দিনাজপুরে অভিযান চালিয়ে আওয়ামী লীগের ৩৫ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার বিকেলে তাদের আদালতে পাঠানো হয়। এর আগে শুক্রবার রাতে জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। 

পুলিশ জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দিনাজপুরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালানো হয়। এ সময় নাশকতার পরিকল্পনা, শিক্ষার্থী হত্যাসহ বিভিন্ন মামলায় ৩৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে শহরের লালবাগ এলাকার মৃত মহসিন আলীর ছেলে পৌর আওয়ামী লীগের সদস্য মুনতাসির মাহমুদ মিলন (৪৮), একই এলাকার মাহফুজুর রহমানের ছেলে পৌর আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন রাফি (৩৮), রামনগর এলাকার মৃত শামসুল ইসলামের ছেলে পৌর আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোকছেদুর রহমান শাহজাদা (৪৬), একই এলাকার মৃত মোস্তফা হোসেনের ছেলে ১নং ওয়ার্ডের সহসভাপতি আনোয়ার হোসেন (৫০), ঘাসিপাড়া এলাকার মৃত সামিজুল ইসলামের ছেলে ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য রিয়াজুল ইসলাম (৫৪), চেহেলগাজী ইউনিয়নের রফিক হাসানের ছেলে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য রকি হাসান (২১), একই ইউনিয়নের মহাদেবপুরের মৃত মহিউদ্দিনের ছেলে ২নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসম্পাদক সাদিকুল ইসলাম, একই ইউনিয়নের সাদিপুরের আছির উদ্দিনের ছেলে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নজরুল ইসলাম (৫৩), সুইহারী এলাকার মৃত মোবারক আলীর ছেলে ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য আজগার আলী (৫৫), শেখপুরা ইউনিয়নের বিশ্বনাথপুরের ইদ্রিস আলীর ছেলে ২নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য শাহিনুর ইসলাম (৪০),
ঘোড়াঘাট উপজেলার ঘোড়াঘাট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চোপাগাড়ী গ্রামের ইউনুস আলী মন্ডলের ছেলে আনারুল ইসলাম (৫০) ও একই ইউনিয়নের করনিজ দীঘিপাড়া গ্রামের মৃত ছবির আলী প্রধানের ছেলে ৮নং ওয়ার্ডের সাধারন সম্পাদক দিলজার রহমান (৪৮), বিরামপুর উপজেলার ১নং মুকুন্দপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সাজিদুর রহমান, সহসম্পাদক জাকিরুল ইসলাম, ৭নং পলিপ্রয়োগপুর ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল ইসলাম, ফুলবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক উপদেষ্টা ও দৌলতপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজিজ মন্ডল, ৫নং খয়েরবাড়ী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক গোষ্ট মোহন চৌধুরী, নবাবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আব্দুস ছগির, নবাবগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের প্রচার সম্পাদক কামরুজ্জামান অন্যতম। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আওয় ম ল গ ল গ র সদস য এল ক র ম ত র ল ইসল ম র রহম ন উপজ ল র ইউন

এছাড়াও পড়ুন:

ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের

ভোলা সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাইফুল্লাহ আরিফকে (৩০) হত্যা করা হয়েছে বলে তাঁর পরিবার অভিযোগ করেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তাঁর বাবা বশির উদ্দিন (মাস্টার) এই অভিযোগ করেন।

এ সময় বশির উদ্দিন বলেন, পুলিশ দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ার কোনো সুযোগ নেই; সেখানে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক।

এর আগে গত শনিবার পুলিশ সুপার শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, প্রাথমিক তদন্তের তথ্য অনুযায়ী অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে সাইফুল্লাহ আরিফ মারা গেছেন।

সাইফুল্লাহ আরিফ ভোলা পৌরসভার কালীবাড়ি রোডে নবী মসজিদ গলি এলাকার বশির উদ্দিনের ছেলে। গত ৩১ আগস্ট ভোরে নিজ বাড়ির সামনে থেকে সাইফুল্লাহ আরিফের লাশ উদ্ধার করা হয়।

আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে বশির উদ্দিন বলেন, ‘আমার ছেলে দুর্ঘটনায় নয়, তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। এর কিছু প্রমাণ আছে। আরিফের শরীরে একাধিক কাটা ও ভাঙা জখম ছিল, এমনকি হাতের রগ কাটা ছিল। পুলিশের দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যুর সুযোগ নেই, কারণ, ছাদে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশ সুপার আমার ছেলেকে নেশাগ্রস্ত আখ্যা দিলেও তাঁর কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ছাড়া পুলিশ কীভাবে এমন কথা বলতে পারে। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

বশির উদ্দিন আরও বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফ কোনো ধরনের মাদকের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। সে ছাত্রলীগের সহসভাপতি হলেও কখনো ক্ষমতার অপব্যবহার করেনি। হত্যাকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ সত্য গোপন করছে। সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করতে মামলাটি সিআইডি বা পিবিআইয়ের কাছে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বশির উদ্দিন বলেন, তাঁর ছেলের সঙ্গে অনেকের বিরোধ ছিল। তবে জমিজমার বিরোধ ও মাদক ব্যবসার বিরোধ নিয়ে তাঁর ছেলে খুন হয়নি। এগুলোর সঙ্গে সে জড়িত ছিল না।

শনিবার পুলিশ শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফের মৃত্যুর রহস্য উদ্‌ঘাটনে প্রাথমিক তদন্ত শেষে জানা যায়, তিনি অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মারা গেছেন। ৩০ আগস্ট দিবাগত রাত অনুমান ১২টা ১৫ মিনিটে রাতের খাবার শেষে সাইফুল্লাহসহ পরিবারের সবাই নিজ নিজ ঘরে ঘুমাতে যান। ভোর ৫টা ১০ মিনিটে ফজরের নামাজের জন্য বের হওয়ার সময় তাঁর বাবা বশির উদ্দীন (৭০) বাড়ির সামনে গেটের পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় ছেলের মরদেহ দেখতে পান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। সুরতহালে দেখা যায়, আরিফের মাথা ও হাতে গুরুতর আঘাত ছিল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, আরিফ দীর্ঘদিন ধরে নেশায় আসক্ত ছিলেন এবং হতাশাগ্রস্ত অবস্থায় প্রায়ই ছাদে যেতেন। ঘটনার দিন রাতেও তিনি ছাদে ওঠেন এবং অসতর্কতাবশত রেলিংবিহীন অংশ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হয়ে মারা যান।

পরিবারের অভিযোগ সম্পর্কে আজ দুপুরে পুলিশ সুপার শরীফুল হক মুঠোফোনে বলেন, ‘ওই ঘটনায় তদন্ত চলমান। সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক তদন্তের কথা জানানো হয়েছে। তদন্তে তথ্য সংযোগ-বিয়োগের সুযোগ রয়েছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঢাকায় আওয়ামী লীগ ও দলটির অঙ্গসংগঠনের ১২ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার
  • ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের