ভারতনিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মিরের পহেলগাম সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা মোকাবিলায় জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ আজ সোমবার রুদ্ধদ্বার আলোচনা করতে চলেছে। গ্রিক প্রেসিডেন্সি কর্তৃক আজ বিকেলে নির্ধারিত এই বৈঠকটি ইসলামাবাদের অনুরোধে ডাকা হয়েছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দপ্তর রবিবার জানায়, তারা পহেলগাম হামলার পরিপ্রেক্ষিতে আঞ্চলিক উন্নয়ন সম্পর্কে জাতিসংঘকে অবহিত করবে, যার মধ্যে ভারতের সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিত করাও অন্তর্ভুক্ত।

আরো পড়ুন:

ভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে আবারো গোলাগুলি

মিজোরামে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ২ মার্কিন নাগরিক গ্রেপ্তার

১৫টি দেশের নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দপ্তর বলছে, “এই গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সঠিক তথ্য উপস্থাপনের জন্য পাকিস্তানের প্রচেষ্টার অংশ।”

পাঁচটি ভেটো-প্রাপ্ত স্থায়ী সদস্য- চীন, ফ্রান্স, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও কাউন্সিলের ১০টি অস্থায়ী সদস্য হল আলজেরিয়া, ডেনমার্ক, গ্রিস, গায়ানা, পাকিস্তান, পানামা, দক্ষিণ কোরিয়া, সিয়েরা লিওন, স্লোভেনিয়া এবং সোমালিয়া। মে মাসের জন্য গ্রিস এই সংস্থার সভাপতিত্ব করছে।

২২ এপ্রিল অধিকৃত কাশ্মীরের পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাদের বেশিরভাগই পর্যটক। ভারত কোনো প্রমাণ ছাড়াই দাবি করছে, এই হামলার পেছনে পাকিস্তানের মদদ রয়েছে। তবে পাকিস্তান এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে। বিষয়টি নিয়ে দুই দেশের উত্তেজনা বেড়েই চলছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশটির সেনাবাহিনীকে সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য ‘কার্যকরী স্বাধীনতা’ প্রদান করেছেন। অপরদিকে, নয়াদিল্লির যেকোনো দুঃসাহসিক কাজের ‘দ্রুত’ জবাব দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইসলামাবদ।

এই পরিস্থিতি বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে, বিশেষ করে সৌদি আরব, ইরান, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র এবং জাতিসংঘ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় উভয় পক্ষকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে। ইরান ও রাশিয়া বিশেষভাবে জানিয়েছে, তারা ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের মধ্যে মধ্যস্থতা করতে প্রস্তুত, যদি দুই দেশ সম্মত হয়। তবে, দক্ষিণ এশিয়ায় এই উত্তেজনা ও সীমান্তে সংঘর্ষের কারণে অঞ্চলটির স্থিতিশীলতা হুমকির মুখে পড়েছে।

জাতিসংঘের এই বৈঠকটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে যাচ্ছে, কারণ এটি ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা প্রশমনে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এখন নিবিড় নজর রাখছে এই বৈঠকের ফলাফলের দিকে, যা দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি প্রতিষ্ঠায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার সব বৈধ এজেন্সির জন্য উন্মুক্ত করার দাবি

মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠাতে নতুন করে আর কোনো সিন্ডিকেট বা চক্র চান না রিক্রুটিং এজেন্সি মালিকদের সংগঠন বায়রার সদস্যরা। তাঁরা বলছেন, এ শ্রমবাজার কোনো বিশেষ ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর জন্য নয়; বরং সব বৈধ এজেন্সির জন্য মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার উন্মুক্ত করতে হবে। সিন্ডিকেট ঠেকাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন তাঁরা।

