ইনসাফভিত্তিক মানবিক দেশ প্রতিষ্ঠার এখনই সময়: তারেক রহমান
Published: 1st, July 2025 GMT
বিএনপি জনগণের রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে চায় জানিয়ে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, একটি সুন্দর বাংলাদেশ বিনির্মাণের সুযোগ তৈরি হয়েছে। জনগণের সরাসরি ভোটে জবাবদিহিমূলক ইনসাফভিত্তিক, গণতান্ত্রিক ও মানবিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার এখনই সময়।
আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী (বিসিএফসিসি) সম্মেলন কেন্দ্রে জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তির সভায় দলীয় কর্মসূচির উদ্বোধক হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন।
তারেক রহমান বলেন, ‘২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট পলায়নের পরই আমার প্রথম বক্তব্যে বলেছিলাম- তার মধ্যে ছিল- গণঅভ্যুত্থানে যারা তাদের সন্তান হারিয়েছেন সেই মায়েদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই। অনেকেই প্রিয়তম স্বামী ও প্রিয়তম ভাইকে হারিয়েছেন। অনেক ত্যাগের বিনিময়ে ৫ আগস্ট আরেকটি বিজয় দেখেছে বাংলাদেশ। একজন শহীদ শুধু আপনাদের স্বজন নয়, তারা দেশের ও মুক্তিকামী জনতার গৌরব। তাদেরকে জানাই শ্রদ্ধা।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের মুক্তিযোদ্ধাদের যেমন মানুষ ভোলেনি তেমনই চব্বিশের যোদ্ধাদেরও জাতি ভুলবে না। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে বিভিন্ন স্থাপনা শহীদদের নামে নামকরণের চিন্তা আমাদের আছে। দেশ ও জনগণের স্বার্থে যারা আত্মত্যাগ করেছেন তাদের জন্য কিছু ভাবনা তুলে ধরছি। আমরা দেশকে একটি চিরস্থায়ী ভিত্তির ওপর দাঁড় করাতে চাই, যেখানে জনগণের হাতে থাকবে সকল ক্ষমতা। তবেই রাজনৈতিক দুর্নীতি ও দুর্বৃত্তায়ন কমে আসবে বলে বিশ্বাস করি।’
চব্বিশের জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের প্রথম বর্ষপূর্তিতে ৩৬ দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি পালন শুরু করেছে বিএনপি। মঙ্গলবার সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে ‘গণ-অভ্যুত্থান ২০২৪: জাতীয় ঐক্য ও গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা’ শীর্ষক আলোচনাসভা এবং শহীদ পরিবারের সম্মানে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিএনপি। অনুষ্ঠানে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন। এছাড়াও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চুয়ালি বক্তব্যের মাধ্যমে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।
অনুষ্ঠানে শহীদ পরিবার, আহত নেতাকর্মী ও সমর্থকদের পাশাপাশি ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত ৬৩টি রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতা, বুদ্ধিজীবী, সিনিয়র সাংবাদিকসহ নানা শ্রেণিপেশার মানুষও উপস্থিত ছিলেন। শহীদ পরিবারকে ক্রেস্ট ও সম্মাননা দেওয়া হয়। অভ্যুত্থানের একটি ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।
তারেক রহমান বলেন, ‘দেড় দশকের আন্দোলনে গুম-খুনের শিকার হয়েছেন বহু মানুষ। অপহরণের তালিকা অনেক দীর্ঘ। শুধু জুলাই আন্দোলনে বিএনপির ৪২২ জনসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার অন্তত দেড় মানুষ শহীদ হয়েছেন। ৩০ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। এক হাজারের বেশি পঙ্গু হয়েছেন। শিশুরও শহীদ হওয়া থেকে বাদ যায়নি। বাংলাদেশের ইতিহাসের প্রতিটি অধ্যায় এভাবে শহীদ আবু সাঈদ, ওয়াসিম ও মুগ্ধর মতো অনেকেই জীবন দিয়েছেন। মানুষের প্রশ্ন যে এভাবেই কি মানুষ জীবন দিতে থাকবে। তারা তো কানাডায় বেগমপাড়া করার দাবিতে আন্দোলন করেনি, জীবন দেয়নি।’
