পুকুরে ডুবে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) কৃষি অনুষদের ২০২৩-২৪ সেশনের শিক্ষার্থী হুসাইন মোহাম্মদ আশিকের মৃত্যুর ঘটনায় চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা। এর প্রতিবাদে তাঁরা আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কুয়াকাটা-ঢাকা মহাসড়‌কের পায়রা সেতুর টোল প্লাজা অব‌রোধ ক‌রে বি‌ক্ষোভ করেছেন।

অন্তত পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থীর প্রায় দুই ঘণ্টাব‌্যাপী এ বি‌ক্ষোভে সেতুর দুই প্রা‌ন্তে দীর্ঘ যানজ‌টের সৃ‌ষ্টি হয়। দেখা দেয় ভোগান্তি।

প্রসঙ্গত, গতকাল সোমবার বেলা তিনটার দিকে পবিপ্রবি–সংলগ্ন জনতা কলেজের পুকুরে আশিক তাঁর কয়েকজন বন্ধুসহ গোসল করতে যান। এ সময় তিনি পানিতে ডুবে যান। আশিককে উদ্ধার করে প্রথমে দুমকী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখান থেকে তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পটুয়াখালী মে‌ডি‌কেল ক‌লেজ হাসপাতা‌লে পাঠানো হয়। ওই দিন সন্ধ্যায় সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

আজ বিক্ষোভ চলাকালে মৃত আশিকের বন্ধু সাকিব ও রুম্মন বলেন, পটুয়াখালী মে‌ডি‌কেল ক‌লেজ হাসপাতা‌লে নেওয়ার ৪৫ মিনিট পর একজন চিকিৎসক আশিক‌কে দেখতে আসেন। দ্রুত চি‌কিৎসা না দেওয়ার কার‌ণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া মে‌ডি‌সিন ওয়া‌র্ডের কর্তব‌্যরত নার্স রোগীর অসুস্থ‌তা নি‌য়ে উদা‌সীন ছি‌লেন। দ্রুত সম‌য়ের মধ‌্যে দা‌য়িত্বরত চিকিৎসক ও নার্স‌দের বিরু‌দ্ধে যথাযথা ব‌্যবস্থা না নি‌লে ক‌ঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।

আশি‌কের মৃত্যুর পর প‌বিপ্রবির শিক্ষার্থীরা হাসপাতালে ক‌য়েক দফা বি‌ক্ষোভ ক‌রেন। এ সময় উত্তেজনা দেখা দি‌লে সেখানে সেনাবা‌হিনী ও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়। প‌রে জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীন এ ঘটনায় এক‌টি তদন্ত ক‌মি‌টি ক‌রেন।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক শামীম আল আজাদ। তাঁর দাবি, সোমবার বিকেলে ওয়ার্ডের সিনিয়র স্টাফ নার্সের ফোন কল পেয়ে তিনি দ্রুত ছুটে আসেন। দীর্ঘক্ষণ পানিতে তলিয়ে থাকার কারণে অক্সিজেনের অভাবে আশিক মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসায় কোনো গাফিলতি হয়নি।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রক্ষার শপথ ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের গেরিলা যোদ্ধাদের

বিজয়ের মাস ঢাকায় এক হলেন একাত্তরে ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের যৌথ গেরিলা বাহিনীর যোদ্ধারা; তাঁরা শপথ নিলেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রক্ষার।

আজ শনিবার ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গেরিলা যোদ্ধাদের এই মিলনমেলায় এই বাহিনীর জীবিত সদস্যদের পাশাপাশি শহীদ পরিবারের সদস্যরা অংশ নেন। দিনভর এই আয়োজন করে ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়ন বিশেষ গেরিলা বাহিনী সমন্বয় কমিটি।

একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে আলাদা গেরিলা বাহিনী গঠন করে অংশ নিয়েছিলেন ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের সদস্যরা। কয়েক হাজার গেরিলা যোদ্ধার এই বাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন কমিউনিস্ট পার্টির তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ফরহাদ। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের বেতিয়ারার যুদ্ধে এই বাহিনীর সদস্যদের আত্মদান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে আলোচিত ঘটনা।

স্বাধীনতার পর এই গেরিলা বাহিনীর সদস্যরা মোহাম্মদ ফরহাদের নেতৃত্বে অস্ত্র সমর্পণ করেছিলেন। দেড় যুগ আগে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর মুক্তিযোদ্ধাদের যে তালিকা করেছিল, তাতে এই বাহিনীর সদস্যদের রাখা হয়নি। পরে উচ্চ আদালতের নির্দেশে ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের গেরিলা বাহিনীর সদস্যদের মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

শহীদ মিনারে মিলনমেলার ঘোষণাপত্র পাঠ করেন কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। তিনি এই গেরিলা বাহিনীর সদস্য ছিলেন, স্বাধীনতার পর অনুষ্ঠিত প্রথম ডাকসু নির্বাচনে ভিপি হয়েছিলেন তিনি।

ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আজ শনিবার একাত্তরে ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের যৌথ গেরিলা বাহিনীর মিলনমেলায় সিপিবির সাবেক সভাপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম

সম্পর্কিত নিবন্ধ