মান)। তবে স্নাতক প্রথম বর্ষ পড়ার সময়ই চলে যান বিদেশে। গত বছরের ৫ আগস্টের পর দেশে ফিরে আবারও একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছেন ছাত্রদলের এক নেতা।
ওই ছাত্রদল নেতার নাম মেহেরাব হোসেন। তিনি চন্দ্রগঞ্জ এলাকার শেখপুর গ্রামের নুর হোসেনের ছেলে। বর্তমানে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার কফিল উদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়কের পদে রয়েছেন তিনি।
কলেজ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫–১৬ শিক্ষাবর্ষে কফিল উদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ব্যবসায় শিক্ষা শাখার ছাত্র ছিলেন মেহেরাব হোসেন। কলেজের নিয়মিত ছাত্র হিসেবে ২০১৭ সালে তিনি এইচএসসি পাস করে একই কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষে ভর্তি ছিলেন। এরপর তিনি যুক্তরাষ্ট্রে চলে গেলে তাঁর ভর্তি বাতিল হয়। তবে গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর দেশে ফিরে তিনি আবারও কলেজের রাজনীতিতে সক্রিয় হয়েছেন। সম্প্রতি তিনি কলেজের বিএমটিতে (বিজনেস ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড টেকনোলজি) একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছেন। কলেজ ছাত্রদলের নেতা–কর্মীরা জানিয়েছেন, সংগঠনের কলেজ শাখার সভাপতির পদ পেতে চেষ্টা করে যাচ্ছেন মেহেরাব। সে লক্ষ্যে আবার কলেজে ভর্তি হয়েছেন।
কলেজের শিক্ষার্থীদের তথ্য ঘেঁটে মেহেরাব হোসেনের একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। কলেজের কয়েকজন শিক্ষক বলেন, বিএমটি ও এইচএসসি সমমানের। এরপরও এইচএসসি পাস একজন শিক্ষার্থী বিএমটি শাখায় একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হওয়ার বিষয়টি জেনে তাঁরা হতভম্ব।
ছাত্রদলের নেতা–কর্মীদের দাবি, আগের পদ বহাল রাখা ও নতুন পদের জন্যই মূলত মেহেরাব হোসেন আবার একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছেন। কলেজ ছাত্রদলের রাজনীতিতে সক্রিয় থাকা শাহাদাত হোসেন নামের ছাত্রদলের এক কর্মী বলেন, ‘কৌশলবাজদের হাতে ছাত্রদলের পদ আটকে থাকায় নতুন প্রজন্মের তরুণেরা নেতৃত্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এতে ছাত্রদলের কার্যক্রমও দুর্বল হয়ে পড়ছে।’
জানতে চাইলে মেহেরাব হোসেনও একাদশ শ্রেণিতে আবার ভর্তির বিষয়টি স্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘ছাত্রদলের রাজনীতিতে জড়িত থাকার কারণে ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীদের আক্রোশের মধ্যে ছিলাম। তাঁদের হামলা–মামলার কারণে তখন কলেজে পড়াশোনা করতে পারিনি। তাই বর্তমান পরিস্থিতিতে এখন আবার ভালোভাবে পড়াশোনায় মনোযোগী হতে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছি। অনিয়মিত হওয়ায় স্নাতকে ভর্তির বিষয়টি একটু জটিল, তাই একাদশে ভর্তির সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি কলেজ ছাত্রদলের সভাপতির পদপ্রার্থী। দল যোগ্য মনে করলে আমাকে পদ দেবে।’
কফিল উদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যক্ষ প্রিয়ব্রত চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, এইচএসসি পাস করেও একজনের আবার একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির বিষয়টি তাঁর নজরে এসেছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ করবেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ভারত-পাকিস্তান সংঘাতে ‘৮টি বিমান’ ভূপাতিত করা হয়েছে: ট্রাম্পের নতুন দাবি
