ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র পদের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে  বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের সমর্থকেরা আজও বিক্ষোভ করেছেন। ঢাকার গুলিস্তানে নগর ভবনের সামনে তাঁদের অবস্থান ও বিক্ষোভের কারণে ওই রাস্তায় দুই ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। পরে তাঁরা বিক্ষোভ মিছিল করেন।

আজ রোববারও নগর ভবনের মূল ফটকসহ সব ফটকে তালা ঝুলছিল। ফলে নগর ভবনে কাজ হয়নি। নাগরিক সেবা বন্ধ রয়েছে।  ‘ঢাকাবাসী’ ব্যানারে চারদিন ধরে নগর ভবনের সামনে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন ইশরাকের সমর্থকেরা। আগামীকাল বেলা ১১টা থেকে আবারও নগর ভবন ও এর আশপাশের সড়কে অবস্থান ও বিক্ষোভ করবেন ইশরাকের সমর্থকেরা। আগামীকালকের কর্মসূচির ঘোষণা দেন সাবেক সচিব মশিউর রহমান।

ইশরাকের সমর্থকেরা স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার পদত্যাগ দাবি করেছেন। তাঁদের অভিযোগ, উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার কারণেই আদালতের রায় ও নির্বাচন কমিশনের গেজেট প্রকাশের পরও ইশরাক হোসেন শপথ নিতে পারছেন না।  

ইশরাকের সমর্থকদের অবস্থান ও বিক্ষোভের কারণে নগর ভবনের সামনের রাস্তায়  সব ধরনের যান চলাচল আজ সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা বন্ধ হয়ে যায়। দুপুর ১২টার দিকে বিক্ষোভকারীরা মিছিল নিয়ে বের হলে যান চলাচল শুরু হয়।  

দুপুর ১২টার পর ইশরাকের সমর্থকদের মিছিলটি নগর ভবনের সামনে থেকে শুরু হয়ে গোলাপ শাহ মাজার, জিরো পয়েন্ট, পুরানা পল্টন মোড়, প্রেসক্লাব, শিক্ষাভবন মোড় ঘুরে ফের নগরভবনের সামনে এসে শেষ হয়। সেখানে তাঁরা আধঘণ্টা অবস্থান করেন।

এর আগে সকাল নয়টা থেকে বঙ্গবাজার মোড় থেকে নগর ভবনে আসার রাস্তা ও গোলাপ শাহ মাজারের দিক থেকে নগর ভবনে আসার পথে ব্যারিকেড রাখা হয়। এ সময়ে কোনো যানবাহন এই পথ হয়ে চলাচল করতে পারেনি।

আজও নগর ভবনের সব ফটকে তালা ঝুলিয়ে রাখার কারণে কর্মকর্তাদের কেউ অফিসে আসেননি। আর কর্মচারীদের একটি অংশ এই আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে অংশ নিয়েছেন। তালা লাগিয়ে দেওয়ার কারণে নগর ভবন থেকে দেওয়া সব ধরনের নাগরিক সেবা বন্ধ রয়েছে। এসব সেবার মধ্যে রয়েছে জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন, ট্রেড লাইসেন্সের (ব্যবসার অনুমতিপত্র) আবেদন ও নবায়ন, কর প্রদান ইত্যাদি।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অস্থায়ী দপ্তর নগর ভবনেই থাকায় সেখানে দাপ্তরিক কাজ করেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া। তবে ইশরাকপন্থীদের টানা আন্দোলনের কারণে গত কয়েক দিন তিনি সেখানে যাননি।

নগর ভবনের সামনে পুলিশের অবস্থান। আজ রোববার সকালে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অবস থ ন

এছাড়াও পড়ুন:

রিয়াদ চৌধুরী ২ দিনের রিমান্ডে, আইনজীবী লাঞ্ছিত  

চাঁদাবাজি মামলায় ফতুল্লা থানা বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরীর  দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদলত। রবিবার (১৮ মে) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. হায়দার আলী এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এদিকে রিমান্ড শুনানি শেষে  জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও ফতুল্লা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল বারী ভূইয়াকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে।

রিমান্ডপ্রাপ্ত আসামি- রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরী নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও ফতুল্লা থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। রিমান্ড শুনানির সময় ভার্চ্যুয়ালি আসামিকে আদালতে উপস্থাপন করা হয়। 

বিষয়টি নিশ্চিত করে কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক মো. কাইউম খান বলেন, রিয়াদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। 

তিনি আরও বলেন, অ্যাডভোকেট আব্দুল বারী ভূইয়ার উপরে হামলার অভিযোগ উঠলে, আদালতের নির্দেশে তাকে তার চেম্বারে দিয়ে এসেছেন পুলিশ সদস্যরা। 

এদিকে রিমান্ড শুনানি শেষে আদালত থেকে বের হওয়ার সময় জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও ফতুল্লা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল বারী ভূইয়াকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠে। 

এ বিষয়ে আব্দুল বারী ভূইয়া বলেন, রিমাণ্ড শানানিতে কোর্ট পরিদর্শক আমাকে সহযোগিতা করতে বলায় আমি রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হিসেবে শুনানিতে ছিলাম ও বক্তব্য রেখেছিল। আদালতে ৭দিনের রিমান্ড আবেদন করলে ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। 

তিনি আরও বলেন, রিমান্ড মঞ্জুর শেষে আমি কোর্ট কক্ষ থেকে বের হওয়ার সময় রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরীর ক্যাশিয়ার আমির, হারুন, আব্দুল মান্নান, সাগর সিদ্দিকির নেতৃত্বে ৫-৬শ জন লোক নিয়ে আমার উপর হামলা করে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। ওই সময় আমাকে পাশের চীফ জুডিসিয়ার ম্যাজিস্ট্রেটের কক্ষে সরিয়ে নিয়ে যায়। এ বিষয়ে চীফ জুডিসিয়ার ম্যাজিস্ট্রেটকে জানালে তিনি পুলিশি নিরাপত্তায় আমার চেম্বারে পৌছে দেন। 

এর আগে গত ১৫ থাইল্যান্ড পালানোর পথে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরীকে আটক করা হয়। পরে চাঁদাবাজি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরীকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। একই সাথে এদিন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তাকে বিএনপির প্রাথমিক সদস্যপদসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে বহিস্কার করা হয়

। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বলা হয়, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং দলের নীতি, আদর্শ ও সংহতি পরিপন্থী অনৈতিক কার্যকলাপের জন্য রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরীকে বিএনপির প্রাথমিক সদস্য সহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত ১৩ মে এক ব্যবসায়ীকে হুমকি দেওয়ার অডিও ক্লিপ ফাঁস হয়। পরে অডিও ক্লিপটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। সেই ঘটনায় ব্যবসায়ী আজাদ বাদী হয়ে মামলা করতে অস্বীকৃতি জানায়। পরবর্তীতে চাঁদাবাজীর ঘটনায় ফতুল্লা মডেল থানায় এস আই শামীম হোসেন বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। মামলায় রিয়াদকে আসামি করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