নন্দিত অভিনেতা আফজাল হোসেন। অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি নির্মাতা ও চিত্রশিল্পী। এছাড়া লেখালেখিও করেন। প্রায় সময়ই তার লেখায়  উঠে আসে নানা সমসাময়িক ইস্যু। এবার তার লেখায় উঠে এলো পারিবারিক বন্ধনের কথা।

রোববার রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তিনি লিখেছেন, ‘আমরা বোধহয় শেষ বা শেষের দিকের প্রজন্ম- যে প্রজন্মের দাদা ও নানাবাড়ির প্রতি আলাদা টান ছিল। আম কাঁঠালের ছুটিতে যাওয়া হতো দাদাবাড়ি আর বছরে মাত্র একবার নানাবাড়িতে যাওয়ার সুযোগ মিলতো। বছরে মাত্র একবার- অতএব বোঝাই যায়, সে সুযোগ মিললে মনে হতো স্বপ্নের রেলগাড়ি আমাদের স্বপ্নজগতে নিয়ে যাবে বলে বাড়ির দরজায় এসে হুইসেল বাজাচ্ছে। দুই বাড়ির একটা বাড়ি বুঝিয়েছে- জীবনের স্বাদ। দাদাবাড়িতে ছিল পুরো পরিবারের সাথে একত্রিত হওয়ার আনন্দ আর নানাবাড়িতে ছিল হৈ হৈ রৈ রৈ করা অফুরান স্বাধীনতা। সেই বাল্যকালে জীবন কি জানতাম না, স্বাধীনতার মানে বুঝতাম না কেউ কিন্তু সবাই সুখ, আনন্দ কি জানতাম- বুঝতাম স্বাধীনতার স্বাদ কেমন! বড় হওয়ার পর জীবনের স্বাদ ও স্বাধীনতার স্বাদ পর হয়ে যায়। তাদের নিকটের করতে, পুনরায় আপন বানাতে মানুষকে জীবনের প্রায় সবটুকু দিয়ে দিতে হয়। এমনি এমনিই আমরা অনেককিছু পেয়ে যাই- এমনি এমনি পাওয়া বলে অবহেলায় সেসবের অনেককিছু হারিয়েও ফেলি। জীবনের স্বাদ মানুষ অস্থিরতায় হারায়, স্বাধীনতার স্বাদ হারায় স্বেচ্ছাচারে, দায়িত্বহীনতায়।

তিনি আরও লিখেছেন, ‘সৌহার্দ্য, শান্তির উপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, ‘আগে বেশিরভাগ মানুষের সঙ্গে মানুষের ছিল সৌহার্দ্য, শান্তির সম্পর্ক। এখন মানুষ মুখে বলে শান্তি চায় কিন্তু মুখের কথার সাথে কাজের মিল নেই। দেখি, দেখতে পাই- একজন আর একজনের দুই চোখ তুলে নিয়ে তারপর প্রস্তাব করে, এসো, আর কলহ নয়, আমরা শান্তিপ্রতিষ্ঠা করি। এখনকার মানুষ এইরকম উন্মাদকান্ডে দুঃখিত হয় না, হতাশ হয় না। ভেবে নিতে শিখেছে- সবই স্বাভাবিক, সুন্দর।’

অতীতের বিষয় তুলে ধরে তিনি লেখেন, ‘আগে মানুষ মনে প্রাণে বিশ্বাসী ছিল। সম্পর্ক, জ্ঞান, নীতি ও ধর্মে বিশ্বাস করতো। কে কত জ্ঞানী, ধর্মপ্রাণ, দেশপ্রেমিক- তা জানান দেবার বিষয় মনে করেনি। এখন মানুষ কে কতটা ধার্মিক, কতটা দেশপ্রেমিক- তা ক্রমাগত বলে বোঝাতে চায়। এখন আমরা কে কি, কতটা ওজনদার  তা জানান দিতে না পারলে যেনো জীবন অসম্পূর্ণ রয়ে যায়। তাই চারিদিকে এতো রাজনৈতিক আস্ফালন আর ধর্মজ্ঞান দেবার আকাঙ্ক্ষা। কিছু মানুষ ধর্মপালন করে ভাবে, সে উন্নত স্তরের বান্দা, পরকালে তার জন্য বেহেস্তের একখানা ঘর বরাদ্দ হয়ে গেছে। সেই উন্নত বান্দা তারপর জগতে বসেই বিচার আচার শুরু করে দেয়, কারা যাবে বেহেস্তে, কারা যাবে দোজখে।’

