চ্যাম্পিয়নশিপ নিশ্চিত হওয়ার পর থেকেই মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব প্রাঙ্গণে ব্যস্ততা বেড়েছে। কর্মকর্তা, সমর্থক গোষ্ঠী থেকে শুরু করে সবার আনাগোনায় অন্যরকম পরিবেশ মতিঝিল পাড়ার ক্লাবটিতে। ২৩ বছর পর যার হাত ধরে এসেছে সাফল্য, সেই কোচ আলফাজ আহমেদকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন সবাই। পেশাদার যুগে মোহামেডানকে প্রথমবার শিরোপা জেতানোর অভিজ্ঞতাসহ নানা বিষয়ে তিনি কথা বলেছেন সমকালের সঙ্গে। তা শুনেছেন সাখাওয়াত হোসেন জয়

সমকাল: ২৩ বছর পর চ্যাম্পিয়ন মোহামেডান। 
আলফাজ:
অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। এটা বড় একটি পাওয়া। ২৩ বছর পর মোহামেডান চ্যাম্পিয়ন হয়েছে, সেই দলের কোচ আমি, সত্যি কথা বলতে অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করছে। 

সমকাল: লিগ শিরোপা জেতায় মোহামেডান এখন এএফসি কাপে খেলবে।
আলফাজ:
মোহামেডান এএফসি কাপে খেলবে, এটা অনেক বড় গর্বের বিষয়। আমরা চাই মোহামেডান সবসময় উপরের দিকে যাবে। 

সমকাল: এএফসির শর্ত অনুযায়ী একটা ক্লাবের কোচকে উয়েফা প্রো-লাইসেন্সধারী হতে হয়। আপনি তো ‘এ’ লাইসেন্স করেছেন। 
আলফাজ:
যখন যাঁকে দরকার, ক্লাব অবশ্যই তাঁকে নিবে। এখানে তো আমার কথায় চলবে না। আফসোস লাগারও কিছুই নেই। এটা আসলে ব্যক্তির চেয়ে দল বড়। দল যেখানে যেটা ভালো হবে, সেটাই করবে। এটাই স্বাভাবিক। 

সমকাল: তাহলে আলফাজকে ছাড়া এএফসি কাপে খেলবে মোহামেডান?
আলফাজ:
আমার পরেরটাই প্রো-লাইসেন্স। বাংলাদেশে যদি পরে হয়, তাহলে করব। আর আগামী এএফসি কাপের আগে এটা করা সম্ভব নয়। আমি আগেও বলেছি ব্যক্তির চেয়ে দল বড়। আপনাকে দলের বিষয়ই দেখতে হবে আগে। 

সমকাল: এবার কখন মনে হয়েছে যে চ্যাম্পিয়ন হতে পারবেন?
আলফাজ:
আবাহনীর সঙ্গে ১০ জন নিয়ে যখন ম্যাচটি ড্র করেছি, তখনই মনে হয়েছে এবার আমরা পারব। কারণ আমরা দুই লেগে বসুন্ধরা কিংসকে হারিয়েছি। আবাহনীর বিপক্ষে দুই লেগের একটিতে জিতেছি, আরেকটিতে ড্র করেছি। এরপর ফর্টিসের বিপক্ষে পিছিয়ে পড়েও ড্র করাটা আমাদের জন্য ইতিবাচক ছিল।

সমকাল: গত মৌসুমে রানার্সআপ হয়েছিল। এই মৌসুমে শুরু থেকেই শিরোপা রেসে ছিল মোহামেডান।
আলফাজ:
গত বছর তিনটি টুর্নামেন্টের ফাইনালে আমরা খেলি এবং সবগুলোতে হেরে যাই। তবে চ্যাম্পিয়ন হতে না পারলেও তখন থেকে একটা আত্মবিশ্বাস ছিল যে আমরাও চ্যাম্পিয়ন হতে পারব। ফাইনাল স্টেজে যখন যেতে পেরেছি, তখন শিরোপাও জিততে পারব; এই মানসিকতা ছিল আমাদের মধ্যে। এই টার্গেট নিয়ে এগিয়েছি। আমরা পুরো দলকে এক করেছি। বলতে পারেন সবার ঐক্যবদ্ধ থাকার ফল এটি। 

সমকাল: মাঠে নামার আগেই যে চ্যাম্পিয়ন হবেন, তা কি ভেবেছিলেন?
আলফাজ:
এটা আমাদের মাথায় ছিল। সে কারণেই কালকের (শনিবার) আবাহনী-ফর্টিস ম্যাচে আমাদের দৃষ্টি ছিল। ক্লাব আঙিনায় সবাই ইউটিউবে ফর্টিস আর আবাহনীর খেলা দেখেছে। আসলে সবার মধ্যে একটা রোমাঞ্চ কাজ করছিল। বাকিটা তো সবাই জানে।

