কুমিল্লা নগরে ছাত্রদলের পদবঞ্চিতদের বিক্ষোভের সময় এক সাংবাদিকের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। হামলাকারীরা ওই সাংবাদিককে কিল-ঘুষি মারার পাশাপাশি তাঁর পায়ে ছুরিকাঘাত করেন।

বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে নগরের কান্দিরপাড় এলাকার পূবালী চত্বরে এ ঘটনা ঘটে।

হামলার শিকার বাহার রায়হান সময় টিভিতে কর্মরত। তাঁর ডান হাঁটুর ওপরের অংশে ছুরিকাঘাত করা হয়। তাঁকে কুমিল্লা জেনারেল (সদর) হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। চিকিৎসকেরা জানান, ছুরিকাঘাতের জায়গায় তিনটি সেলাই দিতে হয়েছে। ছুরিকাঘাতের কারণে বেশ রক্তক্ষরণ হয়েছে। তিনি আশঙ্কামুক্ত।

বাহার রায়হান প্রথম আলোকে বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা করা হয়। এরপর ছাত্রদলের পদবঞ্চিত নেতা–কর্মীরা রাতে বিক্ষোভ মিছিল করেন। বিক্ষোভ মিছিলের ছবি ও ফুটেজ সংগ্রহকালে তাঁর ওপর হামলা চালানো হয়। এ সময় পুলিশের একজন কর্মকর্তা এগিয়ে এলে হামলাকারীরা সরে যায়। তিনি বলেন, হামলাকারীদের পরিচয় তিনি জানেন না। তবে তাঁরা ছাত্রদলের পদবঞ্চিত নেতা–কর্মী।

বাহার রায়হান বলেন, ‘পূবালী চত্বরে ছাত্রদলের পদবঞ্চিত নেতা–কর্মীদের বিক্ষোভের কারণে যানজটের সৃষ্টি হয়। সেখানে রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্সও আটকে পড়ে। তখন আমি কথার কথায় বলেছি আপনারা পদবঞ্চিত হয়েছেন, রাস্তা অবরোধ না করে নেতার বাড়ির সামনে অবরোধ করেন। এ কথা বলতেই আমার ওপর হামলা চালায় তারা।’

ছাত্রদল সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ও কুমিল্লা মহানগর ছাত্রদলের নতুন কমিটি অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষরিত পৃথক চিঠিতে দুটি আংশিক কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। এর মধ্যে মহানগর ছাত্রদলের কমিটি ১৩ সদস্যের এবং কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের কমিটির ৬ সদস্যের। কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছেন কাজী জোবায়ের আলম (জিলানী) এবং সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন এমদাদুল হক (ধীমান)। কুমিল্লা মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি হয়েছেন নাহিদ রানা এবং সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন ফায়াজ রশিদ (প্রিমু)।

বৃহস্পতিবার রাতে কমিটিকে স্বাগত জানিয়ে প্রথম আনন্দ মিছিল বের করা হয়। এরপরই বিক্ষোভ মিছিল বের করেন পদবঞ্চিতরা।

কুমিল্লা মহানগর ছাত্রদলের সদ্য সাবেক সভাপতি ফখরুল ইসলাম (মিঠু) প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছি। রাতে মহানগর ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলার পদবঞ্চিতরা কান্দিরপাড় এলাকায় বিক্ষোভ করেছেন। সেখানে সাংবাদিক বাহার রায়হানের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। আমরা এই হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’

কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘হামলাকারীরা বাহার রায়হানকে চড়থাপ্পড় দেওয়ার মধ্যেই ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। আমরা হামলাকারীদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছি। পাশাপাশি এ ঘটনা লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ছ ত রদল র পদবঞ চ ত র ছ ত রদল র হয় ছ ন প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

‘বউ পেটানো’ অভিনেতার দ্বিতীয় সংসার ভাঙার গুঞ্জন

সৈয়দা আলিজা সুলতানের সঙ্গে ঘর বেঁধেছিলেন পাকিস্তানের জনপ্রিয় অভিনেতা ফিরোজ খান। তাদের এই সংসার ভেঙে গেছে। আলিজা অভিযোগ করেছিলেন, তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন ফিরোজ। কেবল তাই নয়, শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের ছবিও প্রকাশ করেছিলেন। এরপর তোপের মুখে পড়েন ফিরোজ খান। নেটিজেনদের অনেকে তাকে ‘বউ পেটানো’ অভিনেতার তকমাও দেন।

প্রথম সংসার ভাঙার প্রায় দুই বছর পর ডা. জয়নবের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন ফিরোজ খান। এদিকে, সোশ্যাল মিডিয়ায় দ্বিতীয় সংসার ভাঙার গুঞ্জন ছড়িয়েছে। মূলত, বিনোদনভিত্তিক একটি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে ডা. জয়নবের ইনস্টাগ্রাম পোস্টের স্ক্রিনশট শেয়ার করা হয়। তারপরই শুরু হয় ফিরোজ খানের সঙ্গে তার বিবাহবিচ্ছেদের গুঞ্জন। দ্রুত সময়ের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে জয়নবের অভিযোগের স্ক্রিনশট। 

