কুষ্টিয়ায় স্ত্রী-সন্তানদের কুপিয়ে গৃহকর্তার আত্মহত্যার চেষ্টা, হাসপাতালে স্ত্রীর মৃত্যু
Published: 14th, May 2025 GMT
কুষ্টিয়ায় ঘুমন্ত অবস্থায় স্ত্রী ও দুই শিশুসন্তানকে ছুরি দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়েছেন এক ব্যক্তি। এ সময় তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। গুরুতর অবস্থায় চারজনকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে স্ত্রী মারা যান।
গতকাল মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে কুষ্টিয়া শহরের হরিশংকরপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দিবাগত রাত ১২টার দিকে মারা যান ওই নারী।
পারিবারিক কলহের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। স্বামীকে চিকিৎসারত অবস্থায় আটক দেখানো হয়েছে। মারা যাওয়া মেঘলা (২৩) হরিশংকরপুর এলাকার মামুনের (২৮) স্ত্রী। আহত অন্যরা হলেন মামুন নিজে ও তাঁর দুই শিশুসন্তান কুলসুম (৪) ও জান্নাত (২)।
পুলিশ, পরিবারের সদস্য ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মামুন পেশায় রংমিস্ত্রি। এক সপ্তাহ আগে স্ত্রী মেঘলার বিরুদ্ধে পরকীয়ার অভিযোগ তোলেন তিনি। অন্য পুরুষের সঙ্গে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান বলে অভিযোগ করেন। এ নিয়ে পারিবারিকভাবে মীমাংসা বৈঠকও হয়। তবে বিষয়টি মামুন কোনোভাবেই মানতে পারেননি। গতকাল রাতে স্ত্রী ও তাঁর দুই মেয়ে বাড়িতে ঘুমিয়ে ছিল। এ সময় ধারালো ছুরি দিয়ে তাঁদের এলোপাতাড়ি জখম করতে থাকেন মামুন। একপর্যায়ে স্ত্রী ও দুই শিশুসন্তান মারা গেছে ভেবে নিজেও গলায় ধারালো ছুরি দিয়ে আঘাত করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। প্রতিবেশীরা টের পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে তাঁদের রক্তাক্ত অবস্থায় দেখেন। দ্রুত তাঁদের উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেন। পরে রাত ১২টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মেঘলা।
মামুনের মা সুফিয়া বেগম বলেন, তিনি বড় নাতনিকে নিয়ে মেয়ের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন। ছোট দুই নাতনি বাড়িতেই ছিল। রাতে বাড়ি ফিরে দেখেন এই অবস্থা।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) হোসেন ইমাম বলেন, শিশু দুটির অবস্থা আশঙ্কাজনক। অন্য কোনো হাসপাতালে পাঠানোর মতো অবস্থাতেও নেই। সাধ্যমতো চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশারফ হোসেন বলেন, রাত ১২টার দিকে মেঘলা মারা গেছেন। মামুনকে আটক দেখানো হয়েছে। থানায় মামলা নেওয়া হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছেন, পারিবারিক কলহের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অবস থ য়
এছাড়াও পড়ুন:
সাঁথিয়ায় বাস-ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ৩
পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার বনগ্রামে বাস ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে তিনজন যাত্রী নিহত ও অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। শুক্রবার ভোর ৬টার দিকে ঢাকা-পাবনা মহাসড়কের সাঁথিয়া উপজেলার বনগ্রাম পূর্বপাড়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা পাবনাগামী ‘পাবনা এক্সপ্রেস’ নামের একটি বাস ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে সাঁথিয়ার বনগ্রাম পূর্বপাড়ায় এসে পৌঁছায়। এ সময় পাবনা থেকে ছেড়ে আসা একটি মালবাহী ট্রাকের সঙ্গে বাসটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে বাস ও ট্রাকটির সামনের অংশ দুমড়ে-মুচড়ে যায়। ফলে ঘটনাস্থলেই বাসের তিনজন যাত্রী নিহত হন।
নিহতরা হলেন- আবেদ আলী (৩৮), মনসুর আলী (৪০) ও অজ্ঞাত এক পুরুষ। এ ছাড়াও বাসের ১০ জন যাত্রী গুরুতর আহত হয়েছেন। তাদেরকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় পাবনা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ঘটনার পরপরই ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধারকাজে অংশ নেয়। দুর্ঘটনার কারণে কিছু সময়ের জন্য মহাসড়কের ওই অংশে যান চলাচল বন্ধ ছিল।
এ বিষয়ে মাধপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজার রহমান বলেন, দুর্ঘটনার কথা শোনা মাত্রই আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধারকাজে অংশ নেই। আহতদের দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠাই। এ ছাড়া উদ্ধার করা মরদেহগুলো আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আর দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া ট্রাকে কাউকে পাওয়া যায়নি। প্রাথমিকভাবে এ দুর্ঘটনার জন্য বাসের চালককেই বেশি দায়ী মনে হচ্ছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।