সমকাল: খেলোয়াড়ের পর কোচ হিসেবে মোহামেডানের চ্যাম্পিয়ন দলের সদস্য আপনি।
আলফাজ:
খেলোয়াড়, অধিনায়ক এবং কোচ হিসেবে মোহামেডানের হয়ে শিরোপা জিতেছি। আমি কোনোটাকে আলাদাভাবে মূল্যায়ন করতে চাচ্ছি না। একজন প্লেয়ার হিসেবে চ্যাম্পিয়নশিপটা বেশি আনন্দের। আমার কাছে তিনটিই গুরুত্বপূর্ণ। তবে এটা যেহেতু দীর্ঘদিন পর, অনেক অপেক্ষার পর এসেছে; এটাই বেশি আনন্দের। 

সমকাল: নিয়মিত বেতন পাননি ফুটবলাররা, তার পরও তারা দলের জন্য নিজেদের উজাড় করে দিয়েছেন। এর পেছনে কার অবদান বেশি?
আলফাজ:
সমস্যার মধ্যেও প্লেয়ারদের এক ছাতার নিচে আনার কাজটা আমি একা করিনি। এর জন্য বেশি অবদান টিম ম্যানেজারের। সর্বোপরি বলতে হয়ে খেলোয়াড়দের কথা। তারা অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছে। 

সমকাল: দীর্ঘ চার বছর ধরে ক্লাবের কোচ হিসেবে আছেন। 
আলফাজ:
ধাপে ধাপেই তো আমরা লক্ষ্যে পৌঁছেছি। সবচেয়ে বড় বিষয় এই চার বছর আমাদের প্লেয়ার বলতে পারেন একই ছিল। আমরা খুব বেশি ফুটবলার আনিনি, আবার ক্লাব ছেড়েও অনেকে যায়নি। দীর্ঘদিন একসঙ্গে খেলার কারণে সবার সঙ্গে বন্ডিং ভালো হয়েছে। যার সাফল্য আমরা পেয়েছি।

সমকাল: খেলোয়াড়ের পর কোচিংয়েও সফল। নিজেকে কোথায় দেখতে চান?
আলফাজ:
আমি দেশের একজন ভালো কোচ হিসেবে নিজেকে দেখতে চাই। মানুষ মনে রাখতে পারে, এমন কোচ হতে চাই।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আম দ র সমক ল আলফ জ

এছাড়াও পড়ুন:

চ্যাম্পিয়ন করেও অপূর্ণতা আলফাজের

চ্যাম্পিয়নশিপ নিশ্চিত হওয়ার পর থেকেই মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব প্রাঙ্গণে ব্যস্ততা বেড়েছে। কর্মকর্তা, সমর্থক গোষ্ঠী থেকে শুরু করে সবার আনাগোনায় অন্যরকম পরিবেশ মতিঝিল পাড়ার ক্লাবটিতে। ২৩ বছর পর যার হাত ধরে এসেছে সাফল্য, সেই কোচ আলফাজ আহমেদকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন সবাই। পেশাদার যুগে মোহামেডানকে প্রথমবার শিরোপা জেতানোর অভিজ্ঞতাসহ নানা বিষয়ে তিনি কথা বলেছেন সমকালের সঙ্গে। তা শুনেছেন সাখাওয়াত হোসেন জয়

সমকাল: ২৩ বছর পর চ্যাম্পিয়ন মোহামেডান। 
আলফাজ:
অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। এটা বড় একটি পাওয়া। ২৩ বছর পর মোহামেডান চ্যাম্পিয়ন হয়েছে, সেই দলের কোচ আমি, সত্যি কথা বলতে অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করছে। 

সমকাল: লিগ শিরোপা জেতায় মোহামেডান এখন এএফসি কাপে খেলবে।
আলফাজ:
মোহামেডান এএফসি কাপে খেলবে, এটা অনেক বড় গর্বের বিষয়। আমরা চাই মোহামেডান সবসময় উপরের দিকে যাবে। 

সমকাল: এএফসির শর্ত অনুযায়ী একটা ক্লাবের কোচকে উয়েফা প্রো-লাইসেন্সধারী হতে হয়। আপনি তো ‘এ’ লাইসেন্স করেছেন। 
আলফাজ:
যখন যাঁকে দরকার, ক্লাব অবশ্যই তাঁকে নিবে। এখানে তো আমার কথায় চলবে না। আফসোস লাগারও কিছুই নেই। এটা আসলে ব্যক্তির চেয়ে দল বড়। দল যেখানে যেটা ভালো হবে, সেটাই করবে। এটাই স্বাভাবিক। 

