তথ্যপ্রযুক্তি ও টেলিকম খাতে বৈষম্য ঘুচিয়ে নারী ও গ্রামের মানুষদের এগিয়ে নিতে ইন্টারনেট ও ডিভাইসে পিছিয়ে পড়াদের অ্যাক্সেস বাড়ানো এবং মুঠোফোনেই ব্যক্তি নিজেই যেন সরকারি সেবা গ্রহণ করতে পারে সে লক্ষ্যে কাজ করছে অন্তর্বর্তী সরকার।

বৃহস্পতিবার (১৫ মে) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসিতে বিশ্ব টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সংঘ দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এমনটাই জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তির দায়িত্বপ্রাপ্ত ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।

তিনি বলেন, “এবার আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করেছি একটা নিছক দিবস উদযাপনের বাইরে এসে বিশ্ব টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সংঘ দিবসকে ভিন্ন মাত্রায় উদযাপন করার। বিগত সরকারের আমলে এক নেতার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের তারিখকে গুরুত্ব দিতে গিয়ে এই দিবসটি এ ক্যাটাগরি থেকে সি ক্যাটাগরিতে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে। ‘আগে বাজেটে অযথা মোটা অঙ্কের টাকা বরাদ্দ দিয়ে মুখরোচক প্রকল্প দেখিয়ে রাষ্ট্রীয় অর্থের অপচয় হতো। বর্তমান সরকার সেই সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে এসেছে। এবার বিশ্ব টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সংঘ দিবসের অনুষ্ঠান বিটিআরসি কার্যালয়েই সীমিত পরিসরে আয়োজন করা হচ্ছে—সরকারি ব্যয় কমানোর জন্য।”

“এবার আয়োজনে আমরা বেশ কিছু ব্যতিক্রম কার্যক্রম রেখেছি তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, গত এক বছরে দেশের জন্য সম্মান বয়ে আনা কৃতি সন্তানদের সম্মাননা দেওয়া। পাশাপাশি মিলিটারি ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির মাধ্যমে বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে হ্যাকাথন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে এখানে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক প্রতিযোগী তাদের আইডিয়াগুলো উপস্থাপন করেছে।”

বিশেষ সহকারী বলেন, “আজকের বিশ্বে ডিজিটাল ট্রান্সফর্মেশনের যে গতি তা অভাবনীয়। এই গতিতে প্রতিনিয়ত আমাদের জীবনযাপন কৌশল এবং কর্মসংস্থানের প্রকৃতি পরিবর্তিত হচ্ছে তাতে তথ্য প্রযুক্তি অভাবনীয় ভূমিকা রাখছে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার ১০ নম্বর লক্ষ্য অসমতার হ্রাস যা আমাদের এবার বিশ্ব টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সংঘ দিবসের প্রতিপাদ্যের সাথে সম্পূর্ণ মিলে যায়। আমরা দেখতে পাচ্ছি আমাদের প্রায় ১০ লাখ ফ্রিল্যান্সার রয়েছে।তার মধ্যে নারী ফ্রিল্যান্সারের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যহারে কম। একই সাথে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের ক্ষেত্রেও নারীদের সংখ্যা কম। অর্থাৎ ডিজিটাল গভর্নমেন্ট এবং রিলেটেড যে ইনডেক্সগুলো রয়েছে সেগুলোতে নারীর অংশগ্রহণ এবং অ্যাক্সেস টু ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম এবং এক্সেস টু ডিজিটাল সার্ভিসেস দুটো ক্ষেত্রেই নারীদের অংশগ্রহণ কম। আমাদের ডিজিটাল ট্রাসফর্মেশন এর যে পলিসিগুলো আছে এই পলিসিগুলো বিস্তারিতভাবে সঙ্গায়িত করতে হবে। আমাদের নারীরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে পিছিয়ে আছে, তাই তাদের এগিয়ে নিতে সরকার কাজ করছে। আমাদের গণমাধ্যম কর্মীদের সহায়তা নিয়ে অংশীজনদের-কাছে পৌঁছাতে হবে,” বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

প্রকল্প বিষয়ে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, “মুখোরোচক প্রকল্প না বাড়িয়ে এবং সরকারি ব্যয় কমিয়ে বিদ্যমান সুযোগ সুবিধার মধ্যে থেকেই জনকল্যাণমূলক বিভিন্ন উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।”

আইসিটির বাজেট নিয়ে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে আইসিটি সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী বলেন, “অপ্রয়োজনীয় ব্যয় বাদ দেওয়ায় গতবারের চেয়ে এবার বাজেট কম হবে।”

বিটিআরসি চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.

