এখন চলছে গ্রীষ্মকাল। কোনো দিন প্রচণ্ড গরম, তো আরেক দিন তীব্র বৃষ্টি। সঙ্গে বাতাসে আর্দ্রতা। আবহাওয়ার এই চরম ভাবের কারণে ত্বকের ওপর প্রভাব পড়ে বেশ। এ সময় হতে পারে বিভিন্ন রকমের চর্মরোগ। এসবের মধ্যে অন্যতম বয়েল ও কারবাংকল।

বয়েল ও কারবাংকল কী

বয়েল ও কারবাংকল—এ দুটি শব্দের সঙ্গে আমরা অনেকেই পরিচিত নই। এগুলো একধরনের ত্বকের রোগ। সাধারণত ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ থেকে এগুলো হয়। স্ট্যাফাইলোকোক্কাস ব্যাকটেরিয়া মূলত এ জন্য দায়ী।

বয়েল বলতে ছোট ছোট ফোড়াকে বোঝায়, যেগুলো লোম বা চুলের ফলিকল থেকে উঠে আসে। এগুলো সাধারণত খুব ব্যথা করে। ভেতরে হলুদ বা সাদা পুঁজ থাকে। এর চারপাশের ত্বক লাল হয়ে যায় ও ফুলে থাকে। বেশির ভাগ সময় কয়েক দিন পর এগুলো নিজে নিজে ফেটে যায় বা শুকিয়ে যায়। অন্যদিকে কারবাংকলে বয়েলের মতো ছোট ছোট ফোড়া একসঙ্গে অনেকগুলো হয়, যা শরীরের তুলনামূলক প্রভাব ফেলে বেশি। আক্রান্ত ব্যক্তির জ্বর হয়। অনেকের অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োজন হয়। পুঁজগুলো বের করে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হয়।

আরও পড়ুনযে রোগে পচা মাছের গন্ধ আসে শরীর থেকে ০২ মে ২০২৫

গরমে কেন বেশি হয়

সাধারণত গরম আবহাওয়া ও আর্দ্রতা বেশি হলে বয়েল ও কারবাংকল বেশি হয়। এ ছাড়া এর পেছনে আরও কতগুলো কারণ আছে। যেমন:

১.

অতিরিক্ত ঘাম

অতিরিক্ত ঘাম ত্বকের ছিদ্রপথকে আটকে দেয়। বিশেষ করে যেখানে চুলের ফলিকল থাকে, সেটির পথ বন্ধ হয়ে যায়। এ রকম পরিবেশ ব্যাকটেরিয়ার বংশবৃদ্ধির জন্য সুবিধাজনক।

২. ব্যাকটেরিয়ার বংশবৃদ্ধি

গরম ও আর্দ্র আবহাওয়ায় ব্যাকটেরিয়া বংশবৃদ্ধি করে। এমন আবহাওয়ায় এ রকম ত্বকের রোগ হওয়ার প্রবণতা বেশি।

৩. চামড়ায় ঘর্ষণ ও অস্বস্তি

বেশি বেশি ঘাম হওয়ার কারণে বারবার ত্বকের সঙ্গে কাপড়ের ঘর্ষণ হয়, যা ত্বককে ক্ষতিগ্রস্ত করে। পরে ওই জায়গা দিয়ে ব্যাকটেরিয়া ঢোকা সহজ হয়ে যায়।

৪. অস্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা

অনেকে আছেন নিয়মিত গোসল করেন না বা ঘামে ভেজা কাপড় পরেই থাকেন। তাঁদের ত্বকে ধুলো ও ব্যাকটেরিয়া জমে যাওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে।

করণীয়

আমাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় কয়েকটি সাধারণ ব্যবস্থা নিলেই বয়েল ও কারবাংকল প্রতিরোধ করা সম্ভব।

নিয়মিত গোসল করে শরীর পরিষ্কার রাখতে হবে। এ ছাড়া অ্যান্টিসেপটিক সাবান ব্যবহার করতে হবে।

পাতলা ও ঢিলেঢালা কাপড় পরতে হবে। বেশি আঁটসাঁট কাপড় পরলে ঘাম জমে ইনফেকশন হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে।

শরীরকে ঠান্ডা ও শুষ্ক রাখতে ট্যালকম পাউডার ব্যবহার করতে হবে।

ছোটখাটো আঘাত বা ক্ষত হলে সঙ্গে সঙ্গে তা পরিষ্কার করে ফেলতে হবে। তাহলে ব্যাকটেরিয়া জমার সুযোগ পাবে না।