আজ সোমবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে ওই স্মারকলিপি দেওয়া হয়। এরপর প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সামনের সড়কে মানববন্ধন করেন বায়রার সদস্যরা। এ সময় সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে কম খরচে কর্মী পাঠানো নিশ্চিত করার দাবি তোলেন তাঁরা। এর জন্য কর্মী পাঠাতে মালয়েশিয়ার সঙ্গে ইতিমধ্যে সই করা সমঝোতা স্মারক সংশোধনেরও দাবি তোলা হয়।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, সিন্ডিকেটের মূল হোতা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মালয়েশিয়ার নাগরিক আমিন নূর, পলাতক রুহুল আমিন ওরফে স্বপন ও তাঁদের আওয়ামী সহযোগীরা বর্তমানে প্রভাবশালী কিছু রাজনৈতিক নেতাকে নিয়ে সিন্ডিকেট তৈরিতে তৎপর। সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে তারা এ তৎপরতা চালাচ্ছে। এ সরকারের সময়ে কোনোভাবেই আওয়ামী লীগের তৈরি সিন্ডিকেট পুনর্গঠিত হতে পারে না।

এতে আরও বলা হয়, মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগের বিতর্কিত অনলাইন সফটওয়্যার বাতিল করার জন্য মালয়েশিয়া সরকারের কাছে দাবি জানাতে হবে। সিন্ডিকেটের মূল হোতাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।

স্মারকলিপিতে স্বাক্ষর করেছেন বায়রার সাবেক জ্যেষ্ঠ ভাইস প্রেসিডেন্ট রিয়াজুল ইসলাম, ভাইস প্রেসিডেন্ট নোমান চৌধুরী, বিএনপির ঢাকা জেলা সভাপতি ও বায়রার সদস্য খন্দকার আবু আশফাক, সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম ও আকবর হোসেন, সাবেক সহসভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন, নির্বাহী কমিটির সাবেক সদস্য মোস্তফা মাহমুদ।

স্মারকলিপিতে তাঁরা অভিযোগ করেছেন, সিন্ডিকেটকে গতবার কর্মীপ্রতি ১ লাখ ৫২ হাজার টাকা করে দিতে হয়েছে। গতবার ৫ কোটি টাকা করে চাঁদা নিয়ে এজেন্সিকে সিন্ডিকেটের সদস্য করা হয়েছে। এবার ১৪ কোটি টাকা করে আদায় করা হচ্ছে।

এবার কম খরচে কর্মী পাঠানোর একটি বিকল্প উপায়ও তুলে ধরা হয়েছে স্মারকলিপিতে। এতে বলা হয়, সরকারিভাবে জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) আগ্রহী কর্মীদের ডেটাবেজ তৈরি করতে পারে। সেই ডেটাবেজ থেকে রিক্রুটিং এজেন্সি কর্মী সংগ্রহ করবে। সরকার–নির্ধারিত খরচ ব্যাংকের মাধ্যমে জমা দেবে কর্মী। পুরো নিয়োগপ্রক্রিয়া তত্ত্বাবধান করবে বিএমইটি।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, মালয়েশিয়া ১৪টি দেশ থেকে কর্মী নিলেও কোনো দেশের জন্য নির্দিষ্ট এজেন্সিকে বাছাই করে দেওয়া হয় না। ওই সব দেশ থেকে সব এজেন্সি কর্মী পাঠাতে পারে। গত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও সুপরিকল্পিতভাবে দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষর হওয়া সমঝোতা স্মারকে বাংলাদেশের রিক্রুটিং এজেন্সি মালয়েশিয়া সরকারকে বাছাই করার দায়িত্ব দেওয়ার মধ্য দিয়ে সিন্ডিকেটের বীজ বপন করা হয়।

আরও পড়ুন২০০ কোটি ডলার আত্মসাৎ করেছে মালয়েশিয়া চক্র২৮ ডিসেম্বর ২০২৪

এর আগে একই দাবিতে ৪৫৩টি রিক্রুটিং এজেন্সি মালিকদের স্বাক্ষরসহ গত ২১ এপ্রিল প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি জমা দেন বায়রার সদস্যরা।

আরও পড়ুনমালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠাতে সিন্ডিকেট চান না বায়রার সদস্যরা, মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি জমা২১ এপ্রিল ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