ডা. জয়নব কথিত এই নোটে বলেন, “আমি আমার সহনসীমার শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গেছি। অবিরাম মানসিক চাপ ও উদ্বেগে ক্লান্ত। এমন একজন মানুষের সঙ্গে সম্পর্কে আছি, যে আমাকে বিশ্বাস করে না। আমি সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছি। কিন্তু আমি এখন ক্লান্ত। প্রতিটি কথোপকথন একটা লড়াইয়ের মতো লাগে, প্রতিটি মতবিরোধ যেন যুদ্ধ। এমন আচরণের শিকার হয়ে আমি ক্লান্ত। আমি যখন তাকে কিছু বলি, সে আমার উপর রাগ ঝাড়ে।”

স্ত্রী জয়নবের সঙ্গে ফিরোজ খান

সুখ স্মৃতিগুলো কষ্টে ঢাকা পড়ে গিয়েছে। এমন মন্তব্য করে জয়নব বলেন, “সত্যি বলতে, আমরা একসঙ্গে যে স্মৃতিগুলো তৈরি করেছিলাম, তা এখন কষ্ট ও আঘাতে ঢাকা পড়ে গেছে। আমি অসংখ্যবার তাকে ক্ষমা করেছি। কিন্তু সেই ক্ষতগুলো কখনো পুরোপুরি সারেনি। বুঝতে পারছি, আমি এক ধরণের মানসিক অস্থিরতার মধ্যে বাস করছি, একটা সম্পর্কে আটকে আছি, যা আমার জীবনের শক্তি শুষে নিচ্ছে। আমি জানি, আমি এর চেয়ে ভালো কিছু পাওয়ার যোগ্য। আমি ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও কোমলতার যোগ্য। সবকিছু ঠিক আছে—আমি আর এই ভান করতে চাই না।”

ডিভোর্সের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে জয়নব বলেন “এমন বিষাক্ত একটা সম্পর্কের জন্য আমি আমার সুখ ত্যাগ করেছি। আমি এখন নিজের জন্য, নিজের মানসিক সুস্থতার জন্য দাঁড়াচ্ছি। বেদনা ও কষ্ট থেকে মুক্তি পেতে, আমি আমার জীবনের এই অধ্যায় (বিবাহিত জীবন) শেষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি ডিভোর্স নিচ্ছি। কারণ আমি জানি, এর চেয়ে ভালো কিছু পাওয়ার যোগ্য। জীবনের নতুন অধ্যায় শুরুর জন্য আমি প্রস্তুত, যেখানে আমাকে মূল্য দেওয়া হবে, সম্মান করা হবে, ভালোবাসা হবে।”

জয়নবের এই ‘ডিভোর্স নোট’ নিয়ে যখন জোর চর্চা চলছে, তখন মুখে কুলুপ এঁটেছেন ফিরোজ খান। তবে এর আগে ফিরোজ খানের অফিশিয়াল ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে দেওয়া একটি পোস্টে দেখা যায়। তাতে জয়নবের বিরুদ্ধে ‘ব্ল্যাকমেইল’ ও ‘মানসিক চাপের’ অভিযোগ তোলেন। যদিও পরবর্তীতে পোস্টটি মুছে ফেলা হয়। পাশাপাশি এই অভিনেতা জানান, তার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়েছিল।

ডা. জয়নব

তবে সংসার ভাঙার গুঞ্জনে সরাসরি কোনো বক্তব্য দেননি ফিরোজ খান কিংবা তার স্ত্রী ডা. জয়নব। তবে বিনোদনভিত্তিক যে পেজ থেকে জয়নবের ‘ডিভোস নোট’ ছড়ানো হয়েছে, সেই পোস্টে মন্তব্য করেছেন তিনি। তাতে জয়নব লেখেন, “এই ধরনের পেজগুলো আনফলো করুন অথবা রিপোর্ট করুন। এই ধরনের পেজ থেকে ভুয়া খবর ছড়িয়ে মানুষকে বিরক্ত করা হচ্ছে। সত্যি বলছি, আমি জানি না কীভাবে তারা আমার স্টোরিতে পোস্টটি করার অ্যাকসেস পেয়েছে। এই পোস্ট আমি কখনো করিনি।”

২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে প্রথম স্ত্রী সৈয়দ আলিজা সুলতানের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হয় ফিরোজ খানের। এ সংসারে সুলতান খান ও ফাতিমা খান নামে দুই সন্তান রয়েছে। বর্তমানে দুই সন্তানের দায়িত্ব নিয়ে আদালতে মামলা লড়ছেন এই প্রাক্তন দম্পতি। ২০২৪ সালে ডা. জয়নবকে বিয়ে করেন ফিরোজ খান।

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