ময়মনসিংহে সাজীব মিয়া নামে যুবক খুনের ঘটনায় মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার মামলাটি করেন তাঁর মা রোজি বেগম। এর আগে বুধবার রাত পৌনে ১২টার দিকে নগরীর কাচিঝুলি এলাকার সড়ক ভবনের কোয়ার্টারের সামনের চায়ের দোকানে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। হত্যাকাণ্ডের পর থেকে তাঁর বাড়িতে চলছে মাতম।

মামলার আসামি একই এলাকার শফিক ড্রাইভারের ছেলে মন্টি মিয়া। এজাহারে বলা হয়, সাজীবের চাচা নূরু মিয়ার চায়ের দোকানে বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন মন্টি। তুই-তুকারি করে কথা বলার কারণে ক্ষেপে যায় সে। কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে সাজীবের দোকান থেকেই সুপারি কাটার শরতা নিয়ে সাজীবকে বুকের বাঁ পাশে আঘাত করতে থাকে মন্টি। এতে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন সাজীব। পরে ঘটনাস্থল থেকে সাজীবের মামাতো ভাই আকাশ স্থানীয়দের সহায়তায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। তবে তাঁকে বাঁচাতে পারেননি চিকিৎসকরা।

নিহত সাজীবের প্রতিবেশী মোস্তাফিজুর রহমান টুটুল বলেন, ‘মূলত মাদক সেবন নিয়ে প্রতিবাদ জানায় সাজীব। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁর ওপর হামলা করে মন্টি।’
জানা গেছে, মামলার আসামি মন্টি মিয়া কাচিঝুলি এলাকার আব্দুল মালেক সড়কের বাসিন্দা। শফিক ড্রাইভার ও আয়েশা খাতুনের ছেলে সে। খণ্ডকালীন চালক হিসেবে ভাড়ায় গাড়ি চালাত। তাঁর নামে আগে থানায় কোনো মামলা ছিল না।

সাজীব ইট-পাথর টানার শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। কাচিঝুলি এলাকায় তাঁর বাবা মো.

আজাদের চা-পুরির দোকান আছে। সাজীব মাঝে মধ্যে তাঁর বাবার দোকানে সহায়তা করতেন। সংসারে অভাব অনটনের কারণে পঞ্চম শ্রেণির পর আর পড়ালেখা করতে পারেননি সাজীব। দুই ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন তৃতীয়।
তাঁর বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন রোজি বেগম। বিলাপ করতে করতে বলেন, তাঁর ছেলে ছিল নিষ্পাপ। তাকে যে অন্যায়ভাবে হত্যা করেছে তার ফাঁসি চান। এ ঘটনায় এখনও কেউ আটক না হওয়ায় উদ্বিগ্ন তিনি।

নিহত সাজীবের ভাই ক্ষোভ প্রকাশ করে সমকালকে বলেন, ‘আমার ভাইয়ের দাফন হয়ে গেল। আমার পুরো পরিবারের ঈদের আনন্দ মাটি হয়ে গেল। ভাইয়ের হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করতে হবে।’

কোতোয়ালি থানার ওসি শফিকুল ইসলাম খান জানান, মামলা হয়েছে। আসামি লাপাত্তা হয়ে গেছে। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলম বলেন, ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আছে। আসামির মাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হয়েছিল। পরে আবার ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আসামিকে খুঁজে বের করার সবরকম চেষ্টা চলছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন হত ময়মনস হ

এছাড়াও পড়ুন:

শেষ ‍মুহূর্তের গোলে রিয়ালের জয়

অ্যাথলেটিক বিলবাওর বিপক্ষে ম্যাচের শেষ মুহূর্তে ফেদেরিকো ভালভার্দের করা চমৎকার এক গোলে জয় পেয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে রবিবার (২০ এপ্রিল) দিবাগত রাতে যোগ করা সময়ে পাওয়া জয়ে লা লিগার শিরোপা জয়ের দৌড়ে টিকে রইলো লস ব্লাঙ্কোসরা।

ম্যাচের ৯০+৩ মিনিটের মাথায় ভালভার্দে তার বাম পায়ে নেওয়া দুর্দান্ত এক হাফ-ভলিতে বল জালে জড়ান। দ্বিতীয়ার্ধ জুড়ে রিয়ালের লাগাতার আক্রমণের ফলস্বরূপ আসে এই গোলটি।

এটি ছিল এই মৌসুমে ভালভার্দের ষষ্ঠ লিগ গোল। তবে, গেল বছরের ডিসেম্বরে সেভিয়ার বিপক্ষে করা গোলের পর এটাই তার প্রথম।

এই জয়ে শীর্ষে থাকা বার্সেলোনার চেয়ে ৪ পয়েন্ট পিছিয়ে থাকলো রিয়াল মাদ্রিদ, হাতে আছে আরো ছয়টি ম্যাচ।

আর্সেনালের কাছে ৫-১ ব্যবধানে হেরে চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে বাদ পড়ার পর কঠিন সময় পার করছিল রিয়াল। তবে এই জয় দিয়ে দলটি আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং লিগ শিরোপা জয়ের আশা এখনও টিকিয়ে রেখেছে।

ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে একের পর এক আক্রমণ করেও বিলবাওয়ের গোলরক্ষক উনাই সিমনের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের কারণে গোল পাচ্ছিল না রিয়াল। ক্যামাভিঙ্গার শট এবং জুদ বেলিংহামের হেড সেভ করে দলকে অনেকক্ষণ পর্যন্ত বাঁচিয়ে রাখেন তিনি।

খেলার ১১ মিনিট বাকি থাকতে ভিনিসিয়াস জুনিয়রের নিখুঁত শট গোলপোস্টে পাঠালেও ভিএআর দেখে সেটি বাতিল করে দেওয়া হয়। কারণ, তার আগে এন্ড্রিক সামান্য অফসাইডে ছিলেন। পরে বেলিংহামকে ফাউল করা হলেও তা গুরুত্বের সঙ্গে না নেওয়ায় রিয়াল ভক্তদের হতাশ হতে হয়।

ভিনিসিউস ও বেলিংহামের পাশাপাশি ভালভার্দেও দুইবার গোলের কাছে গিয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত অতিরিক্ত সময়ে দুর্দান্ত এক গোল করে তিনি আনচেলত্তির চাপ কিছুটা কমিয়ে দেন। এখন রিয়ালের পরের লক্ষ্য হলো শনিবার কোপা দেল রের ফাইনালে বার্সেলোনাকে হারানো।

উল্লেখ্য, লাল কার্ড দেখে নিষিদ্ধ হওয়া কিলিয়ান এমবাপ্পে অবশ্য এই ম্যাচে খেলেননি। তবে কোপা দেল রের ফাইনালে খেলতে পারবেন তিনি।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