ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলায় খালে পড়ে আদুরী নামে দুই বছর বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৩ মে) দুপুরে উপজেলার কুলকাঠি ইউনিয়নের পূর্ব পাওতা গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। মারা যাওয়া আদুরী একই গ্রামের জসিম হাওলাদারের মেয়ে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, খেলার সময় পরিবারের অজান্তে আদুরী বাড়ির পাশের খালে পড়ে যায়। পরে পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়রা খাল থেকে তুলে তাকে নলছিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানকার চিকিৎসক আদুরীকে মৃত ঘোষণা করেন।
আরো পড়ুন:
রাজধানীতে শিশু গৃহকর্মীকে ধর্ষণের অভিযোগ, গৃহকর্তা গ্রেপ্তার
মাগুরার সেই শিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা.
ঢাকা/অলোক/মাসুদ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
পশুর চাহিদা বাড়লেও কমেছে পালন, আছে লোকসানের ভয়
আগের বছর ৯টি ষাঁড় বিক্রি করে খরচ বাদে প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা লাভ করেছিলেন কুমারখালীর যদুবয়রা ইউনিয়নের জোতমোড়া গ্রামের খামারি হান্নান মোল্লা। এবারও ৯টি প্রস্তুত করেছেন। দেশের চলমান পরিস্থিতিতে ভালো ক্রেতা পাবেন কিনা বা ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করতে পারবেন কিনা, তা নিয়ে উদ্বেগে আছেন তিনি।
আগে প্রতিবছর ঈদের জন্য ৫০-৭০টি ষাঁড় প্রস্তুত করতেন হাসিমপুর গ্রামের রমন ঘোষ খামারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শান্ত। দুই-তিন বছর লোকসান গুনে দুধ ও বাছুর উৎপাদনে মনোযোগী হয়েছেন। তিনি বলেন, এ বছর প্রায় ৯০০ কেজি ওজনের একটি ষাঁড় আছে। চার বছরে খরচ হয়েছে তিন লাখ টাকা। চার লাখ টাকা হলে বিক্রি করবেন। তাঁর ভাষ্য, এ বছর পশুর খরচ বেশি হলেও দাম কম।
কুমারখালীতে কোরবানির ঈদ সামনে রেখে ৩ হাজার ৫৯৭টি খামারে প্রস্তুত করা হয়েছে প্রায় ২২ হাজার ৪০০ পশু। উপজেলায় পশুর চাহিদা প্রায় ১৫ হাজার, যা গত বছরের তুলনায় ২ হাজার ৭৯৩টি বেশি। একই সংখ্যক খামারে ১ হাজার ১৬৬টি পশু কম পালন করেছেন খামারি।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার পাশাপাশি রয়েছে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। পরিচর্যার খরচ বেড়েছে। ফলে কাঙ্ক্ষিত ক্রেতা আসবে কিনা, তা নিয়ে উদ্বেগে রয়েছেন খামারি। তারা বলছেন, করোনার সময় থেকে তেমন লাভ করতে পারেননি। এবারও সীমিত লাভের আশায় পশু পালন করেছেন। মানুষের ব্যয় বাড়লেও বাড়েনি আয়। গরু আমদানি হবে কিনা– তা নিয়েও শঙ্কিত তারা।
প্রাণিসম্পদ কার্যালয় থেকে জানা যায়, পৌরসভা ও ১১টি ইউনিয়নের খামারে ষাঁড় ১২ হাজার ৯১৭, গাভি ১ হাজার ৩৬৭, ছাগল ৭ হাজার ৯৭৬ ও ভেড়া ১৪০টি পালন হয়েছে। এবার পশুর চাহিদা ১৫ হাজার হলেও গত বছর ছিল ১২ হাজার ২০৭টি। উপজেলার যদুবয়রা, শিলাইদহ, সদকী ও জগন্নাথপুর ইউনিয়ন ঘুরে জানা গেছে, অনেক খামারি ঈদুল আজহা সামনে রেখে পশু লালন-পালনে বড় অঙ্কের টাকা বিনিয়োগ করেছেন। ঈদে এসব বিক্রি করতে না পারলে তাদের লোকসান গুনতে হবে।
শিলাইদহের খোরশেদপুর গ্রামের জোয়ার্দার অ্যাগ্রো ফার্মের মালিক রানা জোয়ার্দারের গত ঈদে ৪০টি পশু বিক্রি করে ভালো লাভ হয়েছিল। এবার ৪৩টি প্রস্তুত করেছেন। ১ লাখ ১০ হাজার থেকে সাড়ে চার লাখ টাকা দামের পশু আছে। তাঁর ভাষ্য, এ বছর গোখাদ্যের দাম গতবারের তুলনায় বেশি।
সদকী ইউনিয়নের হুদা গ্রামের কৃষক জামাল হোসেন বলেন, ৫৫ কেজি বস্তার ছালের (গমের ভুসি) দাম গতবার ছিল ২ হাজার ২০০-২ হাজার ৩০০ টাকা। এবার ২০০-৪০০ টাকা বেশি লাগছে। ৫০০ টাকার গুঁড়া হয়েছে ৮০০ টাকা। চার-পাঁচ টাকা আঁটি বিছালি কিনেছেন সাত-আট টাকায়। বড় খামারি ও ব্যবসায়ীরা মজুত করায় দাম বাড়ে।
পশু মোটাতাজা করার জন্য ছাল, ছোলা, খেসারি, খুদ, গুঁড়া, খৈল, অ্যাংকর ডাল, খড় খাদ্য হিসেবে ব্যবহার হয়। স্টেশন বাজারসংলগ্ন ছালপট্টি এলাকার ব্যবসায়ী মতিয়ার রহমান বলেন, ৩৯ কেজির বস্তা খুদ ১ হাজার ৫২০, অ্যাংকরের ভুসি ১ হাজার ১৭০, ৫৫ কেজির বস্তা ছাল ২ হাজার ৫৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত বছরের তুলনায় দাম বেড়েছে বস্তাপ্রতি ১৫০-২৫০ টাকা।
প্রাকৃতিক উপায়ে এবং স্বাস্থ্যসম্মতভাবে এলাকায় পশু মোটাতাজা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন। তিনি বলেন, রমজানের ঈদেও অনেক পশু বিক্রি হওয়ায় সংখ্যা কিছুটা কমেছে। এবার ভালো দাম পাবেন খামারিরা।
ইউএনও এস এম মিকাইল ইসলাম বলেন, পশু বিক্রির জন্য চারটি সাপ্তাহিক হাট রয়েছে। অনলাইনেও চলে বেচাকেনা। বাজার তদারকির ব্যবস্থা করা হবে।