কর্মক্ষেত্রে কিংবা পারিবারিক আয়োজনে এমন মানুষের মুখোমুখি আপনি হতেই পারেন, যিনি আপনাকে ঠিক পছন্দ করেন না। হয়তো ঘৃণা বা বিদ্বেষও পোষণ করেন। এমন কারও দেখাও আপনি পেয়ে যেতে পারেন, যিনি প্রায় সবার সঙ্গেই অমন আচরণ করেন। এ ধরনের মানুষদের সামলানো বেশ মুশকিল বটে।
রেগে গিয়ে যা হোক একটা কিছু বলে দিতে পারেন আপনিও। তবে তা মোটেও ‘স্মার্টনেস’ নয়। অহেতুক তর্কে না জড়িয়ে, মাথা ঠান্ডা রেখে কীভাবে পরিস্থিতি সামাল দেবেন?

শান্ত থাকুন

উত্তেজিত হবেন না। পৃথিবীর সবাই আপনাকে ভালোবাসবে না, কেউ কেউ অপছন্দ করতেই পারেন। আপনার প্রতি মন্দ আচরণের অনেক কারণও হয়তো থাকতে পারে ওই ব্যক্তির কাছে। হয়তো আপনার কোনো কাজের কারণে তাঁর স্বার্থে আঘাত লেগেছে। কিংবা হয়তো তিনি ব্যক্তিগত জীবনের রাগ-ক্ষোভ অকারণেই ঝাড়ছেন আপনার ওপর। তাই তাঁর বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্যকে ব্যক্তিগতভাবে নেবেন না। তিনি ব্যক্তিগত আক্রমণ করলেও আপনি শান্ত থাকবেন। আপনি তো জানেন, আপনি কেমন মানুষ। অন্যের কথায় কী আসে–যায়!

আরও পড়ুনআপনি কি ঝগড়ার সময় রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন১৮ জানুয়ারি ২০২৪হাসিতে বিশ্বজয়

কেউ খারাপ আচরণ করলেও আপনি হাসিখুশি থাকুন। যদি মেজাজ হারান, তাহলেই তো অপর পক্ষের সার্থকতা! সহজভাবে কথা বলুন। কথা বলার আগে লম্বা শ্বাস নিতে পারেন। পরিবেশ হালকা করতে নিজের রসবোধ কাজে লাগাতে পারেন। ওই ব্যক্তি অবশ্য তাতে না-ও থামতে পারেন। কিন্তু আপনি তাঁর সঙ্গে সহজভাবেই কথা বলুন।

নীরবতাই যখন দৃঢ়তা

আপনি নম্রভাবে কথা বলা সত্ত্বেও যদি ওই ব্যক্তি ক্রমাগত খারাপ আচরণ করতে থাকেন, তাহলে তাঁকে যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন। তাঁর মুখোমুখি হতে হলেও কেবল কুশল বিনিময় করুন। তাঁর খারাপ কথার জবাব দেওয়ার প্রয়োজন নেই। কখনো কখনো এই নীরবতাই হতে পারে আপনার শক্তি।

খারাপ থেকে মন সরিয়ে

কারও আচরণে কষ্ট পেলে ভাবনার গতিপথ অন্যদিকে সরিয়ে নিন। পছন্দের একটা অডিও ক্লিপ শুনুন, প্রিয় কোনো বইয়ের পাতা ওলটান কিংবা কিছুক্ষণের জন্য ভিন্ন পরিবেশে ঘুরে আসুন। অন্য মানুষ যতটা খারাপ আচরণই করুক না কেন, আপনি নিজের লক্ষ্য থেকে সরে যাবেন না। কাজের সময় তাতেই গভীরভাবে মনোনিবেশ করুন।

ভালোবাসার চর্চা চলুক

কেউ যদি আপনার সঙ্গে ঘৃণার চর্চা করেন, তাতে দমে যাবেন না। আপনি কাছের মানুষদের ভালোবাসার চর্চা চালিয়ে যান। কাছের মানুষদের সঙ্গে আপনার বন্ধন যতটা শক্তিশালী হবে, আপনি ততই মানসিকভাবে শক্তিশালী হবেন। তাহলে অন্যের অযাচিত আচরণে ভেঙে পড়বেন না।

