সেই নারীকে স্ত্রী বলে দাবি নোবেলের, আদালত বললেন কাবিননামা এনেছেন?
Published: 20th, May 2025 GMT
গায়ক মাঈনুল আহসান নোবেল আদালতের কাছে দাবি করেছেন, যে নারী ধর্ষণের অভিযোগ এনেছেন, তিনি তাঁর স্ত্রী। তিনি ধর্ষণ করেননি।
ওই নারীকে স্ত্রী হিসেবে দাবি করলেও আদালতে কাবিননামা জমা দিতে পারেননি নোবেলের আইনজীবী জসীম উদ্দিন।
ওই নারীকে সাত মাস ধরে একটি বাসায় আটকে রেখে ধর্ষণ ও নির্যাতনের অভিযোগ আনা হয়েছে নোবেলের বিরুদ্ধে। নোবেলকে গ্রেপ্তারের পর আজ বিকেলে আদালতে হাজির করা হয়। আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডেমরা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো.
ডেমরা থানার পুলিশ আদালতকে লিখিতভাবে জানিয়েছে, সাত বছর আগ (২০১৮) ফেসবুকে নোবেলের সঙ্গে ওই নারীর পরিচয় হয়। তিনি মোহাম্মদপুরের একটি ভাড়া বাসায় থেকে রাজধানীর একটি কলেজে স্নাতক (সম্মান) তৃতীয় বর্ষে পড়তেন। তাঁদের মধ্যে কথাবার্তা হতো। গত বছরের ১২ নভেম্বর ডেমরায় নোবেলের স্টুডিও দেখানোর জন্য ওই নারীকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। রাত আটটার দিকে তিনি (নারী) বাসা থেকে বেরিয়ে যেতে চাইলে তাঁর মুঠোফোন কেড়ে নেন নোবেল। পরে মুঠোফোনটি ভেঙে ফেলেন। এরপর তাঁকে ধর্ষণ করেন এবং ধর্ষণের সেই ভিডিও ধারণ করেন নোবেল। পরে ভয় দেখিয়ে সাত মাস ধরে ওই বাসায় তাঁকে আটকে রাখা হয়।
পুলিশ আদালতকে আরও জানায়, ওই নারীকে নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর তাঁর (নারী) বাবা-মা ঢাকায় আসেন। পরে ওই নারীকে নোবেলের বাসা থেকে উদ্ধার করা হয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মুরাদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ভুক্তভোগী নারী এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান–স্টপ ক্রাইসিস (ওসিসি) সেন্টারে ভর্তি আছেন।
নোবেল কাঠগড়ায়বেলা তিনটার দিকে আদালতের কাঠগড়ায় নেওয়া হয় নোবেলকে। কাঠগড়ায় দাঁড়ানো নোবেলের ডান হাতে ছিল হাতকড়া। পরনে সাদা রঙের টি-শার্ট আর কালো রঙের প্যান্ট। পায়ে প্লাস্টিকের স্যান্ডেল। তাঁকে বিমর্ষ দেখাচ্ছিল। কাঠগড়ার পাশেই ছিলেন ১০ জন পুলিশ সদস্য।
বেলা তিনটার পর কিছুক্ষণ পর এজলাসে আসেন বিচারক।
রাষ্ট্রপক্ষ থেকে একজন পুলিশ কর্মকর্তা মাঈনুল আহসান নোবেলের নাম ধরে ডাকেন।
তখন নোবেল হাত উঁচু করেন।
ওই পুলিশ কর্মকর্তা আদালতের উদ্দেশে বলেন, ‘মাননীয় আদালত, নোবেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও মারধরের অভিযোগে মামলা হয়েছে।’
তখন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী আদালতকে বলেন, ‘কণ্ঠশিল্পী নোবেলের বিরুদ্ধে একজন ভুক্তভোগী ধর্ষণের মামলা করেছেন। ওই ভুক্তভোগী নারীর সঙ্গে নোবেলের পরিচয় হয়েছিল ফেসবুকে। পরে ওই নারীকে গত বছরের ২৪ নভেম্বর ডেমরা একটি বাসায় ডেকে নেন নোবেল। পরে ওই নারীকে তিনি ধর্ষণ করেন।’
আরও পড়ুন৭ মাস ধরে বাসায় আটকে ধর্ষণের অভিযোগ নোবেলের বিরুদ্ধে, ৯৯৯ নম্বরে কল পেয়ে নারীকে উদ্ধার: পুলিশ৮ ঘণ্টা আগেভুক্তভোগী নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ অস্বীকার করেন নোবেলের আইনজীবী মো. জসীম উদ্দিন। তিনি আদালতকে বলেন, ‘আমার মক্কেল নোবেল একজন জনপ্রিয় শিল্পী। আমার মক্কেলের বিরুদ্ধে যিনি মামলা করেছেন, তিনি নোবেলের স্ত্রী। চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা তিনি।’
নোবেলের আইনজীবীর কাছ থেকে এই কথা শোনার পর আদালত ওই আইনজীবীর কাছে জানতে চান, আপনারা যে বলছেন, মামলার বাদী নোবেলের স্ত্রী। কিন্তু এর প্রমাণ কী। কাবিননামা এনেছেন?
