‘পরিকল্পনা করে নদী ব্যবস্থাপনা না করায় বাংলাদেশের অধিকাংশ নদ–নদী এখন মৃতপ্রায়। ভারতের সঙ্গে আন্তসীমান্ত নদীগুলোতে ভারত নীতি-নৈতিকতার বিরুদ্ধে গিয়ে বাঁধ দিয়েছে। ফলে বাংলাদেশ এসব নদ-নদীর পানি যথেষ্ট পরিমাণে পাচ্ছে না। ব্রহ্মপুত্র নদের উজানে এখন পর্যন্ত ভারতের কোনো বাঁধ নেই। এই ব্রহ্মপুত্র নদ ৬৭ শতাংশ পানি বহন করে নিয়ে আসে। ফলে এই মুহূর্তে ব্রহ্মপুত্র নদ বাংলাদেশের প্রাণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, আমাদের ব্রহ্মপুত্রকে বাঁচাতে হবে।’

শনিবার বিকেলে আন্তনদী সংযোগের নামে ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে ভারতের একতরফা পানি সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনার বিরুদ্ধে ও পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে ‘ব্রহ্মপুত্র কনভেনশনে’ আলোচনায় অংশ নিয়ে নদী গবেষক ও রিভারাইন পিপলের মহাসচিব শেখ রোকন এসব কথা বলেন।

শেখ রোকন আরও বলেন, ‘নদী তার আপন গতিতে প্রবাহিত হয়। আমরা আজও নদীর গতি বুঝতে পারিনি। ফলে পানি উন্নয়ন বোর্ড বছরের পর বছর নদীতে জিও ব্যাগ ফেলে নদীভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। অপরিকল্পিতভাবে নদীশাসন করতে গিয়ে নদীকে মেরে ফেলে। ব্রহ্মপুত্র নদের বিভিন্ন স্থানে অপরিকল্পিত বালু উত্তোলন বন্ধ না করলে এই নদীর পাড়ে যেমন ভাঙন দেখা দেবে, তেমনি নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে ব্রহ্মপুত্র মরে যাবে। তাই সঠিক পরিকল্পনা করে প্রয়োজনে ব্রহ্মপুত্র নদের উজানের দেশ ভারতের সঙ্গে চুক্তি করে যৌথভাবে ব্রহ্মপুত্র নদ বাঁচানোর পরিকল্পনা করতে হবে।’

‘ব্রহ্মপুত্র আমাদের বাঁচায়, আসুন, আমরা ব্রহ্মপুত্রকে বাঁচাই’ এ স্লোগানে জেলা আইনজীবী সমিতির ‘এ টি এম এনামুল হক চৌধুরী চাঁদ’ মিলনায়তনে ব্রহ্মপুত্র কনভেনশন অনুষ্ঠিত হয়। বাসদের জেলা কমিটির সভাপতি কমরেড ফুলবর রহমানের সভাপতিত্বে প্রধান আলোচক হিসেবে বাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারী সাধারণ সম্পাদক কমরেড রাজেকুজ্জামান, আলোচক হিসেবে বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক কমরেড আবদুল কুদ্দুস বক্তব্য দেন।

কমরেড রাজেকুজ্জামান বলেন, ‘আমরা নদীকে শুধু শাসন করতে চাই। আর এই শাসন করতেই নদীকে আমরা মেরে ফেলেছি। নদীকে শাসন না করে, সঠিক ব্যবস্থাপনা করে নদীর সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিয়ে সেখানে (নদীপাড়ে) বসবাস করতে হবে। ব্রহ্মপুত্র নদ এ অঞ্চলের কারও শত্রু নয়। মানুষকে বাঁচানোর জন্য ব্রহ্মপুত্র নদকে বাঁচাতে হবে।’

ব্রহ্মপুত্র কনভেনশনে অন্যদের মধ্যে জেলা কমিটির সদস্য দুলাল বোস, সাংবাদিক সফি খান বক্তব্য দেন। এতে জেলার নদীপাড়ের বাসিন্দা ও বাসদের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কম ট র কমর ড

এছাড়াও পড়ুন:

মুন্সীগঞ্জের শীর্ষ সন্ত্রাসী মিল্টন গ্রেপ্তার

মুন্সীগঞ্জের শীর্ষ সন্ত্রাসী মিল্টন মল্লিককে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)। তার বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা, ডাকাতি, বোমাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধে ১৯টি মামলা রয়েছে।

রবিবার (৩০ নভেম্বর) বিকেলে জেলার টঙ্গীবাড়ী উপজেলার যশলং এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সন্ধ্যায় সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় র‍্যাব-১১। 

আরো পড়ুন:

নোয়াখালীতে ৯ কোটি টাকা আত্মসাৎ, ব্যাংকের ব্যবস্থাপক গ্রেপ্তার

হারুন ও বেনজীর পরিবারের আয়কর নথি জব্দের নির্দেশ

মিল্টন সদর উপজেলার মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের পূর্ব মাকহাটি গ্রামের বারেক মল্লিকের ছেলে।

র‍্যাব জানায়, মিল্টন দীর্ঘদিন ধরে নিজ এলাকায় ক্যাডার বাহিনী নিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিলেন। কখনো অস্ত্রের মহড়া, কখনো চাঁদাবাজি, কখনো বিস্ফোরণ ঘটিয়ে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করাই ছিল তার নিয়মিত কৌশল। গত ৩১ অক্টোবর যৌথ বাহিনীর অভিযানে তার বাড়ি থেকে সাতটি তাজা ককটেল এবং দুটি সুইচ গিয়ার চাকু উদ্ধার হয়। তার দুই সহযোগীকে আটক করা হয়। 

চর এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের উদ্দেশ্যে মিল্টন মল্লিক দীর্ঘদিন ধরে দেশি-বিদেশি অস্ত্র মজুত করে রেখেছিলেন। র‍্যাব-১১ এর একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে টঙ্গীবাড়ী থেকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাকে মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়।

মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ওসি (তদন্ত) সজিব দে বলেন, ‍“রবিবার সন্ধ্যায় র‍্যাব মিল্টনকে আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছে। আমাদের রেকর্ডে তার বিরুদ্ধে ১৯টি মামলার তথ্য রয়েছে। সোমবার (১ ডিসেম্বর) তাকে আদালতে সোপর্দ করা হবে।” 

ঢাকা/মিলন/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