গরমকালে ত্বকে কেন বয়েল ও কারবাংকল হয়
Published: 9th, May 2025 GMT
এখন চলছে গ্রীষ্মকাল। কোনো দিন প্রচণ্ড গরম, তো আরেক দিন তীব্র বৃষ্টি। সঙ্গে বাতাসে আর্দ্রতা। আবহাওয়ার এই চরম ভাবের কারণে ত্বকের ওপর প্রভাব পড়ে বেশ। এ সময় হতে পারে বিভিন্ন রকমের চর্মরোগ। এসবের মধ্যে অন্যতম বয়েল ও কারবাংকল।
বয়েল ও কারবাংকল কী
বয়েল ও কারবাংকল—এ দুটি শব্দের সঙ্গে আমরা অনেকেই পরিচিত নই। এগুলো একধরনের ত্বকের রোগ। সাধারণত ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ থেকে এগুলো হয়। স্ট্যাফাইলোকোক্কাস ব্যাকটেরিয়া মূলত এ জন্য দায়ী।
বয়েল বলতে ছোট ছোট ফোড়াকে বোঝায়, যেগুলো লোম বা চুলের ফলিকল থেকে উঠে আসে। এগুলো সাধারণত খুব ব্যথা করে। ভেতরে হলুদ বা সাদা পুঁজ থাকে। এর চারপাশের ত্বক লাল হয়ে যায় ও ফুলে থাকে। বেশির ভাগ সময় কয়েক দিন পর এগুলো নিজে নিজে ফেটে যায় বা শুকিয়ে যায়। অন্যদিকে কারবাংকলে বয়েলের মতো ছোট ছোট ফোড়া একসঙ্গে অনেকগুলো হয়, যা শরীরের তুলনামূলক প্রভাব ফেলে বেশি। আক্রান্ত ব্যক্তির জ্বর হয়। অনেকের অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োজন হয়। পুঁজগুলো বের করে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হয়।
আরও পড়ুনযে রোগে পচা মাছের গন্ধ আসে শরীর থেকে ০২ মে ২০২৫গরমে কেন বেশি হয়
সাধারণত গরম আবহাওয়া ও আর্দ্রতা বেশি হলে বয়েল ও কারবাংকল বেশি হয়। এ ছাড়া এর পেছনে আরও কতগুলো কারণ আছে। যেমন:
১.
অতিরিক্ত ঘাম
অতিরিক্ত ঘাম ত্বকের ছিদ্রপথকে আটকে দেয়। বিশেষ করে যেখানে চুলের ফলিকল থাকে, সেটির পথ বন্ধ হয়ে যায়। এ রকম পরিবেশ ব্যাকটেরিয়ার বংশবৃদ্ধির জন্য সুবিধাজনক।
২. ব্যাকটেরিয়ার বংশবৃদ্ধি
গরম ও আর্দ্র আবহাওয়ায় ব্যাকটেরিয়া বংশবৃদ্ধি করে। এমন আবহাওয়ায় এ রকম ত্বকের রোগ হওয়ার প্রবণতা বেশি।
৩. চামড়ায় ঘর্ষণ ও অস্বস্তি
বেশি বেশি ঘাম হওয়ার কারণে বারবার ত্বকের সঙ্গে কাপড়ের ঘর্ষণ হয়, যা ত্বককে ক্ষতিগ্রস্ত করে। পরে ওই জায়গা দিয়ে ব্যাকটেরিয়া ঢোকা সহজ হয়ে যায়।
৪. অস্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা
অনেকে আছেন নিয়মিত গোসল করেন না বা ঘামে ভেজা কাপড় পরেই থাকেন। তাঁদের ত্বকে ধুলো ও ব্যাকটেরিয়া জমে যাওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে।
করণীয়
আমাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় কয়েকটি সাধারণ ব্যবস্থা নিলেই বয়েল ও কারবাংকল প্রতিরোধ করা সম্ভব।
নিয়মিত গোসল করে শরীর পরিষ্কার রাখতে হবে। এ ছাড়া অ্যান্টিসেপটিক সাবান ব্যবহার করতে হবে।
পাতলা ও ঢিলেঢালা কাপড় পরতে হবে। বেশি আঁটসাঁট কাপড় পরলে ঘাম জমে ইনফেকশন হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে।
শরীরকে ঠান্ডা ও শুষ্ক রাখতে ট্যালকম পাউডার ব্যবহার করতে হবে।
ছোটখাটো আঘাত বা ক্ষত হলে সঙ্গে সঙ্গে তা পরিষ্কার করে ফেলতে হবে। তাহলে ব্যাকটেরিয়া জমার সুযোগ পাবে না।
ব্যক্তিগত ব্যবহার্য জিনিসপত্র, যেমন রেজর, গামছা, তোয়ালে অন্য কাউকে ব্যবহার করতে দেওয়া যাবে না।
রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ানোর জন্য স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
ডায়াবেটিক রোগীদের বয়েল ও কারবাংকল হওয়ার ঝুঁকি বেশি। এ কারণে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
এসব নিয়ম মেনে চললে খুব সহজে বয়েল ও কারবাংকলের মতো সাধারণ ত্বকের রোগকে প্রতিরোধ করা সম্ভব। তবে কারও বয়েল ও কারবাংকল হয়ে গেলে এবং শরীরের ওপর প্রভাব ফেললে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
আরও পড়ুন৩০ থেকে ৪০ বছর বয়সে যেভাবে ত্বকের যত্ন নেবেন১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবহ র র ত বক ত বক র হওয় র
এছাড়াও পড়ুন:
একনেকে ১৭ প্রকল্প অনুমোদন
সাতটি বিভাগীয় শহরে ২০০ শয্যার মাদকাসক্তি নিরাময় ও পুনর্বাসন কেন্দ্র নির্মাণসহ ৮ হাজার ৯৭৪ কোটি ২৮ লাখ টাকার ১৭টি প্রকল্প অনুমোদন করেছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।
এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৩ হাজার ১৮০ কোটি ৩৪ লাখ টাকা, প্রকল্প ঋণ ৫ হাজার ৫৬৩ কোটি ৪৩ লাখ টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ২৩০ কোটি ৫১ লাখ টাকা।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) একনেক বৈঠকে প্রকল্পগুলো অনুমোদন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও একনেক চেয়ারপারসন ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে এ বৈঠক হয়।
আরো পড়ুন:
একনেকে ৩৭৫৬ কোটি টাকার ৯ প্রকল্প অনুমোদন
একনেকে ১২৫৩২ কোটি টাকার ১৩ প্রকল্প অনুমোদন
অনুমোদিত প্রকল্পের মধ্যে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দুটি রয়েছে। এগুলো হলো— ‘উপজেলা কমপ্লেক্স সম্প্রসারণ প্রকল্প (২য় পর্যায়) (২য় সংশোধিত)’ এবং ‘বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী এবং স্থানীয় জনসমাজের সমন্বিত সেবা ও জীবন-জীবিকার উন্নয়ন প্রকল্প’।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ‘সাতটি বিভাগীয় শহরে ২০০ শস্যাবিশিষ্ট মাদকাসক্তি নিরাময় ও পুনর্বাসন কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প’; নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের ‘নবনির্মিত চারটি মেরিন একাডেমিতে সিমুলেটর ও সংশ্লিষ্ট সুবিধাদী স্থাপনের মাধ্যমে সক্ষমতা বৃদ্ধি’; আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ‘অ্যাসসেস টু জাস্টিস ফর উইমেন: স্ট্রেনদেনিং কমিউনিটি ডিসপুট রেজোলুশ্যন অ্যান্ড ইমপ্রুভিং ম্যানেজমেন্ট’; ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের ‘বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপন (প্রস্তাবিত ২য় সংশোধিন)’; শিল্প মন্ত্রণালয়ের ‘সার সংরক্ষণ ও বিতরণ সুবিধার জন্য দেশের বিভিন্ন জেলায় ১৩টি নতুন বাফার গোডাউন নির্মাণ (৩য় সংশোধিত ৪র্থ বার বৃদ্ধি)’; মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ‘কিশোর-কিশোরী ক্লাব স্থাপন (১ম সংশোধিত) প্রকল্প’ এবং ‘নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিকার ও প্রতিরোধে সমন্বিত সেবা জোরদারকরণ এবং কুইক রেসপন্স টিমের কার্যক্রম প্রকল্প’; শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ‘টিভিইটি টিচার্স ফর দ্য ফিউচার (টিটিএফ) প্রোগ্রাম’; সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ‘দেশব্যাপী ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি ৩য় সংশোধিত প্রকল্প’; পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের ‘কার্যক্রম বিভাগে একটি নতুন ডিজিটাল ডাটাবেজ সিস্টেম স্থাপনের মাধ্যমে উন্নয়ন বাজেট ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি শক্তিশালীকরণ (৩য় সংশোধিত) প্রকল্প’ ও ‘ইমপ্রুভমেন্ট অব পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (আইপিআইএমস)’, ‘প্রকিউরমেন্ট মডার্নাইজেশন টু ইমপ্রুভ পাবলিক সার্ভিস ডেলিভারি (পিএমআইএসডি)’ ও ‘স্ট্যাটিস্টিক্যাল ক্যাপাসিটি এনহেন্সমেন্ট অ্যান্ড মডার্নাজেইশন প্রজেক্ট (এসসিইএমপি) প্রকল্প’ অনুমোদন করা হয়েছে।
এছাড়া, অর্থ মন্ত্রণালয়ের ‘স্ট্রেনদেনিং পাবলিক অডিট থ্রো ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন অ্যান্ড ক্যাপাসিটি এনহেন্সমেন্ট (এসপিএডিটিইসি)’ ও ‘স্ট্রেনদেনিং ডোমেস্টিক রেভিনিউ মোবিলাইজেশন প্রজেক্টের (এসডিআরএমপি)’ মেয়াদ বৃদ্ধির প্রস্তাবও অনুমোদন করা হয়েছে।
পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ; আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল; পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন; স্বরাষ্ট্র এবং কৃষি উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী; শিল্প এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান; খাদ্য এবং ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার; বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ; সড়ক পরিবহন ও সেতু এবং রেলপথ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং যুব ও ক্রীড়া এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা একনেক সভায় অংশ নেন।
ঢাকা/হাসান/রফিক