প্রতারিত ফারুকের নিঃসঙ্গ জীবন, ঘরে পড়ে ছিল মৃতদেহ
Published: 21st, May 2025 GMT
কয়েক বছর আগে ইতালি যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার রতনপুর ইউনিয়নের পীরগাজন গ্রামের ফারুক হোসেন (৩৫)। প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়ে টাকাপয়সা হারিয়ে সর্বস্বান্ত হয়ে একাকী জীবন বেছে নেন। বাড়ির পাশে একটি ঘর বানিয়ে একা একা থাকতেন। স্বজনদের কারও সঙ্গে মিশতেন না।
গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর নির্জন ঘর থেকে ফারুকের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি পীরগাজন গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আবদুল আজিজের ছেলে। পুলিশ ও স্বজনদের ধারণা, তিন থেকে চার দিন আগে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
নিহত ফারুকের ভগ্নিপতি ফজলুর রহমান জানান, তাঁর শ্যালক ফারুক হোসেন বছর পাঁচেক আগে ইতালিতে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়ে সর্বস্বান্ত হয়ে যান। শান্ত স্বভাবের সদালাপী ও হাস্যোজ্জ্বল ফারুক হোসেন ধীরে ধীরে বাক্রুদ্ধ হয়ে পড়েন। পরিবার-পরিজন কিংবা কোলাহল ছেড়ে নির্জনতাকে বেছে নেন। স্বাভাবিক জীবন ছেড়ে বসতভিটার পাশে ঘর বানিয়ে প্রায় পাঁচ বছর ধরে একাকী বসবাস করে আসছিলেন। কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতেন না। কেউ তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করলে বিরক্ত হতেন। নিজেই রান্না করে খেতেন। ঘর থেকে বের হতেন না।
ফজলুর রহমান বলেন, গতকাল দুপুরে ফারুকের ঘর থেকে পচা গন্ধ পেয়ে প্রতিবেশীরা সেখানে গিয়ে ঘরের মেঝেতে তাঁর অর্ধগলিত মরদেহ দেখে পরিবারকে জানান। তিনি বলেন, সাত থেকে আট দিন পরিবারের অন্য কারও সঙ্গে ফারুকের দেখাসাক্ষাৎ হয়নি। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সন্ধ্যার পর তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে।
কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান বলেন, সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির পর মরদেহ উদ্ধার করে গতকাল রাতে থানায় রাখা হয়। আজ বুধবার সকালে তাঁর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তাঁদের ধারণা, তিন থেকে চার দিন আগে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। তাঁর স্বজনেরাও একই ধরনের ধারণা করছেন। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: মরদ হ
এছাড়াও পড়ুন:
কালো গ্লাসের গাড়িতে কারাগার থেকে বের হন নুসরাত ফারিয়া, কারও সঙ্গে কথা বলেননি
হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তার অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়া জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগার থেকে তিনি বেরিয়ে আসেন।
কারাগার থেকে বের হয়ে নুসরাত ফারিয়া স্বজনদের সঙ্গে প্রাইভেট কারে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন। কালো গ্লাসের ওই গাড়িতে করে তিনি কারাগারের ফটক দিয়ে বের হন। এ সময় তিনি কারও সঙ্গে কথা বলেননি।
কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে সিনিয়র জেল সুপার কাওয়ালীন নাহার বলেন, গতকাল সোমবার বেলা আড়াইটার দিকে নুসরাত ফারিয়াকে ঢাকার আদালত থেকে কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছিল। আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তাঁর জামিনের কাগজ কারাগারে পৌঁছায়। যাচাই-বাছাই শেষে বেলা তিনটার দিকে তাঁকে মুক্তি দিয়ে স্বজনদের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এর আগে আজ বেলা দুইটার দিকে নুসরাত ফারিয়ার স্বজনেরা কাশিমপুর কারাগারে প্রবেশ করেন। তাঁদের সঙ্গে দুটি প্রাইভেট কার ও একটি জিপ গাড়ি ছিল। কারাগারে প্রবেশের সময় নুসরাত ফারিয়ার চাচাতো বোন লামিয়া আক্তার বলেন, ‘আদালত ও বিচারব্যবস্থা নিয়ে কোনো কথা বলতে চাই না। তিনি (নুসরাত) কি হত্যা করেছেন? তিনি কি কোনো অপরাধ করেছেন? বিনা দোষে তাহলে কেন এক দিন জেল খাটবেন? এক দিন জেল খাটা কী কষ্টের, সেটা কি আপনারা বোঝেন?’
আরও পড়ুনকাশিমপুর কারাগার থেকে নুসরাত ফারিয়া জামিনে মুক্ত১ ঘণ্টা আগেগত রোববার সকালে থাইল্যান্ড যাওয়ার সময় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট থেকে নুসরাতকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাঁকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয়ে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। মামলার কাগজপত্রের তথ্য বলছে, ছাত্র–জনতার গণ-অভ্যুত্থান চলাকালে গত ১৯ জুলাই রাজধানীর ভাটারা এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন এনামুল হক (৩৫)। ৩ মে তিনি ঢাকার সিএমএম আদালতে ২৮৩ জনের বিরুদ্ধে নালিশি মামলা করেন। এর মধ্যে নুসরাত ফারিয়াসহ ১৭ জন অভিনেতা-অভিনেত্রীকে আসামি করা হয়। আদালতের নির্দেশে মামলাটি ৩ মে এজাহার হিসেবে রেকর্ড হয়। মামলা করার দুই সপ্তাহ পর গ্রেপ্তার করা হয় নুসরাতকে। আজ সকালে হত্যাচেষ্টা মামলায় তাঁর জামিন মঞ্জুর করেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত।