কুমিল্লায় ছাত্রদলের পদবঞ্চিতদের বিক্ষোভের সময় সাংবাদিকের ওপর হামলা
Published: 15th, May 2025 GMT
কুমিল্লা নগরে ছাত্রদলের পদবঞ্চিতদের বিক্ষোভের সময় এক সাংবাদিকের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। হামলাকারীরা ওই সাংবাদিককে কিল-ঘুষি মারার পাশাপাশি তাঁর পায়ে ছুরিকাঘাত করেন।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে নগরের কান্দিরপাড় এলাকার পূবালী চত্বরে এ ঘটনা ঘটে।
হামলার শিকার বাহার রায়হান সময় টিভিতে কর্মরত। তাঁর ডান হাঁটুর ওপরের অংশে ছুরিকাঘাত করা হয়। তাঁকে কুমিল্লা জেনারেল (সদর) হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। চিকিৎসকেরা জানান, ছুরিকাঘাতের জায়গায় তিনটি সেলাই দিতে হয়েছে। ছুরিকাঘাতের কারণে বেশ রক্তক্ষরণ হয়েছে। তিনি আশঙ্কামুক্ত।
বাহার রায়হান প্রথম আলোকে বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা করা হয়। এরপর ছাত্রদলের পদবঞ্চিত নেতা–কর্মীরা রাতে বিক্ষোভ মিছিল করেন। বিক্ষোভ মিছিলের ছবি ও ফুটেজ সংগ্রহকালে তাঁর ওপর হামলা চালানো হয়। এ সময় পুলিশের একজন কর্মকর্তা এগিয়ে এলে হামলাকারীরা সরে যায়। তিনি বলেন, হামলাকারীদের পরিচয় তিনি জানেন না। তবে তাঁরা ছাত্রদলের পদবঞ্চিত নেতা–কর্মী।
বাহার রায়হান বলেন, ‘পূবালী চত্বরে ছাত্রদলের পদবঞ্চিত নেতা–কর্মীদের বিক্ষোভের কারণে যানজটের সৃষ্টি হয়। সেখানে রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্সও আটকে পড়ে। তখন আমি কথার কথায় বলেছি আপনারা পদবঞ্চিত হয়েছেন, রাস্তা অবরোধ না করে নেতার বাড়ির সামনে অবরোধ করেন। এ কথা বলতেই আমার ওপর হামলা চালায় তারা।’
ছাত্রদল সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ও কুমিল্লা মহানগর ছাত্রদলের নতুন কমিটি অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষরিত পৃথক চিঠিতে দুটি আংশিক কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। এর মধ্যে মহানগর ছাত্রদলের কমিটি ১৩ সদস্যের এবং কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের কমিটির ৬ সদস্যের। কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছেন কাজী জোবায়ের আলম (জিলানী) এবং সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন এমদাদুল হক (ধীমান)। কুমিল্লা মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি হয়েছেন নাহিদ রানা এবং সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন ফায়াজ রশিদ (প্রিমু)।
বৃহস্পতিবার রাতে কমিটিকে স্বাগত জানিয়ে প্রথম আনন্দ মিছিল বের করা হয়। এরপরই বিক্ষোভ মিছিল বের করেন পদবঞ্চিতরা।
কুমিল্লা মহানগর ছাত্রদলের সদ্য সাবেক সভাপতি ফখরুল ইসলাম (মিঠু) প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছি। রাতে মহানগর ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলার পদবঞ্চিতরা কান্দিরপাড় এলাকায় বিক্ষোভ করেছেন। সেখানে সাংবাদিক বাহার রায়হানের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। আমরা এই হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘হামলাকারীরা বাহার রায়হানকে চড়থাপ্পড় দেওয়ার মধ্যেই ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। আমরা হামলাকারীদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছি। পাশাপাশি এ ঘটনা লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ছ ত রদল র পদবঞ চ ত র ছ ত রদল র হয় ছ ন প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
মিলার এই সময়...
