‘মানসিক ভারসাম্যহীন’ চাচাকে ছাড়াতে গিয়ে খুন হলেন তরুণ
Published: 19th, May 2025 GMT
মাগুরার সদর উপজেলার আলোকদিয়া গ্রামে ছুরিকাঘাতে হাসান শেখ (২২) নামের এক তরুণ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন তাঁর বাবা ও দুই চাচা। গতকাল রোববার দিবাগত রাত একটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত হাসান শেখ ওই গ্রামের নির্মাণশ্রমিক পাঞ্জু শেখের ছেলে। ছুরিকাঘাতে আহত হয়েছেন হাসানের বাবা পাঞ্জু শেখ, চাচা মিজান শেখ ও শিপন শেখ। প্রথমে তাঁদের মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় গতকাল রাতেই তাঁদের ঢাকায় পাঠানো হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাত সাড়ে ১২টার দিকে আলোকদিয়া গ্রামের বাসিন্দা আলম মোল্লার ঘরে উঁকি দেওয়ার অভিযোগে রিপন শেখ নামের একজনকে আটক করে এলাকাবাসী। পরিবারের দাবি, রিপন মানসিকভাবে অসুস্থ। তাঁর ভাই মিজান শেখ, শিপন শেখসহ স্বজনেরা তাঁকে উদ্ধার করতে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে আলম মোল্লার ছেলে আল আমিন মোল্লা (২৩) ঘর থেকে ছুরি এনে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হাসানসহ চারজনকে জখম করেন। তাঁদের মাগুরা সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক হাসান শেখকে মৃত ঘোষণা করেন। তাঁর মরদেহ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
নিহত তরুণের চাচা শহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘একদম তুচ্ছ কারণে এই হত্যাকাণ্ড। আমাদের এক মানসিক ভারসাম্যহীন ভাইকে আটকে মারধর করছিল। আমরা তাঁকে উদ্ধার করতি গিছিলাম। কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে ছুরি দিয়ে আমার ভাই ভাস্তেদের ওপর হামলা করা হয়। ছেলেটা আমাগের চোখের সামনে মরে গেল। কিছুই করতে পারলাম না।’
এ ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। ঘটনার পর থেকে তাঁরা পলাতক বলে জানিয়েছে পুলিশ।
মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আইয়ুব আলী বলেন, ‘একজনের ঘরে উঁকি দেওয়ার অভিযোগ থেকে ঘটনার সূত্রপাত। যাঁরা হতাহত হয়েছেন, তাঁদের পরিবারের পুরুষ সদস্যরা আহত ব্যক্তিদের নিয়ে ঢাকায় গেছেন। আমরা বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছি। এখনো কাউকে আটক করা যায়নি। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ত হয় ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে মারধরের শিকার কিশোরের মৃত্যু
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে মারধরের শিকার এক কিশোর ১২ দিন পর মারা গেছে। নিহত কিশোরের নাম মো. শিহাব (১৭)। সে উপজেলার বসন্তপুর গ্রামের মিজানুর রহমান রিপনের ছেলে। চলতি বছর এসএসসি পাস করেছে সে।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) লাইফ সাপোর্টে ছিল শিহাব। শনিবার (১ নভেম্বর) সকালে তার মৃত্যু হয়।
এর আগে গত ২০ আগস্ট রাত আটটার দিকে তাকে নির্মম নির্যাতন করা হয়। রিপনের এক ছেলে ও দুই মেয়ের মধ্যে শিহাব ছিল সবার বড়। প্রচণ্ড মারধরের পর থেকেই সে অচেতন অবস্থায় ছিল।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শিহাব গত ২০ অক্টোবর পার্শ্ববর্তী বান্দুড়িয়া এলাকায় তার প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে যায়। সে তেঁতুলতলা বাঁকের কাছে গেলে তার প্রেমিকার আত্মীয়-স্বজনেরা তাকে তাড়া দেয়। শিহাব নিজেকে রক্ষা করতে রাতের অন্ধকারে মাঠের মধ্যে দৌড় দেয়। একপর্যায়ে শিহাব দিক হারিয়ে অন্ধকারের মধ্যে পুকুরে ঝাঁপ দেয়।
সেসময় কিছু ব্যক্তিও পুকুরে নেমে শিহাবকে মারধর শুরু করে। এরপর তাকে পুকুর থেকে তুলে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটান।
একপর্যায়ে শিহাব জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে ঢলে পড়ে। এরপর লাঠি দিয়ে শিহাবকে আরো পিটিয়ে ফেলে রেখে যায় প্রেমিকার আত্মীয়রা। পরে স্থানীয় লোকজন ও পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেন। মাথায় গুরুত্বর আঘাত থাকায় তার জ্ঞান ফেরেনি। তাই তাকে আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল।
শিহাবকে নির্যাতনের ঘটনায় তার বাবা রিপন গত ২৪ অক্টোবর রাতে রতন আলী (৩২), মো. কানন (২২), সুজন আলী (৩২), ইয়ার উদ্দীন (৩২), মো. শরীফ (৩৫), মো. রাব্বি (২৫), মো. হালিম (৩০) এবং মো. কলিম (৩২) নামের নয়জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরো আট থেকে নয়জনকে অজ্ঞাত আসামি করে গোদাগাড়ী থানায় মামলা দায়ের করেন। তবে শনিবার (১ নভেম্বর) দুপুর পর্যন্ত এদের কাউকেই গ্রেপ্তার করতে পারেনি থানা-পুলিশ।
গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, “প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে শিহাব হামলার শিকার হয়েছিল। তার মৃত্যুর খবর শুনেছি। ময়নাতদন্তের পর মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। হামলার ঘটনায় আগে করা মামলাটি এখন হত্যা মামলায় রূপান্তর হবে। আসামিদের গ্রেপ্তারে সব ধরনের চেষ্টা চলছে।”
ঢাকা/কেয়া/এস