ব্যক্তিগত ব্যবহার্য জিনিসপত্র, যেমন রেজর, গামছা, তোয়ালে অন্য কাউকে ব্যবহার করতে দেওয়া যাবে না।

রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ানোর জন্য স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।

ডায়াবেটিক রোগীদের বয়েল ও কারবাংকল হওয়ার ঝুঁকি বেশি। এ কারণে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।

এসব নিয়ম মেনে চললে খুব সহজে বয়েল ও কারবাংকলের মতো সাধারণ ত্বকের রোগকে প্রতিরোধ করা সম্ভব। তবে কারও বয়েল ও কারবাংকল হয়ে গেলে এবং শরীরের ওপর প্রভাব ফেললে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

আরও পড়ুন৩০ থেকে ৪০ বছর বয়সে যেভাবে ত্বকের যত্ন নেবেন১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবহ র র ত বক ত বক র হওয় র

এছাড়াও পড়ুন:

রোনালদো বললেন, ‘স্পেনের চেয়ে সৌদি আরবে গোল করা কঠিন’

ব্রিটিশ সাংবাদিক পিয়ার্স মরগানকে দেওয়া সাক্ষাৎকারের প্রথম পর্বে কথার আগল খুলে দিয়েছিলেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। অন্তরঙ্গ এই সাক্ষাৎকারে রোনালদো তাঁর ক্যারিয়ার, অর্জন, অবসর এবং ফুটবলের প্রতি ভালোবাসা নিয়ে কথা বলেছেন।

একই সাক্ষাৎকারের দ্বিতীয় অংশেও সামনে এসেছে ‘সিআর সেভেনের’ চমকপ্রদ সব মন্তব্য। যেখানে তিনি দিয়েগো জোতার শেষকৃত্যে না যাওয়ার কারণ ব্যাখ্যার পাশাপাশি কথা বলেছেন নিজের গোল করার ক্ষমতা, সৌদি ফুটবল ও বিশ্বকাপ নিয়েও।

লিভারপুল ও পর্তুগালের ফরোয়ার্ড দিয়োগো জোতা এবং তাঁর ভাই আন্দ্রে সিলভা গত জুলাই মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় মর্মান্তিকভাবে মারা যান। ক্লাব ও জাতীয় দলের বেশ কিছু সতীর্থ পর্তুগালে অনুষ্ঠিত জোতা ও তাঁর ভাইয়ের শেষকৃত্যে যোগ দিলেও রোনালদো ছিলেন অনুপস্থিত। রোনালদো বলেছেন, তিনি জোতার শেষকৃত্যে যাননি। কারণ, তিনি চাননি বিষয়টা ‘একটা সার্কাস’–এ পরিণত হোক।

আরও পড়ুনবিশ্বকাপ জিতলেই কি ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড় হয় কেউ—প্রশ্ন রোনালদোর০৫ নভেম্বর ২০২৫

পিয়ার্স মরগানকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রোনালদো বলেন, ‘মানুষ আমার অনেক সমালোচনা করে। আমি তাতে কিছু মনে করি না। যখন তোমার বিবেক পরিষ্কার থাকে, তখন কে কী বলল, তা নিয়ে চিন্তা করার প্রয়োজন নেই। আমি একটা কাজ আর করি না, আমার বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে আমি আর কখনো কবরস্থানে যাইনি। আমাকে যারা চেনে, তারা বিষয়টা জানে। আমি যেখানে যাই, সেখানে ভিড় জমে, হইচই হয়, মানে একরকম সার্কাস শুরু হয়ে যায়।’

রোনালদো যোগ করেন, ‘আমি বাইরে যাই না। কারণ, গেলে সবার দৃষ্টি আমার দিকেই চলে যায়। আমি এমন মনোযোগ চাই না। আমি দেখছিলাম যে কিছু লোক সেই সংবেদনশীল মুহূর্তে সাক্ষাৎকার নিচ্ছিল বা ফুটবল নিয়ে কথা বলছিল, আমি এটা পছন্দ করি না।’

পিয়ার্স মরগানকে দেওয়া সাক্ষাৎকারের দ্বিতীয় অংশে রোনালদো কথা বলেছেন নিজের গোল করার ক্ষমতা নিয়েও, ‘বাজে একটি মৌসুমেও যখন আল নাসর কোনো ট্রফি জেতেনি, তখনো আমি ২৫টি গোল করেছি। যদি আমি প্রিমিয়ার লিগে খেলতাম, তাহলে এখনো একই রকম গোল করতাম। ভালো দলে থাকলে ৪০ বছর বয়সেও একই রকম পারফর্ম করতাম।’

সাংবাদিক পিয়ার্স মরগানকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো

সম্পর্কিত নিবন্ধ