মিলা কি হারিয়ে গেলেন? এই প্রশ্ন ছিল তাদের, যাদের হৃদয়ে স্থায়ীভাবে জায়গা করে নিয়েছিলেন তারকা কণ্ঠশিল্পী মিলা ইসলাম। প্রত্যাশার প্রহর গুনে গুনে বছরের পর বছর পেরিয়ে গেছে, তবু কোনো আয়োজনে দেখা পাননি এই পপতারকার। প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল মিলার কারণেই। কারণ এক যুগেরও বেশি সময় ধরে গানের ভুবনে যিনি রাজত্ব করেছেন, তাঁর আড়ালে চলে যাওয়া অনুরাগীরা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেননি। আবার যখন একের পর এক ভিন্ন ধাঁচের গান প্রকাশ করে এই ভার্সেটাইল শিল্পী জানান দিয়েছিলেন– সময়টা তাঁর হাতের মুঠোয় বন্দি, তখন মিলার হারিয়ে যাওয়া কিংবা গানের ভুবনে দেখা না দেওয়া অনেকের জন্য ছিল বিস্ময় আর হতাশার। এই সত্যটা মিলাও হয়তো বুঝতে পেরেছিলেন। তাই তো ব্যক্তিজীবনের ঝড়ঝঞ্ঝা পেরিয়ে নতুন করে ফেরার আভাস দিয়েছিলেন। ঠিক এক বছর আগে ‘টোনাটুনি’ শিরোনামে একক গানের ভিডিও প্রকাশ করে আবারও শ্রোতাদের উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠার সুযোগ দিয়েছিলেন। তারও তিন বছর আগে ২০২১ সালে ‘আইস্যালা’ ছিল তাঁর সর্বশেষ প্রকাশিত গান। দীর্ঘ বিরতির পর মিলার নতুন গান ছিল অনেকের জন্য নতুন উপহার পাওয়ার মতো আনন্দের। সেই আনন্দের রেশটা ফিকে হয়ে আসা শুরু হয়েছিল ‘টোনাটুনি’ প্রকাশের পর ফের মিলার আড়ালে চলে যাওয়ায়। এ কারণে শিল্পীর ফেরা নিয়ে নতুন করে শুরু হয়েছিল জল্পনা-কল্পনা। একে একে কেটে যাচ্ছে দিন-মাস-বছর। তবু দেখা নেই অংসখ্য সংগীতপ্রেমীর প্রিয় এই শিল্পীর। দিনের পর দিন প্রতীক্ষায় থেকেও যখন দেখা মিলছিল না, তখন মনে আবার মনে প্রশ্ন জেগেছিল, এই শিল্পীর কণ্ঠে আর কি নতুন গান শোনার সুযোগ পাওয়া যাবে না? এর উত্তর খুঁজতে গিয়ে যখন অনেকে দিশেহারা, তখন মিলা ঠিকই ব্যস্ত সংগীতাঙ্গনে আরেকটি বিস্ফোরণ ঘটানোর জন্য। তাঁর গাওয়া ‘বাপুরাম সাপুড়ে’, ‘রূপবান’, ‘ডিসকো বান্দর’ গানগুলো যেভাবে দেশজুড়ে আলোড়ন তুলেছিল, তেমন কিছু শ্রোতার কানে পৌঁছে দেওয়ার আকাঙ্ক্ষায় কাজ করে যাচ্ছিলেন। যার সুবাদে আরও একবার ডাক পেলেন প্লেব্যাকে। শওকত আলী ইমনের সুরে ‘ইনসাফ’ সিনেমায় গাইলেন ‘আকাশেতে লক্ষ তারা ২.০’ গানটি। যদিও ১৯৯৬ সালে মুক্তি পাওয়া ‘কুলি’ সিনেমার ‘আকাশেতে লক্ষ তারা’ গান থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ‘আকাশেতে লক্ষ তারা ২.০’ তৈরি করা হয়েছে। এর পরও এর ফিউশন করতে গিয়ে শওকত আলী ইমন পুরোনো গানের খোল-নলচে অনেকটা বদলে দিয়েছেন। যদিও পুরোনো গানটি একটি বিদেশি গানের অনুকরণে করা, তবে ‘আকাশেতে লক্ষ তারা ২.০’-এর নব্বই ভাগ সুর মৌলিক। শুধু পুরোনো গান থেকে মাত্র একটি লাইন এতে ব্যবহার করা হয়েছে। যেজন্য মিলার গায়কি আলাদাভাবে জয় করে শ্রোতাহৃদয়। সেজন্য ‘কুলি’র সঙ্গে ‘ইনসাফ’ সিনেমার গানের তুলনায় কেউ যাননি। বরং মিলার ফেরা ও গানে গানে অনুরাগীদের মনে কড়া নাড়ার এই চেষ্টাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন অনেকে। এতকিছুর পরও একটা প্রশ্ন থেকে যায়। তা হলো– মিলা গানের ভুবনে নিয়মিত হবেন, নাকি আবার চলে যাবেন আড়ালে? উত্তরে মুচকি হেসে মিলা বলেন, ‘এবার আর শ্রোতাদের নিরাশ করব না। দীর্ঘ সফরের জন্য এই ফেরা। তাই প্রতিনিয়ত শ্রোতাদের জন্য নতুন কিছু তুলে ধরার চেষ্টা করে যাব। এজন্য শুধু নতুন গান তৈরি নয়; স্টেজ শো, টিভি আয়োজন থেকে শুরু করে গানের সব মাধ্যমে নিজেকে ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছি। এ সবই করছি শ্রোতার ভালোবাসার প্রতিদান দিতে।’