তিনি বলেন, ‘একটি দেশের জন্য ৫৪ বছর কম সময় নয়। এই সময়ে মানুষের ত্যাগ আমরা ভুলে যেতে চাই না। বরং যারা দেশ ও জনগণের কল্যাণে রাজনীতি করি তাদের অঙ্গীকার হলো- নিরাপদ কর্মপরিবেশ ও সুশৃঙ্খলর রাজনীতি, ওয়াদা পূরণের রাজনীতি।’
এ সময় ভবিষ্যতে আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে সমন্বয় রেখে দেশ গঠনের কিছু পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন তারেক রহমান। রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা স্মরণ করিয়ে তিনি বলেন, ‘দেশ পরিচালনার সুযোগ পেলে আমরা জাতীয় সরকার গঠন করে কাজ করব। জাতীয় স্বার্থে আমরা সবাই এক। জাতীয় ঐক্যে সব দলের এক হওয়া জরুরি নয়। তাঁবেদার অপশক্তি যাতে মাথাচড়া দিতে না পারে সেদিকে জাতীয় ঐক্য অটুট রয়েছে এবং থাকবে ইনশাআল্লাহ।’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও ‘জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান, শোক ও বিজয়ের বর্ষপূর্তি পালন কমিটির আহ্বায়ক রুহুল কবির রিজভীর সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য দেন এই কমিটির সদস্যসচিব ও বিএনপির গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ড.
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, কেন্দ্রীয় নেতা নিতাই রায় চৌধুরী, আমানউল্লাহ আমান, আব্দুস সালাম, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, ইসমাইল জবিহউল্লাহ, এম এ মালিক, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, খায়রুল কবির খোকন, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, আব্দুস সালাম আজাদ, ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন আহমেদ অসীম, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, মীর সরফত আলী সপু, নজরুল ইসলাম আজাদ, মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, ব্যারিস্টার মীর হেলাল, মিফতাহ সিদ্দিকী, নিলুফার চৌধুরী মনি, ড. মাহদী আমিনসহ সারাদেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আহত ব্যক্তি, শহিদ পরিবার ও এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। ১২ দলীয় জোটের সৈয়দ এহসানুল হুদা, শাহাদাত হোসেন সেলিম, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহিউদ্দিন ইকরাম, পেশাজীবী ও বিশিষ্টজনদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, যুগান্তর সম্পাদক কবি আবদুল হাই শিকদার, সংগ্রাম সম্পাদক আযম মীর শাহীদুল আহসান, বাসস’র চেয়ারম্যান সাংবাদিক আনোয়ার আলদীন, অধ্যাপক ড. শামসুল আলম, আমিরুল ইসলাম কাগজী, সৈয়দ আবদাল আহমদ, ড. আব্দুল হাই সিদ্দিকী, অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, অধ্যাপক লুৎফর রহমান, প্রকৌশলী মো. মোস্তফা-ই জামান সেলিম (সিআইপি), প্রকৌশলী একেএম আমিরুল মোমিন বাবলুসহ কয়েক হাজার নেতাকর্মী।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ ত র ক রহম ন জ ল ই অভ য ত থ ন উপস থ ত ছ ল ন ত র ক রহম ন র ল ইসল ম র জন ত ক অন ষ ঠ ন র রহম ন ব এনপ র জনগণ র হয় ছ ন সদস য আগস ট
এছাড়াও পড়ুন:
ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব জনপ্রত্যাশা নিয়ে কতটা সজাগ
