অনুরাধা পাসওয়ান। যিনি ‘ডাকাত কনে’ নামে পরিচিত। ২৫ জনের সঙ্গে বিয়ের নামে প্রতারণা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। প্রতারণার মাধ্যমে তাঁদের কাছ থেকে লাখ লাখ রুপির গয়না ও নগদ অর্থ নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে।

প্রতিবার নতুন নাম, নতুন শহর ও নতুন পরিচয় নিয়ে পুরুষদের ভুয়া বিয়ের ফাঁদে ফেলতেন এই তরুণী। তিনি একজন আদর্শ স্ত্রী ও পুত্রবধূর অভিনয় করতেন। তারপর সুযোগ বুঝে গয়না ও টাকা নিয়ে সটকে পড়তেন।

শেষমেশ সাওয়াই মাধোপুর পুলিশের কৌশলের ফাঁদে ধরা পড়েন অনুরাধা। পুলিশ তাঁর সঙ্গে একটি ভুয়া বিয়ের নাটক সাজায়। সেই সূত্রেই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পাশের বাড়ির সুন্দরী গরিব কনে

অনুরাধা একা। গরিব ও অসহায়। তাঁর এক বেকার ভাই আছে। তিনি বিয়ে করতে চান, কিন্তু অর্থসংকটের কারণে জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু করতে পারেন না। ৩২ বছর বয়সী এই তরুণী নিজেকে এভাবে পাশের বাড়ির সুন্দরী গরিব কনে হিসেবে উপস্থাপন করেন।

কিন্তু বাস্তবে অনুরাধা একটি ভুয়া বিয়ে চক্রের প্রধান। যিনি প্রতারণার মাধ্যমে মানুষের বিশ্বাস ও অর্থ হাতিয়ে নেন। এই চক্রের সদস্যরা তাঁর ছবি ও জীবনবৃত্তান্ত হবু বরদের কাছে নিয়ে যান। তাঁদের কাছে অনুরাধাকে আদর্শ জীবনসঙ্গিনী হিসেবে তুলে ধরেন। ঘটক পরিচয়ে এই চক্রের একজন সদস্য প্রতিটি বিয়ের জন্য দুই লাখ টাকা দাবি করেন।

বিয়ে নিয়ে কথাবার্তা পাকাপাকি হওয়ার পর একটি সম্মতিপত্র তৈরি করা হয়। সে অনুযায়ী হবু দম্পতি মন্দিরে বা বাড়িতে রীতিনীতি মেনে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সারেন। আর সেখানেই শুরু হয় নাটক।

অনুরাধা পাসওয়ান বর ও শ্বশুরবাড়ির পরিবারের সামনে সহজ-সরল ও মায়াবতী কনের অভিনয় শুরু করেন। পরিবারের প্রত্যেক সদস্যের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলে তাঁদের আস্থা অর্জন করেন।

আস্থা গড়ে তোলার কয়েক দিনের মধ্যেই চূড়ান্ত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেন অনুরাধা। এ সময় খাবারে চেতনানাশক মিশিয়ে, গয়না, নগদ অর্থ ও অন্যান্য মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে পালিয়ে যান।

বিষ্ণু শর্মা এমনই একজন। যে ২৫ জন পুরুষ প্রতারিত হয়েছেন, তাঁর একজন বিষ্ণু বিয়ের জন্য ঋণ করেছিলেন।

গত ২০ এপ্রিল রাজস্থানের সাওয়াই মাধোপুর জেলার বাসিন্দা বিষ্ণু শর্মা বিয়ে করেন মধ্যপ্রদেশের অনুরাধা পাসওয়ানকে। হিন্দু রীতিনীতি মেনে বন্ধু ও পরিবারের উপস্থিতিতে এই বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়ের ব্যবস্থা করেছিলেন কথিত ঘটক পাপ্পু মীনা। বিষ্ণু তাঁকে বিয়ের জন্য দুই লাখ রুপিও দিয়েছিলেন।

কিন্তু বিয়ের দুই সপ্তাহের মধ্যেই অনুরাধা পাসওয়ান বরের বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। সঙ্গে নিয়ে যান সোয়া লাখ রুপির গয়না, নগদ ৩০ হাজার রুপি এবং ৩০ হাজার রুপির একটি মুঠোফোন।

বিষ্ণু শর্মা বলেন, ‘আমি ফেরি করে পণ্য বিক্রি করে জীবিকা চালাই। ঋণ নিয়ে বিয়ে করেছি। এমনকি মুঠোফোনটাও ধার করে এনেছিলাম, সেটাও সে নিয়ে গেছে। কখনো ভাবিনি, সে আমাকে এভাবে ঠকাবে।’

অনুরাধা যেদিন পালিয়ে যান, সেই রাতের কথা স্মরণ করে শর্মা বলেন, সেই রাতে তিনি কাজ থেকে দেরিতে ফিরেছিলেন। এরপর রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। ‘আমি সাধারণত বেশি ঘুমাই না, কিন্তু সেদিন শিশুর মতো গভীর ঘুমে ছিলাম, যেন কেউ আমাকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে দিয়েছিল,’ বলেন তিনি।

বিষ্ণু শর্মার মা এই ঘটনার পর তীব্র মানসিক আঘাত পেয়েছেন। এরপর শর্মার পরিবার থানায় একটি অভিযোগ করে।

রাজস্থান পুলিশের ‘পাল্টা চাল’

বিষ্ণু শর্মার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সাওয়াই মাধোপুর পুলিশ অনুরাধা পাসওয়ানের জন্য একটি ফাঁদ তৈরি করে। পুলিশের একজন কনস্টেবলকে বর সাজানো হয়। তিনি একজন ‘কাস্টমার’ হিসেবে চক্রের দালালের কাছে যান। দালাল তাঁকে বিভিন্ন নারীর ছবি দেখান।

পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘তদন্তে দেখা যায়, সব নথি ও বিয়ের চুক্তিপত্র জাল ছিল। আমাদের দল থেকে একজন কনস্টেবলকে বর সাজিয়ে ওই নারীকে বিয়ের ফাঁদে ফেলা হয়।’

এরপর অনুরাধা পাসওয়ানকে ভোপাল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর ব র অন র ধ র জন য প সওয

এছাড়াও পড়ুন:

হায়দরাবাদের তাণ্ডবে লক্ষ্ণৌর স্বপ্নভঙ্গ

ঘরের মাঠে জয়ই ছিল শেষ ভরসা। কিন্তু হায়দরাবাদের ব্যাটিং তাণ্ডবে ভেঙে চুরমার হয়ে গেল লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টসের প্লে-অফ স্বপ্ন। ২০৫ রানের বিশাল স্কোর করেও শেষরক্ষা হলো না তাদের, ১০ বল হাতে রেখে ৬ উইকেটে ম্যাচ শেষ করে মাঠ ছাড়ে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ।

লক্ষ্ণৌর ইনিংসটি ছিল যেন এক অদ্ভুত সমীকরণ। ৯ ব্যাটারের মধ্যে ছয় জনই পার হতে পারেননি দুই অঙ্কের ঘর। অথচ স্কোরবোর্ডে উঠে গেল ২০৫ রান! মূল কারিগর ছিলেন মিচেল মার্শ ও এইডেন মার্করাম। দুজনের ব্যাটে জমে ওঠে ১১৫ রানের বিধ্বংসী ওপেনিং জুটি। মার্শ ৩৯ বলে ৬৫ এবং মার্করাম ৩৮ বলে করেন ৬১ রান।

এরপর নিকোলাস পুরান ঝড়ো ৪৫ রানের ইনিংস খেলে দলকে এনে দেন দুইশর দোরগোড়ায়। ইনিংসের শেষ বলে আকাশ দীপের ছক্কায় পূর্ণ হয় ২০৫ রানের চূড়া।

আরো পড়ুন:

মরুর বুকে বিজয়ানন্দ

এশিয়া কাপ থেকে সরে দাঁড়ানোর বিষয়টিকে ‘গুজব’ বলল বিসিসিআই

জবাবে হায়দরাবাদ ইনিংসের শুরুতেই হারায় ওপেনার অথর্ব তাইদেকে। তবে এরপর যা হলো, তা যেন এক পেশাদার চিত্রনাট্য। অভিষেক শর্মা ও ইশান কিষাণ গড়েন ৮২ রানের দুর্দান্ত জুটি। মাত্র ২০ বলে ৫৯ রান করে ম্যাচের গতি পাল্টে দেন অভিষেক। বিশেষ করে রবি বিষ্ণইয়ের এক ওভারে টানা চার ছক্কায় আসে তার বিধ্বংসী ফিফটি।

ইশান কিষাণ আউট হলে হাল ধরেন দুই বিদেশি হেনরিখ ক্লাসেন ও কামিন্দু মেন্ডিস। চাপের মুহূর্তে লঙ্কান ব্যাটার মেন্ডিস ১৪তম ওভারের প্রথম তিন বলে মেরে দেন তিনটি চার। সেখান থেকেই হায়দরাবাদের রানের চাকা ঘুরতে শুরু করে দুরন্ত গতিতে।

জয়ের মাত্র তিন রান দূরে ক্লাসেন ৪৭ রানে আউট হলেও কাজ শেষ করে দেন নিতিশ রেড্ডি। ১৮.২ ওভারে জয়সূচক রান তুলে ২০৬ রানে পৌঁছে যায় হায়দরাবাদ।

এই জয়ে ১২ ম্যাচে ৯ পয়েন্ট নিয়ে অষ্টম স্থানে উঠে এলো হায়দরাবাদ। আর ১০ পয়েন্ট নিয়ে সপ্তম স্থানে থেকেই বিদায় নিতে হলো লক্ষ্ণৌকে। প্লে-অফের শেষ টিকিট এখন কেবল মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স ও দিল্লি ক্যাপিটালসের মধ্যে কার হাতে উঠবে—সে দিকেই তাকিয়ে ক্রিকেটভক্তরা।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চাকসু নীতিমালা প্রকাশ হবে বৃহস্পতিবার
  • অবৈধ আর্থিক লেনদেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ডেপুটি রেজিস্ট্রার সাময়িক বরখাস্ত
  • এবার এক দফা আন্দোলনে যাওয়ার ইঙ্গিত কুয়েট শিক্ষকদের
  • হান্নান মাসউদের জিম্মায় ছাড়া পেলেন তিন সমন্বয়ক
  • ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার নোবেল, যা বললেন প্রাক্তন স্ত্রী
  • অগ্নিগলা পাখির খোঁজে
  • অভিষেককে মাঠ ছাড়তে বলে ১ ম্যাচ নিষিদ্ধ লক্ষ্ণৌর স্পিনার
  • অভিষেককে মাঠ ছাড়তে বলে ১ ম্যাচ নিষিদ্ধ লখনৌর স্পিনার
  • হায়দরাবাদের তাণ্ডবে লক্ষ্ণৌর স্বপ্নভঙ্গ