দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর অব্যাহতি পাওয়া এক উপদেষ্টার সাবেক সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস), আরেক উপদেষ্টার একজন সাবেক ব্যক্তিগত কর্মকর্তা (পিও) এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সাবেক এক নেতাকে গ্রেপ্তার ও জিজ্ঞাসাবাদের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদ।

আজ বৃহস্পতিবার দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেনকে দেওয়া এক স্মারকলিপিতে এই দাবি জানায় সংগঠনটি। এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে মিছিল নিয়ে সেগুনবাগিচায় দুদকের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন যুব অধিকার পরিষদের নেতা–কর্মীরা।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, দুর্নীতির অভিযোগে অব্যাহতি পাওয়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার এপিএস মো.

মোয়াজ্জেম হোসেন এবং উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমের পিও ছাত্র প্রতিনিধি তুহিন ফারাবী, বর্তমান পিও মাহমুদুল হাসান এবং এনসিপি থেকে অব্যাহতি পাওয়া গাজী সালাউদ্দিন তানভীরের দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে দুদক। কিন্তু উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি দৃশ্যমান হয়নি।

আশঙ্কা প্রকাশ করে স্মারকলিপিতে যুব অধিকার পরিষদ বলেছে, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাকে ব্যবহার করে তদন্তের বিষয়টি আড়াল করার চেষ্টা করা হতে পারে। তাই নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা দায়ের এবং গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদের আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।

যুব অধিকার পরিষদের পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল দুদক চেয়ারম্যানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে। এ সময় তাঁরা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিষয়ে তদন্তের অগ্রগতি লিখিতভাবে জানানোর জন্য দুদক চেয়ারম্যানের কাছে দাবি জানান।

প্রতিনিধিদলে ছিলেন গণ অধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য আবু হানিফ, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ মামুন, সহসভাপতি রাহুল ইসলাম সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক মুনতাজুল ইসলাম ও অর্থ সম্পাদক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান।

আরও পড়ুনদুই উপদেষ্টার এপিএস-পিওর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে কাজ করছে দুদক: মহাপরিচালক২৭ এপ্রিল ২০২৫

এর আগে অবস্থান কর্মসূচিতে গণ অধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য আবু হানিফ বলেন, বিগত শেখ হাসিনা সরকারের সময় নিয়োগ পাওয়া লোকেরা এখনো দুদকে রয়েছে। সবার আগে দুদক সংস্কার জরুরি। দুদক থেকে ফ্যাসিবাদের দোসরদের সরাতে হবে।

আবু হানিফ বলেন, দুদক একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান, অথচ এটি সরকারের আজ্ঞাবহ হয়ে কাজ করছে। দুদকের কাজ হচ্ছে দুর্নীতি দমনে কাজ করা, কিন্তু বিগত সময়ে অনেক দুদক কর্মকর্তা দুর্নীতিতে জড়িয়েছেন। তাই দুদককে সংস্কার করে দুর্নীতিমুক্ত করতে হবে।

আরও পড়ুনসংস্কার আর দুর্নীতি কি একসঙ্গে চলতে পারে২৫ এপ্রিল ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উপদ ষ ট র তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

সিরামিক শিল্পে কর কমানোর চেষ্টা করব: বাণিজ্য উপদেষ্টা

বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে বলেন, একটি কমপ্লায়েন্ট, প্রতিযোগিতামূলক ও উদ্ভাবনী শিল্প তৈরি করুন। সরকার করহার কমানোর চেষ্টা করবে। দেশ আর আগের অবস্থানে ফিরে যাবে না।

বাণিজ্য উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘সরকারের কাছে এমন যুক্তি তুলে ধরুন, যা বিশ্বাসযোগ্য ও ন্যায্য। সরকার হিসেবে আপনাদের কথা শোনার জন্য আমরা বাধ্য। কারণ, আমরা আপনাদেরই ব্যবসা করার জন্য সহায়ক ভূমিকা পালন করি।’

আজ রাজধানীর আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টার বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) চতুর্থবারের মতো আয়োজিত সিরামিক এক্সপোর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।

এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হাসান আরিফ, ঢাকায় নিযুক্ত ইতালির রাষ্ট্রদূত আন্তোনিও আলেসান্দ্রো।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিসিএমইএ সভাপতি মইনুল ইসলাম, মেলা কমিটির চেয়ারম্যান ও বিসিএমইএর সাধারণ সম্পাদক ইরফান উদ্দীন। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিসিএমইএর জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মো. মামুনুর রশীদ, বিসিএমইএর সাধারণ সম্পাদক ইরফান উদ্দীন।

বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘আজকে একটি গণমাধ্যমে দেখলাম বাংলাদেশে বর্তমানে খেলাপি ঋণ প্রায় ৩৫ শতাংশ। যা বিশ্বে সর্বোচ্চ পর্যায়ে এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেন, তিউনিসিয়া, লেবাননের চেয়ে ২ থেকে ৩ গুণ বেশি। বিগত সরকার দারিদ্র্য এমনভাবে বসিয়ে দিয়েছে যে অর্থনীতি ভঙ্গুর অবস্থায় চলে গিয়েছিল। সেখান থেকে অন্তর্বর্তী সরকার রিজার্ভ ৩২ বিলিয়ন ডলারে নিয়ে গেছে।’

শেখ বশিরউদ্দীন আরও বলেন, বিসিএমইএ সম্ভবত গ্যাস সমস্যায় সবচেয়ে বেশি ভুগেছে। বিসিএমইএর সভাপতি জানান আগের থেকে পরিস্থিতি ভালো। যদি ওনার কারখানায় গ্যাসের অবস্থা ভালো থাকে, তাহলে এই খাতে সবার ক্ষেত্রেও ভালো থাকার কথা।

বাংলাদেশ সিরামিক ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএমইএ) সভাপতি মইনুল ইসলাম বলেন, সিরামিক সম্ভাবনাময় শিল্প হিসেবে এগিয়ে আসছে। ইতালিতে তাদের বর্তমান সিরামিক বাজার প্রায় ১ বিলিয়ন ইউরো, যা তারা ২ বিলিয়ন ইউরোতে উন্নীত করার কথা বলছে। তারা সিরামিক শিল্পের জন্য করহার ৫০ শতাংশ কমিয়েছে। বাংলাদেশও এমন চিন্তা করতে পারে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান হাসান আরিফ বলেন, সিরামিক শিল্প একটি অপ্রচলিত রপ্তানি খাত হিসেবে বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের জন্য নতুন ক্ষেত্র উন্মোচন করেছে। গত বছর সিরামিক শিল্পের রপ্তানি হয়েছে প্রায় ৩৫ মিলিয়ন ডলার।

ঢাকায় নিযুক্ত ইতালির রাষ্ট্রদূত আন্তোনিও আলেসান্দ্রো বলেন, বাংলাদেশের শিল্প মূলত তৈরি পোশাকশিল্পনির্ভর, সেখানে সিরামিক একটি গুরুত্বপূর্ণ নতুন বৈচিত্র্য সৃষ্টি করেছে। যা অত্যন্ত ইতিবাচক একটি দৃষ্টান্ত।

সম্পর্কিত নিবন্ধ