আল্লাহ কোরআনকে আরবি ভাষায় নাজিল করেছেন। আবার যেকোনো ভাষায় তা বোঝা সহজ করেছেন। এই লেখায় আমরা এমন সাতটি উপায় নিয়ে আলোচনা করব, যার মাধ্যমে আরবি না পড়তে বা না বুঝতে পারলেও কোরআনের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করা যায়।

১. উপযুক্ত অনুবাদ নির্বাচন করুন

আপনার মাতৃভাষায় কোরআনের চমৎকার অনুবাদগুলো খুঁজে বের করুন। বিভিন্ন অনুবাদ পড়ে দেখুন কোনটি আপনার কাছে সহজবোধ্য ও হৃদয়গ্রাহী। শব্দ-শব্দ অনুবাদ ব্যবহার করলে কোরআনে বারবার ব্যবহৃত শব্দগুলোর অর্থ মনে রাখা সহজ হবে। একাধিক অনুবাদের তুলনামূলক পাঠ আয়াতের গভীর অর্থ উন্মোচনে সহায়ক। আজকাল ইন্টারনেটে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে বিভিন্ন ভাষার অনুবাদ পাশাপাশি দেখার সুবিধা রয়েছে।

২.

কোরআন তিলাওয়াত শুনুন

আয়াতের অর্থ না বুঝলেও কোরআনের তিলাওয়াত মনোযোগ দিয়ে শোনা আধ্যাত্মিক উপকার বয়ে আনে। কোরআনের তিলাওয়াতের কয়েকটি ফজিলত হলো:

শিফা ও রহমত: ‘আমি কোরআন থেকে এমন কিছু নাজিল করি, যা মুমিনদের জন্য শিফা ও রহমত...।’ (সুরা আল-ইসরা, আয়াত: ৮২)

উপদেশ: ‘যার হৃদয় আছে বা যে মনোযোগ দিয়ে শোনে, তার জন্য এতে রয়েছে উপদেশ।’ (সুরা ক্বাফ, আয়াত: ৩৭)

রহমত লাভ: ‘যখন কোরআন পড়া হয়, তখন মনোযোগ দিয়ে শোনো এবং নীরব থাকো, যাতে তোমরা রহমত লাভ করো।’ (সুরা আরাফ, আয়াত: ২০৪)

হেদায়াতের লক্ষণ: ‘যারা কথা শোনে এবং সর্বোত্তমটি অনুসরণ করে, তারাই আল্লাহর হেদায়াতপ্রাপ্ত...।’ (সুরা জুমার, আয়াত: ১৮)

তিলাওয়াত শুনতে শুনতে ট্রান্সলিটারেশন অনুসরণ করুন, এতে আরবি শব্দের সঙ্গে পরিচিতি বাড়বে।

আরও পড়ুনপার্থিব জাঁকজমক যেন আধ্যাত্মিকতার বাধা না হয়০৭ মে ২০২৫

৩. নিজে তিলাওয়াত করুন

আরবি শব্দ পড়া প্রথমে কঠিন মনে হলেও এই প্রচেষ্টায় অফুরন্ত বরকত রয়েছে। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোরআন কষ্ট করে তোতলাতে তোতলাতে তিলাওয়াত করে, তার জন্য রয়েছে দ্বিগুণ পুরস্কার।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৭৯৮)

তিনি আরও বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর কিতাব থেকে একটি অক্ষর পড়ে, সে একটি নেকি পায়, যা ১০টি নেকির সমান।’ (তিরমিজি, হাদিস: ২৯১০)

ইউটিউবে ধীরগতির তিলাওয়াত সিরিজ বা কোরআনের শিক্ষকের সান্নিধ্য আপনাকে সাহায্য করবে। সুরা ফাতিহা মুখস্থ করুন, কারণ এটি প্রতিদিনের নামাজে অপরিহার্য। এভাবে ছোট ছোট সুরা মুখস্থ করে বারবার পড়ুন। আল্লাহ বলেন, ‘আমি কোরআনকে বোঝা ও মুখস্থ করা সহজ করে দিয়েছি...।’ (সুরা আল-ক্বামার, আয়াত: ১৭)

৪. শিশুতোষ কোরআন ব্যবহার করুন

শিশুদের জন্য তৈরি কোরআন বা কোরআন শেখার বই কোরআনের বাণী সহজভাবে বোঝায়। এগুলোতে নবীদের জীবনী বা কোরআনের কাহিনি ক্রমানুসারে উপস্থাপন করা হয়, যা শিশুদের মতো প্রাপ্তবয়স্কদের জন্যও কোরআনের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের দারুণ উপায়।