ভারত-পাকিস্তান সংঘাত নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গতকাল বুধবার আবার দাবি করেছেন, গত মে মাসে ভারত-পাকিস্তানের সংঘাত তিনিই থামিয়েছিলেন। তবে তিনি এবার সংঘাতে যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হওয়ার সংখ্যায় বদল এনেছেন। ///এবার তিনি বলেছেন, ‘অপারেশন সিঁদুর’ নাম দিয়ে পাকিস্তানের ভারতে হামলার সময় ‘আটটি বিমান’ গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, বিশ্বের সব যুদ্ধ ও সংঘাত বন্ধে তাঁর করা বাণিজ্য চুক্তি ও শুল্কের হুমকি হচ্ছে বড় হাতিয়ার।
গতকাল বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের মায়ামির ‘আমেরিকান বিজনেস ফোরামে’ বক্তৃতাকালে ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এখন শক্তির মাধ্যমে সারা বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা করছে। কারণ, কেউ তাদের সঙ্গে ‘ঝামেলা করতে আসবে না’।
গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র যেসব বাণিজ্য চুক্তি করেছে, সেগুলোর উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেন, তাঁর প্রশাসন চীন, জাপান ও মালয়েশিয়ার সঙ্গে চুক্তি করেছে। এরপর তিনি আবারও দাবি করেন, তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদের আট মাসে তিনি ‘আটটি যুদ্ধ’শেষ করেছেন।
ভারত ও পাকিস্তানের ‘সংঘাতের অবসান’ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট দাবি করেন, তিনি যখন দিল্লি ও ইসলামাবাদের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি সই করার প্রায় মাঝামাঝি সময়ে ছিলেন তখনই তিনি শুনতে পান, এই দুটি প্রতিবেশী দেশ ‘যুদ্ধের দিকে এগোচ্ছে’। তখনই তিনি সিদ্ধান্ত নেন, তারা যুদ্ধে জড়িয়ে পড়লে তাঁর প্রশাসন কোনো দেশের সঙ্গেই কোনো চুক্তি করবে না।
বিজনেস ফোরামের অনুষ্ঠানে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি দুই দেশের সঙ্গেই বাণিজ্য চুক্তি করার মাঝামাঝি জায়গায় ছিলাম। তখনই আমি একটি নির্দিষ্ট খবরের কাগজের প্রথম পাতায় পড়লাম, তারা যুদ্ধ করতে যাচ্ছে। সাত বা আটটি যুদ্ধবিমান গুলি করে নামানো হয়েছিল। মূলত আটটি যুদ্ধবিমান গুলি করে নামানো হয়েছিল।’
ট্রাম্পের এই সংখ্যা তাঁর আগের দাবির সংখ্যার থেকে ভিন্ন। প্রথমে তিনি বলেছিলেন তিনটি বিমান গুলি করে নামানো হয়েছিল। এরপর জুলাই মাসে তিনি সংখ্যাটি বাড়িয়ে পাঁচ করেন। পরে আগস্টে সংখ্যাটি আরও বাড়িয়ে সাত করা হয়। আর এখন, ট্রাম্পের কাছে ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের সময় গুলি করে নামানো বিমানের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়াল ‘৮-এ’।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট দাবি করেন, ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি বন্ধের হুমকি দেওয়ার পরই ‘আমি একটি ফোন কল পেলাম, তারা শান্তি চায়। তারা থেমে গেল। আমি বললাম ধন্যবাদ, চলুন ব্যবসা করি। এটা দারুণ না?’
ট্রাম্প এর আগেও বারবার দাবি করেছেন, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ‘পুরোপুরি ও দ্রুত’ যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার কৃতিত্ব তাঁর প্রশাসনের।
তবে ভারত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে। ভারত জানিয়েছে, দুই দেশের মধ্যে সরাসরি কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে ইসলামাবাদের সঙ্গে উত্তেজনা কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কোনো ধরনের মধ্যস্থতার জন্য তৃতীয় পক্ষের কোনো হস্তক্ষেপ ছিল না।