শিরোপা জিতে শিশুটির কান্না থামাতে পারল না ম্যান সিটি, মৌসুম শেষ হলো শূন্য হাতে
Published: 17th, May 2025 GMT
ম্যানচেস্টার সিটি ১ : ০ ক্রিস্টাল প্যালেস
ম্যাচে তখন শেষ বাঁশি বাজার অপেক্ষা। গ্যালারিতে ম্যানচেস্টার সিটির জার্সি পরে কাঁদছে এক শিশু। বোঝাই যাচ্ছিল, দলের ব্যর্থতার ভার নিতে না পেরে হতাশায় ভেঙে পড়েছে শিশুটি। ছোট এই শিশুর কান্নাই যেন সিটির পুরো মৌসুমের প্রতিচ্ছবি। শূন্য হাতে হতাশা আর কান্নায় শেষ হলো ভুলে যাওয়ার মতো মৌসুমটা।
ওয়েম্বলিতে আজ এফএ কাপ ফাইনালে ক্রিস্টাল প্যালেসের বিপক্ষে জিতলে অন্তত একটা ট্রফি জিততে পারত সিটি। কিন্তু সেই সুযোগটা কাজে লাগাতে পারল না পেপ গার্দিওলার দল। ক্রিস্টাল প্যালেসের কাছে ১–০ গোলে হারায় শূন্য হাতেই মৌসুমটা শেষ করতে হবে ইতিহাদের ক্লাবটিকে। ম্যাচে একের পর এক চেষ্টা করে সিটি গোল না পেলেও প্যালেসকে একমাত্র গোলে শিরোপা এনে দিয়েছেন এবেরেচি এজে।
ম্যাচের শুরু থেকেই বলের দখল রেখে গোল আদায়ের চেষ্টা করে ম্যানচেস্টার সিটি। কয়েকবার কাছাকাছিও পৌঁছে গিয়েছিল তারা। যদিও পায়নি কাঙ্ক্ষিত গোলটি। কোনোরকমে গোল খাওয়া ঠেকিয়ে রাখলেও বেশ চাপেই ছিল প্যালেস। কিন্তু ম্যাচের ১৬ মিনিটে এক ধাক্কায় সব চাপ নামিয়ে ফেলে তারা। স্রোতের বিপরীতে অসাধারণ এক গোল আদায় করে ম্যাচে এগিয়ে যায় প্যালেস।
প্রতি–আক্রমণে দানিয়েল মুনোজের ক্রস থেকে গোল করে ক্রিস্টালকে এগিয়ে দেন এজে। এই গোলের আগ পর্যন্ত কেবল একবার নিজেদের অর্ধ পেরিয়ে সিটির অর্ধে যেতে পেরেছিল প্যালেস। তবে আক্রমণ বিবেচনা করলে সেটিই ছিল প্যালেসের প্রথম আক্রমণ ও শট। একটু পর অবশ্য ব্যবধান ২–০ করার সুযোগ পেয়েছিল প্যালেসের। যদিও শেষ পর্যন্ত গোলটি পায়নি তারা।
ধাক্কা সামলে অবশ্য দ্রুত ম্যাচে ফিরে আসে সিটি। যথারীতি ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের দখলে রেখে একের পর আক্রমণ চালিয়ে যায় তারা। একবার হলান্ডের শট কোনো রকমে ফিরিয়ে দলকে গোল খাওয়া থেকে বাঁচান প্যালেস গোলরক্ষক ডিন হেন্ডারসন। মাঠের খেলায় কাছাকাছি গিয়ে না পারলেও পেনাল্টি থেকে সিটির সামনে সুযোগ এসেছিল সমতা ফেরানোর। কিন্তু ৩৬ মিনিটে সেই সুযোগও কাজে লাগাতে পারেনি সিটি। ওমর মারমুশের পেনাল্টি অসাধারণ দক্ষতায় ঠেকিয়ে দিয়ে প্যালেসকে বাঁচিয়ে দেন হেন্ডারসন।
এরপর ৪৩ মিনিটে আরও একবার সিটির প্রচেষ্টার সামনে দেয়াল তুলে দাঁড়িয়ে যান হেন্ডারসন। এবার নিরাশ করেন জেরেমি ডকুকে। শেষ পর্যন্ত পিছিয়ে থেকেই বিরতিতে যেতে হয় সিটিকে। প্যালেসের এগিয়ে থাকার বেশির ভাগ কৃতিত্বই অবশ্য গোলরক্ষক হেন্ডারসনের। প্রথমার্ধেই তিনি সেভ করেন ৪টি শট।
বিরতির পরও দেখা মিলছিল একই দৃশ্যের। সিটির একের পর আক্রমণ কোনো রকমে ঠেকিয়ে লিড ধরে রাখছিল প্যালেস। কিন্তু প্রথমার্ধের মতো দ্বিতীয়ার্ধেও স্রোতের বিপরীতে গোল করে বসে প্যালেস। যদিও সৌভাগ্যবশত এ যাত্রায় বেঁচে যায় সিটি।
