সিলেটে আট দফা নিয়ে মাঠে নামছেন পরিবহনশ্রমিকেরা, না মানলে ২৬ জানুয়ারি কর্মবিরতির ঘোষণা
Published: 15th, January 2025 GMT
আট দফা দাবিতে সিলেট নগরের দক্ষিণ সুরমার হুমায়ূন রশিদ চত্বরে আগামী সোমবার শ্রমিক মহাসমাবেশ করবে সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। এরপরও দাবি বাস্তবায়িত না হলে ২৬ জানুয়ারি কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন সংগঠনটির নেতারা।
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) বেলা ২টায় সিলেট নগরের দক্ষিণ সুরমার ভার্থখলা এলাকায় এক জরুরি সভা শেষে এ সিদ্ধান্তের বিষয়টি জানানো হয়। সিলেট জেলা সিএনজিচালিত অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়ন ৭০৭ কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে এ সভা হয়। সভাটি অনুষ্ঠিত হয় সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে।
জরুরি সভায় সভাপতিত্ব করেন সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো.
সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন শ্রমিক নেতা মো. শাহাব উদ্দিন আহমেদ, মো. ইকবাল হোসেন, মানিক খান, মো. জিলু মিয়া, মোহাম্মদ আলী, কাওছার আহমেদ, মো. মন্নান মিয়া, আলতাব চৌধুরী প্রমুখ।
সভায় বক্তারা আট দফা দাবি উত্থাপন করেন। এর মধ্যে, সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮-এর শ্রমিক স্বার্থবিরোধী আইন অবিলম্বে বাতিল; ট্রাফিক পুলিশসহ অন্যান্য পুলিশের মাধ্যমে বিভিন্ন অপরাধে যানবাহনে মাত্রাতিরিক্ত জরিমানা সহনশীল পর্যায়ে নিয়ে আসা এবং মেয়াদোত্তীর্ণ সব সেতুর টোল বিশেষ করে এম এ খান লামাকাজি সেতুর টোল আদায় বন্ধ করার দাবি উল্লেখযোগ্য।
এ ছাড়া বিভিন্ন যানবাহনের শ্রেণিবিন্যাস করে ২০২৩ সালে প্রণীত গেজেট বাতিল; সিলেটের সব পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়া ও সিলেটের সব সিএনজিচালিত যানবাহনের গ্যাস লোডে দীর্ঘসূত্রতার সমাধান দেওয়া এবং সিলেটের পরিবহনে সব শ্রমিকনেতা ও শ্রমিকদের ওপর করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও সিলেটে সব লোড ট্রাক আটকে চালকদের হয়রানি বন্ধ করার দাবিও জানানো হয়।
অন্য দাবিগুলো হলো প্রশাসনের লোক ছাড়া কেউ যেন লোড ট্রাক না আটকায়, তার ব্যবস্থা নেওয়া এবং হাইওয়ে পুলিশের হয়রানি বন্ধ করা। ২৫ জানুয়ারির মধ্যে দাবি না মানলে পরদিন থেকে সিলেট জেলায় পরিবহনশ্রমিকেরা কর্মবিরতি পালন করবেন বলে সভা থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
ঢাকা/নূর/রাজীব
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ভাঙচুর-আগুনের চেষ্টা প্রতিহত করা হবে
সারাদেশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনায় ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগের চেষ্টা শক্তভাবে প্রতিহত করা হবে বলে জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। আজ রাতে প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুকে পেজে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘অন্তর্বর্তী সরকার গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছে যে, কতিপয় ব্যক্তি ও গোষ্ঠী সারাদেশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করছে। সরকার এ ধরনের কর্মকাণ্ড শক্তভাবে প্রতিহত করবে।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘অন্তর্বর্তী সরকার নাগরিকদের জানমালের নিরাপত্তা রক্ষায় প্রস্তুত। কোনো ধরনের উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করা হলে দায়ী ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাৎক্ষণিক কঠোর ব্যবস্থা নেবে এবং দোষীদের বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করাবে।’
এর আগে রাজধানীর ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িতে ভাঙচুর-অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাকে অনভিপ্রেত ও অনাকাঙ্ক্ষিত বলে জানিয়েছে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার। পাশাপাশি সরকারের অভিমত, পলাতক অবস্থায় ভারতে বসে জুলাই অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উস্কানিমূলক বক্তব্যের কারণে জনমনে গভীর ক্রোধের সৃষ্টির বহিঃপ্রকাশ হিসেবে এ ঘটনা ঘটেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে দেওয়া পৃথক বিবৃতিতে এমন মন্তব্য করা হয়। বলা হয়, গত ছয় মাসে ৩২ নম্বর বাড়িটিতে কোনো ধরনের আক্রমণ, ধ্বংসযজ্ঞ হয়নি। গত বুধবার রাতে এটি ঘটেছে পলাতক শেখ হাসিনার বক্তব্য ঘিরে, যার দুটি অংশ আছে।
একটি অংশ হলো, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যারা আত্মদান করেছেন শেখ হাসিনা তাদের অপমান করেছেন, অবমাননা করেছেন। শহীদের মৃত্যু সম্পর্কিত অবান্তর, আজগুবি ও বিদ্বেষমূলক কথা বলে পলাতক শেখ হাসিনা জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে অবজ্ঞা করেছেন ও অশ্রদ্ধা জানিয়েছেন।
দ্বিতীয়ত, শেখ হাসিনা দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও অমানবিক প্রক্রিয়ায় নিপীড়ন চালিয়ে ক্ষমতায় থাকাকালীন যে সুরে কথা বলতেন গণঅভ্যুত্থানের মুখে পালিয়ে যাওয়ার পরও তিনি একই হুমকি-ধমকির সুরে জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে, গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া প্রতিটি মানুষের বিরুদ্ধে কথা বলে চলেছেন, হুমকি দিচ্ছেন। দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির হুমকি দিয়েছেন।
মানুষের মনে জুলাই গণহত্যা নিয়ে যে ক্ষত রয়েছে সে ক্ষততে শেখ হাসিনা একের পর এক আঘাত করে চলেছেন। তাঁর এই সহিংস আচরণের প্রতিক্রিয়া হিসেবে ৩২ নম্বরের বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকার দেশ ও জনগণের জানমালের রক্ষায় সর্বোচ্চ সতর্ক আছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সর্বাত্মকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার যথাযথ চেষ্টা করছে। মানবতাবিরোধী অপরাধে একজন ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি শেখ হাসিনা বক্তব্য দেওয়া থেকে বিরত থাকলে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি এড়ানো সম্ভব।
সরকার আশা করে, ভারত যেন তার ভূখণ্ডকে বাংলাদেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করে এমন কাজে ব্যবহৃত হতে না দেয় এবং শেখ হাসিনাকে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ না দেয়। অন্তর্বর্তী সরকার ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি চায় না।
এতে বলা হয়, জুলাই হত্যাকাণ্ডে যারা জড়িত ছিল তাদের বিচারকাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে। এই বিচার নিশ্চিত করে গণহত্যাকারীদের উপযুক্ত শাস্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ডে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কী কী আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া যায় তা সরকার খতিয়ে দেখবে।