সৌদি প্রো লিগে চ্যাম্পিয়ন বেনজেমার ইত্তিহাদ, রোনালদোরা কোথায়?
Published: 16th, May 2025 GMT
মাঠে শুরুটা হয়নি খুব আশাব্যঞ্জক। প্রতিপক্ষ গোল করে বসে নবম মিনিটেই। কিন্তু করিম বেনজেমার নেতৃত্বে ঘুরে দাঁড়ায় আল ইত্তিহাদ। এক গোলে পিছিয়ে থেকেও দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তনে আল রাইদকে হারিয়ে দুই ম্যাচ বাকি রেখেই সৌদি প্রো লিগ শিরোপা নিশ্চিত করে ফেলেছে তারা।
বৃহস্পতিবারের ম্যাচে আল রাইদের বিপক্ষে ৩-১ ব্যবধানে জয় তুলে নিয়ে জেদ্দাভিত্তিক ক্লাবটি ৩২ ম্যাচ শেষে পয়েন্ট দাঁড় করিয়েছে ৭৭-এ। তাদের সবচেয়ে কাছের প্রতিদ্বন্দ্বী আল হিলালের চেয়ে এখন ৯ পয়েন্ট এগিয়ে আছে তারা। ফলে শিরোপা নিয়েই আর কোনো সংশয় রইলো না।
শুরুতে অবশ্য ধাক্কা খেতে হয়েছিল। ম্যাচের ৯ মিনিটেই আল রাইদের হয়ে ওমর গঞ্জালেজ জালের দেখা পেয়ে যান। গোলটি করে কিছুটা সময়ের জন্য হলেও চমকে দেন সবাইকে। কিন্তু সেই উৎসব টেকেনি বেশি সময়। মাত্র ১২ মিনিট পর স্টিভেন বারগউইনের গোলে সমতায় ফেরে আল ইত্তিহাদ।
আরো পড়ুন:
ব্রাজিলের ফুটবল প্রধানকে অপসারণ, পুরো বোর্ড বরখাস্ত
দুই ম্যাচ হাতে রেখেই বার্সেলোনা চ্যাম্পিয়ন
প্রথমার্ধের শেষদিকে দানিলো পেরেইরার হেডে এগিয়ে যায় চ্যাম্পিয়নরা। আর দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে ফিরেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় তারা। ম্যাচের ৪৭ মিনিটে আব্দুলরহমান আর উবুদের করা গোলটি নিশ্চিত করে জয় ও শিরোপা।
এই জয়ে ২০২৩ সালের পর আবারো শিরোপা ঘরে তুললো আল ইত্তিহাদ, যা ক্লাবটির ইতিহাসে ১০ম লিগ শিরোপা। কোচ লরাঁ ব্লাঙ্কের অধীনে এটা নিঃসন্দেহে একটি দুর্দান্ত অর্জন। আর করিম বেনজেমার জন্য সৌদি ফুটবলে এটাই প্রথম লিগ শিরোপা, যা তার ক্যারিয়ারে আরও একটি উজ্জ্বল পালক হয়ে থাকবে।
তবে এখানেই মৌসুম শেষ হচ্ছে না আল ইত্তিহাদের। সামনে কিংস কাপ ফাইনালে উঠেছে দলটি, যেখানে ৩০ মে তাদের প্রতিপক্ষ আল কাদশিয়া। সেই ম্যাচে জয় পেলে ঘরোয়া ডাবল ট্রফির স্বাদ নিতে পারে বেনজেমা-ব্লাঙ্ক বাহিনী।
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে মারাত্মক সংকটে তিস্তা নদী
আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। আর প্রস্তাবিত তিস্তা প্রকল্প নিয়েও কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না।
রোববার রাজধানীর প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশে (পিআইবি) ‘সংকটে তিস্তা নদী: সমাধানের পথ কী?’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন) যৌথভাবে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।
মতবিনিময় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাপার সহসভাপতি অধ্যাপক মো. খালেকুজ্জমান। প্রবন্ধে তিনি উল্লেখ করেন, ভারতের সঙ্গে কোনো পানিবণ্টন চুক্তি না থাকায় এবং আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে আর বর্ষাকালে নিয়ন্ত্রণহীন পানিনির্গমনের ফলে বাংলাদেশ অংশে বন্যা ও ভাঙনের ঝুঁকি বাড়ছে।
মতবিনিময় সভায় বিশেষজ্ঞরা তিস্তা সমস্যার সমাধানে ভারতের সঙ্গে গঠনমূলক সম্পৃক্ততা, আন্তর্জাতিক আইনের প্রয়োগ এবং প্রকল্পে স্থানীয় জনগণের মতামত গ্রহণের ওপর জোর দেন। তাঁরা তিস্তা মহাপরিকল্পনা সম্পর্কে স্বচ্ছতা ও পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানান।
অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘সরকারের কাছে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কোনো তথ্য নেই। বিগত বছরগুলোতে উন্নয়নের নামে দেশের নদীগুলোকে সংকুচিত করা হয়েছে। আমরা আর সংকুচিত করার উন্নয়ন চাই না। নদীকে নদীর মতোই রাখতে হবে।’
আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, দেশের উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যক্তিস্বার্থকে উপেক্ষা করে দেশের স্বার্থকে বড় করে দেখতে হবে। যেসব প্রকল্প দীর্ঘমেয়াদি, সেসব প্রকল্প গ্রহণের আগে অবশ্যই জনগণের মতামত নিতে হবে।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব সামর্থ্য অনুযায়ী প্রকল্প নেওয়া উচিত। নদীকে রক্ষা করতে হবে কিন্তু তাকে খালে পরিণত করে নয়। এই প্রকল্প পুনর্মূল্যায়ন করা প্রয়োজন।
বাপার প্রতিষ্ঠাতা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বাপা কখনো উন্নয়নবিরোধী নয়। আমরাও চাই দেশের উন্নয়ন হোক। কিন্তু সেই উন্নয়ন হতে হবে দেশের প্রাণপ্রকৃতি, পরিবেশ ও নদীকে ঠিক রেখে। তিস্তা প্রকল্প নিয়ে কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না। সরকার ও বিরোধী দল উভয়ই চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে সংবেদনশীল হওয়ায় এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে।’
বাপার সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবিরের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, পরিবেশবিদ, গবেষক ও তিস্তাপাড়ের বাসিন্দারা অংশ নেন।