৫. কোরআন পেন রিডার ব্যবহার করুন

কোরআন পেন রিডার একটি চমৎকার টুল, যা অক্ষর চেনা ও সঠিক উচ্চারণ শেখায়। পেনটি পাঠ্যের ওপর ছোঁয়ালে তা তিলাওয়াত শোনায়। এটি সুরা মুখস্থ করা বা আরবি অক্ষর শেখার জন্য উপযোগী। এতে একাধিক ভাষা ও বহু রকমের ভয়েসের অপশন রয়েছে।

আরও পড়ুনইমানদার করণীয় সম্পর্কে সুরা আসরের শিক্ষা০৫ মে ২০২৫

৬. তাফসির বক্তৃতা শুনুন

পছন্দের আলেমদের তাফসির বক্তৃতা শুনুন। তাঁরা কোরআনের অনুবাদ, আরবি পাঠের ভাষাগত সূক্ষ্মতা ও আয়াতের পটভূমি ব্যাখ্যা করেন। ইমাম কুরতুবি তাঁর তাফসিরে বলেন, ‘যারা তাফসির না জেনে কোরআন পড়ে, তারা রাতে রাজার চিঠি পাওয়া লোকের মতো, যাদের কাছে কোনো প্রদীপ নেই। তারা বিচলিত, কারণ তারা চিঠির বিষয়বস্তু জানে না। তাফসির জানা ব্যক্তি প্রদীপ নিয়ে আসা লোকের মতো, যে চিঠি পড়তে পারে।’ তাফসির শুনলে কোরআনের অলৌকিকতা পূর্ণাঙ্গভাবে উপলব্ধি করা যায়।

৭. কোরআনের পথে চলুন

কোরআন থেকে শেখা জ্ঞানের সর্বোত্তম প্রয়োগ হলো তা জীবনে বাস্তবায়ন। একটি আয়াত বা তার বেশি শিখুন এবং তা বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করুন। কোরআন আমাদের জন্য পথপ্রদর্শক। নবী (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম তারা, যারা কোরআন শেখে এবং শেখায়।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫,০২৭)

 সূত্র: আমালিয়াহ ডট কম

আরও পড়ুনসুরা আদিয়াত বলছে মানুষের স্বভাবের কথা০৩ মে ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ও ক রআন র দ র জন য ক রআন প আল ল হ অন ব দ ব যবহ

এছাড়াও পড়ুন:

পুলিশের আরও তিন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত

কর্মস্থল থেকে ‘পালানোর’ অভিযোগে এক উপমহাপরিদর্শকসহ (ডিআইজি) পুলিশের আরও তিন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে সরকার। আজ মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি স্বাক্ষরিত পৃথক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এর আগে ২৯ জুন এসপি, অতিরিক্ত এসপি ও এএসপি পদমর্যাদার ১৩ কর্মকর্তাকে একই অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

সাময়িক বরখাস্ত হওয়া তিন কর্মকর্তা হলেন— চট্টগ্রাম রেঞ্জের সাবেক ডিআইজি নূরে আল মিনা, ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক উপকমিশনার (ডিসি) মানস কুমার পোদ্দার এবং ডিসি রহমত উল্লাহ চৌধুরী।

ডিআইজি নুরে আলম সর্বশেষ কর্মরত ছিলেন রাজশাহীর সারদায় পুলিশ একাডেমিতে। তিনি গত ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে সেখানে অনুপস্থিত রয়েছেন। ডিবির সাবেক ডিসি মানস কুমার পোদ্দারকে সবশেষ যুক্ত করা হয় কুমিল্লার রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয়ে। সেখানে তিনি গত বছরের ১৮ অক্টোবর থেকে অনুপস্থিত। 

এদিকে ডিএমপির সাবেক ডিসি রহমত উল্লাহ চৌধুরীকে এসপি হিসেবে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশে বদলি করা হয়েছিল। কর্মস্থলে গত ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে অনুপস্থিত থাকায় তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ‘সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা অনুসারে, পলায়নের অভিযোগে অভিযুক্ত হওয়ায় তাদের সরকারি চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হল। তবে সাময়িক বরখাস্তকালীন সময়ে বিধি অনুযায়ী খোরপোষ ভাতা পাবেন এসব কর্মকর্তারা।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পুলিশের আরও তিন কর্মকর্তা সাময়িক বরখাস্ত
  • পুলিশের আরও তিন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত