সাজীব হত্যায় মামলা বাড়িতে চলছে মাতম
Published: 27th, March 2025 GMT
ময়মনসিংহে সাজীব মিয়া নামে যুবক খুনের ঘটনায় মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার মামলাটি করেন তাঁর মা রোজি বেগম। এর আগে বুধবার রাত পৌনে ১২টার দিকে নগরীর কাচিঝুলি এলাকার সড়ক ভবনের কোয়ার্টারের সামনের চায়ের দোকানে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। হত্যাকাণ্ডের পর থেকে তাঁর বাড়িতে চলছে মাতম।
মামলার আসামি একই এলাকার শফিক ড্রাইভারের ছেলে মন্টি মিয়া। এজাহারে বলা হয়, সাজীবের চাচা নূরু মিয়ার চায়ের দোকানে বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন মন্টি। তুই-তুকারি করে কথা বলার কারণে ক্ষেপে যায় সে। কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে সাজীবের দোকান থেকেই সুপারি কাটার শরতা নিয়ে সাজীবকে বুকের বাঁ পাশে আঘাত করতে থাকে মন্টি। এতে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন সাজীব। পরে ঘটনাস্থল থেকে সাজীবের মামাতো ভাই আকাশ স্থানীয়দের সহায়তায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। তবে তাঁকে বাঁচাতে পারেননি চিকিৎসকরা।
নিহত সাজীবের প্রতিবেশী মোস্তাফিজুর রহমান টুটুল বলেন, ‘মূলত মাদক সেবন নিয়ে প্রতিবাদ জানায় সাজীব। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁর ওপর হামলা করে মন্টি।’
জানা গেছে, মামলার আসামি মন্টি মিয়া কাচিঝুলি এলাকার আব্দুল মালেক সড়কের বাসিন্দা। শফিক ড্রাইভার ও আয়েশা খাতুনের ছেলে সে। খণ্ডকালীন চালক হিসেবে ভাড়ায় গাড়ি চালাত। তাঁর নামে আগে থানায় কোনো মামলা ছিল না।
সাজীব ইট-পাথর টানার শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। কাচিঝুলি এলাকায় তাঁর বাবা মো.
তাঁর বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন রোজি বেগম। বিলাপ করতে করতে বলেন, তাঁর ছেলে ছিল নিষ্পাপ। তাকে যে অন্যায়ভাবে হত্যা করেছে তার ফাঁসি চান। এ ঘটনায় এখনও কেউ আটক না হওয়ায় উদ্বিগ্ন তিনি।
নিহত সাজীবের ভাই ক্ষোভ প্রকাশ করে সমকালকে বলেন, ‘আমার ভাইয়ের দাফন হয়ে গেল। আমার পুরো পরিবারের ঈদের আনন্দ মাটি হয়ে গেল। ভাইয়ের হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করতে হবে।’
কোতোয়ালি থানার ওসি শফিকুল ইসলাম খান জানান, মামলা হয়েছে। আসামি লাপাত্তা হয়ে গেছে। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলম বলেন, ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আছে। আসামির মাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হয়েছিল। পরে আবার ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আসামিকে খুঁজে বের করার সবরকম চেষ্টা চলছে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
২ কেজির ইলিশ বিক্রি হলো ৭ হাজার ৭০০ টাকায়
সারাদেশে ইলিশের দাম নিয়ে যখন হইচই তখন জেলেরা ভুগছেন ইলিশ সংকটে আর ক্রেতারা হতাশ দাম নিয়ে। এ অবস্থায় পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় জামাল মাতুব্বর নামের এক জেলের জালে ধরা পড়লো ২ কেজির এক ইলিশ যা বিক্রি হলো ৭ হাজার ৭০০ টাকায়।
রোববার বিকেলে উপজেলার আশাখালী মাছ বাজারে ২ কেজি ২০০ গ্রাম ওজনের ইলিশটিকে ৭ হাজার ৭০০ টাকায় বিক্রি করেন জেলে। মাছটি কেনেন বন্ধন ফিসের মালিক মো. জাহিদুল ইসলাম।
জেলে জামাল মাতুব্বর বলেন, গত কালকে সমুদ্রে মাছ ধরতে নেমে আজকে আবহাওয়া খারাপ হওয়া তীরে চলে এসেছি৷ ইলিশ মাছ কম তবে একটি ইলিশ আমি ৭ হাজার ৭০০ টাকায় বিক্রি করেছি। যে কারণে কম মাছ পেলেও খুব ভালো লাগছে। এর চেয়েও বড় ইলিশ সমুদ্রে পাওয়া যায় তবে এখন দাম অনেক হওয়ায় যা দাম এসেছে তাতে পুষিয়ে যায় আমাদের।
বন্ধন ফিসের মালিক মো. জাহিদুল ইসলাম জাহিদ বলেন, গত ১১ জুন ৬০ দিনের অবরোধ শেষ হওয়ার পর কয়েকবার আবহাওয়া খারাপ হওয়ায় জেলেরা ঠিকমতো মাছ ধরতে পারছেন না। তবে আজকে জেলে জামাল একটি মাছ প্রায় ৮ হাজার টাকায় বিক্রি করছেন। এটা তার জন্য অনেক আনন্দের। মাছটি আমি কিনে ঢাকায় পাঠিয়েছি।
উপজেলার বেশ কয়েকটি মাছের বাজারে কথা বলে জানা যায়, ইলিশ সংকট হওয়ায় তার দাম আকাশচুম্বী। আজকে এক কেজির উপরের ইলিশ প্রতি মণ বিক্রি হয়েছে এক লাখ থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত। ৮০০ থেকে ৯০০ গ্রামের ইলিশ ৯৫ থেকে ৯৮ হাজার টাকায়, ৬০০ থেকে ৭০০ গ্রামের ইলিশ ৭০ হাজার থেকে ৮৫ হাজার টাকায়, ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রামের ইলিশ ৬৫ থেকে ৬৮ হাজার টাকায়, ৪০০ থেকে ৫০০ গ্রামের ইলিশ ৬০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, ৬০ দিনের অবরোধ সঠিকভাবে পালন হওয়ায় সাগরে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে বৈরী আবহাওয়ায় জেলেরা ঠিকমত মাছ ধরতে ব্যর্থ হচ্ছেন। তবে আবহাওয়া ঠিক হলে মাছের পরিমাণও বৃদ্ধি পাবে আর দামও নাগালে চলে আসবে।