ভারতে অনুপ্রবেশের অভিযোগে শতাধিক বাংলাদেশি আটক
Published: 17th, May 2025 GMT
ভারতে অনুপ্রবেশ এবং অবৈধভাবে বসবাসের চেষ্টার অভিযোগে শতাধিক বাংলাদেশিকে আটক করা হয়েছে। এদের মধ্যে উত্তর প্রদেশে থেকেই আটক করা হয়েছে ৯০ জনকে।
শুক্রবার বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের সন্ধানে উত্তর প্রদেশজুড়ে অভিযান শুরু হয়। রাজ্যটির মথুরা জেলা থেকে ৯০ জন বাংলাদেশিকে আটক করা হয়। নৌঝিল থানার সীমানার খাজপুর গ্রামের স্থানীয় ইটভাটা থেকে তাদের আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এদের মধ্যে ৩৫ জন পুরুষ, ২৭ জন মহিলা এবং ২৮ জন শিশু রয়েছে।
মথুরা জেলার এসএসপি শ্লোক কুমার জানান, জিজ্ঞাসাবাদের সময় আটককৃতরা জানিয়েছেন, তাদের বৈধ কোনো কাগজপত্র নেই। তারা নিজেদের বাংলাদেশি নাগরিক বলে স্বীকার করেছেন।
পুলিশ জানায়, আটককৃতরা তিন থেকে চার মাস আগে প্রতিবেশী এক রাজ্য হয়ে মথুরায় চলে এসেছিল। পুলিশ তাদের যোগসূত্র খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে। কথা বলা হচ্ছে তাদের কাজের ঠিকাদার এবং অন্যান্য সহযোগীদের সঙ্গেও। এই বাংলাদেশি নাগরিকদের কাছ থেকে কিছু আধার কার্ডও উদ্ধার করা হয়েছে। এগুলো সম্ভবত অন্য কোনো রাজ্যে জাল নথির ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছিল। এ ব্যাপারে আইনি প্রক্রিয়া চলছে। শিগগিরই জানা যাবে কার হাত ধরে ভারতে ঢুকল তারা। কীভাবেই বা পেল কাজ, কোথা থেকে জাল নথি বানায় তারা।
এদিকে উত্তর প্রদেশের পাশাপাশি দিল্লিতে অবৈধভাবে বসবাসের অভিযোগে ১৫ বাংলাদেশিসহ ২৮ জন বিদেশি নাগরিককে আটক করা হয়েছে। এদের মধ্যে ১২ জন নাইজেরিয়ার, ১৫ জন বাংলাদেশের এবং একজন আইভরি কোস্টের নাগরিক। আটককৃত বাংলাদেশিদের মধ্যে পাঁচ শিশুও রয়েছে।
ক্রাইম ব্রাঞ্চের ডিসিপি আদিত্য গৌতম জানান, এই বাংলাদেশিরা প্রত্যেকেই অরক্ষিত সীমান্ত দিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশ করে। পরবর্তীতে রাজ্যটির কোচবিহার জেলা থেকে ট্রেনে করে দিল্লিতে আসে এবং হরিয়ানার খারখোদা এলাকায় ইটভাটায় কাজ নেয়। পরিচয় যাচাই-বাছায়ের কাজ শুরু করে তাদেরকে দেশে ফেরত পাঠানোর কাজ শুরু করেছে তদন্তকারী কর্মকর্তারা।
পশ্চিমবঙ্গেও শুক্র থেকে শনিবার অবৈধ অনুপ্রবেশ ও স্থায়ী বসবাসের অভিযোগে আটক করা হয়েছে একাধিক বাংলাদেশিকে। রাজ্যটির কোচবিহার , শিলিগুড়ি থেকে দুজন, হুগলি থেকে দুজন, উত্তর ২৪ পরগনা থেকে তিনজন ও মুর্শিদাবাদ জেলা থেকে একজনকে আটক করা হয়েছে।
এছাড়া পশ্চিমবঙ্গের প্রতিবেশী রাজ্য ছত্রিশগড়ে অনুপ্রবেশের অভিযোগে আটক করা হয়েছে এক বাংলাদেশি দম্পতিকে।
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
জঙ্গি সন্দেহে কলকাতায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশি যুবক
জঙ্গি সন্দেহে কলকাতা পুলিশের বিশেষ টাস্ক ফোর্সের (এসটিএফ) হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে এক বাংলাদেশি নাগরিক। মুফতি আবদুল্লাহ আল মাসুদ নামে ওই বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয় পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার গয়েশপুর পুলিশ ফাঁড়ি এলাকা থেকে। এরপর তাকে ফাঁড়িতে নিয়ে এসে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ চলে। বৃহস্পতিবার এই ঘটনাটি ঘটেছে।
ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও ভারত থেকে নিজের দেশে ফিরে যাননি মাসুদ। তিনি অবৈধভাবে পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার কাটাগঞ্জ এলাকায় বসবাস করতেন। সম্প্রতি তার বেশ কিছু কর্মকান্ডে সন্দেহ প্রকাশ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এর পরই মাসুদকে ইসলামী উগ্রপন্থী বলে দাবি করে পুলিশে অভিযোগ করা হয়। যেহেতু তার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, তাই পুলিশ তাকে একজন অবৈধ অভিবাসী হিসেবে বিবেচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভারতীয় আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করা হয়েছে।
বিষয়টি সামনে আসার পরই যথেষ্ট উত্তেজনা ছড়িয়েছে। যদিও এ ব্যাপারে কলকাতা পুলিশের পক্ষে কিছুই জানানো হয়নি।
অন্যদিকে, গত ২৪ ঘন্টায় ভারত বাংলাদেশের দিনাজপুর সীমান্ত ও ভোমরা ঘোজাডাঙা সীমান্তে এলাকায় অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন আরো ১১ জন বাংলাদেশি নাগরিক।
পুলিশ ও বিএসএফের যৌথ অভিযানে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় এক বাংলাদেশি নাগরিককে। আটককৃতে ওই ব্যক্তির নাম পঞ্চানন পাল। তিনি বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গা থানার বাসিন্দা। ভারতে তিনি পরিচয় বদল করে রূপায়ণ পাল নামে বসবাস করছিলেন বলে অভিযোগ। তার কাছ থেকে বাংলাদেশি পাসপোর্ট ছাড়াও ভারতের আধার কার্ড, ভোটার কার্ড ও এমনকি ভারতীয় পাসপোর্ট পর্যন্ত উদ্ধার হয়েছে।
একইদিনে ভারত থেকে অবৈধ পথে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময়ে ঘোজাডাঙ্গা ভোমরা সীমান্তের কাছে সরুপনগর এলাকার তারালি সীমান্ত থেকে বিএসএফের ১৪৩নম্বর ব্যাটালিয়নের হাতে আটক হয়েছেন আরো বাংলাদেশি নাগরিক।
সীমান্তরক্ষী বাহিনী জানিয়েছে আটকের পর তাদের স্বরূপনগর থানার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আটককৃতদের মধ্যে রয়েছে তিন শিশু, তিনজন পুরুষ ও চারজন নারী। এর সবাই বাংলাদেশের সাতক্ষীরা এবং খুলনার বাগেরহাটের বাসিন্দা।
সুচরিতা/শাহেদ