তিনি আরও লিখেন, আগে মানুষের হাতে কাজ কম ছিল- তার মানে ছিল অবসর। অবসর থাকলেই মানুষ প্রয়োজনীয় অপ্রয়োজনীয় অনেক কথা বলে। অনেক কথা বলা, অদরকারে কথা বলা, মিথ্যা- দোষারোপ করে কথা বলা, গায়ে পড়ে উপদেশ দেয়া মানুষ তখনও ছিল কিন্তু তারা সংখ্যায় ছিল কম এবং সমাজ তেমন মানুষদের দিকে তাকাতো আড় চোখে। এখন মানুষের অনেক অনেক ব্যাস্ততা- দম ফেলবার ফুরসত মেলে না কিন্ত অপরকে অমর্যাদা, ছোট করা, গীবত গাওয়া, ভালো কে আর মন্দ কে- নিজের বিচারে আসামী করার সময়ের অভাব হয়না। এসব দেখে বলা যায় না- সময় এবং মানুষ, দুটোই আগের চেয়ে ভালো আছে, হতে পেরেছে। উন্নতি বলতে মানুষ এখন বোঝে, বিত্ত বৈভব, দাম পাওয়া, ক্ষমতার উন্নতি।

এখন মানুষের পছন্দের বাড়ির কথা উল্লেখ করে সবশেষে তিনি লিখেন, ‘গুরুত্ব পাওয়া, ক্ষমতাবান হওয়া মানুষ পছন্দ করে। হতে পারলে মিথ্যুক, প্রতারক বা অজ্ঞান হোক- লোকে মান্য করে, মূল্য দেয়। তাই অনেক মানুষের এখন পছন্দ রাজনীতিবাড়ি বা ধর্মবাড়ি। আমাদের ছোটবেলায় যেমন ছিল দাদাবাড়ি অথবা নানাবাড়ি।  দাদা আর নানাবাড়ি- এ দুটোয় ছোটদের সন্মান ছিল। ছোটরা ছোট হয়েও জীবনানন্দ ও স্বাধীনতার স্বাদ পেয়েছে। বহু মানুষের এখন যে দুটো বাড়ি বিশেষ পছন্দের, সে দুটো বাড়ি থেকে প্রধান যে জ্ঞান পাওয়া হয়, তা হলো- মানুষ ছোট, এসো, তাদেরকে আরো ছোট ভাবতে ও ছোট করতে শিখি।’ 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আফজ ল হ স ন অভ ন ত স ব ধ নত র স ব দ জ বন র স ব দ এখন ম ন ষ পছন দ

এছাড়াও পড়ুন:

পটেটো ওয়েজেসের রেসিপি

উপকরণ: মাঝারি আলু ৫টা, ময়দা আধা কাপ, কর্ন ফ্লাওয়ার ২ টেবিল চামচ, চিলি ফ্লেক্স আধা চা-চামচ, ধনেপাতাকুচি ১ টেবিল চামচ, গোলমরিচগুঁড়া আধা চা-চামচ, লাল মরিচগুঁড়া আধা চা-চামচ, লবণ স্বাদমতো, তেল ভাজার জন্য।

প্রণালি: আলুর ওপরের হলুদ অংশ কেটে নিন। প্রতিটি আলু লম্বা করে ৮ টুকরা করে কাটুন। পরিষ্কার পানিতে ১০ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। আলুর টুকরা ধুয়ে লবণপানিতে আধা সেদ্ধ করে পানি ঝরিয়ে রাখুন। একটা বাটিতে ময়দা, কর্ন ফ্লাওয়ার, চিলি ফ্লেক্স ধনেপাতাকুচি, গোলমরিচগুঁড়া, লাল মরিচগুঁড়া, লবণ একসঙ্গে পৌনে এক কাপ পানিতে গুলে নিন। এই ব্যাটারে আধা সেদ্ধ আলু গড়িয়ে ডুবো তেলে ভেজে নিন। মেয়নেজ অথবা টমেটো সসের সঙ্গে গরম-গরম ওয়েজেস পরিবেশন করুন।

আরও পড়ুনস্পাইসি নাগা উইংসের রেসিপি২৭ মিনিট আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