নদীকে শাসন করতে গিয়ে আমরা মেরে ফেলেছি: রাজেকুজ্জামান রতন
Published: 18th, May 2025 GMT
নদীকে শাসন নয়, তার সঙ্গে ব্যবস্থাপনা করে তাকে মানিয়ে নিয়ে বসবাস করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারী সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন। তিনি বলেন, আমরা নদীকে শুধু শাসন করতে চাই, আর এই শাসন করতেই নদীকে আমরা মেরে ফেলেছি।
শনিবার বিকেলে কুড়িগ্রামে জেলা আইনজীবী সমিতির এটিএম এনামুল হক চৌধুরী চাঁদ মিলনায়তনে ‘ব্রহ্মপুত্র কনভেনশন’ অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচকের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, বন্যা ও খরা প্রকৃতির রুদ্র রূপ নয়, এটি প্রকৃতির নিয়ম। প্রকৃতি কারও সঙ্গে শত্রুতা করে না। আমরা প্রকৃতির নিয়মকে ভালোবাসতে পারেনি। মানুষকে বাঁচানোর জন্য ব্রহ্মপুত্র নদীকে বাঁচাতে হবে।
নদী গবেষক ও রিভারাইন পিপলের মহাসচিব শেখ রোকন বলেন, নদী তার গতিময় নিয়ে প্রবাহিত হয়। আমরা নদীর গতিপথ চিনতে পারিনি আজও। যার ফলশ্রুতিতে নদীকে শাসন করতে গিয়ে নদীকে আমরা মেরে ফেলেছি। আমরা পরিকল্পনা করে নদী ব্যবস্থাপনা না করায় বাংলাদেশের আন্তঃসীমান্ত ৫৪টি নদীর মধ্যে ভারত বাঁধ নির্মাণ করেছে। যা নীতি ও নৈতিকতা বিরুদ্ধ। ব্রহ্মপুত্র আমাদের প্রাণ, এই নদ বাংলাদেশকে বাঁচিয়ে রেখেছে, আমাদের ব্রহ্মপুত্রকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে।
‘ব্রহ্মপুত্র আমাদের বাঁচায়, আসুন আমরা ব্রহ্মপুত্রকে বাঁচাই’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে ভারত কর্তৃক আন্তঃনদী সংযোগের নামে ব্রহ্মপুত্রের পানি সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনার বিরুদ্ধে এবং পানির অধিকারের দাবিতে কুড়িগ্রামে এই ব্রহ্মপুত্র কনভেনশন অনুষ্ঠিত হয়।
বাসদ জেলা কমিটির সভাপতি কমরেড ফুলবর রহমানের সভাপতিত্বে এতে আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন, বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক আব্দুল কুদ্দুস, জেলা কমিটির সদস্য দুলাল বোস, মো.
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সিলেটে হাসপাতালের বারান্দায় ২ নারীর সন্তান প্রসব
সিলেট ওসমানী হাসপাতালের বারান্দায় ১০ মিনিটের ব্যবধানে দুই নারী সন্তান প্রসব করেছেন। এ নিয়ে তোলপাড় চলছে।
স্বজনদের অভিযোগ, প্রসব বেদনায় ছটফট করলেও লেবার ওয়ার্ডের কর্মরত চিকিৎসক ও নার্সরা জানারও পরও সেবা দিতে এগিয়ে আসেনি প্রসূতিদের। পরে হাসপাতালের বারান্দায় নিজেদের পরনের কাপড় দিয়ে আড়াল করে সন্তান প্রসবের ব্যবস্থা করেন অন্যান্য রোগীর স্বজনরা।
বুধবার (২ জুলাই) বিকেলে এই ঘটনা ঘটে। দুই প্রসূতির একজন এসেছিলেন গোলাপগঞ্জের বাউসি গ্রাম থেকে। তিনি ওই গ্রামের রতন দাসের স্ত্রী মিতালী দাস (২৫)। তিনি একটি পূত্র সন্তান প্রসব করেছেন।
অন্যজন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চাটিবহর গ্রামের মো. শাহিনের স্ত্রী সুমি বেগম (১৯)। তিনিও একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও দুই প্রসূতির স্বজনদের কাছ থেকে জানা যায়, এদিন বিকেল ৪টার দিকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২য় তলার ১৫নং ওয়ার্ডে সামনে পৌঁছান দুই প্রসূতি ও তাদের স্বজনরা। স্বজনরা কর্তব্যরত নার্সের কাছে গেলেও তারা তাদের কথা শোনেনি বরং সিরিয়াল ধরার নির্দেশ দিয়ে দুই নার্স নিজেদের মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। রোগীর অবস্থা জরুরি বলার পরেও তারা জানিয়ে দেন তাদের করার কিছু নেই।
এ অবস্থায় বসে থাকা একজন প্রসূতির চিৎকার ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। বসা অবস্থাতেই তিনি একটি পূত্র সন্তানের জন্ম দেন। তখন উপস্থিত স্বজন ও অন্যান্যরা দ্রুত আড়াল দেওয়ার ব্যবস্থা করেন।
এই আড়াল দিতে গিয়েও তারা নার্সদের কাছ থেকে কোনো সহযোগীতা পাননি। পর্দা করার জন্য একটা চাদর চাইলেও তারা সাড়া দেননি। পরে সেখানে উপস্থিত নারীরা নিজেদের পরনের কাপড় দিয়ে পর্দার ব্যবস্থা করেন। প্রথমজনের ১০ মিনিট পরে অপর প্রসূতিও একইভাবে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন।
এ ব্যাপারে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সৌমিত্র চক্রবর্তী বলেন, “যে ওয়ার্ডটিতে সন্তান প্রসব করেছেন সেটা পুরোটাই লেবার ওয়ার্ড। এখানে প্রতিদিন দেড় থেকে ২০০ নারী আসেন। যারা বিভিন্ন উপজেলা থেকে রেফার্ড হয়ে আসেন। দেখা যায় তারা অন্তিম মুহূর্তে আসেন তখন সিরিয়াল থাকে না। এছাড়া একটি বাচ্চা চার মাস আগে ডেড ছিল। সেটি মৃত অবস্থায় জন্ম নিয়েছে। অপর মায়ের ব্যাপারে আমরা খোঁজ নিচ্ছি।”
তিনি জানান, কোন এক রোগীর স্বজন লেবার ওয়ার্ডের ছবি তুলে বাইরে ছড়িয়ে দিয়েছেন। এখানে ডাক্তার বা নার্সদের আন্তরিকতার কোন ঘাটতি ছিল না। সবাই ওভার লোডেড হয়ে কাজ করছে। তার জন্য চাইলেও আমরা শতভাগ সার্ভিস দিতে পরি না। সে বিষয়টিও বিবেচনায় রাখতে হবে।
তিনি বলেন, “আমরা আন্তরিকভাবে সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি।”
ঢাকা/নূর/এস