জামিন পেলেন গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট নেতা সেলিম মাহমুদ
Published: 5th, May 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লায় যৌথবাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সেলিম মাহমুদের জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ সোমবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আবু শামীম আজাদ শুনানি শেষে এ বিষয়ে আদেশ দেন।
সেলিম মাহমুদ বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সদস্য ও গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট জেলা কমিটির সভাপতি। গত ১৮ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার রেলস্টেশন এলাকার বাড়ি থেকে যৌথবাহিনী সেলিম মাহমুদকে আটক করে রূপগঞ্জ থানায় সোপর্দ করে।
সেলিম মাহমুদের আইনজীবী মাজেদুল হক প্রথম আলোকে বলেন, জেলা ও দায়রা জজ আদালত শুনানি শেষে সেলিম মাহমুদের জামিন মঞ্জুর করেছেন। একই ঘটনায় দুটি মামলা করা হয়েছিল। একটি দণ্ডবিধিতে ও অপরটি ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে। ঈদের ছুটিতে শ্রমিকদের অন্যায়ভাবে কর্মচ্যুত করা হয়েছিল। এ কারণে শ্রমিকেরা আন্দোলন শুরু করলে এই মামলা হয়। রেজিস্টার্ড সংগঠনের বিরুদ্ধে এই আইন চলে না, আইএলও কনভেনশন অনুযায়ী শ্রমিকেরা আন্দোলনে ছিলেন। সামান্য ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইন প্রয়োগ করা হয়েছে। আদালত আমাদের কথা শুনে সেলিম মাহমুদসহ অন্য শ্রমিকদের জামিন মঞ্জুর করেছেন।’
আইনজীবী মাজেদুল হক জানান, কারাগারে জামিনের নথি কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আজ বিকেল পাঁচটার মধ্যে সেলিম মাহমুদ কারাগার থেকে মুক্ত হবেন বলে তাঁরা আশা করছেন।
আরও পড়ুনগার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্টের নেতাকে বাসা থেকে আটক করেছে যৌথ বাহিনী১৬ এপ্রিল ২০২৫গত ৯ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে রবিনটেক্স বাংলাদেশ লিমিটেড নামে একটি তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকদের সঙ্গে যৌথ বাহিনীর সংঘর্ষে অন্তত ৫০ জন আহত হন। ছাঁটাই বন্ধের প্রতিবাদে শ্রমিকেরা ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করেছিলেন। ওই ঘটনায় হামলা, ভাঙচুর ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে রূপগঞ্জ থানায় পৃথক দুটি মামলা করা হয়েছিল।
আরও পড়ুনগার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট নেতা সেলিম মাহমুদকে কারা ফটকে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ১৭ এপ্রিল ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার
অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’
সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।
সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।
এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’
অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি বরাবর অভিযোগ করেন।
এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।