অধ্যাদেশে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনা হবে: অর্থ মন্ত্রণালয়
Published: 22nd, May 2025 GMT
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) শুল্ক ও কর ক্যাডারদের স্বার্থ অক্ষুণ্ন রেখে রাজস্ব নীতি এবং বাস্তবায়ন বিভাগের প্রশাসনিক কাঠামো কীভাবে করা প্রণীত হবে তা এনবিআর ও গুরুত্বপূর্ণ অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে অধ্যাদেশে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনা হবে।
বৃহস্পতিবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, মঙ্গলবারের বৈঠকে অর্থ উপদেষ্টা বলেছেন, রাজস্ব নীতি সংস্কারসংক্রান্ত পরামর্শক কমিটিসহ অংশীজনের সঙ্গে বিশদ আলোচনা করে অধ্যাদেশে প্রয়োজনীয় সংশোধন আনার পর সেটি বাস্তবায়ন করা হবে। এমন ফলপ্রসূ আলোচনার পর ঐক্য পরিষদ পুনরায় অসহযোগ আন্দোলনের যে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে তার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অধ্যাদেশটি জারি করার পর তা বাস্তবায়নের জন্য অনেকগুলো কাজ যেমন, দুইটি বিভাগের নতুন করে সাংগঠনিক কাঠামো প্রণয়ন, পদ সৃজনের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যয় ব্যবস্থাপনা অনুবিভাগ, বাস্তবায়ন অনুবিভাগ, সচিব কমিটির চূড়ান্ত অনুমোদন লাগবে। তাছাড়া, দুইটি নতুন বিভাগের জন্য বিদ্যমান আইনগুলোর বিধি ও প্রবিধানেও পরিবর্তন আনতে হবে। এসব কাজ বেশ সময়সাপেক্ষ। এই কাজগুলো সম্পাদন না করে অধ্যাদেশ বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। তাই এনবিআর এখনি বিলুপ্ত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।
এতে আরও বলা হয়, বৃহস্পতিবার এনবিআরের সাবেক দুই সদস্যের মধ্যস্থতায় দিনব্যাপী দফায় দফায় আলোচনার এক পর্যায়ে ঐক্য পরিষদের পাঠানো সমঝোতা প্রস্তাব সম্পূর্ণ মেনে নেওয়ার পরও শেষ মুহূর্তে তারা কর্মসূচি প্রত্যাহার করে কাজে যোগ দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
তাই এই সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আবারও জানানো যাচ্ছে, অধ্যাদেশটি প্রয়োজনীয় সংশোধন করে বাস্তবায়ন করার কাজটি অনেক সময়সাপেক্ষ। অতএব এনবিআরের সব কার্যক্রম আগের মতো অব্যাহত থাকবে এবং কাস্টমস ও আয়কর ক্যাডারের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিদ্যমান ব্যবস্থায় সব কার্যক্রম সম্পাদন করবেন। বিসিএস (কর) ও বিসিএস (শুল্ক ও আবগারি) ক্যাডারের স্বার্থ অক্ষুণ্ন রেখে পৃথকীকরণের প্রশাসনিক কাঠামো কীভাবে প্রণীত হবে তা এনবিআর ও গুরুত্বপূর্ণ অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে অধ্যাদেশে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনা হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, কাস্টমস ও কর ক্যাডারের সদস্যদের কোনো পদ-পদবি কমানোর কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই, বরং সংস্কার কাজ সম্পাদন হলে তাদের পদ সংখ্যা বাড়বে এবং সচিব পদে নিয়োগসহ পদোন্নতির সুযোগও বাড়বে।
এসব আশ্বাস দিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, রাষ্ট্রের বৃহত্তর স্বার্থে অর্থবছরের শেষ সময়ে জাতীয় বাজেট কার্যক্রম এবং রাজস্ব আহরণে নিয়োজিত এনবিআরের সব স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অফিস সময়ে দপ্তরে উপস্থিত থেকে স্ব স্ব দায়িত্ব নিষ্ঠার সঙ্গে পালনের মাধ্যমে রাজস্ব আদায় কার্যক্রম চালু রাখা এবং করদাতাদের কাঙ্ক্ষিত সেবা দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হলো।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
জাতীয় নাগরিক পার্টির গঠনতন্ত্র অনুমোদন
প্রতিষ্ঠার চার মাসের মাথায় গঠনতন্ত্র তৈরি করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। শুক্রবার রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের ষষ্ঠ সাধারণ সভায় গঠনতন্ত্র অনুমোদন করা হয়। পরে এর বিভিন্ন দিক সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরেন এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন।
আখতার হোসেন বলেন, কিছু সংশোধনীসহ সভায় এনসিপির ‘খসড়া গঠনতন্ত্র’ অনুমোদিত হয়েছে। আগামী কাউন্সিলের আগে প্রয়োজন সাপেক্ষে বর্তমান প্রতিষ্ঠাকালীন আহ্বায়ক কমিটি এতে সংশোধনী আনতে পারবে।
গঠনতন্ত্রের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে আখতার বলেন, এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সারা দেশের কাউন্সিলরদের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হবেন। একজন সদস্য জীবনে সর্বোচ্চ দুইবার সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন এবং সর্বোচ্চ দুইবার সভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দলের রাজনৈতিক পরিষদের কাছে দায়বদ্ধ থাকবেন।
এনসিপির রাজনৈতিক পরিষদ ন্যাশনাল কাউন্সিলের (জাতীয় পরিষদ) সদস্যদের ভোটে নির্বাচিত হবে। ‘রাজনৈতিক পরিষদ’ সর্বনিম্ন ১১ জন থেকে সর্বোচ্চ ১৫ জন সদস্যের হবে। ১১ জন সদস্য ন্যাশনাল কাউন্সিলের সদস্যদের ভোটে নির্বাচিত হবেন। তার মধ্যে ন্যূনতম তিনজন নারী সদস্য থাকতে হবে। পদাধিকারবলে দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক রাজনৈতিক পরিষদের অন্তর্ভুক্ত হবেন। এই পরিষদের বাকি দুজন সদস্য সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দ্বারা মনোনীত হবেন।
এনসিপির একটি ‘ন্যাশনাল কাউন্সিল’ থাকবে। এই ফোরাম ‘রাজনৈতিক পরিষদ’ নির্বাচন, সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন এবং জরুরি সময়ে কিছু কিছু বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার দায়িত্ব পালন করবে। কেন্দ্রীয় কমিটি, অঙ্গসংগঠনের নির্বাহী কমিটি, জেলা পদমর্যাদার কমিটি থেকে পাঁচজন এবং উপজেলা পদমর্যাদার কমিটি থেকে দুজন সদস্যের সমন্বয়ে ন্যাশনাল কাউন্সিল গঠিত হবে।
এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটি দলের সভাপতি, সহসভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক, সম্পাদকমণ্ডলী, অন্যান্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক সাধারণ সদস্য এবং ক্ষেত্রবিশেষে জেলা সভাপতিদের সমন্বয়ে গঠিত হবে। কেন্দ্রীয় কমিটির মেয়াদ হবে তিন বছর। মেয়াদের শেষ ৯০ দিনের মধ্যে পরবর্তী কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে।
এনসিপির এই গঠনতন্ত্র দলীয় ফোরামে অনুমোদিত হলো নির্বাচন কমিশনে (ইসি) নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের আবেদন সময়সীমা শেষ হওয়া সামনে রেখে। আগামী রোববার এই সময়সীমা শেষ হচ্ছে।
এনসিপির নিবন্ধনের জন্য নির্বাচন কমিশনে আবেদন দাখিলের বিষয়ে সভায় সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয় বলে জানান আখতার হোসেন। তিনি বলেন, এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সামগ্রিক যোগাযোগের জন্য মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ ও যুগ্ম সদস্যসচিব জহিরুল ইসলামকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন ও আরিফুল ইসলাম আদীব, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ, যুগ্ম সদস্যসচিব মুশফিক উস সালেহীন, যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দিন সিফাত প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।