এ সময় পিপি ওমর ফারুক ফারুকী আদালতকে বলেন, মামলার বাদী যদি নোবেলের স্ত্রী হন, তাহলে কাবিননামা কোথায়? কাবিননামাই তো বিয়ের একমাত্র প্রমাণ। কাবিননামা জমা না দিয়ে মামলার বাদীকে স্ত্রী দাবি করা ঠিক নয়। মূলত নোবেল ওই নারীকে ব্ল্যাকমেল করে দিনের পর দিন ধর্ষণ করেছেন।
আরও পড়ুনধর্ষণের ভিডিও মুঠোফোনে ধারণ, নোবেলের বিরুদ্ধে আরও যেসব অভিযোগ৩ ঘণ্টা আগেতখন আইনজীবী জসীমউদ্দীন আদালতকে বলেন, মাননীয় আদালত, নোবেলের সঙ্গে তাঁর স্ত্রীর পারিবারিক মনোমালিন্য হয়েছিল। পরে পুলিশ তাঁকে ডাকলে নিজেই তিনি থানায় যান। থানা-পুলিশ নোবেলকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে চালান দিয়েছে। যে কারণে বিয়ের কাবিননামাসহ অন্যান্য কাগজপত্র তাৎক্ষণিকভাবে জোগাড় করতে পারেননি।
গায়ক মাঈনুল আহসান নোবেলকে হাজতখানায় নেওয়া হচ্ছে। ঢাকা, ২০ মেউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কর মকর ত ওই ন র ক ক ব নন ম আইনজ ব ন ব লক কর ছ ন তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
বাগেরহাটে ৪ আসন বহালের দাবিতে হাইকোর্টে রিট
বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন বহাল রাখতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং একটি আসন কমিয়ে তিনটি আসন করার নির্বাচন কমিশনের গেজেট কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্টদের আগামী ১০ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
মানিকগঞ্জে কৃষিজমির মাটি কাটার বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের
ডাকসু নির্বাচন স্থগিত চেয়ে করা ছাত্রলীগ নেতার রিট বাতিল
বাগেরহাট প্রেস ক্লাব ও অন্যান্যদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার শেখ মুহাম্মদ জাকির হোসেন রিট পিটিশন দাখিল করেন। এছাড়া চিতলমারী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বাগেরহাট ১ আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী মুজিবর রহমান শামীমের পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ আক্তার রসুল একই বিষয়ে পৃথক রিট পিটিশন করেন।
সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও বাগেরহাট জেলা বিএনপির নেতা ব্যারিস্টার শেখ মুহাম্মদ জাকির হোসেন বলেন, “আমরা রিট পিটিশন করেছি। আদালত আমাদের কথা শুনেছেন এবং ১০ দিনের রুল জারি করেছেন। আশা করি, আদালতে ন্যায়বিচার পাব এবং বাগেরহাটের চারটি আসন বহাল থাকবে।”
গত ৩০ জুলাই নির্বাচন কমিশন বাগেরহাটের চারটি আসনের মধ্যে একটি আসন কমিয়ে তিনটি করার প্রস্তাব দেয়। এরপর থেকে বাগেরহাটের বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠন আন্দোলন শুরু করে। চারটি আসন বহালের দাবিতে নির্বাচন কমিশনের শুনানিতেও অংশ নেয় তারা।
তবে ৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশন শুধু সীমানা পরিবর্তন করে তিনটি আসন রেখে চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করে।
চূড়ান্ত গেজেট অনুযায়ী বাগেরহাট-১ (সদর-চিতলমারী-মোল্লাহাট), বাগেরহাট-২ (ফকিরহাট-রামপাল-মোংলা) ও বাগেরহাট-৩ (কচুয়া-মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) নির্ধারণ করা হয়। অথচ দীর্ঘদিন ধরে বাগেরহাট-১ (চিতলমারী-মোল্লাহাট-ফকিরহাট), বাগেরহাট-২ (সদর-কচুয়া), বাগেরহাট-৩ (রামপাল-মোংলা) এবং বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।
ঢাকা/শহিদুল/বকুল