জুলাই গণঅভ্যুত্থান ছিল ঐতিহাসিক ঘটনা। স্বতঃস্ফূর্ত ছাত্র-জনতার উত্তাল জাগরণ। গণঅভ্যুত্থানের স্বপ্ন ছিল দেশে জবাবদিহি, আইন এবং ন্যায়বিচার থাকবে অগ্রাধিকার তালিকার শীর্ষে। কিন্তু সেই উত্তাল ঢেউ কি ক্রমেই শান্ত হয়ে যাচ্ছে? ছাত্রদের আন্দোলনের প্রতি ছিল সর্বজনীন আস্থা। অথচ তারাই আজ বিভক্ত, বিভ্রান্ত, দ্বিধান্বিত; নেতাদের কেউ কেউ অনিয়মের দায়ে অভিযুক্ত।
এই প্রেক্ষাপটে যখন সাধারণ নির্বাচনের আলোচনা ক্রমেই ঘনায়মান, তখন জনগণের প্রত্যাশা ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের প্রতি বেড়েই চলেছে। বিশেষত বিএনপির ওপর দায়িত্ব আরও বেশি। প্রমাণ করতে হবে যে তারা শুধু ক্ষমতার রাজনীতির অংশীদার নয়। বরং অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণে সক্ষম; যেখানে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটবে। বিকল্প বৈষম্যহীন অংশগ্রহণমূলক শাসন কাঠামোর গণতান্ত্রিক রূপরেখা নির্মাণে তৎপর হতে হবে দলটিকে। অতীতের ভুলগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামী দিনে দলটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজ গঠন করবে– এটিই জনগণ দেখতে চায়।
বিএনপিকে নিজের অবস্থানও পরিষ্কার করতে হবে। তারা কীভাবে ধর্মনিরপেক্ষতা, মানবাধিকার, বিচার ব্যবস্থা এবং ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ নিশ্চিত করবে, তা জনগণকে জানাতে হবে। শুধু নির্বাচন চাওয়া নয়; নির্বাচনের পর একটি সুশাসনের কাঠামো জনগণের সামনে হাজির করাও দলটির রাজনৈতিক দায়িত্ব।
বিএনপি যদি শাসন ক্ষমতায় আসে তাহলে তাদের ওপর জনপ্রত্যাশার চাপ আরও বাড়বে। নেতাদের জনগণের চাওয়া-পাওয়ার মূল্য দিতে হবে। জনগণের কাছে স্পষ্ট করে তুলে ধরতে হবে ভারতীয় আধিপত্যবাদ প্রশ্নে তাদের অবস্থান। কারণ ভারতই ফ্যাসিস্ট সরকারকে সমর্থন দিয়ে টিকিয়ে রেখেছে গত সাড়ে ১৫ বছর। দুই দেশের সম্পর্ক হতে হবে সমমর্যাদার– এটি জনগণের চাওয়া। পাশাপাশি জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিট ধারণ করে পুরোনো রীতিনীতি বাদ দিয়ে বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক সমাজ গঠনে সক্রিয় রাজনৈতিক প্রতিজ্ঞা ও কর্মসূচি ব্যক্ত করতে হবে।
এনসিপি প্রশ্নে মনে রাখতে হবে, তারুণ্যের শক্তি এবং স্পর্ধা ছিল পরিবর্তনের চালিকাশক্তি। জুলাই অভ্যুত্থান, লাখ লাখ তরুণের অংশগ্রহণ, সহস্রাধিক জীবনদানের ঘটনা একটি ঐতিহাসিক রাজনৈতিক পালাবদলের সূচনা করেছে। সেসব আত্মত্যাগের প্রেক্ষাপটে রাজনীতি যদি আবার কূটকৌশলের শিকার হয়, তবে জনআস্থা ফিরে আসবে না। দোষত্রুটি সত্ত্বেও তরুণদের বলিষ্ঠ অংশগ্রহণ রাজনীতিকে দায়বদ্ধ রাখবে– এটাই সবাই প্রত্যাশা করে।
বাস্তবে এনসিপি প্রসঙ্গে জনমনে দ্বৈত প্রতিক্রিয়া রয়েছে। তারা বিকল্প রাজনৈতিক বন্দোবস্তের কথা বলছে। অন্যদিকে তাদের কোনো কোনো নেতার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, দুর্বৃত্তায়ন এবং জামায়াতঘেঁষা অবস্থান নিয়ে অভিযোগ ও সন্দেহ তৈরি হয়েছে। একটি গণতান্ত্রিক সমাজে এসব প্রশ্ন অস্বাভাবিক নয়, বরং রাজনৈতিক পরিশুদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয়। তবে জামায়াত-এনসিপি সম্পর্ক আগামী দিনে গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে বাধা হয়েও দাঁড়াতে পারে, যদি এনসিপি তাদের অবস্থান জনগণের সামনে পরিষ্কার না করে।
সামাজিক মাধ্যমে এনসিপি নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, দখলদারিত্ব, ক্ষমতার অপব্যবহার ইত্যাদি অভিযোগ ছড়িয়ে পড়ছে। অথচ সরকারপক্ষ কিংবা বুদ্ধিজীবী মহল থেকে সেসব নিয়ে কোনো বক্তব্য নেই। তারা কি আদৌ পরিবর্তনের পক্ষের শক্তি, নাকি তারা কেবল সুযোগের অপেক্ষায় থাকা সুবিধাবাদী গোষ্ঠী? নাকি তারা হয়ে উঠছে নতুন বলির পাঁঠা?