সূত্র: রিডার’স ডাইজেস্ট, মিডিয়াম ডট কমআরও পড়ুনযেভাবে চিয়া সিড খেলে চুল পড়া কমবে১২ মে ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আপন র

এছাড়াও পড়ুন:

পুকুরের সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্পে অনিয়ম

‘পানি শুকানোর আগে জেলে এনে মাছ ধরা হয়েছে। পরে পানি শুকিয়ে আরেক দফা মাছ ধরেছে। পুকুরের মাটিও কাটেনি। পুকুরের পাড় দৃষ্টিনন্দন করার জন্য টাকা বরাদ্দ হয়েছিল। কাজ না করেই টাকা লুট করা হচ্ছে। পুকুরচুরি নয় যেন সাগরচুরি হয়েছে এখানে।’
নাম না প্রকাশের অনুরোধ জানিয়ে এসব কথা বলছিলেন সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা ছাত্রদলের একজন সাবেক নেতা। বললেন, ‘যারা কাজ করেছে তারা, আর আমরা একদল করি। এজন্য নামটা না ছাপালেই ভালো হয় ভাই।’
উপজেলা পরিষদের পাশে ইউএনওর বাসার সামনের সরকারি পুকুরে উন্নয়নকাজের নামে করা অকাজ হচ্ছে বলে জানিয়ে ওই ছাত্রদল নেতা বলেন, বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় মানুষ ক্ষুব্ধ। 
জানা গেছে, এলজিইডির ‘খাল খনন-পুকুর খনন’ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় ৬০ লাখ টাকায় পুকুরটির উন্নয়নকাজ বাস্তবায়ন হচ্ছে। কাজটি পেয়েছে আরতী এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু উপঠিকাদার হিসেবে প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করছেন যুবদল ও ছাত্রদলের কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা। 
স্থানীয়দের অভিযোগ, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কোনো লোককে সেখানে দেখা যায়নি। উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক তুজাম্মিল হক নাছরুম এবং উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আবুল হাসনাত রাসেলসহ কয়েকজন ছাত্র ও যুবদলের নেতারা পুকুরের উন্নয়নকাজ করছেন। এই কাজ করতে গিয়ে তারা পুকুরের আরও বেশি ক্ষতি করেছেন। 
স্থানীয় বাসিন্দা একজন সরকারি চাকরিজীবী বললেন, পুকুরে আগে থেকেই তিনটি ঘাটলা ছিল। নতুন আরও দুটি ঘাটলা করার কথা ছিল। দুই পাড়ে ওয়াকওয়ে এবং পশ্চিম কোণে দৃষ্টিনন্দনভাবে বসার স্থান করার কথা ছিল। এছাড়া পুকুরের মাটি খনন করে পাড় ভরাট ও সৌন্দর্যবর্ধন করা হবে জানিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। একটি ঘাটলা নামকাওয়াস্তে করা ছাড়া, আর কিছুই এখানে হয়নি। 
অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আবুল হাসনাত রাসেল বললেন, ‘আমরা প্রকল্পে কয়েকজন মিলে কাজ করেছি। পুকুরের পাড়ে মাটি ভরাটও করেছি। কিন্তু মাটি আটকানোর কোনো ব্যবস্থা প্রকল্পে উল্লেখ না থাকায়, বৃষ্টির পানিতে কিছু মাটি পুকুরে গেছে। অন্য ঘাটলাগুলো সংস্কার করা হয়েছে। ওই পুকুরে তেমন কোনো মাছ ছিল না।’
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আরতী এন্টারপ্রাইজের পরিচালক সহিবুর রহমানের দাবি, তিনি নিজেই কাজ করছেন। প্রাক্কলনে যেভাবে ঘাটলা করার কথা বলা হয়েছে, সেভাবেই তারা করেছেন। 
উপজেলা প্রকৌশলী জাহিদুল ইসলামের ভাষ্য, পুকুরের পানি শুকানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। ৩০ ফুটের মতো গভীর থাকায়, পানি একেবারে শুকানো যায়নি। তবে পুকুর থেকে মাটি কেটে তোলা হয়েছে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