) মো. এমদাদ উল বারী বলেন, “ইন্টারনেটের দাম কমানো শুধু বিটিআরসির একক সিদ্ধান্ত নয়; এটি পুরো ইন্ডাট্রির বিষয়। আমরা বাজারকে ব্যবসায়ীদের জন্য উন্মুক্ত করে দিতে চাই। প্রতিযোগিতার মাধ্যমেই বাজার দাম নির্ধারিত হবে।”

ঢাকা/হাসান/সাইফ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব ট আরস আম দ র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

সিলেট-৪ আসনে বিএনপির দুই মনোনয়নপ্রত্যাশীর পাল্টাপাল্টি ‘শোডাউন’

সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলা সদরে আট ঘণ্টার ব্যবধানে সিলেট-৪ (গোয়াইনঘাট–কোম্পানীগঞ্জ–জৈন্তাপুর) আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী দুই নেতার সমর্থনে কর্মসূচি পালিত হয়েছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে দুই নেতার এসব কর্মসূচিকে স্থানীয় লোকজন ‘পাল্টাপাল্টি শোডাউন’ হিসেবে মনে করছেন।

আজ শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সিলেট সিটি করপোরেশনের দুবারের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী মতবিনিময় সভা করেন। এর প্রতিক্রিয়ায় সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে উপজেলা সদরে মিছিল ও সমাবেশ করেছেন গোয়াইনঘাট উপজেলা পরিষদের দুবারের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হাকিম চৌধুরীর সমর্থকেরা।

স্থানীয় বিএনপি সূত্রে জানা যায়, সিলেট-১ আসনে মনোনয়নবঞ্চিত হন আরিফুল হক চৌধুরী। এ অবস্থায় তাঁকে দলের উচ্চপর্যায় থেকে ঢাকায় জরুরি তলব করা হয়। পরে ৫ নভেম্বর দলের চেয়ারপারসনের সঙ্গে তাঁর বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের জানান, দলের চেয়ারপারসন তাঁকে সিলেট-৪ আসনে নির্বাচন করার নির্দেশ দিয়েছেন। শিগগির এ-সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হবে।

আরিফুল হকের এমন ঘোষণার পর ‘স্থানীয় প্রার্থী’ হিসেবে আসনটিতে জেলা বিএনপির উপদেষ্টা আবদুল হাকিম চৌধুরীকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়ার দাবিতে টানা কর্মসূচি পালন করছেন তাঁর কর্মী–সমর্থকেরা। একই দাবিতে সভা–সমাবেশ করছেন জেলা বিএনপির আরেক উপদেষ্টা হেলাল উদ্দিন আহমদের অনুসারীরাও।

বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গোয়াইনঘাট উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উপজেলা বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, তাঁতী দল, শ্রমিক দলসহ অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় ও আলোচনা সভা হয়। বেলা একটা পর্যন্ত চলা এ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন আরিফুল হক চৌধুরী। সভায় তিনি বলেন, ‘আমি বিএনপির সঙ্গে প্রায় ৪৭ বছর ধরে আছি। কোনো দিন বিএনপির সিদ্ধান্তের বাইরে যাইনি। দলের সিদ্ধান্তে আমি আপনাদের খেদমতে এসেছি। কারণ, বিগত ১৭ বছর যে উন্নয়ন হওয়ার কথা, এর ছিটেফোঁটাও গোয়াইনঘাটে লাগেনি। খনিজ সম্পদে ভরপুর এ এলাকার মানুষ উন্নয়ন এবং কর্মসংস্থান থেকে বঞ্চিত। নির্বাচিত হলে এক বছরের মধ্যে এই এলাকার চিত্র বদলে যাবে।’

