ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালাতে গিয়ে আহত খুলনার তেরখাদার যুবলীগ নেতা মিনারুল ইসলামকে জুলাই যোদ্ধা হিসেবে এক লাখ টাকা অনুদান প্রদানের ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। 

রোববার (১৮ মে) রাতে খুলনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিতান কুমার মন্ডলকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। 

কমিটির সদস্যরা হলেন- পুলিশ সুপার সিভিল সার্জনের প্রতিনিধি, ইউএনও (তেরখাদা) ও দুইজন ছাত্র প্রতিনিধি। কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে রয়েছেন সহকারী কমিশনার (সাধারণ শাখা)। কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। 

এর আগে রোববার বিকেলে বিষয়টি নিয়ে রাইজিংবিডিসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। মুহূর্তের মধ্যেই সংবাদটি ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয় তীব্র সমালোচনা। রাতে খুলনা জেলা প্রশাসনের এক বিজ্ঞপ্তিতে তদন্ত কমিটি গঠনের তথ্য জানানো হয়।

রাইজিংবিডির প্রতিবেদনে বলা হয়, খুলনার তেরখাদা উপজেলার মধুপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিনারুল ইসলাম ৪ আগস্ট ছাত্রদের ওপর হামলা চালান। পরে ছাত্রদের ধাওয়ায় তিনি খুলনা আওয়ামী লীগ কার্যালয় থেকে পালাতে গিয়ে আহত হন। আহত হওয়ার সেই নথি জমা দিয়ে জুলাই যোদ্ধা হিসেবে সি ক্যাটাগরিতে নাম তালিকাভুক্ত করেছেন তিনি। গত ১৪ জুলাই খুলনা জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে তিনি ১ লাখ টাকা অনুদানের চেক গ্রহণ করেন। 

খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, “মন্ত্রণালয় থেকে প্রাপ্ত তালিকা অনুযায়ী চেক বিতরণ করা হয়েছে। আলোচিত মিনারুল ইসলামের নামটিও মন্ত্রণালয় থেকে সুপারিশ করা। তারপরও ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”

ঢাকা/নুরুজ্জামান/টিপু

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ল ইসল ম তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

যেভাবে এনবিআর দুই ভাগ করা হয়েছে, তা ঠিক হয়নি: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) দুই ভাগ করাটা ঠিক হয়েছে। এটা আমাদের শ্বেতপত্রের সুপারিশেও ছিল। কিন্তু যেভাবে করা হয়েছে, সেটি ঠিক হয়নি।’

তাঁর মতে, আলোচনা ছাড়া পেশাজীবীদের জায়গাকে সংকুচিত করে এবং অন্যান্য স্বায়ত্তশাসনের জায়গাকে আরও বেশি নিয়ন্ত্রণে রেখে যেভাবে ভাগ করা হয়েছে, এই পদ্ধতি ঠিক হয়নি। এখন এটাকে ঠিকমতো ভাগ করাটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আজ সোমবার রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে ‘নীতি সংস্কার ও আগামীর জাতীয় বাজেট’ শীর্ষক নাগরিক প্ল্যাটফর্ম আয়োজিত সংলাপে এ কথা বলেন তিনি।

সংলাপে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, বিগত সরকারের সময় চোরতন্ত্র বা লুটপাটতন্ত্রে যাঁরা যুক্ত ছিলেন, তাঁদের মধ্যে জড়িত রাজনীতিবিদেরা পালিয়ে গেছেন, ব্যবসায়ী গোষ্ঠীরা ম্রিয়মাণ (নির্জীব) হয়ে আছে। আর আমলারা আবার পুনরুজ্জীবিত হয়েছেন।

অর্থনৈতিক সংস্কারে সরকারের মনোযোগ কম উল্লেখ করে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘আমাদের সাধারণ আক্ষেপ হলো সরকারের পক্ষ থেকে অন্যান্য সংস্কারে যতখানি মনোযোগ দেওয়া হয়, অর্থনৈতিক সংস্কারের ব্যাপারে অতখানি মনোযোগ আমরা দেখি না। এটা একটা বড় ধরনের সমস্যা এবং ওনারা অনুধাবন করেন না। অর্থনীতিতে যদি স্বস্তি না থাকে তাহলে অন্য কোনো সংস্কার কিন্তু স্বস্তিতে থাকবে না।’

তারপরও এত কিছু অসম্পূর্ণতা বা অসংগতি থাকার পরও বাজেট কীভাবে বাস্তবায়িত হবে, সেটি চারটি বিষয়ের ওপর অনেকখানি নির্ভর করবে বলে মনে করেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘আমাদের যে ঐক্য প্রক্রিয়ার আলোচনা চলছে, এর ফলাফল; নির্বাচন সম্বন্ধে একটি নির্দিষ্ট পথরেখা পাওয়া; যে বিচারের কথা বলা হচ্ছে, তা আগে হবে, না পরে হবে ইত্যাদির পাশাপাশি শান্তিশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার বিষয়ের ওপরে নির্ভর করবে।’

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরও বলেন, ‘বিনিয়োগের জন্য যেসব উপাদান থাকে, এই মুহূর্তে সেগুলো আমাদের খুব বেশি উৎসাহিত করতে পারছে না। ফলে কর্মসংস্থান বাড়ছে না। শ্রমিকদের মজুরি বাড়ার হার মূল্যস্ফীতির হারের চেয়ে নিচে। অর্থাৎ তাদের প্রকৃত আয় কমে যাচ্ছে। তাহলে আমরা অর্থনৈতিকে ঘুরে দাঁড়াতে দেখছি কি না, সেটি খুব বেশি শক্তি দিয়ে বলা যাচ্ছে না।’

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী, বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

সম্পর্কিত নিবন্ধ