সমকাল: তাহলে আলফাজকে ছাড়া এএফসি কাপে খেলবে মোহামেডান?
আলফাজ:
আমার পরেরটাই প্রো-লাইসেন্স। বাংলাদেশে যদি পরে হয়, তাহলে করব। আর আগামী এএফসি কাপের আগে এটা করা সম্ভব নয়। আমি আগেও বলেছি ব্যক্তির চেয়ে দল বড়। আপনাকে দলের বিষয়ই দেখতে হবে আগে। 

সমকাল: এবার কখন মনে হয়েছে যে চ্যাম্পিয়ন হতে পারবেন?
আলফাজ:
আবাহনীর সঙ্গে ১০ জন নিয়ে যখন ম্যাচটি ড্র করেছি, তখনই মনে হয়েছে এবার আমরা পারব। কারণ আমরা দুই লেগে বসুন্ধরা কিংসকে হারিয়েছি। আবাহনীর বিপক্ষে দুই লেগের একটিতে জিতেছি, আরেকটিতে ড্র করেছি। এরপর ফর্টিসের বিপক্ষে পিছিয়ে পড়েও ড্র করাটা আমাদের জন্য ইতিবাচক ছিল।

সমকাল: গত মৌসুমে রানার্সআপ হয়েছিল। এই মৌসুমে শুরু থেকেই শিরোপা রেসে ছিল মোহামেডান।
আলফাজ:
গত বছর তিনটি টুর্নামেন্টের ফাইনালে আমরা খেলি এবং সবগুলোতে হেরে যাই। তবে চ্যাম্পিয়ন হতে না পারলেও তখন থেকে একটা আত্মবিশ্বাস ছিল যে আমরাও চ্যাম্পিয়ন হতে পারব। ফাইনাল স্টেজে যখন যেতে পেরেছি, তখন শিরোপাও জিততে পারব; এই মানসিকতা ছিল আমাদের মধ্যে। এই টার্গেট নিয়ে এগিয়েছি। আমরা পুরো দলকে এক করেছি। বলতে পারেন সবার ঐক্যবদ্ধ থাকার ফল এটি। 

সমকাল: মাঠে নামার আগেই যে চ্যাম্পিয়ন হবেন, তা কি ভেবেছিলেন?
আলফাজ:
এটা আমাদের মাথায় ছিল। সে কারণেই কালকের (শনিবার) আবাহনী-ফর্টিস ম্যাচে আমাদের দৃষ্টি ছিল। ক্লাব আঙিনায় সবাই ইউটিউবে ফর্টিস আর আবাহনীর খেলা দেখেছে। আসলে সবার মধ্যে একটা রোমাঞ্চ কাজ করছিল। বাকিটা তো সবাই জানে।

সমকাল: খেলোয়াড়ের পর কোচ হিসেবে মোহামেডানের চ্যাম্পিয়ন দলের সদস্য আপনি।
আলফাজ:
খেলোয়াড়, অধিনায়ক এবং কোচ হিসেবে মোহামেডানের হয়ে শিরোপা জিতেছি। আমি কোনোটাকে আলাদাভাবে মূল্যায়ন করতে চাচ্ছি না। একজন প্লেয়ার হিসেবে চ্যাম্পিয়নশিপটা বেশি আনন্দের। আমার কাছে তিনটিই গুরুত্বপূর্ণ। তবে এটা যেহেতু দীর্ঘদিন পর, অনেক অপেক্ষার পর এসেছে; এটাই বেশি আনন্দের। 

সমকাল: নিয়মিত বেতন পাননি ফুটবলাররা, তার পরও তারা দলের জন্য নিজেদের উজাড় করে দিয়েছেন। এর পেছনে কার অবদান বেশি?
আলফাজ:
সমস্যার মধ্যেও প্লেয়ারদের এক ছাতার নিচে আনার কাজটা আমি একা করিনি। এর জন্য বেশি অবদান টিম ম্যানেজারের। সর্বোপরি বলতে হয়ে খেলোয়াড়দের কথা। তারা অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছে। 

সমকাল: দীর্ঘ চার বছর ধরে ক্লাবের কোচ হিসেবে আছেন। 
আলফাজ:
ধাপে ধাপেই তো আমরা লক্ষ্যে পৌঁছেছি। সবচেয়ে বড় বিষয় এই চার বছর আমাদের প্লেয়ার বলতে পারেন একই ছিল। আমরা খুব বেশি ফুটবলার আনিনি, আবার ক্লাব ছেড়েও অনেকে যায়নি। দীর্ঘদিন একসঙ্গে খেলার কারণে সবার সঙ্গে বন্ডিং ভালো হয়েছে। যার সাফল্য আমরা পেয়েছি।

সমকাল: খেলোয়াড়ের পর কোচিংয়েও সফল। নিজেকে কোথায় দেখতে চান?
আলফাজ:
আমি দেশের একজন ভালো কোচ হিসেবে নিজেকে দেখতে চাই। মানুষ মনে রাখতে পারে, এমন কোচ হতে চাই।

সম্পর্কিত নিবন্ধ