সভা শেষে উপজেলা সদরে আরিফুল হকের নেতৃত্বে মিছিল বের করা হয়। পরে তিনি গোয়াইনঘাট ও জৈন্তাপুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে গণসংযোগ করেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে জেলা বিএনপির সহসভাপতি মাহবুব রব চৌধুরী ও ইকবাল আহমদ, মহানগর বিএনপির সহসভাপতি সাদিকুর রহমান, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম আহমদ, জেলা বিএনপির উপদেষ্টা আবদুস শুকুর ও কাজী মুজিবুর রহমান, জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি সুরমান আলী, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুস সামাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে গোয়াইনঘাট উপজেলা সদরের শহীদ মিনারের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে স্থানীয় বিএনপির একাংশ। মিছিল থেকে সিলেট-৪ আসনে আবদুল হাকিম চৌধুরীকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়ার দাবি জানানো হয়। মিছিলটি উপজেলা সদরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এ সময় তাঁরা ‘লোকাল না বাইরা, লোকাল লোকাল’, ‘হাকিম ভাই হাকিম ভাই, হাকিম ছাড়া উপায় নাই’, ‘মানি না মানব না, হাকিম ছাড়া মানব না’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

যোগাযোগ করলে আবদুল হাকিম চৌধুরী বলেন, ‘সিলেট-৪ আসনে জামায়াত শক্তিশালী প্রার্থী দিয়েছে। তিনি জৈন্তাপুর উপজেলার বাসিন্দা। তাঁর বিপরীতে জয় পেতে হলে বিএনপিকে একজন “স্থানীয় ও শক্তিশালী” প্রার্থী দেওয়া উচিত। যেহেতু আমি গোয়াইনঘাট উপজেলার বাসিন্দা, তাই স্থানীয়রা আমাকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার দাবিতে সভা, সমাবেশ, মিছিল করছেন। তবে দল যে সিদ্ধান্ত দেবে, সেটাই চূড়ান্ত।’

স্থানীয় বিএনপির সূত্রে জানা গেছে, আরিফুল, হাকিম ও হেলাল ছাড়াও সিলেট-৪ আসনে বিএনপির কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী, সাবেক সংসদ সদস্য দিলদার হোসেন সেলিমের স্ত্রী জেবুন্নাহার সেলিম, মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম, কেন্দ্রীয় বিএনপির সাবেক সহস্বেচ্ছাসেবক-বিষয়ক সম্পাদক সামসুজ্জামান মনোনয়নপ্রত্যাশী। এখানে জামায়াতের প্রার্থী হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে মাঠে কাজ করছেন দলটির জেলা কমিটির সেক্রেটারি জয়নাল আবেদীন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • একই দিনে নির্বাচন-গণভোট সঠিক পদক্ষেপ: হাফিজ উদ্দিন আহমদ
  • বিএনপির প্রার্থী পুনর্বিবেচনার দাবিতে সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়ক আটকে বিক্ষোভ
  • সিলেটে মোটরসাইকেলে এসে অ্যাম্বুলেন্সে আগুন দিল দুর্বৃত্তরা
  • সিলেটে মধ্যরাতে অ্যাম্বুলেন্স ও বাসে আগুন
  • আহমদিয়া সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষার দাবি নাগরিক কোয়ালিশনের
  • সিলেট-৪ আসনে বিএনপির দুই মনোনয়নপ্রত্যাশীর পাল্টাপাল্টি ‘শোডাউন’
  • বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সংসদে আলোচনা করে কাদিয়ানিদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত: সালাউদ্দিন
  • কুতুবদিয়ায় পুকুরে ডুবে ভাই-বোনের মৃত্যু
  • বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সংবিধানে 'মহান আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস' পুনর্বহাল করা হবে : সালাহউদ্দিন আহমদ
  • বিদ্রূপের আরশিতে প্রতিফলিত ইতিহাস