প্যালেসের গোলটি বাতিল হয় অফসাইডের কারণে। গোলের খোঁজে থাকা গার্দিওলা ৭৬ মিনিটে মাঠে নামান অভিষেকের অপেক্ষায় থাকা আর্জেন্টাইন তরুণ ক্লদিও এচেভেরিকে। ৮৩ মিনিটে গোল করে ম্যাচের নায়ক হওয়ার সুযোগও এসেছিল তাঁর সামনে। কিন্তু এচেভেরির শট ঠেকিয়ে দেন অবিশ্বাস্য ছন্দে থাকা হেন্ডারসন। ম্যাচের বাকি সময়ে চেষ্টা করেও আর সমতা ফেরাতে পারেনি সিটি। শেষ পর্যন্ত প্রথমবারের মতো বড় কোনো শিরোপা জিতে উল্লাসে মাতে প্যালেস।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: হ ন ড রসন
এছাড়াও পড়ুন:
মুরাদনগরে নারী নির্যাতন ও ভিডিও ছড়ানোর নেপথ্যে ‘দুই ভাইয়ের বিরোধ’
কুমিল্লার মুরাদনগরে নারীকে ‘ধর্ষণ’ ও নির্যাতন এবং এর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার নেপথ্যে রয়েছে প্রধান হোতা শাহ পরান এবং তার ভাই ফজর আলীর দীর্ঘদিনের বিরোধ। ফজর আলীকে বিপদে ফেলে প্রতিশোধ নিতেই শাহ পরান এ কাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে জানিয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
শুক্রবার (৪ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে প্রেস ব্রিফিংয়ে র্যাব-১১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন চাঞ্চল্যকর এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, পূর্বশত্রুতার জেরে ধরে বড় ভাইয়ের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে ছোট ভাই শাহ পরান জনতাকে উস্কে দিয়ে ভুক্তভোগী ও অভিযুক্ত ধর্ষককে নির্যাতন, শ্লীলতাহানি এবং অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। বাহেরচর গ্রামের শহিদের বড় ছেলে ফজর আলী এবং ছোট ছেলে শাহ পরান দীর্ঘদিন ধরে ভুক্তভোগী নারীকে উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন। প্রায় দুই মাস আগে দুই ভাইয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। পরে গ্রাম্য শালিসে ফজর আলী তার ছোট ভাই শাহ পরানকে চড় মারেন। এ অপমানের প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ খুঁজছিলেন শাহ পরান।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে অপহৃত কিশোরী উদ্ধার
ছাত্রীকে যৌনপল্লীতে বিক্রি, যুবক গ্রেপ্তার
র্যাব-১১ এর অধিনায়ক জানান, শালিসের কিছুদিন পর ভুক্তভোগী নারীর মা ফজর আলীর কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা ঋণ নেন। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় ভুক্তভোগীর বাবা-মায়ের অনুপস্থিতিতে ফজর আলী সুদের টাকা আদায়ের অজুহাতে ভুক্তভোগীর শয়নকক্ষে প্রবেশ করেন। এর ২০ মিনিট পর পূর্বপরিকল্পিতভাবে ভুক্তভোগীর বাড়ির আশপাশে অবস্থানরত শাহ পরান এবং একই গ্রামের আবুল কালাম, অনিক, আরিফ, সুমন, রমজান ও অজ্ঞাত ৮-১০ জন ব্যক্তি দরজা ভেঙে ভুক্তভোগীর শয়নকক্ষে প্রবেশ করেন। তারা ভুক্তভোগীকে শারীরিক নির্যাতন ও শ্লীলতাহানি করেন এবং অশ্লীল ভিডিও ধারণ করেন। তা পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন, এ ঘটনা সমাজে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছে।
ঢাকা/এমআর/রফিক