ছাত্ররা এখনও মাঠে সক্রিয়। কিন্তু তারা কি বুঝতে পারছে, তাদের কাঁধে চড়ে কেউ কেউ তাদের ব্যবহারের ফাঁদে ফেলছে? রাজনীতি আজ কেবল আদর্শের জায়গা নয়। এটি হয়ে উঠেছে ঘুঁটি চালার খেলা; সেই পুরোনো অলিগার্কদের খেলা। রাজনীতির খেলায় দাবার চালে যারা দুর্বল, তারাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়– মনে রাখতে হবে।
আসন্ন নির্বাচন এ দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। একটি পক্ষ চায় নিষেধাজ্ঞা, আরেক পক্ষ চায় সহাবস্থান। তৃতীয় পক্ষ চায় ন্যায় ও স্বচ্ছতা। এই দ্বন্দ্বে কোথায় যাবে বাংলাদেশ? আমরা যদি সত্যিই একটি নতুন বাংলাদেশ চাই, তবে শুধু রক্ত নয়; দরকার সমঝোতা ও বিশ্বাসের রাজনীতি। দরকার বিশ্বাসযোগ্য নেতৃত্ব, সুস্পষ্ট রাজনৈতিক কর্মসূচি, সুশৃঙ্খল নির্বাচনী পরিকল্পনা। কেউ কাউকে নিষিদ্ধ করলেই দেশ বদলে যায় না। বদলাতে হয় মানসিকতা, কাঠামো ও নেতৃত্বের দর্শন দিয়ে।
সুতরাং আমাদের দরকার পরস্পরের আস্থার রাজনীতি, সমঝোতার রাজনীতি। কারও কূটচালে পা না দিয়ে, সবাইকে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে জনগণের সামনে দাঁড়াতে হবে। জনগণ কাউকে ক্ষমা করে না। যদি তারা বিশ্বাস করে– তাদের সঙ্গে প্রতারণা হয়েছে; তার হিসাব জনগণ চুকিয়ে দেয়। সব রাজনৈতিক শক্তির জন্যই তা প্রযোজ্য।
অন্যদিকে অন্তর্বর্তী সরকারকে অবশ্যই অবশিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন, বিচার বিভাগসহ অন্যান্য রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে আরও নিরপেক্ষ ও কার্যকর করার উদ্যোগ নিতে হবে। সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের জন্য সব ধরনের কাজ সম্পন্ন করতে হবে। জনগণ এখন আর মুখের কথা শুনে সন্তুষ্ট হয় না। তারা কাজের প্রমাণ দেখতে চায়।
শেষ পর্যন্ত স্মরণে রাখতে হবে, এই রাষ্ট্রে গণতান্ত্রিক রূপান্তরের দাবিতে যে তরুণ প্রজন্ম রাজপথে জীবন দিয়েছে, তাদের চেতনাকে সম্মান জানানো প্রতিটি রাজনৈতিক দলের নৈতিক কর্তব্য। যদি সেই চেতনা বিস্মৃত হয়; যদি ক্ষমতার পালাবদলই একমাত্র উদ্দেশ্য হয়ে দাঁড়ায়, তবে তরুণ সমাজ আবার রাজপথে নামবে আর স্লোগান তুলবে– ‘বুকের মধ্যে দারুণ ঝড়, বুক পেতেছি গুলি কর’।
এই মুহূর্তে বাংলাদেশের সামনে যে ঐতিহাসিক রাজনৈতিক সুযোগ এসেছে, তা জন-আকাঙ্ক্ষা সাপেক্ষে যথাযথভাবে কাজে লাগাতে পারলে শুধু একটি নির্বাচনই নয়, একটি নতুন রাজনৈতিক অধ্যায়ের সূচনা হতে পারে।
আহমেদ স্বপন মাহমুদ: কবি ও মানবাধিকারকর্মী