বিয়ের প্রলোভনের মাধ্যমে যৌনকর্মে দণ্ডের বিধান প্রশ্নে হাইকোর্টের রুল
Published: 4th, May 2025 GMT
বিয়ের প্রলোভনের মাধ্যমে যৌনকর্মের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি দণ্ডনীয় হবেন—নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে সন্নিবেশিত এমন বিধান প্রশ্নে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট। এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি হাবিবুল গনি ও বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ তাজরুল হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার এ রুল দেন।
গত ২৫ মার্চ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ জারি করা হয়। অধ্যাদেশের ৫ ধারায় বলা হয়, ওই আইনের ধারা ৯ক–এর পর নতুন ধারা ৯খ সন্নিবেশিত হবে। আর ৯খ ধারায় বিয়ের প্রলোভনের মাধ্যমে যৌনকর্ম করলে দণ্ডের বিষয়ে বলা রয়েছে।
অধ্যাদেশের ৫ ধারার মাধ্যমে সন্নিবেশিত ৯খ ধারার বৈধতা নিয়ে ‘এইড ফর ম্যান ফাউন্ডেশন’–এর পক্ষে সংগঠনের সেক্রেটারি সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো.
পরে আইনজীবী ইশরাত হাসান প্রথম আলোকে বলেন, অধ্যাদেশের ৫ ধারার মাধ্যমে সন্নিবেশিত ৯খ ধারা কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়েছে। আইন মন্ত্রণালয়ের দুই সচিব এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবকে রুলের জবাব দিতে হবে।
ওই বিধানের ভাষ্য, যদি কোনো ব্যক্তি দৈহিক বল প্রয়োগ ছাড়া বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ১৬ বছরের বেশি বয়সের কোনো নারীর সঙ্গে যৌনকর্ম করেন এবং যদি ওই ঘটনার সময় ওই ব্যক্তির সঙ্গে ওই নারীর আস্থাভাজন সম্পর্ক থাকে, তাহলে ওই ব্যক্তি অনধিক সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন এবং এর অতিরিক্ত অর্থদণ্ডেও দণ্ডনীয় হবেন।
আরও পড়ুনধর্ষণ মামলার জট কমাতে ‘বিয়ের প্রলোভনের মাধ্যমে যৌনকর্ম’ আলাদা ধারা করা হয়েছে২৮ মার্চ ২০২৫রিট আবেদনকারী পক্ষের ভাষ্য, বিয়ের প্রলোভনে শারীরিক সম্পর্ক অপরাধ হিসেবে ৯খ ধারায় বলা হয়েছে, যা মূল আইনে ছিল না। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করার পর, তা না রাখলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সাত বছরের দণ্ড হবে বলা হয়েছে। শুধু ‘বিয়ের প্রতিশ্রুতি’ না রাখার কারণে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হলে তা ব্যক্তিস্বাধীনতা ও নারীর সম্মতির অধিকার লঙ্ঘন করে। প্রতিশ্রুতি না রাখার কারণে শুধু লিঙ্গের ভিত্তিতে একজনকে অপরাধী এবং অপরজনকে অপরাধী হিসেবে গণ্য না করার সুযোগ নেই। সংবিধান অনুসারে আইনের চোখে সবাই সমান। যখন ঘটনা ঘটছে, তখন তা অপরাধ নয়, পরবর্তী সময়ে প্রতিশ্রুতি না রাখলে তা অপরাধ হিসেবে দেখা হয়েছে বিধানটিতে। এমন অনুমান বা ধারণার ভিত্তিতে অপরাধকে সংজ্ঞায়িত করা যায় না।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
চিন্ময় দাসের জামিন শুনানি আজ
রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় জামিন পাওয়া সাবেক ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন আদেশ স্থগিত চেয়ে করা রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের শুনানি হবে আজ।
রোববার দুপুরে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো. রেজাউল হকের আদালতে এ শুনানি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
গত বুধবার (৩০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন। অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল আরশাদুর রউফ বলেন, রোববার শুনানি হবে।
চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের পক্ষে আইনজীবী অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্য জানান, হাইকোর্ট জামিন দিলেও দ্রুত মুক্তি পাচ্ছেন না তিনি। কারণ, আদেশের কপি নিম্ন আদালত হয়ে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে পৌঁছাতে কয়েক দিন সময় লাগতে পারে।
তিনি আরও বলেন, গত পরশু কারাফটকে গিয়ে তার মায়ের সঙ্গে দেখা করেছি। চিন্ময় কৃষ্ণ দাস মোটামুটি ভালো আছেন, তবে শরীরের ওজন প্রায় ৭ কেজি কমেছে।
এর আগে হাইকোর্টের বিচারপতি আতোয়ার রহমান খান ও বিচারপতি আলী রেজার সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন মঞ্জুর করেন এবং তার জামিন প্রশ্নে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করেন।
তবে জামিন আদেশের পর সন্ধ্যা ৫টা ৫০ মিনিটে চেম্বার আদালতে আবেদনের পর তা স্থগিত করেন আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো. রেজাউল হক।
এদিকে, বিষয়টি ঘিরে চট্টগ্রাম আদালত এলাকায় নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। আদালতে প্রবেশপথে বসানো হয়েছে চেকপোস্ট; চলছে তল্লাশি। বিচারপ্রার্থী সাধারণ মানুষসহ ডিসি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জিজ্ঞাসাবাদের মুখে প্রবেশ করতে হচ্ছে আদালত প্রাঙ্গণে।