কঠিন এক সময়ে বার্সেলোনার দায়িত্ব নিয়েছিলেন হ্যান্সি ফ্লিক। আগের মৌসুমে সব হারানো বার্সা যখন চারপাশে অন্ধকার দেখছিল, তখনই দলটির ডাগআউটে আসেন এই জার্মান কোচ। বার্সার হয়ে ফ্লিকের শুরুটা অবশ্য ভালোভাবে হয়নি। হুয়ান গাম্পার ট্রফিতে মোনাকোর কাছে ৩–০ গোলে বিধ্বস্ত হয় কাতালান ক্লাবটি। সে সময় অনেকে ফ্লিকের মধ্যে ‘জাভি ২.

০’ও দেখে ফেলেছিল। মনে হচ্ছিল, আরেকটি ব্যর্থতার গল্পই হয়তো লেখা হতে যাচ্ছে।

কিন্তু প্রথম মৌসুম শেষেই সেসব সন্দেহ পোষণকারীদের ভুল প্রমাণ করেছেন ফ্লিক। বার্সায় নিজের প্রথম মৌসুমে তিনি দলকে জিতিয়েছেন তিনটি ট্রফি। জানুয়ারিতে স্প্যানিশ সুপার কাপ জিতে শুরুটা করেছিলেন। এরপর গত মাসে কোপা দেল রে ও গতকাল রাতে বার্সা নিশ্চিত করেছে লা লিগা ট্রফিও। এর ফলে ২০২২–২৩ মৌসুমের পর আবার লিগ জয়ের স্বাদ পেল বার্সা। ফ্লিকের হাত ধরে বার্সার বদলে যাওয়ার পেছনে ভূমিকা রেখেছে বেশ কিছু কারণ।

ফ্লিকের কার্যকর কৌশল

জার্মান জাতীয় দলে ব্যর্থ হলেও ক্লাব ফুটবলে ফ্লিক সেরাদের একজন। বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে ২০১৯–২০ মৌসুমে ট্রেবল জয়ের পাশাপাশি বেশ কিছু ট্রফি জিতেছেন তিনি। ফলে সাফল্য কীভাবে পেতে হয় সেটা মোটেই তাঁর অজানা ছিল না। আর এই সাফল্যের পেছনে ফ্লিকের মূল অস্ত্র তাঁর কৌশল। ট্যাকটিক্যালি শুরু থেকেই খুব দূরদর্শী ছিলেন ফ্লিক। নিজের কোচিং দর্শনের পাশাপাশি বার্সার চিরায়ত ফুটবল–ভাবনাকে গুরুত্ব দিয়ে রণকৌশল তৈরি করেন এই জার্মান কোচ। তবে মৌসুমজুড়ে নিজের কৌশলকে অন্ধভাবে আঁকড়ে ধরে রাখেননি তিনি।

আরও পড়ুনআবার লা লিগা চ্যাম্পিয়ন বার্সেলোনা৯ ঘণ্টা আগে

খেলার প্রয়োজনে হাইলাইন ডিফেন্সের মাস্টারক্লাস যেমন উপহার দিয়েছেন, তেমনি পজিশনিংয়ের ক্ষেত্রেও দেখিয়েছেন দারুণ মুনশিয়ানা। ডিফেন্স, মিডফিল্ড ও ফরোয়ার্ড লাইনের মধ্যেও ফ্লিক গড়ে দিয়েছেন দারুণ সমন্বয়। নিচ থেকে বিল্ডআপ তৈরির সময় মিডফিল্ডকে সক্রিয় রেখে প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলেছেন। অ্যাটাকিং থার্ডে বরাবরই বার্সা খেলোয়াড়দের চেষ্টা ছিল ফাঁকা জায়গা বের করে শট নেওয়ার দিকে।

আবার পিছিয়ে পড়লেও ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে কৌশলে সূক্ষ্ম কিছু পরিবর্তন এনেছেন ফ্লিক। ফ্লিকের কৌশলের আধিপত্য বুঝতে শুধু এল ক্লাসিকোর দিকে চোখ রাখাই যথেষ্ট। শক্তি–সামর্থ্যে সমান সমান হওয়ার পরও রিয়ালকে মৌসুমে চারবার বার্সা কুপোকাত করতে পেরেছে মূলত ফ্লিকের কার্যকর কৌশলের কারণেই, যা শেষ পর্যন্ত দলটিকে ট্রফিও এনে দিয়েছে।

মাঠে শিরোপা জয় উদ্‌যাপন করছে বার্সা

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

পরিবারের খোঁজে ৪৮ বছর পর চুনারুঘাটে

৬ বা ৭ বছর বয়সে হারিয়ে যান হবিগঞ্জের চুনারুঘাট থেকে। এরপর ৪২ বছর কেটে গেছে। হারিয়ে যাওয়া শিশুটির বয়স এখন ৪৮ বছর। সুনামগঞ্জে বেড়ে ওঠা এই ব্যক্তি জানেন না, তাঁর আসল নাম-পরিচয়। শুধু এটুকু মনে আছে, তাঁর জন্মভূমি চুনারুঘাট।
জাহাঙ্গীর নামের এই ব্যক্তি এখন 
চুনারুঘাটে খুঁজছেন তাঁর হারিয়ে যাওয়া শিকড়। বৃহস্পতিবার তিনি সুনামগঞ্জ থেকে চুনারুঘাট এসে ট্রাভেলস ব্যবসায়ী আব্দুর রহিম শ্যামলের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং তাঁর বাবা-মাকে খুঁজে পেতে সহায়তা চান।
জাহাঙ্গীর জানান, ছোটবেলায় হারিয়ে গিয়ে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের পশ্চিম মাতগাঁও গ্রামের এক ব্যক্তির হাতে পড়েন। তাঁর নাম জারু মিয়া। তিনিই তাঁকে ‘ছেলে’ হিসেবে পরিচয় দিয়ে লালন-পালন করেন। পরবর্তী সময়ে তাঁকে (জাহাঙ্গীর) বিয়ে দেন। বর্তমানে তাঁর চার সন্তান। তবে জারু মিয়া মৃত্যুর আগে তাঁর দুই সন্তানকে সম্পদ দিয়ে গেলেও তাঁকে (জাহাঙ্গীর) কিছুই দেননি। এতে তাঁর মনে সন্দেহ দেখা দেয়, জারু মিয়া হয়তো তাঁর প্রকৃত বাবা ছিলেন না। এরপর এলাকার মানুষের মুখে শুনে তিনি জানতে পারেন, তাঁর শৈশবকাল কেটেছে চুনারুঘাটে।
বর্তমানে জাহাঙ্গীর অবস্থান করছেন  মিরাশী ইউনিয়নের চামলতলী গ্রামের মিলন মিয়ার বাড়িতে। তিনি চুনারুঘাটবাসীর কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন, যদি ১৯৮০ থেকে ১৯৮৩ সালের মধ্যে কোনো পরিবার তাদের ৬/৭ বছর বয়সী ছেলে সন্তান হারিয়ে থাকে, তারা যেন যোগাযোগ করেন।
ট্রাভেলস ব্যবসায়ী আব্দুর রহিম শ্যামল বলেন,  তিনি চেষ্টা করছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার চালাতে, যাতে জাহাঙ্গীরের পরিবারকে খুঁজে পাওয়া যায়। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