এক জোড়া বামন তারাকে প্রদক্ষিণ করা গ্রহের খোঁজ মিলেছে
Published: 9th, May 2025 GMT
এক জোড়া যমজ বাদামি বামন তারাকে প্রদক্ষিণ করা বিরল এক গ্রহের সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, ভিন্ন ধরনের গ্রহটি যমজ বাদামি বামন নক্ষত্রের চারপাশে ৯০ ডিগ্রি কোণে প্রদক্ষিণ করছে। নতুন এই গ্রহের খোঁজ মহাবিশ্বে গ্রহ কীভাবে তৈরি হয় ও কক্ষপথে আবর্তন করে, তার সম্পর্কে দীর্ঘদিনের ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করেছে।
নতুন খোঁজ পাওয়া এই গ্রহের নাম ২এম১৫১০(এবি)বি। গ্রহটি যে যমজ বামন তারার চারপাশে ঘুরছে, সেগুলো বাইনারি হিসেবে পরিচিত। এসব তারা একে অপরকে এমনভাবে প্রদক্ষিণ করছে, যা পৃথিবী থেকে মনে হয় একে অপরের সামনে দিয়ে যাচ্ছে। গ্রহটির কক্ষপথ তার নক্ষত্রের কক্ষপথের সমান লম্বা। এই বিরল গ্রহটিই প্রথম গ্রহ, যা একটি মেরু কক্ষপথ অনুসরণ করছে। দুটি বাদামি বামন তারার নাম ২এমএসএস জে১৫১০৪৭৮৬-২৮১৮১৭৪। ২০১৮ সালে বামন তারাগুলো আবিষ্কার করেন বিজ্ঞানীরা।
দুটি বাদামি বামনের ভর প্রায় সমান। প্রতিটির ভর সূর্যের ভরের মাত্র ৩ শতাংশ। কক্ষপথে আবর্তন করতে প্রায় ২১ দিন সময় নেয়। এই জোড়া বামন আরেকটি তৃতীয় বাদামি বামন থেকে প্রায় ২৫০ জ্যোতির্বিদ্যা ইউনিট দূরে অবস্থিত। তিন বামনের উপস্থিতির জন্য পুরো অবস্থা সেখানে বেশ জটিল বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। সিস্টেমটি আরগাস মুভিং গ্রুপের অন্তর্গত, প্রায় ৪ কোটি ৫০ লাখ বছর পুরোনো তরুণ নক্ষত্রের একটি কাঠামো। বাদামি বামন সিস্টেম বিজ্ঞানীদের নতুন বস্তুর বিবর্তনের মডেল পরীক্ষা করতে অনেক তথ্য দিচ্ছে।
নতুন গ্রহের বিষয়ে বিজ্ঞানী ললিতা সাইরাম বলেন, ‘আমরা লক্ষ করেছি যে দুটি বাদামি বামনের কক্ষপথ একে অপরের চারপাশে সূক্ষ্মভাবে প্রভাবিত করছে। সাধারণত গ্রহ তাদের হোস্ট নক্ষত্রের মতো প্রায় একই সমতলে প্রদক্ষিণ করে। ১৬টি পরিচিত সার্কামবাইনারি ধরনের গ্রহের বেশির ভাগই দুটি নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করে। অন্যদিকে নতুন গ্রহটি তারার কক্ষপথ খাঁড়াভাবে প্রদক্ষিণ করছে।’
সূত্র: দ্য ব্রাইটার সাইড
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব মন ত র গ রহট ণ করছ
এছাড়াও পড়ুন:
পূর্বশত্রুতার জেরে মব তৈরি করে রইস উদ্দিনকে হত্যা করা হয়
পূর্বশত্রুতার জের ধরে ধর্ষণের ঘটনা সাজিয়ে ‘মব’ তৈরি করে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনার ঢাকা মহানগরীর সাবেক সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ রইস উদ্দিনকে হত্যা করা হয়েছে। শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে তাঁর পরিবার এ অভিযোগ করেছে।
ইমাম ও খতিব মাওলানা রইস উদ্দিনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে নির্যাতন ও বিনা চিকিৎসায় কারা হেফাজতে মৃত্যুর প্রতিবাদ এবং এ ঘটনার প্রভাবমুক্ত ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরম খাঁ হলে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে রইস উদ্দিনের স্ত্রী সাজেদা আক্তার বলেন, মাওলানা রইস উদ্দিন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৩৯ নম্বর ওয়ার্ড হায়দারাবাদ এলাকার আখলাদুল জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব ছিলেন। গত ২৭ এপ্রিল সকাল আটটায় পূর্বশত্রুতার জের ধরে ধর্ষণের পরিকল্পিত ঘটনা সাজিয়ে একটি মব তৈরি করা হয়। তাঁকে গাছের সঙ্গে বেঁধে অমানুষিক নির্যাতন করা হয়। পেটে, বুকে, পিঠে, তলপেটে, চোখের নিচে ও মাথায় আঘাতের পর আঘাত করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, চার ঘণ্টা মারধর করার পর রইস উদ্দিনকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। পরে তাঁকে পুবাইল থানা থেকে গাজীপুরের আদালতে তোলে। আদালত তাঁকে জেলা কারাগারে পাঠান। জেলা কারাগারে রাত সাড়ে তিনটায় তিনি ইন্তেকাল করেন।
এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন জানিয়ে এ মামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানান রইস উদ্দিনের স্ত্রী। পাশাপাশি তাঁর মৃত্যুর পেছনে থানা-পুলিশ এবং কারা কর্তৃপক্ষের অবহেলা ছিল কি না, তা সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ও বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও গাজীপুরের পুলিশ কমিশনারের প্রতি দাবি জানান সাজেদা আক্তার।
রইস উদ্দিন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন জানিয়ে রাষ্ট্রীয়ভাবে তাঁদের ভরণপোষণের ব্যবস্থা করার জন্য সরকারে প্রতি দাবি জানান তাঁর স্ত্রী।
সংবাদ সম্মেলনে রইস উদ্দিনের মা রহিমা বেগম বলেন, ‘অপবাদ দিয়ে একমাত্র কলিজার টুকরাকে হত্যা করে আমার থেকে দূরে সরানো হয়েছে। আমি এর সুষ্ঠু ও ন্যায়বিচার চাই। আসামিদের ফাঁসি চাই।’
বাদীপক্ষের আইনজীবী জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আসামিরা এখনো নির্বিঘ্নে ঘুরে বেড়াচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ‘পীর বাবার দোয়া’ নামের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে অপবাদ ছড়ানো হচ্ছে এবং হুমকি দেওয়া হচ্ছে। মামলার এক সাক্ষীর বাড়িতে আসামিরা হামলা করেছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলন শেষে প্রথম আলোকে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ঘটনার দিন মামলা নিতে পুলিশ অবহেলা করেছে। তাই মামলার আরজিতে সেটা উল্লেখ করে বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে। দ্রুত সময়ে বিচার পাবেন বলে আশা করছেন।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী ইকবাল হাসান ও শাহীদুল আলম, রইস উদ্দিনের মেয়ে সাইয়্যিদা মাহজাবিন মাহিরা, ভাই মিজানুর রহমান ও হাফেজ ওমর ফারুক, ভগ্নিপতি আব্বাস উদ্দিন প্রমুখ।