এসকান্দার মিয়ার (প্রকাশ মনু মিয়া) বয়স ৬১। ছেলে ইমরানের বয়স ৪০। বাড়ির আঙিনায় বাবা রোপণ করেছেন গাঁজা গাছ। একদিন ছেলে বাবার কাছে গাছের পরিচয় জানতে চাইলেন। বাবা ছেলেকে বোঝালেন এগুলো খুব উপকারী ফুল গাছ। এ কথা শুনে বাবার সঙ্গে ছেলেও পরিচর্যায় নেমে গেলেন। কিন্তু বিধিবাম। গত বুধবার সকালে পুলিশ নিয়ে তাদের বাড়িতে এলেন সীতাকুণ্ডের উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল্লা আল মামুন। সঙ্গে ছিলেন জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। তারা অভিযান চালিয়ে গাঁজা গাছগুলো উদ্ধার করেন। টের পেয়ে আগেই পালিয়ে যান এসকান্দার মিয়া। ছেলে ইমরানকে সতর্ক করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। ইমরান অবাক হয়ে দেখেন, তার বাবার লাগানো গাছগুলো ফুল গাছ নয়, গাঁজা গাছ, যেগুলোকে এতদিন তিনি সন্তানের মতো যত্ন করেছেন।  
এসকান্দার মিয়া সীতাকুণ্ড পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর মহাদেবপুর গ্রামের বাসিন্দা ও ওয়ার্ড বিএনপির প্রচার সম্পাদক। 
জানা যায়, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআইয়ের সদস্যরা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারেন এসকান্দার মিয়ার গাঁজা চাষের কথা। পরে উপজেলা প্রশাসন ও চট্টগ্রাম জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর যৌথ অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানের খবর পেয়ে পালিয়ে যান গাঁজা চাষি এসকান্দার মিয়া। 
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘এনএসআইয়ের মাধ্যমে গাঁজা গাছ চাষের তথ্য পাওয়া যায়। ঘটনাস্থলে এসে তথ্যের সত্যতা পাওয়া যায়। গাঁজা গাছগুলো উদ্ধার করি। স্থানীয়ভাবে জানা যায়, এসকান্দার মিয়া মাদকের সঙ্গে জড়িত। এ ঘটনায় অভিযুক্ত এসকান্দার মিয়াকে পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।’
এসকান্দার মিয়ার ছেলে ইমরান হোসেন বলেন, ‘আমি জানতাম না এগুলো গাঁজা গাছ। একদিন বাবার কাছে গাছগুলো সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেছিলেন– এগুলো ফুল গাছ।’ 
পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আবু সিদ্দিক বাল্লা বলেন, ‘এসকান্দার মিয়া ওয়ার্ড কমিটির প্রচার সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন। একজন বিএনপি নেতার গাঁজা চাষের ঘটনা খুবই দুঃখজনক। এ ব্যাপারে দলীয়ভাবে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’ 
চট্টগ্রাম জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক এসএম আলম খান বলেন, ‘জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দার তথ্যের ভিত্তিতে উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করি। এ সময় এককান্দার মিয়ার দখলীয় জায়গা থেকে তিনটি গাঁজা গাছ উদ্ধার করা হয়।’ 
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এসক ন দ র ম য ইমর ন

এছাড়াও পড়ুন:

নাটোরে পাঁচ লাখ টাকা ঘুষ নিতে গিয়ে ভুয়া এনএসআই কর্মকর্তা গ্রেপ্তার

নাটোরে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) কর্মকর্তা পরিচয়ে পাঁচ লাখ টাকা ঘুষ নিতে গিয়ে গ্রেপ্তার হয়েছেন নাজমুল হোসেন (৩২) নামের এক যুবক।

গতকাল রোববার রাত ১০টার দিকে গুরুদাসপুর পৌরসভার মডেল মসজিদের সামনে থেকে তাঁকে আটক করেন এনএসআইয়ের কর্মকর্তারা। পরে তাঁকে থানায় হস্তান্তর করা হয়।

নাজমুল হোসেন গুরুদাসপুর উপজেলার খামার নাচকৈড় গ্রামের মকবুল হোসেনের ছেলে। গুরুদাসপুর থানা-পুলিশ জানায়, নাজমুল হোসেন নিজেকে এনএসআইয়ের মাঠ কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে সম্প্রতি গুরুদাসপুর উপজেলা খাদ্যগুদাম কর্মকর্তার কার্যালয়ে ফোন দেন। তিনি দাবি করেন, কার্যালয়টি খাওয়ার অনুপযোগী চাল কিনেছে এবং দুদকের তদন্তে তা প্রমাণিত হয়েছে। এ বিষয়ে তিনি দুদকের একটি ভুয়া চিঠিও কার্যালয়ে পাঠান। তিনি ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার কথা বলে পাঁচ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। নাজমুলের কথাবার্তায় সন্দেহ হলে উপজেলা খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা বিষয়টি জেলা খাদ্য কর্মকর্তাকে জানান। জেলা খাদ্য কর্মকর্তা নাটোরের এনএসআই কার্যালয়ে জানালে তাঁরা নিশ্চিত হন নাজমুল এনএসআই কর্মকর্তা নন। এরপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় তাঁকে ধরার পরিকল্পনা করা হয়।

গতকাল রাতে উপজেলা খাদ্যগুদামের প্রধান সহকারী জুলহাস উদ্দীন পাঁচ লাখ টাকা নিয়ে নাজমুলের সঙ্গে দেখা করতে যান। মডেল মসজিদের সামনে ঘুষের টাকা নিতে এলে এনএসআইয়ের কর্মকর্তারা সেনাসদস্যদের সহায়তায় নাজমুলকে হাতেনাতে আটক করেন।

গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসমাউল হক বলেন, এ ঘটনায় জুলহাস উদ্দীন বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন। নাজমুল হোসেনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আজ সোমবার সকালে তাঁকে আদালতে পাঠানো হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নাটোরে পাঁচ লাখ টাকা ঘুষ নিতে গিয়ে ভুয়া এনএসআই কর্মকর্তা গ্রেপ্তার